রবিবার, ২০ মে, ২০১২

১৮ দলীয় জোটের দেশব্যাপী গণঅনশন : তত্ত্বাবধায়কের সুনির্দিষ্ট এজেন্ডায় আলোচনায় বসুন : খালেদা জিয়া




নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়কের সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা নিয়ে আলোচনায় বসতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও ১৮ দলীয় জোটনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। জোটের বিশাল গণঅনশনে তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে আমরা আলোচনা করতে চাই। কিন্তু সরকারকে সুস্পষ্টভাবে বলতে হবে তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনবে। ওই সরকারের প্রধান কে হবেন বা এর রূপরেখা কী হবে, তা নিয়ে বিএনপি আলোচনা করতে প্রস্তুত।
গতকাল রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে ১৮ দলীয় জোট আয়োজিত গণঅনশন কর্মসূচিতে তিনি প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অনশন চলে। প্রখর রোদ ও গরমের মধ্যে গণঅনশনে ব্যাপক লোকসমাগম ঘটে। নাট্যমঞ্চের কম্পাউন্ড ও চারপাশ লোকারণ্য হয়ে ওঠে। বিকাল ৫টা ৫৮ মিনিটে বিএনপির গুম হওয়া সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীর সাত বছরের মেয়ে সাইয়ারা নাওয়াল পানি খাইয়ে বেগম খালেদা জিয়ার অনশন ভাঙান।
সংবিধান সংশোধন করে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার পদ্ধতি ১০ জুনের মধ্যে পুনর্বহাল না হলে দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করার হুমকি দেন ১৮ দলীয় জোটনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, সরকারকে বলতে চাই, আমরা আলোচনা করতে প্রস্তুত। তার আগে অবশ্যই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের বিষয়ে সুস্পষ্ট ও লিখিত ঘোষণা সরকারকে জানাতে হবে।
এজেন্ডা ছাড়া আমরা কোনো আলোচনায় বসব না। আলোচনা না করলে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকুন।
খালেদা জিয়া বলেন, অবিলম্বে নেতাদের মুক্তি দিন, এম ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দিন, নইলে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে। আমরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাস করি। জনগণ বিএনপির সঙ্গে আছে, আপনাদের সঙ্গে নেই। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি সরকার না মানলে ১০ জুনের পর কঠোর আন্দোলন চলবে। জনআন্দোলনের সামনে টিকতে পারবেন না।
সরকারের উদ্দেশে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবার দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। দুর্নীতির সব প্রমাণ আমাদের হাতে আছে। সময় মতো প্রমাণ দেয়া হবে। দেশে না হলেও আন্তর্জাতিকভাবে এসব দুর্নীতির বিচার হবে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি যে দুর্নীতি করেননি এটা প্রমাণ করতে পারবেন না।
তিনি বলেন, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির কাছে সরকারের দুর্নীতির অনেক গোপন তথ্য ছিল। তা দেশ বা বিদেশের কোনো মিডিয়ায় প্রচার হতো। সরকার এটি জানতে পেরেই তাদের হত্যা করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সাগর-রুনির খুনিরা গ্রেফতার হবে। খালেদা জিয়া প্রশ্ন তুলে বলেন, তিন মাস হলো খুনিরা ধরা পড়ল না কেন? কারণ, খুনিরা দেশে নেই। সরকার তাদের বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। যদিওবা কেউ দেশে থাকে, সরকার সংশ্লিষ্ট বলেই তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না।
খালেদা জিয়া বলেন, এই সরকারের সব মন্ত্রণালয় চরমভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত। এখন আর ব্রিফকেসে টাকা ধরে না। মন্ত্রণালয়গুলো থেকে বস্তা বস্তা টাকা নিয়ে তারা বিদেশে পাঠাচ্ছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বক্তব্যেই প্রমাণ হয় সরকার কতটা দুর্নীতিগ্রস্ত।
পত্রিকায় প্রকাশিত গফরগাঁওয়ে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিন আহম্মেদের পিস্তল উঁচিয়ে গুলি করার ছবি দেখিয়ে বলেন, আপনারা দেখুন তারা কিভাবে জনগণকে গুলি করছে। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তারা এলএমজি (সর্বাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র) নিয়ে বেরিয়ে পড়বে। কাউকে ভোটকেন্দ্রে যেতে দেবে না। নিজেরাই সব সিল মেরে ভোট দেবে। ভোটবাক্স ভরে ফেলবে। আগেও একবার তারা এভাবে ভোটকেন্দ্র দখলের নির্বাচন করেছে। এবার জনগণ তা করতে দেবে না। যে নামেই হোক, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া এদেশে কোনো নির্বাচন হবে না।
দিনভর গণঅনশনে ১৮ দলের শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নেতারা সংহতি জানিয়ে বক্তৃতা করেন।
বিশিষ্ট আইনজীবী রফিক-উল হক গণঅনশনে সংহতি জানিয়ে দুই নেত্রীকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে না। ক্ষমতাসীন নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এজেন্ডা ঠিক করে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি হরতালের বিপক্ষে। অনশনের মতো কর্মসূচি গ্রহণ করে বিরোধীদলীয় নেত্রী ভালো দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এটা প্রশংসার দাবিদার। এ কর্মসূচিকে সরকারকেও গুরুত্ব দিতে হবে। তাহলে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ইতিবাচক ধারা সৃষ্টি হবে।
কারাবন্দি ৩৩ শীর্ষ নেতার মুক্তি, তাদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীকে গুম করার প্রতিবাদ ও তাকে ফিরিয়ে দেয়া এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি পুনর্বহালের দাবিতে ১৮ দলীয় জোট এ গণঅনশন কর্মসূচি পালন করে। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে বিএনপির গণঅনশন কর্মসূচি শুরু হয়। কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বিএনপিসহ ১৮ দলীয় জোটের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা বক্তৃতা করেন। মাঝে মাঝে বিভিন্ন পেশাজীবী নেতারা সংহতি জানান। কর্মীদের উজ্জীবিত করতে সাংস্কৃতিক কর্মীরা কবিতা, ছড়া ও গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন। বেলা পৌনে ১২টার দিকে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া অনশনস্থলে পৌঁছেন। ৫টা ৫ মিনিট থেকে ৫৩ মিনিট বক্তৃতা শেষে গণঅনশন কর্মসূচির সমাপনী টানেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীকে তার গাড়ির ড্রাইভারসহ গত ১৭ এপ্রিল রাতে বনানী থেকে অজ্ঞাত কয়েকজন ব্যক্তি অপহরণ করে। সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা তাকে গুম করেছে অভিযোগ করে বিএনপি ইলিয়াস আলীকে ফেরত দেয়ার দাবিতে আন্দোলনে নামে। জনপ্রিয় এ নেতাকে ফিরে পেতে কয়েক দফা বিক্ষোভের পাশাপাশি ২২, ২৩, ২৪, ২৯ ও ৩০ এপ্রিল হরতাল পালন করে ১৮ দলীয় জোট। ২৯ এপ্রিলের হরতালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এলাকায় একটি বাসে অগ্নিসংযোগ ও সচিবালয়ে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ১৮ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। তেজগাঁও থানায় দায়ের করা মামলায় মাত্র ১১ দিনে চার্জশিট দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ৩৩ নেতাকে কারাবন্দি করে। গত ১৬ মে শীর্ষ নেতাদের জেলে পাঠালে পরের দিন ১৭ মে দেশব্যাপী হরতাল পালন করে বিরোধী জোট। ইলিয়াস আলীকে ফেরতের দাবিতে আগেই সিদ্ধান্ত নেয়া গণঅনশনে শীর্ষ নেতাদের মুক্তি যোগ করে গতকাল দেশব্যাপী গণঅনশন করে ১৮ দলীয় জোট। ৬৪ জেলা ও সব মহানগরে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এসব দাবিতে তারা আগামী ২৩ মে কৃষি উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি ও কৃষকের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার প্রতিবাদে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে স্মারকলিপি পেশ এবং সরকারের ব্যর্থতার প্রতিবাদে ২৭ মে ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশও করবে।
জনসমাবেশে পরিণত হয় গণঅনশন : গণঅনশনে অংশ নিতে সকাল থেকেই মহানগর নাট্যমঞ্চ প্রাঙ্গণে জমায়েত হতে থাকেন ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা। রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে একের পর এক মিছিল নিয়ে ৯টার মধ্যেই নেতাকর্মীরা গণঅনশনস্থলে উপস্থিত হয়। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে মহানগর নাট্যমঞ্চ প্রাঙ্গণ ও আশপাশের এলাকা। একপর্যায়ে নাট্যমঞ্চের সামনে রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যায়। জনসমাবেশে পরিণত হয় ১৮ দলীয় জোটের গণঅনশন। মহানগর নাট্যমঞ্চ চত্বর তো বটেই, একে ঘিরে থাকা চারপাশের সড়কগুলোও হয়ে উঠে লোকে লোকারণ্য। রাজউক মোড় থেকে গুলিস্তান মোড় পর্যন্ত সড়ক যেন অনশনস্থলেরই অংশ হয়ে উঠে। দুপুর ২টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অনশনে একাত্মতা ঘোষণা করতে মিছিল নিয়ে আসে জোটের কর্মী-সমর্থকরা।
ওদিকে সকাল থেকেই মহানগর নাট্যমঞ্চকে ঘিরে সতর্ক অবস্থানে ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। পুলিশ-র্যাব, রোবট পুলিশসহ জলকামান, প্রিজনভ্যান মোতায়েন ছিল বঙ্গভবনের কোনা থেকে গুলিস্তান বঙ্গবন্ধু স্কোয়ারে। গণঅনশনে দায়িত্ব পালন করার সময় এক নারী কনস্টেবল হঠাত্ অজ্ঞান হয়ে যান। পরে তার সঙ্গে থাকা অন্য পুলিশ সদস্যরা তাকে দ্রুত রিকশা করে হাসপাতালে নিয়ে যান। বেলা ১১টায় মহানগর নাট্যমঞ্চ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অন্য পুলিশ সদস্যরা জানান, অতিরিক্ত গরম ও মানুষের ভিড়ের কারণে তিনি জ্ঞান হারিয়ে রাস্তায় পড়ে যান।
১৮ দলীয় বিরোধী জোটের গণঅনশনে ছিল নানা অব্যবস্থাপনা। অনশনের মঞ্চ ছাড়িয়ে নেতাকর্মীরা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের পুরো এলাকায়। তীব্র গরমের কারণে গণঅনশনরত নেতাকর্মীদের অনেকে খেয়েছেন শশা, পানি ও আইসক্রিম।
খালেদা জিয়া আরও যা বলেন : বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক নামে যদি অ্যালার্জি থাকে, তাহলে অন্য যে নামেই দেন না কেন আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নয়। প্রেসিডেন্টের মুলো ঝুলিয়েও কোনো লাভ হবে না। কারণ প্রেসিডেন্ট দলের লোক, সুতরাং তার অধীনেও নির্বাচন সম্ভব নয়।
১৮ দলীয় জোটনেত্রী বেগম জিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও তার আত্মীয়-স্বজনরা প্রত্যেকেই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। দুর্নীতির সব প্রমাণ আমাদের হাতে আছে। সময়মত প্রমাণ দেয়া হবে। দেশে বিচার না হলে আন্তর্জাতিকভাবে এসব দুর্নীতির বিচার হবে। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, নিজেকে তখন নির্দোষ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হবেন। আপনি যে দুর্নীতি করেননি সেটা প্রমাণ করতে পারবেন না। খালেদা জিয়া বলেন, এ সরকার পদ্মা সেতু কেন করতে পারছেন না। কেন কেউ অর্থ দিচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী আপনি কি জবাব দেবেন? আসলে সেখানে এত ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে যে, কেউ আর অর্থ দিচ্ছে না। এমনকি অর্থমন্ত্রীকেও এ নিয়ে দুইবার ডেকেছে বিশ্বব্যাংক। প্রধানমন্ত্রী, তার পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও একজন মন্ত্রী সে দুর্নীতিতে জড়িত। যে মন্ত্রীকে দুর্নীতির অভিযোগে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দিতে পরামর্শ দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। খালেদা জিয়া বলেন, সম্প্রতি একজন মন্ত্রীর গাড়িতে বস্তাভর্তি টাকা পাওয়া গেছে। অধীন কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত করিয়ে নির্দোষ সেজেছেন। যতই নির্দোষ সাজুন না কেন জনগণ জেনে গেছে। তাই এ সরকারের মন্ত্রীদের এক পা দেশে এক পা বিদেশে। তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী নিজেই স্বীকার করেছেন দেশ দুর্নীতিতে ভরে গেছে। বিশেষ করে পুলিশ ও বিচার বিভাগের কথা বলেছেন। আমরা বলতে চাই- রাজধানীর পুলিশের দিকে তাকান। তারা একটিমাত্র দলের বিশেষ করে একটি মাত্র জেলার লোক। একইভাবে বিচারবিভাগেও একটি দলের লোকে ভরে গেছে।
খালেদা জিয়া বলেন, আমাদের দলের নেতা ইলিয়াস আলীর ব্যাপারে সরকার যত কিছুই বলুক না কেন - তাকে ফেরত দিতে হবে। কারণ দেশের মানুষ জেনে গেছে— র্যাব-গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য ও ছাত্রলীগের কর্মীদের দিয়ে সরকার যে বাহিনী বানিয়েছে- তারাই ইলিয়াসকে অপহরণ করেছে। আমরা বলতে চাই, তাকে যেখান থেকে নিয়ে গেছেন, সেখানেই ফিরিয়ে দিন। তাকে ফেরত দিতেই হবে। তিনি বলেন, ইলিয়াস আলী ও চৌধুরী আলমসহ আমাদের অনেক নেতাকর্মী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীসহ ১২৪ জন মানুষকে সরকার গুম করেছে। তারা অনেক করেছে, অনেক বেশি করে ফেলেছে। তাদের অনেকের লাশ পাওয়া গেছে, অনেকের হদিস মেলেনি।
খালেদা জিয়া সরকারের উদ্দেশে বলেন, গুম-হত্যা বন্ধ করুন। ইলিয়াস আলীকে ফেরত দিন। নইলে পরিণতি অত্যন্ত খারাপ হবে। ইলিয়াস আলী ও ইবি ছাত্রদের ফিরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে সরকার আদালতের নির্দেশ পর্যন্ত মানছে না। তিনি বলেন, এ সরকার অযোগ্য, অপদার্থ ও খুনি সরকার। আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে দেশে আরও মানুষ খুন হবে। সেদিন আমার অফিসের সামনে র্যাবের দুইটি গাড়ি অনেকক্ষণ অবস্থান করে। তারা কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়নি। পরে রাত ১টার সময় ইলিয়াস আলীর বাসার গেট ভাঙতে চেয়েছে। এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তারা পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিয়েছে। দেশবাসীর প্রশ্ন হচ্ছে-নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর পরিবার এমনিতেই আতঙ্কে রয়েছে। তাহলে কেন গভীর রাতে তার বাড়িতে হানা? এখন তার বাসায় পুলিশ সিসিটিভি বসিয়েছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন করতে চাই-আপনার অফিসের সামনেও সিসিটিভি আছে। আপনি তো দেখেছেন হরতালে আমাদের নেতাকর্মীরা সেখানে গাড়ি পোড়ায়নি। তাহলে কেন মিথ্যা মামলা?
বিরোধী নেতা সরকারের উদ্দেশে বলেন, যত কৌশলই করুন না কেন আপনাদের মেয়াদ শেষে বা তার আগেই ক্ষমতা ছাড়তে হবে। যত আইনই করুন না কেন, যতবার সংবিধান সংশোধন করুন না কেন কোনো লাভ হবে না।
খালেদা জিয়া বলেন, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন দিতে হবে। নইলে এ সরকারের লোকজন স্টেনগান, এলএমজি, এসএমজিসহ নানা রকমের ভারী অস্ত্র নিয়ে নির্বাচনের দিন জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ভোট কেড়ে নেবে। কিন্তু এদেশে সেটা হবে না, জনগণ হতে দেবে না। খালেদা জিয়া বলেন, মঈন-ফখরুদ্দিনের দোহাই দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিপক্ষে যুক্তি জনগণ মানবে না। কারণ ৯১ সালে বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ, ৯৬ সালে বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান ও ২০০১ সালে বিচারপতি লতিফুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। সেটা দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্যতাও পেয়েছে। কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকার কি করতে পারবে ও পারবে না তা আইনেই আছে। কিন্তু মইন-ফখরুদ্দিন ছিল অবৈধ ও জরুরি সরকার। তারা ক্ষমতা দখল করে আইন করেছে, গ্রেফতার-খুন করেছে, লুটপাট করেছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, মইন-ফখরুদ্দিনের সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার হলে আপনার বিরুদ্ধে দায়ের ১৫টি মামলার তো বিচার হওয়ার উচিত ছিল। কেন তবে আপনার মামলাগুলো প্রত্যাহার করলেন? কেন আপনার দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের সাড়ে ৭ হাজার মামলা প্রত্যাহার করলেন। এমন কি ফাঁসির আসামির মামলাও।
খালেদা জিয়া বলেন, সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে, মাথায় গণ্ডগোল দেখা দিয়েছে। কারণ ক্ষমতায় যাওয়ার আগে এ সরকার অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে ব্যক্তিগত লোভে পড়ে সব প্রতিশ্রুতি ভুলে গেছে। ফলে দেশের এ করুণ অবস্থা। এখন একদিকে দেশে কেবল নাই নাই অন্যদিকে সরকারের লক্ষ্য কেবল খাই খাই, যত পারি টাকা বানাই। জনগণ আর খাই খাই চায় না, নেই নেইও সহ্য করতে পারছে না। এ পরিস্থিতির পরিবর্তন করতে হলে জনগণকে রাস্তায় নামতে হবে।
খালেদা জিয়া বলেন, দেশের প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক এ বয়সেও নিয়মিত আইনচর্চা করেন। তিনিও বলেছেন, বিচারালয়ে মুখ দেখে রায় দেয়া হয়। ফলে আদালতে এখন ন্যায়বিচার মেলে না। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই। বিচারকরা স্বাধীনভাবে বিচার করতে পারছেন না। এ সরকার সব জায়গায় দলীয়করণ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয়করণের মাধ্যমে ভিসি নিয়োগের কারণে অস্থিরতা লেগে আছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের মুখে ভিপি পরিবর্তন করা হলেও আইন ভঙ্গ করে সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
খালেদা জিয়া বলেন, দলীয়করণের ফলে প্রশাসন এখন অচল। তাই দেশের কোনো উন্নয়ন নেই, বিনিয়োগ নেই। বিনিয়োগ হবেই বা কী করে সরকার যদি গ্যাস-বিদ্যুত্ দিতে না পারে। তাই বড় বড় ব্যবসায়ীরা দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে। শিল্প-কারখানাগুলো বিদেশিদের মালিকানায় চলে যাচ্ছে। এটা শুভ লক্ষণ নয়। কিন্তু সরকার পরিকল্পিতভাবে শিল্পকারখানা বিদেশিদের হাতে তুলে দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন দেশ সামনে না এগিয়ে পিছিয়ে যাবে। তিনি বলেন, দেশে ৩ বছরে কোনো বিদ্যুত্ উত্পাদন হয়নি। তবে কুইক রেন্টাল ও রেন্টাল বিদ্যুত্ প্রকল্পের নামে চলছে সমানে লুটপাট। সরকার দাবি করছে—ওই প্রকল্প থেকে নাকি ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদন হয়। তাহলে রাজধানীতে ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেড়িং কেন? গ্রামে ‘বিদ্যুত্ থাকে না—মাঝে মাঝে আসে’ এ অবস্থা কেন? আসলে প্রধানমন্ত্রী মিথ্যাচার করছেন।
এ সময় তিনি কয়েকটি পত্রিকা তুলে ধরে বলেন, ওইসব বিদ্যুত্ প্রকল্পের নামে এখন তেলচুরি হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করতে চাই— তিন বছরেই নাকি আপনারা সবকিছু করে ফেলেছেন? কি করেছেন? সাধারণ মানুষের কাছে জিজ্ঞেস করুন—জবাব পাবেন কেউ ভালো নেই। কৃষকের কাছে জিজ্ঞেস করুন—জবাব পাবেন কেউ ভালো নেই। তরুণদের কাছে জিজ্ঞেস করুন—বলবে ঘরে ঘরে চাকরি পাইনি। আপনারা করেছেন লুটপাট। নিজেদের আখের গুছিয়েছেন, বিদেশে পাচার করেছেন। দেশ পরিচালনায় অতীতেও ব্যর্থ হয়েছেন, এবারও হয়েছেন। সামনের দেড় বছরে কিছুই করতে পারবেন না। সরকারের মন্ত্রী-এমপিসহ নেতারা যে লুটপাট করছে তা জনগণের অজানা নয়। তাদের এমপিত্ব যাওয়ার পর তারা গ্রামে যেতে পারবেন না। গ্রামে গেলে জনগণ তাদের যে আপ্যায়ন করবে তার ভয়েই এখন দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে চাচ্ছেন। কারণ জনগণকে তাদের বড় ভয়। কিন্তু বর্তমান সরকারকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল করতে হবে।
১৮ দলীয় জোটের নেত্রী বেগম জিয়া বলেন, আমরা করতে চাই না। লগি-বৈঠা দিয়ে বা বাসে আগুন দিয়ে মানুষ মারতে চাই না। এটা আওয়ামী লীগের চরিত্র। আমরা ক্ষমতায় থাকাকালে তারা ১৭৫ দিন হরতাল করেছিল। আমরা সেটা করতে চাই না। কিন্তু আমাদের দলের নেতা ইলিয়াসকে ফিরিয়ে দিতে হবে। কেন্দ্রীয় নেতাদের মুক্তি দিতে হবে। তিনি বলেন, ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের পরামর্শকে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু আমাদের শান্তিপূর্ণ কোনো কর্মসূচিই সরকার করতে দিচ্ছে না। ফলে বাধ্য হয়েই আমরা হরতাল করেছি। গণঅনশনের জন্য আগের দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত আমাদের নেতাদের অনুমতি দেয়া হয়নি। তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, আপনারা দলীয় নেতাকর্মীদের সামলান। আপনাদের এমপিরা যেভাবে জনগণকে গুলি করছে, যেভাবে লুটপাট করছে তা প্রচার করলেই দোষী হয়ে যান সাংবাদিকরা। গফরগাঁওয়ের এমপির ছবি তোলায় দুই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য মামলা দেয়া হয়েছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তিনি বলেন, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিকে হত্যা করা হয়েছিল সরকারের দুর্নীতির তথ্য চাপা দিতে। কারণ তাদের কাছে সরকারের নানা দুর্নীতির তথ্য এসেছিল। সেগুলো এদেশে প্রচার না হলে বিদেশে প্রচার হতো। তাই ওই রাতেই তাদের হত্যা করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৪৮ ঘণ্টার কথা বললেও তিন মাসেও খুনিদের গ্রেফতার করা হয়নি। কারণ সরকারই তাদের বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে।
বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া বলেন, আমাদের নেতাদের কারাগারে পাঠিয়ে সরকার মনে করেছে আমরা ভয় পেয়ে যাব। আমরা ভয় পাইনি। কারণ একদল নেতা কারাগারে নিলে আরেক দল তাদের দায়িত্ব পালন করবে। তাদের কারাগারে নেয়া হলে আরেক দল। বিএনপিতে নেতাকর্মীর অভাব নেই। ফলে সরকার এখন হুমকি দিচ্ছে। আসলে গ্রামে অন্ধকার গভীর রাতে মানুষ একা হাঁটার সময় ভয় পেলে উচ্চস্বরে গান গায়, হৈ চৈ করে। বর্তমান সরকারের হয়েছে সে অবস্থা, তারা ভয় পেয়েই হুমকি দিচ্ছে। তিনি বলেন, ১১ জুন ঢাকায় আমাদের সমাবেশ রয়েছে। এর আগে যদি সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপারে সুর্নিদিষ্ট ঘোষণা না দেয় তবে ওইদিন পরবর্তী কর্মসূচি দেয়া হবে। কঠোর আন্দোলনের মুখোমুখি হতে হবে সরকারকে।
গণঅনশনে জোট নেতারা যা বললেন : গণঅনশনে বক্তারা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী গুম, আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি সোহেল তাজের পদত্যাগের ঘটনা, মহাজোটের প্রধান শরিক জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মন্তব্য ‘ঘরে থাকলে খুন, বাইরে গেলে গুম’, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নাজেহাল, সৌদি কূটনীতিক খালাফ হত্যা, সাংবাদিক দম্পতি হত্যা, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের দুর্নীতি, পদ্মাসেতু দুর্নীতি, খালে-বিলে-নদীতে প্রতিদিন অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার, সরকারদলীয় এমপি গিয়াস উদ্দিনের জনগণকে উদ্দেশ করে গুলি, এমপির পিস্তলে সরকারদলীয় কর্মী ইব্রাহীম হত্যা, শেয়ারবাজার লুট, দলীয় পরিচয়ে ব্যাংকের অনুমোদনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সরকারদলীয় মন্ত্রী-নেতাদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যের উল্লেখ করে সরকারের কড়া সমালোচনা করেছে ১৮ দলীয় জোটের নেতারা। বিশেষ করে বিরোধী দলকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্য ‘কীভাবে সোজা পথে আনতে হয় আমরা জানি’র কড়া সমালোচনা করেন জুনিয়র নেতারা। সরকারি দলের মন্ত্রীদের মধ্যে—আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাাতুন, আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধাারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গির কবির নানক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি প্রমুখের বক্তব্যের পাল্টা ভাষায় জবাব দেন জোটের নেতারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, গণতন্ত্রের দাবি করে কোনো সরকার স্বৈরাচারের আচরণ করলে তার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায়। বিরোধী দলকে অত্যাচার, নিপীড়ন, হামলা-মামলা এগুলো হলো তার নিদর্শন। তিনি বলেন, সরকার এখন শক্ত কথা বললেও পরে দাবি মানতে বাধ্য হবে। অতীতে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে যেভাবে স্বৈরাচার সরকারের পতন হয়েছে, সেভাবে এ সরকারেরও পতন হবে। হুমায়ুন আহমেদের মুক্তচিন্তার ওপর সরকার হস্তক্ষেপ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর চেয়ে বেশি কিছু স্বৈরাচারী আচরণ হতে পারে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, স্বৈরাচারের পতনের সময় কেউ পাশে থাকে না। এ সরকারের পাশেও জনগণ নেই। রাষ্ট্রের কোনো অঙ্গকেও সরকার কিছুদিন পর পাশে পাবে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম বলেন, মাঠে-ঘাটে মানুষের লাশ এ সরকারের পতনের জন্য যথেষ্ট। কারও জীবন নিরাপদ নয়। এজন্য দেশের মানুষ আর এ সরকারকে দেখতে চায় না। তিনি বলেন, যত নির্যাতন আসবে, প্রতিবাদ ততোই কঠোর হবে। সর্বত্র জনঐক্য গড়ে উঠেছে।
ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, সরকারের প্রতিটি সেক্টরে দুর্নীতি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রায় অস্পস্ট। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল করতে হবে। অন্যথায় এ সরকারের পতন ঘটবে।
ড. আবদুল মঈন খান বলেন, বর্তমান সরকার একটি দেউলিয়া সরকার। সব সেক্টরে তারা দেউলিয়া হয়ে গেছে। এম ইলিয়াস আলীর সন্ধান দিতে ব্যর্থ হয়েছে এ সরকার।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসীদের কারণে কেউ সুখে নেই। প্রতিবাদ করতে গেলে হত্যা ও গুম করা হচ্ছে। আওয়ামী দুঃশাসনের হাত থেকে বাঁচতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ করতে হবে।
খেলাফত মজলিসের আমির অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইসহাক বলেন, ইসলামবিরোধী সরকার দেশের মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এখন তাদের পথ একটাই—ক্ষমতা ছেড়ে দেয়া। অন্যথায় রাজপথের আন্দোলনেই তাদের বিদায় জানানো হবে। তিনি বেগম জিয়ার নেতৃত্বে আন্দোলন-সংগ্রামে দেশপ্রেমিকদের মাঠে থাকার আহ্বান জানান।
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বিএনপি নেতা ইলিয়াস, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ওয়ালিউল্লাহ ও আল মোকাদ্দাসকে গুমের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ফ্যাসিবাদে রূপ নিয়েছে। গুমের ঘটনাকে জনগণের দৃষ্টির বাইরে নিতে জাতীয় নেতাদের আটকে রেখেছে। মাওলানা নিজামী, আল্লামা সাঈদীসহ জাতীয় নেতাদের মুক্তি দাবি করেন তিনি।
কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক বলেন, শেখ হাসিনা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তার বিচার চাই। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি দেশনেত্রীর বিরুদ্ধে কথা বলেন; কিন্তু আপনি বিদেশি টাকায় চলেন।
এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য রেদোয়ান আহমেদ বলেন, লড়াইয়ের মাঠে আমাদের একটিই স্লোগান—‘জনগণের বিজয়’। জনআন্দোলনের বিজয় নিয়েই ঘরে ফেরার অঙ্গীকার করেন তিনি।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, এদেশের জনগণ ’৭১ সালে বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল। ’৭২-৭৫ নিষ্পেষণের বিস্ফোরণ হয়েছিল অত্যন্ত নেতিবাচক। এবার শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার জনগণের ওপর নির্যাতনের স্টিমরোলার চালাচ্ছে। এর পরিণতি হবে অতীতের চেয়েও কঠিন ও ভয়াবহ।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, সরকার ও জনগণ এখন মুখোমুখি অবস্থানে। র্যাব-পুলিশ দিয়ে জনআন্দোলন ঠেকাতে নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। সরকারের এমপিরা লাইসেন্সধারী পিস্তল দিয়ে জনগণের ওপর গুলি ছুড়ছে। হলিউড স্টাইলের ‘পিস্তল এমপি’ গিয়াসউদ্দিনকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।
বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, আগামী ১০ জুনের মধ্যে জোট নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তাদের মুক্তি দিতে হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল করতে হবে। আর কেবল তখনই স্থিতিশীল রাজনীতি ফিরিয়ে আনতে বিএনপি কাজ করবে। অন্যথায় কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সেজন্য সরকারই দায়ী থাকবে। ফারুক বলেন, ১৮ দলীয় জোটের গণঅনশন একটি শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক কর্মসূচি। এ কর্মসূচিকে ঘিরে সরকার নানা টালবাহানা করেছে।
জামায়াতের এমপি হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, মামলা আর কারাগারে ভয় পাই না। রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারের পতন ঘটানো হবে। এ সরকারের তৈরি করা গর্তেই তারা পড়ে মরবে। একদিন তাদের সব শীর্ষ নেতারও ঠিকানা হবে কাশিমপুর কারাগার।
যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, সরকারের দুষ্টু মন্ত্রীদের উদ্দেশে বলতে চাই—জনগণ আপনাদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। শিগগিরই তারা ভারতীয় ফিল্মস্টার মিঠুন চক্রবর্তীর মতো আপনাদের বলতে শুরু করবে—‘শালা মারব এখানে, লাশ পড়বে ভারতে’।
বিএনপি দলীয় এমপি সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া বর্তমান সময়কে ১৯৭৪ সাল চলছে উল্লেখ করে বলেন, এখন বিরোধী দলের জন্য ১৯৭৪ সাল চলছে; ২০১৩ সাল হবে সরকারি দলের জন্য ১৯৭৫ সাল।
গণঅনশন কর্মসূচি পরিচালনা করেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক ও ঢাকা মহানগর বিএনপি সদস্য সচিব আবদুস সালাম।
আরও বক্তৃতা করেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, শমসের মবিন চৌধুরী বীর বিক্রম, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ফজলুর রহমান পটল, যুগ্ম মহাসচিব মিজানুর রহমান মিনু, মোহাম্মদ শাহজাহান, বরকত উল্লাহ বুলু, সালাহউদ্দিন আহমেদ, আন্তর্জাতিক সম্পাদক এহছানুল হক মিলন, যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সমবায় বিষয়ক সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদ, ধর্ম সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার, মানবাধিকার সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, বিএনপি দলীয় এমপি জয়নুল আবেদিন, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, মোস্তফা আলী মুকুল, আবদুল মোমিন তালুকদার খোকা, রাশেদা আক্তার হীরা, রেহেনা আক্তার রানু, সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া, নিলুফার চৌধুরী মনি, শাম্মী আক্তার, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনির হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল বারী বাবু, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শহিদুল ইসলাম বাবুল, জাসাস সভাপতি এমএ মালেক, সহ-সভাপতি বাবুল আহমেদ, ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ আবদুল মালেক, শ্রমিক দলের যুগ্ম সম্পাদক আবুল খায়ের খাজা, মত্স্যজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক মিলন মেহেদী, ছাত্রশিবির সেক্রেটারি আবদুল জব্বার, ছাত্রশিবিরের দফতর সম্পাদক আতিকুর রহমান, ছাত্রদল মহানগর উত্তর সাধারণ সম্পাদক আবুল মনসুর খান দিপক প্রমুখ।
জোটের শরিকদের মধ্যে আরও বক্তৃতা করেন বিজেপি মহাসচিব শামিম আল মামুন, বিজেপি নেতা আশিকুর রহমান শান্ত, ইসলামী ঐক্যজোটের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা এমএ রকিব, এনডিপি সভাপতি খন্দকার গোলাম মর্তুজা, পিপলস লীগ চেয়ারম্যান গরিবে নেওয়াজ, ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান আবদুল মবিন, ন্যাপ (ভাসানী) সভাপতি শেখ আনোয়ারুল হক, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ডেমোক্র্যাটিক লীগ মহাসচিব সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, বাংলাদেশ ন্যাপ সভাপতি জেবেল রহমান গানি, ইসলামী ঐক্যজোটের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান আবদুর রকিব, মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, মুসলিম লীগ মহাসচিব আতিকুল ইসলাম, এনপিপি মহাসচিব ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপা মহাসচিব খন্দকার লুত্ফর রহমান, এলিইডির যুগ্ম মহাসচিব শাহাদত হোসেন সেলিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মহিউদ্দীন প্রমুখ।
১৮ দলের দাবির সঙ্গে বিকল্পধারার একাত্মতা : দুই জোটের বাইরে থাকা সাবেক প্রেসিডেন্ট ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান ১৮ দলীয় জোটের গণঅনশনে সংহতি জানিয়ে বক্তৃতা করেন। তিনি দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বলেন, সরকারের অনিয়ম, অদক্ষতা ও দুর্নীতিতে দেশ ছেয়ে গেছে। এ অবস্থায় দেশ চলতে পারে না। সংসদ অকার্যকর, বিরোধী দলকে কর্মসূচি পালন করতে দেয়া হয় না। তাদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন চলছে। দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে। ব্যাংকগুলো দেউলিয়া হয়ে পড়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল না করায় আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আমরা শঙ্কিত। সরকার গলা টিপে জনগণের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করছে। আমরা এ অবস্থার নিরসন চাই। অবিলম্বে বিরোধীদলীয় নেতাদের মুক্তি চাই।
পেশাজীবীদের সংহতি : গণঅনশনে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রতিনিধিরা সংহতি জানিয়ে বক্তৃতা করেন। তারা দেশের স্বার্থবিরোধী বিভিন্ন চুক্তি, গুম-খুন, গণমাধ্যমে সরকারি নিয়ন্ত্রণ, দলীয়করণ, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের চিত্র তুলে ধরেন। আর এসব পরিস্থিতি থেকে জাতিকে রক্ষা করতে সরকারের লাগাম টেনে ধরতে বিরোধী জোটকে কার্যকর আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান পেশাজীবী নেতারা।
পেশাজীবীদের মধ্যে সংহতি জানিয়ে বক্তৃতা করেন প্রখ্যাত আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান মিঞা, অধ্যাপক ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, সাবেক সচিব ও কলামিস্ট মুহাম্মদ আসফউদ্দৌলা, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মাহবুবউল্লাহ, অধ্যাপক ড. আবু আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. সদরুল আমিন, অধ্যাপক আফম ইউসুফ হায়দার, পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর জিন্নাতুন্নেসা তাহমিদা বেগম, বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সভাপতি প্রফেসর ড. সুকোমল বড়ুয়া, গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি কামালউদ্দিন সবুজ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার গাজী মাযহারুল আনোয়ার, সাবেক সচিব প্রকৌশলী আ ন হ আখতার হোসেন, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর তাহমিনা আক্তার টফি, চিকিত্সক নেতা ডা. সিরাজউদ্দিন আহমেদ, কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, ডিপ্লোমা প্রকৌশলী নেতা মো. হানিফ প্রমুখ।
অনশনের নেতাদের বক্তব্যের ফাঁকে কবি আবদুল হাই সিকদার, ছড়াকার আবু সালেহ, জাসাসের সাধারণ সম্পাদক কণ্ঠশিল্পী মনির খান, হাসান চৌধুরী, জসীম উদ্দিন নাসিরসহ জাসাসের শিল্পীরা গান গেয়ে অনশনরত নেতাকর্মীদের অনুপ্রাণিত করেন। বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা গণঅনশনে সংহতি জানান। বহির্বিশ্ব বিএনপির পক্ষ থেকে মালয়েশিয়া বিএনপির নেতা মাহবুব আলম শাহ’র নেতৃত্বে বেশকিছু প্রবাসী অনশনে অংশ নেন।
অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, কোনো সভ্য রাষ্ট্রে মানুষ ‘গুম’ চলতে পারে না। একজন নাগরিককে ‘গুম’ করার অভিযোগ যখন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তখন সেই রাষ্ট্র ও সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার থাকে না। কিন্তু, এরপরও সরকার নিপীড়নের পথ বেছে নিয়েছে। এটা এ সরকারকে করুণ পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি হুশিয়ারি দেন।
অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান মিঞা বলেন, শুধু দুর্নীতি বিবেচনায় মহাজোট সরকার ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়ে ফেলেছে। পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে বিশ্বব্যাংক যে দুর্নীতির প্রমাণ হাজির করছে, তা জাতিকে লজ্জার মধ্যে ফেলেছে। এরপর আমাদের সাবেক ছাত্র ও রাজনৈতিক নেতা এম ইলিয়াস আলীর গুমের ঘটনা পুরো দেশে নিরাপত্তাহীনতা পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ অতি জরুরি।
মুহাম্মদ আসফউদ্দৌলা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন। আবার, নিজেই তা গলাটিপে হত্যা করেছিলেন। তিনি নিজের দল ও পরিবারকে সুপথে আনতে পারেননি বলে বারবার আফসোস করেছেন। কিন্তু, আজ দেখা যাচ্ছে- কন্যা শেখ হাসিনা গণতন্ত্র হত্যায় শেখ মুজিবুর রহমানের চেয়েও ধ্বংসাত্মক কৌশল শিক্ষা নিয়েছেন।
কামাল উদ্দিন সবুজ বলেন, রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা শ্বাসরু্দ্ধকর অবস্থায় বসবাস করছি। সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের কোনো সুরাহা হয়নি। তবু নাকি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেকে সফল দাবি করেছেন। সংবাদকর্মীদের ওপর অত্যাচার চলছে। হামলা-মামলা দিয়ে কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। পেশাজীবীরা এ অবস্থার অবসান চায়।
সৈয়দ আবদাল আহমদ বলেন, বাংলাদেশ আজ বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে। সংবাদপত্র খুললেই দেখা যায় লাশের সারি। দেশ আজ গুম রাজ্যে পরিণত হয়েছে। প্রতিটি মানুষ আজ দিন কাটায় গমের আতঙ্কে। আমরা সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করেত গিয়ে পুলিশ ও সরকারদলীয় লোকদের হামলার শিকার হচ্ছি। সংবাদপত্র অফিস আক্রান্ত হচ্ছে। দুদিন আগেই আমার দেশ-এর ছাপাখানায় হাতবোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে। গফরগাঁওয়ের সরকারদলীয় এমপি গিয়াস পিস্তল উঁচিয়ে জনসমক্ষে গুলি চালিয়েছে। এই গিয়াসউদ্দিন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার হত্যাকারী ছিলেন।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads