বাংলাদেশের মানুষ বহুদিন পর গত ৯ মার্চ আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠার সুযোগ পেয়েছিল। এর উপলক্ষ তৈরি করেছিলেন এদেশের ক্রিকেটযোদ্ধারা। সেদিন অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডে অনুষ্ঠিত তুমুল উত্তেজনাপূর্ণ এক ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ১৫ রানে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন তারা। ক্রিকেটযোদ্ধাদের এই সাফল্যে সমগ্র বাংলাদেশ আনন্দে ফেটে পড়েছিল, ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ স্লোগানে উচ্চকিত হয়ে উঠেছিল। পরদিন রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সারা দেশে আনন্দ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষিত হয়েছিল। কোথাও কোথাও আনন্দ মিছিল হয়েছেও। কিন্তু সে মিছিল স্বতঃস্ফূর্ত ও বাধাহীন হতে পারেনি। বাধাগ্রস্ত হয়েছে; বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মিছিলগুলো। প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, ক্ষমতাসীনরা নিজেরা মিছিল করলেও রাজধানীর কোনো এলাকায়ই বিএনপি ও জামায়াতকে আনন্দ মিছিল করতে দেয়া হয়নি। পুলিশ বরং প্রতিটি মিছিলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে, মিছিলে আগত নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করেছে। আনন্দ মিছিল করতে গিয়ে শাহবাগ এলাকায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাসানুল বান্নাসহ তিন ছাত্র গ্রেফতার হয়েছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান অফিসের সামনে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে লেখা ব্যানার টাঙাতে গেলে গ্রেফতার করা হয় ছাত্রদলের ক্রীড়াবিষয়ক সহ-সম্পাদক রায়হান আমিনকে। তার হাতে তখন জাতীয় পতাকাও ছিল। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন থেকে বের হওয়া ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের একটি মিছিলকেও পুলিশ ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। বিজয়নগর, পুরানা পল্টন, মোহাম্মদপুর, বাংলামোটর, হাতিরপুল, ইন্দিরা রোড, শেরেবাংলা নগর, মিরপুরসহ রাজধানীর কোনো এলাকায়ই বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী এবং ছাত্রদল ও ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ দল দুটির কোনো অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠনকে মিছিল করতে দেয়া হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল কর্মীরাও আনন্দ মিছিল করতে পারেননি। একইভাবে প- হয়ে গেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর আশপাশের এলাকাগুলোর আনন্দ মিছিল বের করার চেষ্টা। পুলিশ ধাইয়ে বেড়াচ্ছিল বলে অনেক এলাকায় ছাত্রদল ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে হরতালের সময়ের মতো ‘ঝটিকা মিছিল’ করতে হয়েছে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপি-জামায়াত সমর্থক সাংবাদিকরা কয়েক মিনিটের জন্য ছোট্ট একটি মিছিল করতে পারলেও সে মিছিলটিকে সামান্য এগিয়ে কদম ফোয়ারার সামনে থেকে ফিরে আসতে হয়েছে।
রাজধানীতে শুধু নয়, দেশের অন্য সব স্থানেও বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীকে একইভাবে বাধা ও ধাওয়া দেয়া হয়েছে। সে কারণে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল ও রংপুরে দল দুটি কোনো আনন্দ মিছিলই করতে পারেনি। ফরিদপুর, বগুড়া, নীলফামারী, পিরোজপুর, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ ও সিরাজগঞ্জের মতো কিছু কিছু এলাকায় মিছিল করতে পারলেও পরদিনই তার খেসারত দিতে হয়েছে; যেমন নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির খোকনকে একটি মিথ্যা মামলার প্রধান আসামী করেছে পুলিশ। অন্য অনেক এলাকায়ও নতুন মামলার হিড়িক পড়ে গেছে। মামলাগুলোয় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সেই সব নেতাকে আসামী করা হয়েছে, যারা আনন্দ মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এ থেকেও সরকারের মনোভাব সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া গেছে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অবশ্য আওয়ামী লীগের যথার্থ প্রতিনিধির ভূমিকাই পালন করেছেন। জামায়াতের নাম উল্লেখ না করে সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, তারা নাকি বিএনপিকে মিছিল করতে না-ও করেননি, বাধাও দেননি! চমৎকার যুক্তি ও জবাবই বটে! অন্যদিকে আওয়ামী লীগ এবং তার নানা নামের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর বেলায় কিন্তু সীমা ছাড়ানো উদারতা দেখিয়েছে সরকার। জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে জিপিও হয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ পর্যন্ত পুরো এলাকায় দফায় দফায় আনন্দ মিছিল করেছে তারা। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিজেও তেজগাঁও এলাকায় একটি মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ক্ষমতাসীনদের প্রতিটি মিছিলেরই পাহারায় নিয়োজিত ছিল শত শত পুলিশ।
আমরা সরকারের এই মনোভাব ও কার্যক্রমকে হীনমন্যতা বলেই মনে করি। কারণ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের গৌরবোজ্জ্বল বিজয় শুধু সরকার কিংবা কোনো দলের নয়, এ বিজয় সমগ্র জাতির। একই কারণে আনন্দ-উল্লাস করার অধিকারও সমানভাবে সবার। কিন্তু বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মতো প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে বাধা দেয়ার এবং পুলিশকে দিয়ে লাঠিপেটা করানোর মাধ্যমে ক্ষমতাসীনরা অমন একটি উপলক্ষকেও কুক্ষিগত করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন। অন্যদিকে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট নিয়েছিল প্রকৃত দেশপ্রেমিকের অবস্থান। জোটের পক্ষ থেকে ১০ মার্চ ১২ ঘণ্টার জন্য হরতাল শিথিল করা হয়েছিল, জনগণ যাতে আনন্দ মিছিল ও বিজয়োল্লাস করতে পারে। কথা শুধু এটুকুই নয়। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জয়ের ফলে জাতীয় ঐক্যের যেমন প্রকাশ ঘটেছিল, তেমনি সৃষ্টি হয়েছিল চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার জন্য চমৎকার এক সুযোগেরও। সদিচ্ছা থাকলে ক্ষমতাসীনরা এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারতেন। কিন্তু জাতির দুর্ভাগ্যই বলতে হবে, সরকারের পক্ষ থেকে যথারীতি বিপরীত এবং ন্যক্কারজনক পদক্ষেপই নেয়া হয়েছে। ক্ষমতাসীনরা জাতীয় সাফল্য ও আনন্দের একটি দুর্লভ উপলক্ষকেও নস্যাৎ করে দিয়েছেন। আমরা সরকারের এই হীনমন্যতার এবং ফ্যাসিস্ট কর্মকা-ের বিরুদ্ধে নিন্দা জানাই।
রাজধানীতে শুধু নয়, দেশের অন্য সব স্থানেও বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীকে একইভাবে বাধা ও ধাওয়া দেয়া হয়েছে। সে কারণে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল ও রংপুরে দল দুটি কোনো আনন্দ মিছিলই করতে পারেনি। ফরিদপুর, বগুড়া, নীলফামারী, পিরোজপুর, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ ও সিরাজগঞ্জের মতো কিছু কিছু এলাকায় মিছিল করতে পারলেও পরদিনই তার খেসারত দিতে হয়েছে; যেমন নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির খোকনকে একটি মিথ্যা মামলার প্রধান আসামী করেছে পুলিশ। অন্য অনেক এলাকায়ও নতুন মামলার হিড়িক পড়ে গেছে। মামলাগুলোয় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সেই সব নেতাকে আসামী করা হয়েছে, যারা আনন্দ মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এ থেকেও সরকারের মনোভাব সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া গেছে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অবশ্য আওয়ামী লীগের যথার্থ প্রতিনিধির ভূমিকাই পালন করেছেন। জামায়াতের নাম উল্লেখ না করে সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, তারা নাকি বিএনপিকে মিছিল করতে না-ও করেননি, বাধাও দেননি! চমৎকার যুক্তি ও জবাবই বটে! অন্যদিকে আওয়ামী লীগ এবং তার নানা নামের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর বেলায় কিন্তু সীমা ছাড়ানো উদারতা দেখিয়েছে সরকার। জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে জিপিও হয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ পর্যন্ত পুরো এলাকায় দফায় দফায় আনন্দ মিছিল করেছে তারা। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিজেও তেজগাঁও এলাকায় একটি মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ক্ষমতাসীনদের প্রতিটি মিছিলেরই পাহারায় নিয়োজিত ছিল শত শত পুলিশ।
আমরা সরকারের এই মনোভাব ও কার্যক্রমকে হীনমন্যতা বলেই মনে করি। কারণ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের গৌরবোজ্জ্বল বিজয় শুধু সরকার কিংবা কোনো দলের নয়, এ বিজয় সমগ্র জাতির। একই কারণে আনন্দ-উল্লাস করার অধিকারও সমানভাবে সবার। কিন্তু বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মতো প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে বাধা দেয়ার এবং পুলিশকে দিয়ে লাঠিপেটা করানোর মাধ্যমে ক্ষমতাসীনরা অমন একটি উপলক্ষকেও কুক্ষিগত করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন। অন্যদিকে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট নিয়েছিল প্রকৃত দেশপ্রেমিকের অবস্থান। জোটের পক্ষ থেকে ১০ মার্চ ১২ ঘণ্টার জন্য হরতাল শিথিল করা হয়েছিল, জনগণ যাতে আনন্দ মিছিল ও বিজয়োল্লাস করতে পারে। কথা শুধু এটুকুই নয়। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জয়ের ফলে জাতীয় ঐক্যের যেমন প্রকাশ ঘটেছিল, তেমনি সৃষ্টি হয়েছিল চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার জন্য চমৎকার এক সুযোগেরও। সদিচ্ছা থাকলে ক্ষমতাসীনরা এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারতেন। কিন্তু জাতির দুর্ভাগ্যই বলতে হবে, সরকারের পক্ষ থেকে যথারীতি বিপরীত এবং ন্যক্কারজনক পদক্ষেপই নেয়া হয়েছে। ক্ষমতাসীনরা জাতীয় সাফল্য ও আনন্দের একটি দুর্লভ উপলক্ষকেও নস্যাৎ করে দিয়েছেন। আমরা সরকারের এই হীনমন্যতার এবং ফ্যাসিস্ট কর্মকা-ের বিরুদ্ধে নিন্দা জানাই।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন