শুক্রবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৪

দেশমাতৃকার জিয়া

১৭ মার্চ ১৯৭৪। এই দিন তৎকালীন শীর্ষ রাজনৈতিক বিরোধী দল জাসদের নেতাকর্মীরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর বাসভবন ঘেরাও করতে গেলে নিরস্ত্র হাজারো মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি করা হয়। মেজর জলিল, আ স ম আবদুর রব, মমতাজ বেগমসহ অসংখ্য আহত নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়, নিহতের লাশ অজ্ঞাত স্থানে গুম করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে জাসদ প্রকাশ্য রাজনীতি থেকে সরে এসে সশস্ত্র আন্ডারগ্রাউন্ডরাজনীতির পথে হাঁটতে শুরু করে। প্রতিষ্ঠা পায় গণবাহিনীর। কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে পরিচালিত এ বাহিনীর বিস্তৃতি ঘটে সেনাছাউনির ভেতরেও। ২৫ জানুয়ারি ৭৫ দেশের সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠিত হলে গণবাহিনীর কর্মকাণ্ড আরো বেগবান হয়ে ওঠে। ১৫ আগস্ট ৭৫ হাতেগোনা কজন জুনিয়র সেনা অফিসারের সেনা অভ্যুত্থানে বঙ্গবন্ধুর মর্মান্তিক ইন্তেকালের পর খোন্দকার মোশতাক নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে বাকশাল মন্ত্রীদের একাংশকে নিয়ে তার মন্ত্রিসভা গঠন করেন। মোশতাক সেনাপ্রধান ও প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দেন যথাক্রমে জেনারেল জিয়াউর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানীকে। বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো ২ নভেম্বর ৭৫ রাতে আরেকটি সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে গেল। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমদের মুখেই শুনি, ‘ভেবে দেখুন, ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বরের সামরিক অভ্যুত্থানের কথা। মুক্তিযোদ্ধা খালেদ মোশাররফ অভ্যুত্থান ঘটালেন। খোন্দকার মোশতাক আহমদ পদত্যাগ করে বিচারপতি সায়েমকে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দিয়ে তাকে রাষ্ট্রপ্রধান করলেন। বাংলাদেশ রাষ্ট্র তখন কেমন অবস্থায় ছিল? নতুনভাবে সামরিক আইন জারি করা হলো। জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত হয়েছিল। খালেদ মোশাররফ ৬ নভেম্বর পর্যন্ত কোনো মন্ত্রিপরিষদ গঠন করতে সক্ষম হননি। দেশে কোনো রাজনৈতিক দলের তৎপরতা ছিল না। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতীক সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন অংশ পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত। প্রশাসনিক ব্যবস্থা স্থবির। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অচল। রাষ্ট্রক্ষমতা বলতে আমরা যা বুঝি, তার অবস্থান কোথায়? বিচারপতিরা যে সংবিধানের প্রাধান্য নিয়ে এত কথা বলেন, সেই সংবিধানের অভিভাবক হিসেবে তারাই বা তখন কোথায় ছিলেন? স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে বিচার বিভাগ তো কোনো নির্দেশ দেয়নি! ৭ নভেম্বরের সিপাহি-জনতা বিপ্লবের ফলে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ক্ষমতায় শূন্যতা পূরণের সম্ভাবনা সৃষ্টি হলো। জেনারেল জিয়া সেই শূন্যস্থান পূরণ করেছেন মাত্র। তাও কোনো পূর্বপরিকল্পনার মাধ্যমে নয়, নয় কোনো ষড়যন্ত্র অথবা সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে। ৩ নভেম্বর যেভাবে তিনি গৃহবন্দী হন, তাতে তিনি নিহত হতে পারতেন। অন্য দিকে সিপাহি-জনতা বিপ্লবের শুরুতেও তিনি ছিলেন না। ছিলেন না সমাপ্তি পর্বেও। ৭ নভেম্বর জেনারেল জিয়া ক্ষমতাসীন না হয়ে হতে পারতেন কর্নেল তাহের বা অন্য কেউ। জেনারেল জিয়ার জনপ্রিয়তাই তাকে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসে। ৩ নভেম্বরের অভ্যুত্থানের অন্যতম নায়ক কর্নেল শাফায়াত জামিল ইংরেজি সাপ্তাহিক হলিডে পত্রিকার এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন"Zia infact saved the nation from total anarchy, and a possible police action from india on the7th November.".  রাজনৈতিক গণ-আকাক্সার উপলব্ধি  জেনারেল জিয়াকে ৭ নভেম্বর ৭৫ সিপাহি-জনতা কেন কাঁধে তুলে নারায়ে তকবির, আল্লাহু আকবর, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, মেজর জিয়া জিন্দাবাদ ধ্বনিতে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত করেছিল, তা তিনি হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে পেরেছিলেন। ৯০ শতাংশ মুসলমানের গণ-আকাক্সা, গণতন্ত্রের আকুতি, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধে সক্ষমতা এসবের রক্ষক এবং যোগ্য নেতা হিসেবে জিয়াকেই এরা বেছে নিয়েছিল। স্বতঃস্ফূর্তভাবে জিয়া জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার কর্মসূচি শুরু করলেন এভাবে : ২৮ জুলাই ৭৬ সেনাপ্রধান এবং সিএমএলএ জেনারেল জিয়া সীমিতপর্যায়ে দলীয় রাজনৈতিক কার্যক্রম চালনার জন্য রাজনৈতিক দলবিধি (পলিটিক্যাল পার্টিস রেগুলেশন) জারি করেন। ১৫ আগস্ট ৭৬ থেকে দলীয় কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দেয়া হলো। ২১ এপ্রিল ৭৭ বিচারপতি এ এস এম সায়েম পদত্যাগ করলে সিএমএ জেনারেল জিয়া প্রেসিডেন্টের দায়িত্বও নিজের কাঁধে তুলে নেন। এ পর্যায়ে তিনি ১৯৭২ সালের সংবিধানে মূলনীতি হিসেবে ঘোষিত ধর্মনিরপেক্ষতাসমাজতন্ত্র’-এর বদলে যথাক্রমে সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি সর্বাত্মক বিশ্বাস ও আস্থাএবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারের সমাজতন্ত্রকে রাষ্ট্রের মূলনীতি ঘোষণা করেন। এর আগে সিএমএলএর অফিস থেকে এক হ্যান্ডআউটে বাঙালির পরিবর্তে বাংলাদেশীর ঘোষণা দেন। বলা হয়, এখন থেকে বাংলাদেশের নাগরিকদের বাংলাদেশীবলে উল্লেখ করা হবে। প্রেসিডেন্ট ও সিএমএলএ জেনারেল জিয়া ১৩ ফেব্রুয়ারি ৭৭ ইউনিয়ন পরিষদ ও আগস্ট-সেপ্টেম্বরে পৌরসভা নির্বাচনের আয়োজন করেন। জিয়ার অনুসৃত নীতি, কর্মপন্থা এবং তার নিজের প্রেসিডেন্ট পদের প্রতি জনগণের আস্থা যাচাইয়ের জন্য ৩০ এপ্রিল ৭৭ দেশব্যাপী গণভোটের আয়োজন করেন। গণভোটের প্রাক্কালে তিনি তার ঐতিহাসিক উনিশ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো দেশের স্বাধীনতা ও অখণ্ডতা রক্ষা করা, সংশোধিত রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে প্রতিফলন করা, স্বনির্ভরতা, নিরক্ষরতার দূরীকরণ, অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে সহযোগিতা দান, জনসংখ্যা বিস্ফোরণ রোধ ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ কায়েম (ইত্তেফাক, ২৩ এপ্রিল ১৯৭৭)। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে তিনি অংশ নেন। ভোটারদের শতকরা নিরান্নব্বই জনের আস্থা লাভ করেন বলে ঘোষণা আসে। সামরিক ব্যবস্থার রাজনৈতিক রূপান্তর  জেনারেল জিয়া তার সামরিক ব্যবস্থার রাজনৈতিক রূপান্তরের দ্বিতীয় উদ্যোগ হিসেবে ৩ জুন ৭৮ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঘোষণা দেন। জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে জেনারেল জিয়া তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী গণতান্ত্রিক ঐক্যজোট প্রার্থী জেনারেল এম এ জি ওসমানী থেকে এক কোটি ১২ লাখ ৭৮ হাজার ৪০০ ভোট বেশি পান। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবীর ওসমানী পেয়েছিলেন ৪৪ লাখ ৫৫ হাজার ২০০ ভোট। ১২ জুন ১৯৭৮ জিয়াউর রহমান জনগণের সরাসরি ভোটে দেশের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন এবং ২৮ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করেন। ২৮ আগস্ট ১৯৭৮ জাগদল প্রধান বিচারপতি আবদুস সাত্তার সব অঙ্গসংগঠনসহ দলটির বিলুপ্তির ঘোষণা জারি করেন। জাগদল বিলুপ্তির তিন দিন পর ১ সেপ্টেম্বর ঢাকার রমনা গ্রিনে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি গঠনের ঘোষণা দেন নতুন দলটির আহ্বায়ক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। প্রতিষ্ঠার সাথে সাথেই বিএনপি দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়। প্রেসিডেন্ট জিয়া ১৮ ফেব্রুয়ারি ৭৯ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘোষণা করেন। সামরিক শাসনের অধীনে বিরোধী দলগুলো নির্বাচনে অংশ নিতে আপত্তি জানালে সরকার ঘোষণা করেন, সংসদের প্রথম অধিবেশনেরÑ প্রথম সপ্তাহেই সামরিক শাসন তুলে নেয়া হবে। এর সাথে প্রেসিডেন্ট জিয়া আরো কিছু প্রতিশ্রুতি দেন। যেমনÑ ১. সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা এবং তাকে অবশ্যই সংসদের বেশির ভাগ সদস্যের আস্থাভাজন হতে হবে। ২. জাতীয় সংসদের সদস্য নন এমন ব্যক্তিকে ক্যাবিনেটে অন্তর্ভুক্ত করা, যাদের সংখ্যা সংসদ সদস্যদের মন্ত্রীদের এক-পঞ্চমাংশের বেশি হবেন না। ৩. জাতীয় সংসদ প্রেরিত কোনো বিলে প্রেসিডেন্ট ভেটো দিতে পারবেন না। ৪. সংবিধানে কোনো ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হলে কিংবা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পদ্ধতির ক্ষেত্রে কোনোরূপ পরিবর্তন আনতে হলে গণভোট অনুষ্ঠানের প্রয়োজন হবে। (দি বাংলাদেশ টাইমস্, ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭৮)। এ সমঝোতার ফলে ২৯টি রাজনৈতিক দল-উপদল সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়। নির্বাচনী ফলাফলে জিয়ার নবগঠিত বিএনপি পায় ২০৭টি, মালেক উকিলের আওয়ামী লীগ ৩৯টি, মুসলিম লীগ-আইডিএল ২০টি, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১৭টি আসন লাভ করে (সংবাদ ৯ মার্চ ১৯৭৯)। এটা ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচন। সামরিক শাসক জেনারেল জিয়া রূপান্তরপ্রক্রিয়ায় একজন বেসামরিক প্রেসিডেন্ট হিসেবে জাতির সামনে আবির্ভূত হন। ৩০ মে ১৯৮১ চট্টগ্রামের সার্কিট হাউজে রাত যাপনকালে মেজর জেনারেল মঞ্জুরের নেতৃত্বে এক সামরিক অভ্যুত্থানে তিনি শাহাদাত বরণ করেন। অভ্যুত্থান ব্যর্থ হলে ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুস সাত্তার সংবিধান অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বীর উত্তম জিয়াউর রহমান ছিলেন জনগণনন্দিত এক সফল রাষ্ট্রনায়ক। মুক্তিযুদ্ধের এ মহান ঘোষক ৭ নভেম্বর প্রথম যে কাজটি করেন তা ছিল আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর মধ্যে চেইন অব কমান্ড ফিরিয়ে আনা। কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল প্রতিষ্ঠা করা। এই কঠিন ও কঠোর দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তার জীবন এবং প্রেসিডেন্সি বারবার হুমকির মুখোমুখি হয়েছে। দেশমাতৃকার স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে তিনি ছিলেন অত্যন্ত দৃঢ়প্রত্যয়ী। সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে জাতীয় স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব মজবুত করার লক্ষ্যে তিনি দেশের সশস্ত্রবাহিনীকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলেন। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ তত্ত্ব জিয়াকে এ দেশের মানুষের হৃদয়ে চিরঞ্জীব করে রাখবে। একদলীয় বাকশালী শাসনের অবসান করে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালুর মাধ্যমে তিনি গণতন্ত্রকামী মানুষের কাছে স্বাধীন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মানসপুত্রে চিহ্নিত হয়ে থাকবেন। তার গতিশীল পররাষ্ট্রনীতির কারণেই হেনরি কিসিঞ্জারের তলাবিহীন ঝুড়িতে স্থায়ীভাবে তলা লাগাতে সক্ষম হয়েছিলেন। আর তা সম্ভব হয়েছিল মুসলিম দেশগুলোর সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে সেসব দেশে জনশক্তি রফতানির নতুন দিগন্ত উন্মোচনের মাধ্যমে। তার সময়েই আমাদের তৈরী পোশাক ইউরোপ আমেরিকায় রফতানির কার্যকর উদ্যোগ। সাতই নভেম্বরের সিপাহি-জনতার যে স্বতঃস্ফূর্ত অভ্যুত্থান, তা ছিল জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার এক অরাজনৈতিক প্রয়াস। তার প্রতিষ্ঠিত দল তখনো পৃথিবীর আলো দেখেনি। কোনো দলের পক্ষ হয়ে নয়, দেশ ও জনগণ তাদের নিজেদের প্রয়োজনেই জিয়াকে শাসন ক্ষমতার অগ্রভাবে দেখতে চেয়েছিল। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়ার চেয়েও মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক, মুক্তিযোদ্ধা বীর উত্তম জিয়া এবং সাতই নভেম্বরের অবিসংবাদিত নেতা স্বমহিমায় আরো উজ্জ্বল আরো দেদীপ্যমান। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে বিএনপি শুধু নিজেদের দলীয় নেতা হিসেবে চিহ্নিত করতে চাইলে, তা হবে অসম্মানিত করার এক হীনপ্রচেষ্টা। জিয়া গণমানুষের, জিয়া দেশমাতৃকার, জিয়া প্রতিটি দেশপ্রেমিকের।  
কাজী সাইদ

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads