এই লেখাটি লিখছি শুক্রবার ৫ জুন। ছাপা হলো ৮ জুন সোমবার। এর মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকায় আসবেন এবং চলেও যাবেন। মোদির সফরের সর্বশেষ সংবাদ এই কলামে পাঠক ভাইদের কাছে পৌঁছানোর জন্য গতকাল শনিবার বেলা ৪.০০টা পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম। কিন্তু দেখছি যে, বিকাল ৪.০০টা থেকে তাঁর আসল প্রোগ্রাম শুরু হচ্ছে। সুতরাং ইচ্ছা থাকলেও তাঁর সফরের আপডেট দেয়া গেলো না। তবে তাতে পাঠক ভাইয়েরা খুব একটা বঞ্চিত হবেন বলে মনে হয় না। কারণ যে ৩৬ ঘণ্টা তিনি ঢাকায় কাটাবেন তার একটি সংক্ষিপ্তসার পাওয়া গেছে। সেই বিস্তারিত আলোচনায় একটু পরে যাচ্ছি। তার আগে একই প্রসঙ্গে একটু ভিন্ন কথা।
যেভাবে এ সফরটি শুরু হওয়ার কথা ছিল সেটি সেভাবে হলো না। কথা ছিল, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে বাংলাদেশের সীমান্ত সংলগ্ন ৫টি রাজ্য বা প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীরাও ঢাকায় আসবেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে চারজন মুখ্যমন্ত্রী এলেন না। এরা হলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা, আসামের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ ও মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লাল থানওয়ালা। একমাত্র এলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। কিন্তু তার সফরটিও কেমন খাপছাড়া ধরনের। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে আসেননি। এসেছেন একদিন আগে, ৫ জুন রাতে। এক বিমানে আসেননি। ঢাকায় এসে এক হোটেলে তারা থাকেননি। আগে থেকেই প্রোগ্রাম করা ছিল যে, নরেন্দ্র মোদির সফরসঙ্গীরা থাকবেন হোটেল সোনারগাঁয়ে। আসলে প্রধানমন্ত্রীর অন্যান্য সফরসঙ্গী সোনারগাঁয়েই ওঠেন। কিন্তু বেঁকে বসেন মমতা ব্যানার্জী। তিনি বললেন যে, তিনি অন্য কোনো হোটেলে থাকতে চান। সুতরাং তাকে তোলা হলো হোটেল র্যাডিসনে। আরো লক্ষ্য করার বিষয় হলো এই যে, মোদি এবং মমতা এক সাথে এক বিমানে দিল্লী ফিরে যাননি। মমতা গিয়েছেন একদিন আগে, অর্থাৎ ৬ জুন রাতে। আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যাচ্ছেন ৭ জুন।
আসলে মোদির সফরের ছন্দপতনের সূচনা হয় সপ্তাহখানেক আগে থেকেই। সপ্তাহখানেক আগে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ দিল্লীর জওহর লাল নেহেরু ভবনে অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে স্পষ্ট ভাষায় বলেন যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন ঢাকা সফরে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে না। তিনি বলেন যে, বাংলাদেশের সাথে এই চুক্তি স্বাক্ষর করতে হলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে এই চুক্তিতে জড়িত করতে হবে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই চুক্তিতে এখনও সম্মতি দেননি। ঢাকায় নরেন্দ্র মোদি এবং তার বাংলাদেশ কাউন্টার পার্ট তিস্তা চুক্তি নিয়ে রীতিমত যা করলো সেটা ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেয়ার শামিল। মমতা ব্যানার্জী বলেছেন যে, তিস্তার পানি নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের যে দুর্ভোগ সেটা তিনি ভালভাবে অবগত আছেন। তিনিও চান বাংলাদেশের মানুষ পানি পাক। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে বঞ্চিত করে বাংলাদেশের মানুষকে পানি দেবেন কিভাবে।
কল্যাণ রুদ্র নামক পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম শীর্ষ পানি বিশেষজ্ঞকে দিয়ে মমতা ব্যানার্জী একটি কমিশন গঠন করেছিলেন। ওই কমিশন দেখবে যে, পশ্চিম বঙ্গের প্রয়োজন মিটিয়ে তারপর বাংলাদেশকে পানি দেয়া হবে। কল্যাণ রুদ্র রিপোর্ট দাখিল করেছেন। এখন পশ্চিমবঙ্গের কতখানি পানি প্রয়োজন সেটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হচ্ছে। এই পরীক্ষা নিরীক্ষার পর পশ্চিমবঙ্গের প্রয়োজনীয় পানি রেখে অবশিষ্ট পানি বাংলাদেশকে দেয়া হবে। ইতোমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ থেকে বলা হয়েছে ৯ লাখ একর জমির সেচ ব্যবস্থা রাখায় বাড়তি পানি বাংলাদেশকে দেয়া যাবে। এরপর বাংলাদেশের এক ফোঁটা তিস্তায় থাকবে কি না সন্দেহ। অথচ এ ধরনের নীতি আন্তর্জাতিক নদীর পানি বণ্টনের ক্ষেত্রে থাকে না।
মমতার জন্য আরেকটি সমস্যা রয়েছে। সেটি হলো, আগামী বছর অর্থাৎ ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধান সভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যে এলাকা দিয়ে তিস্তার পানি প্রবাহিত হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের পত্রপত্রিকার রিপোর্ট মোতাবেক, ঐ এলাকাটি কংগ্রেস প্রধান। এখন বাংলাদেশকে তিস্তার পানি দিলে ইলেকশনে পশ্চিম বাংলার ভোটারদের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। তাই ঐ নির্বাচন পর্যন্ত দেখতে চান মমতা ব্যানার্জী।
দুই
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই সফরকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলি, বিশেষ করে বিএনপি এবং জামায়াত বিন্দুমাত্র সংকীর্ণতার পরিচয় দেয়নি। তারা বরং এবার যথেষ্ট উদারতার পরিচয় দিয়েছে। সকলেই মোদির বাংলাদেশ সফরকে খোশ আমদেদ জানিয়েছেন। সফরের ফলাফল কি হয় সেটি তিনি চলে গেলে বোঝা যাবে। কিন্তু যতক্ষণ তিনি এখানে আছেন ততক্ষণ বাংলাদেশীদের মধ্যে একটি ঐকমত্য সৃষ্টির চেষ্টা করেছে বিরোধী দল। কিন্তু শাসক দল সেই ঐক্য বিনষ্টের চেষ্টা করেছিল। বেগম খালেদা জিয়া এবং ২০ দল গত নির্বাচন করেনি সত্য, কিন্তু বিএনপি দেশের সবচেয়ে বড় দুটি রাজনৈতিক দলের একটি, এটি তো আর অস্বীকার করা যাবে না। সরকার মোদির সফরকালে নাম সর্বস্ব জাসদের হাসানুল হক ইনু এবং প্যাড সর্বস্ব রাজনৈতিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেননের সাথেও নরেন্দ্র মোদির সাক্ষাতের ব্যবস্থা করেছেন। অথচ বাংলাদেশের তিন বারের প্রধানমন্ত্রী বিএনপি নেত্রী খালেদার সাথে নরেন্দ্র মোদির বৈঠক যাতে না হয় সেজন্য প্রকাশ্যে এবং গোপনে তৎপরতা চালিয়েছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবলু হাসান মাহমুদ আলী গত শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা করেছেন যে, বেগম জিয়ার সাথে মোদির কোনো বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। স্বাভাবিকভাবে এই ঘোষণায় জাতীয়তাবাদী এবং ইসলামী মহলে এক ধরনের অপমানবোধ কাজ করে। কিন্তু বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বক্তব্য খ-ন করে দিল্লী থেকে অপরাহ্ণে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব মি. জয় শংকর স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, রোববার বিকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে বৈঠকে মিলিত হবেন। দিল্লীর এই ঘোষণায় দুর্মুখদের মুখে ছাই পড়েছে।
তিন
নরেন্দ্র মোদির সফরকে বাংলাদেশের সব মহল স্বাগত জানিয়েছে। আমরাও তাকে জানাই খোশ আমদেদ। কিন্তু এই সফরকালে যেসব বিষয়ে বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে সেখানে বাংলাদেশের জন্য কি করা হয়েছে? যাকিছুই হয়েছে সবকিছুই তো ভারতের স্বার্থে হয়েছে। আমরা এক এক করে কয়েকটি উদাহরণ দিচ্ছি:
(১) সবচেয়ে বেশি করে যে বিষয়টি নিয়ে উল্লাস প্রকাশ করা হচ্ছে সেটি হলো স্থল সীমান্ত চুক্তি বা ছিটমহল বিনিময় চুক্তি। এটা নিয়ে এতো হইচই বা উল্লাসের কি আছে? ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তি এ সালেই তো এই চুক্তি বাস্তবায়িত হওয়ার কথা এবং অপদখলীয় ছিটমহলগুলো ন্যায্য মালিকদের দখলে যাওয়ার কথা। কারণ বাংলাদেশ চুক্তিটি ৭৪ সালেই র্যাক্টিফাই করে এবং বেরুবাড়ী তো সেই ৪১ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৭৪ সালেই ভারতকে দিয়েছে। আমাদের অর্থাৎ বাংলাদেশের যেসব ছিটমহল ৪১ বছর আগে পাওয়ার কথা সেগুলো আমরা পেলাম ৪১ বছর পর। শুধু কি আমরাই কয়েকটি ছিটমহল পাচ্ছি? ভারতও তো পাচ্ছে।
(২) এই সীমান্ত চুক্তিকে নরেন্দ্র মোদি বার্লিন প্রাচীরের পতনের সাথে তুলনা করেছেন। তা তিনি করতেই পারেন। তিনি বিষয়টিকে অনতিক্রম্য একটা বাধা হিসেবে বুঝাতেই এই তুলনাটা করেছেন। সীমান্ত চুক্তির মতো বার্লিন প্রাচীরও চারদশকের বেশি সময় পরে ভেঙ্গে দেয়া হয়। তবে সাধারণভাবে বার্লিন প্রাচীরের পতনের ফলে দুই জার্মানী অর্থাৎ দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র এক হয়ে গেছে। কিন্তু মোদির তুলনা দুই বাংলার এক হওয়ার প্রতি অবশ্যই নয়। কারণ কে জানে, কে কার মাঝে মিশে যাবে? দুই বাংলা এক হয়ে কি বৃহত্তর বঙ্গ হিসেবে ভারতের শোভা বর্ধন করবে? নাকি পশ্চিমবঙ্গ ভারত থেকে বেরিয়ে এসে বাংলাদেশের সাথে একাকার হয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বৃহত্তর বঙ্গ গঠন করবে? ১৯৪৭ সালে প-িত নেহেরু দুই বাংলার এক হওয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন।
(৩) ভারত বিভক্ত হয়ে পাকিস্তান হয়। তখন সাবেক পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) কোনো সমুদ্র বন্দর ছিল না। এ জন্য পাকিস্তান সরকার ছয় মাসের জন্য কলকাতা বন্দর ব্যবহারের অনুমতি চায় ভারত সরকারের নিকট। পাকিস্তান সরকার আরও বলে যে, এই ছয় মাস সময়ের মধ্যে চট্টগ্রামে একটি বন্দর নির্মাণ করো হবে। তখন ভারত সরকারের তরফ থেকে বলা হয় যে, ছয় মাস কেন, ছয় ঘণ্টার জন্যও পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশকে কলকাতা বন্দর ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই ভারত চট্টগ্রাম বন্দর ও মংলা বন্দর ব্যবহার করার অনুমতি চেয়ে আসছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তার স্বার্থে এ পর্যন্ত তাকে এই অনুমতি দেয়া হয়নি। কিন্তু এবার মোদি বাংলাদেশে আসার আগেই এই অধিকার পেয়ে গেছে। গত বুধবার ‘ইরাবতী স্টার’ নামে ভারতের একটি ট্রান্সশিপমেন্ট জাহাজ ২৫০টি কন্টেনার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে। বৃহস্পতিবার তারা ৯২টি কন্টেনার খালাস করে বন্দর ত্যাগ করে। এখন আরেকটি ভারতীয় জাহাজ আসবে এবং মাল বোঝাই ঐ কন্টেনারগুলো ভারতের চেন্নাই, কোচিন ও নভোসেবা বন্দরে নিয়ে যাবে।
সেদিন ভারত ছয় ঘণ্টার জন্যও কলকাতা বন্দর ব্যবহার করতে দেয়নি। ভারত কাজটা কি ঠিক করেছিল? যদি ঠিক করে থাকে তাহলে আজ বাংলাদেশ ভারতকে স্থায়ীভাবে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করতে দিচ্ছে কেন?
ইরাবতী জাহাজটি হলোদিয়া বন্দরে যেতে পারলেও নিয়ম অনুযায়ী চেন্নাই, কোচিন ও নভোসেবা বন্দরে যেতে পারবে না। তাই চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে ৯২টি কন্টেনার ট্রান্সশিপমেন্টের আওতায় অন্য একটি জাহাজে করে পণ্যগুলো সেখানে পাঠানো হবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, এক দেশের পণ্য আরেক দেশ ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে নেয়ার নাম ট্রান্সশিপমেন্ট। দীর্ঘদিন চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে ভারতের বিভিন্ন বন্দরে পণ্য নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলে আসছিল দুই দেশেই। সম্প্রতি ভারতের লোকসভায় স্থল সীমান্ত বিল পাস হওয়ার সময়ও ভারতের একাধিক এমপি ভারতীয় পণ্য আনা নেয়ার ক্ষেত্রে ট্রানজিটের আওতায় চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের সুযোগ দেয়ার জোর দাবি জানিয়েছিলেন। এর আগে চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন বন্দরে সরাসরি পণ্য আনা নেয়া হলেও অন্য দেশ থেকে পণ্য নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে ভারতে যাওয়ার নজির এটাই প্রথম। ধারণা করা হচ্ছে, মোদির সফরকে সামনে রেখেই চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্যের ট্রান্সশিপমেন্ট করার সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
(৪) আগরতলা থেকে বাংলাদেশর ওপর দিয়ে কলকাতা এবং কলকাতা থেকে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে আগরতলায় যাতায়াতের বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। এটিও তো ভারতের স্বার্থেই করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঢাকা শিলং গুয়াহাটি বাস সার্ভিসও চালু করা হয়েছে। এটিও ভারতের স্বার্থেই করা হয়েছে।
(৫) খুলনা-মংলা এবং কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলওয়ে সার্ভিস চালু করা হচ্ছে। সেটিও কি ভারতের স্বার্থে নয়?
(৬) বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সন্ত্রাস প্রতিরোধ ও নিরাপত্তা সহযোগিতা সম্পর্কে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটিতেও উপকৃত হবে ভারত। কারণ ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের সাতটি প্রদেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা রয়েছে। বাংলাদেশে এই ধরনের কোনো তৎপরতা নেই।
তালিকা আর দীর্ঘ করবো না। বাংলাদেশ এবারও সবকিছুই দিয়ে দিলো। বিনিময়ে কিছুই পেলো না। তিস্তার পানিও পেলো না। ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনও অমীমাংসিত থেকে গেলো। তিনবিঘা করিডোরের লিজ পেল না বাংলাদেশ, ট্রেড গ্যাপ নিয়ে কোনো কথা হয়নি, ইত্যাদি। এরই নাম কি সার্বভৌম সমতা?
যেভাবে এ সফরটি শুরু হওয়ার কথা ছিল সেটি সেভাবে হলো না। কথা ছিল, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে বাংলাদেশের সীমান্ত সংলগ্ন ৫টি রাজ্য বা প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীরাও ঢাকায় আসবেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে চারজন মুখ্যমন্ত্রী এলেন না। এরা হলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা, আসামের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ ও মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লাল থানওয়ালা। একমাত্র এলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। কিন্তু তার সফরটিও কেমন খাপছাড়া ধরনের। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে আসেননি। এসেছেন একদিন আগে, ৫ জুন রাতে। এক বিমানে আসেননি। ঢাকায় এসে এক হোটেলে তারা থাকেননি। আগে থেকেই প্রোগ্রাম করা ছিল যে, নরেন্দ্র মোদির সফরসঙ্গীরা থাকবেন হোটেল সোনারগাঁয়ে। আসলে প্রধানমন্ত্রীর অন্যান্য সফরসঙ্গী সোনারগাঁয়েই ওঠেন। কিন্তু বেঁকে বসেন মমতা ব্যানার্জী। তিনি বললেন যে, তিনি অন্য কোনো হোটেলে থাকতে চান। সুতরাং তাকে তোলা হলো হোটেল র্যাডিসনে। আরো লক্ষ্য করার বিষয় হলো এই যে, মোদি এবং মমতা এক সাথে এক বিমানে দিল্লী ফিরে যাননি। মমতা গিয়েছেন একদিন আগে, অর্থাৎ ৬ জুন রাতে। আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যাচ্ছেন ৭ জুন।
আসলে মোদির সফরের ছন্দপতনের সূচনা হয় সপ্তাহখানেক আগে থেকেই। সপ্তাহখানেক আগে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ দিল্লীর জওহর লাল নেহেরু ভবনে অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে স্পষ্ট ভাষায় বলেন যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন ঢাকা সফরে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে না। তিনি বলেন যে, বাংলাদেশের সাথে এই চুক্তি স্বাক্ষর করতে হলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে এই চুক্তিতে জড়িত করতে হবে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই চুক্তিতে এখনও সম্মতি দেননি। ঢাকায় নরেন্দ্র মোদি এবং তার বাংলাদেশ কাউন্টার পার্ট তিস্তা চুক্তি নিয়ে রীতিমত যা করলো সেটা ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেয়ার শামিল। মমতা ব্যানার্জী বলেছেন যে, তিস্তার পানি নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের যে দুর্ভোগ সেটা তিনি ভালভাবে অবগত আছেন। তিনিও চান বাংলাদেশের মানুষ পানি পাক। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে বঞ্চিত করে বাংলাদেশের মানুষকে পানি দেবেন কিভাবে।
কল্যাণ রুদ্র নামক পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম শীর্ষ পানি বিশেষজ্ঞকে দিয়ে মমতা ব্যানার্জী একটি কমিশন গঠন করেছিলেন। ওই কমিশন দেখবে যে, পশ্চিম বঙ্গের প্রয়োজন মিটিয়ে তারপর বাংলাদেশকে পানি দেয়া হবে। কল্যাণ রুদ্র রিপোর্ট দাখিল করেছেন। এখন পশ্চিমবঙ্গের কতখানি পানি প্রয়োজন সেটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হচ্ছে। এই পরীক্ষা নিরীক্ষার পর পশ্চিমবঙ্গের প্রয়োজনীয় পানি রেখে অবশিষ্ট পানি বাংলাদেশকে দেয়া হবে। ইতোমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ থেকে বলা হয়েছে ৯ লাখ একর জমির সেচ ব্যবস্থা রাখায় বাড়তি পানি বাংলাদেশকে দেয়া যাবে। এরপর বাংলাদেশের এক ফোঁটা তিস্তায় থাকবে কি না সন্দেহ। অথচ এ ধরনের নীতি আন্তর্জাতিক নদীর পানি বণ্টনের ক্ষেত্রে থাকে না।
মমতার জন্য আরেকটি সমস্যা রয়েছে। সেটি হলো, আগামী বছর অর্থাৎ ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধান সভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যে এলাকা দিয়ে তিস্তার পানি প্রবাহিত হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের পত্রপত্রিকার রিপোর্ট মোতাবেক, ঐ এলাকাটি কংগ্রেস প্রধান। এখন বাংলাদেশকে তিস্তার পানি দিলে ইলেকশনে পশ্চিম বাংলার ভোটারদের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। তাই ঐ নির্বাচন পর্যন্ত দেখতে চান মমতা ব্যানার্জী।
দুই
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই সফরকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলি, বিশেষ করে বিএনপি এবং জামায়াত বিন্দুমাত্র সংকীর্ণতার পরিচয় দেয়নি। তারা বরং এবার যথেষ্ট উদারতার পরিচয় দিয়েছে। সকলেই মোদির বাংলাদেশ সফরকে খোশ আমদেদ জানিয়েছেন। সফরের ফলাফল কি হয় সেটি তিনি চলে গেলে বোঝা যাবে। কিন্তু যতক্ষণ তিনি এখানে আছেন ততক্ষণ বাংলাদেশীদের মধ্যে একটি ঐকমত্য সৃষ্টির চেষ্টা করেছে বিরোধী দল। কিন্তু শাসক দল সেই ঐক্য বিনষ্টের চেষ্টা করেছিল। বেগম খালেদা জিয়া এবং ২০ দল গত নির্বাচন করেনি সত্য, কিন্তু বিএনপি দেশের সবচেয়ে বড় দুটি রাজনৈতিক দলের একটি, এটি তো আর অস্বীকার করা যাবে না। সরকার মোদির সফরকালে নাম সর্বস্ব জাসদের হাসানুল হক ইনু এবং প্যাড সর্বস্ব রাজনৈতিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেননের সাথেও নরেন্দ্র মোদির সাক্ষাতের ব্যবস্থা করেছেন। অথচ বাংলাদেশের তিন বারের প্রধানমন্ত্রী বিএনপি নেত্রী খালেদার সাথে নরেন্দ্র মোদির বৈঠক যাতে না হয় সেজন্য প্রকাশ্যে এবং গোপনে তৎপরতা চালিয়েছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবলু হাসান মাহমুদ আলী গত শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা করেছেন যে, বেগম জিয়ার সাথে মোদির কোনো বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। স্বাভাবিকভাবে এই ঘোষণায় জাতীয়তাবাদী এবং ইসলামী মহলে এক ধরনের অপমানবোধ কাজ করে। কিন্তু বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বক্তব্য খ-ন করে দিল্লী থেকে অপরাহ্ণে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব মি. জয় শংকর স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, রোববার বিকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে বৈঠকে মিলিত হবেন। দিল্লীর এই ঘোষণায় দুর্মুখদের মুখে ছাই পড়েছে।
তিন
নরেন্দ্র মোদির সফরকে বাংলাদেশের সব মহল স্বাগত জানিয়েছে। আমরাও তাকে জানাই খোশ আমদেদ। কিন্তু এই সফরকালে যেসব বিষয়ে বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে সেখানে বাংলাদেশের জন্য কি করা হয়েছে? যাকিছুই হয়েছে সবকিছুই তো ভারতের স্বার্থে হয়েছে। আমরা এক এক করে কয়েকটি উদাহরণ দিচ্ছি:
(১) সবচেয়ে বেশি করে যে বিষয়টি নিয়ে উল্লাস প্রকাশ করা হচ্ছে সেটি হলো স্থল সীমান্ত চুক্তি বা ছিটমহল বিনিময় চুক্তি। এটা নিয়ে এতো হইচই বা উল্লাসের কি আছে? ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তি এ সালেই তো এই চুক্তি বাস্তবায়িত হওয়ার কথা এবং অপদখলীয় ছিটমহলগুলো ন্যায্য মালিকদের দখলে যাওয়ার কথা। কারণ বাংলাদেশ চুক্তিটি ৭৪ সালেই র্যাক্টিফাই করে এবং বেরুবাড়ী তো সেই ৪১ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৭৪ সালেই ভারতকে দিয়েছে। আমাদের অর্থাৎ বাংলাদেশের যেসব ছিটমহল ৪১ বছর আগে পাওয়ার কথা সেগুলো আমরা পেলাম ৪১ বছর পর। শুধু কি আমরাই কয়েকটি ছিটমহল পাচ্ছি? ভারতও তো পাচ্ছে।
(২) এই সীমান্ত চুক্তিকে নরেন্দ্র মোদি বার্লিন প্রাচীরের পতনের সাথে তুলনা করেছেন। তা তিনি করতেই পারেন। তিনি বিষয়টিকে অনতিক্রম্য একটা বাধা হিসেবে বুঝাতেই এই তুলনাটা করেছেন। সীমান্ত চুক্তির মতো বার্লিন প্রাচীরও চারদশকের বেশি সময় পরে ভেঙ্গে দেয়া হয়। তবে সাধারণভাবে বার্লিন প্রাচীরের পতনের ফলে দুই জার্মানী অর্থাৎ দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র এক হয়ে গেছে। কিন্তু মোদির তুলনা দুই বাংলার এক হওয়ার প্রতি অবশ্যই নয়। কারণ কে জানে, কে কার মাঝে মিশে যাবে? দুই বাংলা এক হয়ে কি বৃহত্তর বঙ্গ হিসেবে ভারতের শোভা বর্ধন করবে? নাকি পশ্চিমবঙ্গ ভারত থেকে বেরিয়ে এসে বাংলাদেশের সাথে একাকার হয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বৃহত্তর বঙ্গ গঠন করবে? ১৯৪৭ সালে প-িত নেহেরু দুই বাংলার এক হওয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন।
(৩) ভারত বিভক্ত হয়ে পাকিস্তান হয়। তখন সাবেক পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) কোনো সমুদ্র বন্দর ছিল না। এ জন্য পাকিস্তান সরকার ছয় মাসের জন্য কলকাতা বন্দর ব্যবহারের অনুমতি চায় ভারত সরকারের নিকট। পাকিস্তান সরকার আরও বলে যে, এই ছয় মাস সময়ের মধ্যে চট্টগ্রামে একটি বন্দর নির্মাণ করো হবে। তখন ভারত সরকারের তরফ থেকে বলা হয় যে, ছয় মাস কেন, ছয় ঘণ্টার জন্যও পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশকে কলকাতা বন্দর ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই ভারত চট্টগ্রাম বন্দর ও মংলা বন্দর ব্যবহার করার অনুমতি চেয়ে আসছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তার স্বার্থে এ পর্যন্ত তাকে এই অনুমতি দেয়া হয়নি। কিন্তু এবার মোদি বাংলাদেশে আসার আগেই এই অধিকার পেয়ে গেছে। গত বুধবার ‘ইরাবতী স্টার’ নামে ভারতের একটি ট্রান্সশিপমেন্ট জাহাজ ২৫০টি কন্টেনার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে। বৃহস্পতিবার তারা ৯২টি কন্টেনার খালাস করে বন্দর ত্যাগ করে। এখন আরেকটি ভারতীয় জাহাজ আসবে এবং মাল বোঝাই ঐ কন্টেনারগুলো ভারতের চেন্নাই, কোচিন ও নভোসেবা বন্দরে নিয়ে যাবে।
সেদিন ভারত ছয় ঘণ্টার জন্যও কলকাতা বন্দর ব্যবহার করতে দেয়নি। ভারত কাজটা কি ঠিক করেছিল? যদি ঠিক করে থাকে তাহলে আজ বাংলাদেশ ভারতকে স্থায়ীভাবে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করতে দিচ্ছে কেন?
ইরাবতী জাহাজটি হলোদিয়া বন্দরে যেতে পারলেও নিয়ম অনুযায়ী চেন্নাই, কোচিন ও নভোসেবা বন্দরে যেতে পারবে না। তাই চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে ৯২টি কন্টেনার ট্রান্সশিপমেন্টের আওতায় অন্য একটি জাহাজে করে পণ্যগুলো সেখানে পাঠানো হবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, এক দেশের পণ্য আরেক দেশ ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে নেয়ার নাম ট্রান্সশিপমেন্ট। দীর্ঘদিন চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে ভারতের বিভিন্ন বন্দরে পণ্য নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলে আসছিল দুই দেশেই। সম্প্রতি ভারতের লোকসভায় স্থল সীমান্ত বিল পাস হওয়ার সময়ও ভারতের একাধিক এমপি ভারতীয় পণ্য আনা নেয়ার ক্ষেত্রে ট্রানজিটের আওতায় চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের সুযোগ দেয়ার জোর দাবি জানিয়েছিলেন। এর আগে চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন বন্দরে সরাসরি পণ্য আনা নেয়া হলেও অন্য দেশ থেকে পণ্য নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে ভারতে যাওয়ার নজির এটাই প্রথম। ধারণা করা হচ্ছে, মোদির সফরকে সামনে রেখেই চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্যের ট্রান্সশিপমেন্ট করার সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
(৪) আগরতলা থেকে বাংলাদেশর ওপর দিয়ে কলকাতা এবং কলকাতা থেকে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে আগরতলায় যাতায়াতের বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। এটিও তো ভারতের স্বার্থেই করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঢাকা শিলং গুয়াহাটি বাস সার্ভিসও চালু করা হয়েছে। এটিও ভারতের স্বার্থেই করা হয়েছে।
(৫) খুলনা-মংলা এবং কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলওয়ে সার্ভিস চালু করা হচ্ছে। সেটিও কি ভারতের স্বার্থে নয়?
(৬) বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সন্ত্রাস প্রতিরোধ ও নিরাপত্তা সহযোগিতা সম্পর্কে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটিতেও উপকৃত হবে ভারত। কারণ ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের সাতটি প্রদেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা রয়েছে। বাংলাদেশে এই ধরনের কোনো তৎপরতা নেই।
তালিকা আর দীর্ঘ করবো না। বাংলাদেশ এবারও সবকিছুই দিয়ে দিলো। বিনিময়ে কিছুই পেলো না। তিস্তার পানিও পেলো না। ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনও অমীমাংসিত থেকে গেলো। তিনবিঘা করিডোরের লিজ পেল না বাংলাদেশ, ট্রেড গ্যাপ নিয়ে কোনো কথা হয়নি, ইত্যাদি। এরই নাম কি সার্বভৌম সমতা?
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন