মঙ্গলবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১২

এরা কি তাহলে দেশটাকেই গিলে ফেলবে?



প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশীদ খান
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনাটি ঘটেছে সম্প্রতি সোনালী ব্যাংকের ঢাকাস্থ রূপসী বাংলা শাখায়। জালিয়াতির মাধ্যমে এই অর্থ আত্মসাতের পরিমাণ সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকারও বেশি, যা ‘হলমার্ক’ নামে একটি অখ্যাত প্রতিষ্ঠান ক্ষমতাধর কিছু ব্যক্তির যোগসাজশে হাতিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশে এর আগে বিভিন্ন সময় ঋণের নামে অর্থ আত্মসাতের অনেক ঘটনা ঘটলেও অর্থের বিচারে এটি সর্ববৃহত্। দেশে একটি ব্যাংকের একটি শাখা থেকে এত বড় জালিয়াতির পরও সরকারের দায়িত্বশীল মহল বিশেষ করে অর্থমন্ত্রীর অসংলগ্ন বক্তব্য সারাদেশে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় তুলেছে। ঘটনা প্রকাশের পর বাংলাদেশ ব্যাংক যখন সোনালী ব্যাংকের পরিচালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলল, অর্থমন্ত্রী তখন বলেছিলেন—‘ব্যাংকের এমন কর্মকাণ্ডে নাক গলানো বাংলাদেশ ব্যাংকের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না।’ অথচ ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৬(৬) ধারায় বলা আছে, ‘সরকার কর্তৃক মনোনীত বা নিযুক্ত কোন চেয়ারম্যান, পরিচালক বা প্রধান নির্বাহীর আচরণ সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের নিকট কোন প্রতিবেদন পেশ করিলে সরকার উহা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করিবে।’ দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার কথা বলে যারা ক্ষমতায় এসেছিলেন সে সরকারের অনেক মন্ত্রী, উপদেষ্টা, নেতা ও কর্মী এখন দুর্নীতি, ব্যর্থতা, লুটপাট, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ বাণিজ্য, ভর্তি বাণিজ্য, দখল বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত। দুর্নীতি ও ব্যর্থতার ভার অন্যের ওপর চাপানোর জন্য প্রায়ই তারা অসংলগ্ন বক্তব্য প্রদান করে থাকেন।
হলমার্ক কেলেঙ্কারির কথায় ফিরে আসি। হলমার্কের এমডি তানভীর মাহমুদের কর্মজীবন শুরু হয় বাবার সঙ্গে তৈজসপত্রের ব্যবসা দিয়ে। লেখাপড়া এসএসসির নিচে। তার উত্থান রূপকথার গল্পের মতো। কী এমন জাদুর কাঠির স্পর্শে বা কার আশীর্বাদে তিনি হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেলেন তা কারোরই বোধগম্য নয়। তবে জানা যায়, তার অফিসে মাথার ওপর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী সাহেবের ছবিখানা ঝুলানো আছে। আমরা সাধারণত আমাদের মা-বাবা, প্রিয়জন, পরম পূজনীয় মহাপুরুষ, ব্যক্তিত্ব বা এরকম কারও ছবিই বসার ঘরে বা অফিসে ঝুলিয়ে রাখি। মোদাচ্ছের সাহেব আসলে তানভীরের এরকম কেউই নন কিংবা তিনি নন কোনো উল্লেখযোগ্য মহাপুরুষও। তিনি সেই মোদাচ্ছের সাহেব যিনি বছর দুই আগে ফরিদপুরে এক ভরা জনসভায় ঘোষণা দেন যে, ‘ছাত্রলীগ ছাড়া কাউকে চাকরি দেয়া হবে না।’ হলমার্ক কেলেঙ্কারির মূল হোতা হিসেবে মোদাচ্ছের আলীর নাম এলে তিনি তা অস্বীকার করেন এবং বলেন, এলাকার লোকজনের সঙ্গে দেখা করার জন্য তিনি রূপসী বাংলা হোটেলে যেতেন। একজন উপদেষ্টার হাতে এত সময় যে একটি হোটেলে তার এলাকার যেসব লোক কাজ করে তাদের সঙ্গে তিনি নিয়মিত দেখা করতেন! কালিমালিপ্ত এই হলমার্কের এমডির বাসায় সরকারের এই উপদেষ্টা দাওয়াত খান ‘সৌজন্যমূলক’ কারণে। মাননীয় উপদেষ্টার এ অসংলগ্ন কথাগুলো যে চরম হাস্যকর, এটুকু বোঝার ক্ষমতাও যেন তার নেই।
একথা বুঝতে খুব বড় পণ্ডিত হওয়ার দরকার পড়ে না যে, ওই সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার একটা বড় অংশ এরই মধ্যে রাজনীতিক আর ক্ষমতাসীন দলের লোকদের ঘুষের খাতায় চলে গেছে। সুতরাং এই টাকা সম্পূর্ণ ফেরত পাওয়ার কোনো আশা নেই। টাকা আদায়ের পদক্ষেপ হিসেবে এই অর্থ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত ব্যাংকের কিছু সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কিন্তু ঘটনার নায়ক-মহানায়করা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। বরখাস্ত হওয়া এসব চুনোপুঁটি কর্মকর্তা-কর্মচারীর কেউ কেউ পাতিলের তলানি চাটার সুযোগ পেলেও ক্ষমতাবান লুটেরাদের বাঁচাতে এদের বলির পাঁঠা করা হয়েছে। কারণ টাকার অংকই বলে দেয়, এত বড় জালিয়াতি সরকারের উচ্চ মহলের সংশ্লিষ্টতা ছাড়া সামান্য এই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষে অসম্ভব। সারাদেশের মানুষ এরই মধ্যে জেনে গেছে কারা এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ্তুঋধঃ ঈধঃ্থ। তানভীর মাহমুদ অর্থনীতি, ব্যাংকিং কিংবা ফিন্যান্সে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জনকারী পণ্ডিত নন যে নিজের পাণ্ডিত্য দিয়ে সব মহলের চোখে ধুলা দিয়ে তিনি এতবড় জালিয়াতি করবেন। নিঃসন্দেহে অনেক পদস্থ ব্যাংক কর্মকর্তাসহ সরকারের উপরমহলের অনেকের অভিজ্ঞতার রশ্মিতে বর্ণিল এই আলোচিত জালিয়াতি। যে দেশের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ এখনও চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে, পেটের ভাত জোগাতেই যাদের দিন পার হয়ে যায়—তাদের কাছে এত টাকা রূপকথার গল্পের মতো। যেখানে একজন ইউপি মেম্বারের ৫ কেজি ভিজিডির চাল চুরির অপরাধে জেল-জরিমানা হয়, ১০ হাজার টাকা ঋণের দায়ে একজন বৃদ্ধ গরিব মুক্তিযোদ্ধা কৃষককে কোমরে দড়ি বেঁধে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা চুরিতে সাময়িক বরখাস্ত কোনো শাস্তি হতে পারে না। ৫ কেজি চাল চুরি ্তুঘববফ ইধংবফ ঈড়ত্ত্ঁঢ়ঃরড়হ্থ, কিন্তু সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা চুরি ্তুএত্ববফ ইধংবফ ঈড়ত্ত্ঁঢ়ঃরড়হ্থ। ্তুএত্ববফ ইধংবফ ঈড়ত্ত্ঁঢ়ঃরড়হ্থ-এর শাস্তি হওয়া উচিত দৃষ্টান্তমূলক। তা না হলে দেশে দুর্নীতি কমবে কী করে? ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অজ্ঞাতে এক কোটি টাকার ওপর কোনো প্রকল্প পাস হয় না। রাজনৈতিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত এসব পরিচালনা পর্ষদের সংশ্লিষ্টতা ছাড়া এরকম হাজার হাজার কোটি টাকার সমুদ্র চুরি অবান্তর।
গত ০৪-০৯-২০১২ তারিখে অর্থমন্ত্রী অত্যন্ত ক্ষুব্ধ ও রাগান্বিত স্বরে বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতে আমরা ৪০ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেই। এর মধ্যে মাত্র তিন বা চার হাজার কোটি টাকা নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। এটা কোনো বড় অংকের অর্থ নয়, এ নিয়ে হইচই করারও কিছু নেই...।’ যদিও তিনি এরই মধ্যে তার ভুলের জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন তবুও এটা স্পষ্ট যে, অর্থমন্ত্রীর এই বক্তব্য দুটো অর্থ বহন করে। প্রথমত, দেশে যে পরিমাণ দুর্নীতি বা অর্থ লুটপাট হচ্ছে সে তুলনায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা কোনো বড় অংকের অর্থ নয়। আর দ্বিতীয়ত, মন্ত্রী চাচ্ছেন এই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতরা যে তেমন কোনো অপরাধ করেনি সেটা জনগণকে বোঝাতে। গত কয়েক বছরে দেশের শেয়ারবাজার থেকে সাধারণ মানুষের ৭০-৮০ হাজার কোটি টাকা লুটপাট, ডেসটিনি এবং ইউনিপেটুর মাধ্যমে জনসাধারণের হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাত্, কুইক রেন্টালের নামে ৩ টাকার বিদ্যুত্ ১৪ টাকায় বিক্রি করে সাধারণ জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা পকেট থেকে কেড়ে নেয়া, পদ্মা সেতু দুর্নীতি, রেলের বস্তাভর্তি টাকা কেলেঙ্কারিসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ অর্থনৈতিকভাবে যখন চরম দিশেহারা—তখন অর্থমন্ত্রীর এমন বক্তব্য দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সঙ্গে নিষ্ঠুর রসিকতা ছাড়া আর কিছুই নয়। মাননীয় অর্থমন্ত্রী বলেছেন, এই জালিয়াতির সঙ্গে সরকার জড়িত নয়। উপদেষ্টা মোদাচ্ছের সাহেব তাহলে কি সরকারের বাইরের কেউ? এসব লুটপাট, আত্মসাত্ ও জালিয়াতির ঘটনার দায় অর্থমন্ত্রী এড়াতে পারেন না কারণ এদেশের অর্থ সংক্রান্ত সব দায়-দায়িত্ব তারই। মন্ত্রী কি জানেন, চার হাজার কোটি টাকা দিয়ে জনপ্রতি বিশ হাজার টাকা হিসেবে বিশ লাখ হতদরিদ্র মানুষকে স্বাবলম্বী করা সম্ভব?
এদেশের লাখ লাখ কৃষক, মজুর, জনতা, ছাত্রের বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে, অগণিত মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আজ আমাদের এই স্বাধীন বাংলাদেশ। যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে মানুষের স্বপ্ন ছিল প্রতিনিধিত্বমূলক রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা, অর্থনীতির বিকাশ এবং অসাম্প্রদায়িক সমাজ ব্যবস্থার। মুক্তিযুদ্ধের যারা বিরুদ্ধাচরণ করেছিল তারা ঘৃণিত রাজাকার। রাজাকারদের সে ইতিহাস অতীত। আজ এই স্বাধীন দেশে ক্ষমতার আসনে বসে যারা এগুলোর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, তাদের কর্মকাণ্ড আর রাজাকারদের কর্মকাণ্ডে তফাত্ কোথায়?
এদেশের সাধারণ মানুষ এতই অভাগা যে যুবক, ডেসটিনি, ইউনিপেটু, শেয়ারবাজার কিংবা ব্যাংক জালিয়াতি—প্রতি ক্ষেত্রেই টাকা আত্মসাতের পর তারা জানতে পারে লুটেরারা তাদের টাকা নিয়ে গেল। প্রতিটি ঘটনাই অস্বাভাবিক এবং অবিশ্বাস্য। তার পরও একটার পর একটা ঘটনা ঘটেই চলছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় না যে এদেশে কোনো সরকার আছে বা সরকারের এসব ঘটনার কোনো একটি নিয়েও বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা আছে। কী বিচিত্র আমাদের এই দেশ! এখানে একটি ঘটনা ঘটার পর কিছুদিন আইন-শৃংখলা বাহিনীসহ অন্য সব দায়িত্বশীল মহল কিছুটা তত্পরতা দেখায়। সরকারের তরফ থেকে মন্ত্রীরা প্রায়ই কিছু অসংলগ্ন কথা বলে প্রতিটি ঘটনাই আরও ঘোলাটে করে ফেলেন। মানুষের দৃষ্টি তখন মূল ঘটনা থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়। আর সরকার এই ঘটনার কূল-কিনারা করার আগেই ঘটে যায় আরও বড় কোনো ঘটনা। হাজার হাজার কোটি টাকা জালিয়াতির পরও যদি সরকারের টনক না নড়ে তাহলে মানুষের সম্পদের নিরাপত্তা কোথায়? দেশের বর্তমান অবস্থায় যদি কোনোদিন শোনা যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ টাকাটাও জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাত্ করা হয়েছে, তাতেও কি অবাক হওয়ার কিছু থাকবে? আমরা যদি বর্তমান সময়ের সবচেয়ে দুর্বল অথচ রাষ্ট্রযন্ত্র দ্বারা নিগৃহীত, লাঞ্ছিত, অপমানিত এবং নিষ্পেষিত মানুষটির কথা বলি তাহলে সে নিশ্চয়ই ‘ঝালকাঠির লিমন’। আর যদি সবচেয়ে সফল, ক্ষমতাধর অথচ রাষ্ট্রযন্ত্র দ্বারা চরমভাবে অপমানিত এবং লাঞ্ছিত মানুষটির কথা বলি তাহলে তিনি হলেন নোবেল বিজয়ী ‘প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস’। একথার মানে দাঁড়ায় যে, এই রাষ্ট্রযন্ত্র সমাজের দুর্বলতম মানুষ থেকে শুরু করে সফলতম মানুষকে নানা কায়দায় হয়রানি ও অপমানিত করছে। সে রাষ্ট্রব্যবস্থায় আপনার-আমার মতো সাধারণ মানুষের জান-মালের আদৌ কোনো নিরাপত্তা আছে কি?
অভিজ্ঞ মহল মনে করেন, হলমার্ক কেলেঙ্কারি ব্যাংকিং খাতে লুটপাটের অগণিত ঘটনার মধ্যে একটিমাত্র। বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত প্রতিটি ব্যাংকে তদন্ত করে প্রকৃত তথ্য উদঘাটন করে জনসমক্ষে উন্মোচন করা। লুটেরাদের কাছ থেকে আত্মসাত্ করা মেহনতি জনগণের তিলে তিলে জমানো অর্থ জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেয়া সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। দেশের ব্যাংকিং খাতের সবচেয়ে বড় দুর্নীতি ধরা পড়ার মাত্র কয়েকদিনের মাথায় সব ব্যাংকের চেয়ারম্যানদের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানো হয়। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, ব্যাংকিং খাতের এরকম দুর্নীতিকে অকুণ্ঠ সহযোগিতার জন্য চেয়ারম্যানদের তিরস্কারের পরিবর্তে সরকার পুরস্কৃত করেছে। মনে হয় সরকার যেন জনগণের ধৈর্যসীমা পরীক্ষা করছে। দেশের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে ন্যূনতম শৃঙ্খলাও বিরাজ করছে না। ব্যাংকসহ অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত খাতে ক্ষমতাসীনরা যেভাবে লুটপাট করছে এবং প্রতি ক্ষেত্রে সরকার যে অব্যবস্থাপনার পরিচয় দিচ্ছে, তা নজীরবিহীন। রাষ্ট্রযন্ত্র যদি প্রতিটি ক্ষেত্রে জনগণের সম্পদ লুটপাট করে তাহলে জনগণ যাবে কোথায়? অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হলে সরকারের উচিত এসব দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা। নখদন্তহীন এবং ক্ষমতাসীন দলের গৃহপালিত ‘দুদক’ সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এরকম জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের পাকরাও করবে তা ভাবার কোনো কারণ নেই। দুদকের অতীত ইতিহাস প্রমাণ করে, হলমার্ক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত এই তানভীর বা তার কুকর্মের সহযোগীরা নিশ্চয়ই দুদক থেকে ‘নিষ্কলঙ্ক’ বা ‘দেশপ্রেমিক’ সার্টিফিকেট পাবেন। সুতরাং শুধু দুদক নয়, এই অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করাসহ অর্থ উদ্ধারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অর্থমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, উচ্চপদস্থ লোকদের নামে মামলা হবে। অর্থমন্ত্রী কি মোদাচ্ছের সাহেবের নামে মামলা করতে পারবেন? আমরা সাধারণ জনগণ তা মনে করি না। তবুও আমরা স্বপ্ন দেখি দেশে একটি পরিচ্ছন্ন অর্থ ব্যবস্থার, একটি সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশের।
লেখক : ডিন, বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুল, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা
promi95@yahoo.com

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads