বৃহস্পতিবার, ২৯ মার্চ, ২০১২

সরকার দায়িত্ব এড়াতে পারে না


অপহরণ আতঙ্ক

অপহরণ ও গুম নিয়ে বিতর্ক চলছে অনেক দিন ধরে। ক্রসফায়ার-এনকাউন্টার নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরম্ন হওয়ায় অপহরণ ও গুমের মধ্য দিয়ে বিচারবহির্ভূত হত্যার নতুন প্রক্রিয়া শুরম্ন হয়। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হলেও সরকার নির্বিকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা অপহরণ, হত্যা ও গুম নিয়ে নানা কথা বলছেন। এমনকি এ কথাও বলা হয়েছে- এসব ঘটনার শিকার সন্ত্রাসীরা। সরকারের এই মনোভাব যে কী পরিণতি ডেকে আনতে পারে, তার নমুনা আমরা দেখছি রাজনীতিক, ব্যবসায়ী এমনকি শিশুদের অপহরণ, হত্যা ও গুমের ব্যাপকতায়।
নয়া দিগনেৱ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উলেস্নখ করা হয়েছে, দেশে অপহরণের ঘটনা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। কখনো দুর্বৃত্তরা, আবার কখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। অপহরণের পর কারো লাশ মিলছে, আবার কেউ কেউ বছরের পর বছর ধরে নিখোঁজ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরম্নদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলেও উদ্ধার হচ্ছে না অপহৃতরা। তাদের মধ্যে শিশু, ছাত্র, রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীরাও রয়েছেন। কোনো কোনো অপহরণের ক্লু উদ্‌ঘাটন হচ্ছে। আবার কোনো কোনোটি সম্পর্কে কিছুই জানা যাচ্ছে না। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নামে যেসব অপহরণের ঘটনা ঘটছে, সেসব বিষয় নিয়ে মামলা দায়ের হলেও কোনো তদনৱ হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে। অপহৃত ব্যক্তিদের উদ্ধারেও কোনো তৎপরতা লৰ করা যায় না।
গত ১৪ ডিসেম্বর রাতে মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে অপহৃত হন ঝিকরগাছা থানা বিএনপি সভাপতি নাজমুল ইসলাম। পরদিন সকালে তার লাশ পাওয়া যায় গাজীপুরের সালনা এলাকায়। স্বজনেরা ওই রাতেই পুলিশ ও র‌্যাবকে ঘটনাটি জানিয়েছিলেন; কিন' তাকে অৰত উদ্ধারের কোনো ব্যবস'া নেননি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ রকম ঘটনা অনেক। সবচেয়ে উদ্বেগজনক হলো শিশু অপহরণের ঘটনা বেড়ে যাওয়া।
পঞ্চগড় থেকে সমপ্রতি অপহৃত স্কুলছাত্র জুয়েলের লাশ গত মঙ্গলবার রংপুর ক্যাডেট কলেজসংলগ্ন একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাড়ির ভাড়াটে মুন্না শিশুটিকে অপহরণ করে। রাজধানীর মিরপুর দারম্নসসালাম এলাকার মডেল একাডেমীর দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র সাত বছর বয়সী সিফাত আলী তন্ময় সোমবার নিখোঁজ হওয়ার একদিন পরই তার লাশ পাওয়া যায় তাদেরই বাড়ির ভাড়াটিয়া জহিরম্নল ইসলামের লাগেজ থেকে। অপহরণের পর তন্ময়ের মুক্তিপণ বাবদ জহিরম্নল আট লাখ টাকা দাবি করেছিল তন্ময়ের বাবা হজরত আলীর কাছে।
আমরা অতীতেও বলেছি, বিচারবহির্ভূত হত্যার যেকোনো প্রক্রিয়ার অনুমোদন বন্ধ না হলে তা দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রৰার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে বাধ্য। অপহরণ ও হত্যা ঘটনার বিস-ৃতি সে কথারই সাৰ্য দেয়। সরকার কোনোভাবেই এর দায় এড়াতে পারে না।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads