টেন্ডার জমা দেয়াকে কেন্দ্র করে আবারও সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ক্যাডাররা। দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি শুধু নয়, বন্দুক যুদ্ধ যেমন হয়েছে তেমনি ঘটেছে বোমার বিস্ফোরণও। এতে অন্তত তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে, আহতদের সংখ্যাও অনেক। এবারের ঘটনাস্থল রাজধানীর সচিবালয়ের পাশে অবস্থিত বিদ্যুৎ ভবন। প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি ডিপিডিসির অধীনে মাদারটেক ও তেজগাঁও সাব-স্টেশন সম্প্রসারণের জন্য ৭৩ লাখ টাকার টেন্ডার জমা দেয়ার শেষদিন ছিল মঙ্গলবার। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান টেন্ডার জমাও দিয়েছিল। কিন্তু বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগর আওয়ামী লীগের এক বিশিষ্ট নেতার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে টেন্ডার জমা দিতে এলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কিছু সন্ত্রাসী তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। শুরু হয়ে যায় সংঘর্ষ, যা পরে বন্দুকযুদ্ধের রূপ নেয়। বিদ্যুৎ ভবনের পার্কিং এরিয়ায় থাকা কয়েকটি গাড়ির কাঁচ ভেঙে গেছে সন্ত্রাসীদের গুলিতে। সচিবালয়ের পরিবহন পুলের সামনে দুটি এবং পাঁচ নম্বর গেটের ভেতরে একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। বন্দুকযুদ্ধ চলাকালে পুলিশকে তৎপর দেখা যায়নি। পরে তৎপর হলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি। সন্ত্রাসীরা বরং পুলিশের সামনে দিয়েই বুক ফুলিয়ে চলে গেছে। উল্লেখ্য, টেন্ডার নিয়ে এর আগেও দেশের বহুস্থানে সংঘাত ও বন্দুকযুদ্ধ এমনকি প্রাণহানি পর্যন্ত ঘটেছে। বস্তুত আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই টেন্ডারবাজি এক ভয়ংকর চেহারা নিয়েছে। এমন কোনো মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং দেশের এলাকার কথা বলা যাবে না, যেখানে প্রকৃত ঠিকাদার বা ব্যবসায়ীদের পক্ষে বাধাহীনভাবে টেন্ডার জমা দেয়া এবং কাজ পাওয়া সম্ভব হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই অস্ত্রবাজি করেছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ক্যাডাররা। কখনো তারা নিজেরাই ঠিকাদার সেজে টেন্ডার জমা দিয়ে কাজ বাগিয়ে নিয়েছে এবং পরে সেই কাজ ঠিকাদারদের কাছে বিক্রি করেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আবার নিজেরা কাজ করতে গিয়ে হরিলুটের অভিযান চালিয়েছে। ফলে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। সব মিলিয়ে পরিস্থিতির এতটাই অবনতি ঘটে চলেছে যে, অর্থমন্ত্রী পর্যন্ত বহুবার প্রকল্পের ব্যর্থতার জন্য দলীয় লোকজনদের দায়ী করেছেন। ক্ষমতাসীনরাও মন্দ দেখাননি। দলীয় লোকজনের পকেট ভারি করার এবং দলের তহবিল ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে তোলার জন্য তারা আট কোটি টাকা পর্যন্ত কাজ বিনা টেন্ডারে দেয়ার আইন করেছেন। এরই পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী আবার ডিজিটালকরণের নামে ই-টেন্ডার পদ্ধতি প্রবর্তন করার ঘোষণাও দিয়েছেন। যার অর্থ, টেন্ডার আর কাগজেপত্রে জমা দিতে হবে না। ইন্টারনেট তথা অনলাইনের মাধ্যমে জমা দিলেই চলবে। রীতিমতো জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান করে ই-টেন্ডারিং-এর এই প্রকল্প উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটা ২০১১ সালের জুন মাসের কথা। কিন্তু ওই ঘোষণার মধ্যেই বিষয়টি এখনো আটকে আছে। টেন্ডার জমা দেয়ার কাজ চলছে আগের মতো অ্যানালগ পদ্ধতিতেই। ফলে সংঘাতও বেড়ে চলেছে, যার সর্বশেষ প্রমাণ পাওয়া গেলো বিদ্যুৎ ভবনে।
ঘটনার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি আমরা মনে করি, টেন্ডারবাজির এই কর্মকান্ড বন্ধ করা না গেলে দেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো তো বাধাগ্রস্ত হতে থাকবেই, একই সঙ্গে জনগণের ট্যাক্সের টাকার হবিলুটও চলতে থাকবে অপ্রতিহত গতিতে। বাস্তবে সেটা চলছেও। বড়কথা, এর ফলে প্রকৃত ঠিকাদার-ব্যবসায়ীরা হয় সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত হচ্ছেন নয়তো ক্ষমতাসীনদের কমিশন দিতে গিয়ে তাদের লাটে উঠতে হচ্ছে। অন্যদিকে টেন্ডারবাজিতে আওয়ামী লীগের পাশাপাশি যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী-ক্যাডাররাও সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ঘটনাক্রমে দল থেকে বহিষ্কার করার এবং মাঝে-মধ্যে লোক দেখানো ধমক দেয়ার বাইরে তাদেও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেননি ক্ষমতাসীনরা। অন্যদিকে নেতাদের মনের কথা জানে বলে টেন্ডারবাজ ক্যাডাররা বহিষ্কার ধরনের কোনো পদক্ষেপকেই পাত্তা দেয়নি। এখনো দিচ্ছে না বলেই রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে বন্দুকযুদ্ধ সংঘটিত হতে পেরেছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, ক্ষমতাসীনদের মদত ও যোগসাজশ না থাকলে তাদের পক্ষে এভাবে টেন্ডারবাজি করতে পারার কথা নয়। টেন্ডারবাজরা পুলিশের সঙ্গেও ‘রফা’ করে নিয়েছে। কমিশনের ‘ভাগ’ চলে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন অনেক নেতার পকেটেও। অর্থাৎ একটা সামগ্রিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে চলছে বলেই টেন্ডারবাজির বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীনরা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। র্যাব ও পুলিশের মতো বাহিনীগুলোও আসল সময়ে নীরব দর্শক হয়ে বসে থাকছে। ফলে টেন্ডারবাজি কেবল বাড়ছেই। এমনকি বন্দুকযুদ্ধ ও মানুষের প্রাণহানির মাধ্যমে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার পরও সরকারকে কখনো নড়াচড়া করতে দেখা যায়নি। এখনো দেখা যাচ্ছে না। আমরা মনে করি, সরকারের উচিত এসব বিষয়ে এখনই মনোযোগ দেয়া, সতর্ক হওয়া এবং বিশেষ করে ছাত্রলীগ ও যুবলীগসহ আওয়ামী টেন্ডারবাজ-সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য প্রতিহত করা।
ঘটনার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি আমরা মনে করি, টেন্ডারবাজির এই কর্মকান্ড বন্ধ করা না গেলে দেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো তো বাধাগ্রস্ত হতে থাকবেই, একই সঙ্গে জনগণের ট্যাক্সের টাকার হবিলুটও চলতে থাকবে অপ্রতিহত গতিতে। বাস্তবে সেটা চলছেও। বড়কথা, এর ফলে প্রকৃত ঠিকাদার-ব্যবসায়ীরা হয় সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত হচ্ছেন নয়তো ক্ষমতাসীনদের কমিশন দিতে গিয়ে তাদের লাটে উঠতে হচ্ছে। অন্যদিকে টেন্ডারবাজিতে আওয়ামী লীগের পাশাপাশি যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী-ক্যাডাররাও সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ঘটনাক্রমে দল থেকে বহিষ্কার করার এবং মাঝে-মধ্যে লোক দেখানো ধমক দেয়ার বাইরে তাদেও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেননি ক্ষমতাসীনরা। অন্যদিকে নেতাদের মনের কথা জানে বলে টেন্ডারবাজ ক্যাডাররা বহিষ্কার ধরনের কোনো পদক্ষেপকেই পাত্তা দেয়নি। এখনো দিচ্ছে না বলেই রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে বন্দুকযুদ্ধ সংঘটিত হতে পেরেছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, ক্ষমতাসীনদের মদত ও যোগসাজশ না থাকলে তাদের পক্ষে এভাবে টেন্ডারবাজি করতে পারার কথা নয়। টেন্ডারবাজরা পুলিশের সঙ্গেও ‘রফা’ করে নিয়েছে। কমিশনের ‘ভাগ’ চলে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন অনেক নেতার পকেটেও। অর্থাৎ একটা সামগ্রিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে চলছে বলেই টেন্ডারবাজির বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীনরা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। র্যাব ও পুলিশের মতো বাহিনীগুলোও আসল সময়ে নীরব দর্শক হয়ে বসে থাকছে। ফলে টেন্ডারবাজি কেবল বাড়ছেই। এমনকি বন্দুকযুদ্ধ ও মানুষের প্রাণহানির মাধ্যমে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার পরও সরকারকে কখনো নড়াচড়া করতে দেখা যায়নি। এখনো দেখা যাচ্ছে না। আমরা মনে করি, সরকারের উচিত এসব বিষয়ে এখনই মনোযোগ দেয়া, সতর্ক হওয়া এবং বিশেষ করে ছাত্রলীগ ও যুবলীগসহ আওয়ামী টেন্ডারবাজ-সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য প্রতিহত করা।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন