মঙ্গলবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১২

বিচারপতি মানিকের বিরুদ্ধে অর্থপাচারসহ ২৯ অভিযোগ : রাষ্ট্রপতি ও সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে আমার দেশ সম্পাদকের চিঠি



হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং (মুদ্রা পাচার), বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় আইন ভঙ্গ ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে সম্পদের হিসাব গোপন এবং সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের আচরণবিধি ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট ২৯টি অভিযোগ করেছেন দৈনিক আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ও রাষ্ট্রপতির কাছে ইংরেজিতে লেখা ১৬ পৃষ্ঠার অভিযোগ পেশ করেন তিনি। প্রধান বিচারপতির কাছে দেয়া চিঠি সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার একেএম শামসুল ইসলাম গতকাল সকাল ১১টায় তার কার্যালয়ে গ্রহণ করেছেন। বেলা ১টায় বঙ্গভবনে পৃথক একটি আবেদন পৌঁছে দেয়া হয়। মাহমুদুর রহমানের পক্ষে অভিযোগপত্রটি নিয়ে বঙ্গভবনে যান আমার দেশ পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি অলিউল্লাহ নোমান। রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল কাজী ফখরুদ্দিন আহমদ এটি গ্রহণ করেন। রেজিস্টার্ড ডাকযোগেও অভিযোগনামা পৃথকভাবে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হয়েছে। রেজিস্ট্রারের কাছে সংবিধান অনুযায়ী সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের ৩ সদস্যকে পৃথক ৩টি এবং প্রধান বিচারপতিকে একটি, মোট চারটি অভিযোগপত্র হস্তান্তর করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, দেশে প্রচলিত ২০০৯ ও ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং (মুদ্রা পাচার) আইন, ১৯৪৭ সালের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় আইন ও ১৯৮৪ সালের আয়কর আইন অনুযায়ী বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এছাড়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে লন্ডনের একটি আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এই মামলায় বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী জবাব দেয়ার জন্য সময়ের আবেদন জানিয়েছেন।
মানি লন্ডারিং আইন ভঙ্গের অভিযোগে বলা হয়, বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ২০১০-১১ সালের আয়কর হিসাবে দেখিয়েছেন লন্ডনে তার ৩টি বাড়ি রয়েছে। এই বাড়িগুলো কিনেছেন ৪০ লাখ টাকার বিনিময়ে। ৩টি বাড়ির মধ্যে একটি বাড়ির ঠিকানাও অসম্পূর্ণ বা ভুল দেয়া হয়েছে। আয়কর নথিতে উল্লেখ করা 6 Ruskin Way, London SW17 বাড়িটির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। আয়কর নথিতে দেখানো হয়, তিনি ৫০ লাখ টাকায় এলিফ্যান্ট রোডের একটি বাড়ি বিক্রি করেছেন। এর মধ্যে ৪০ লাখ টাকা লন্ডনে ৩টি বাড়ি ক্রয় করতে ব্যয় হয়। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আয়কর নথিতে উল্লেখিত ৩টি বাড়ির বাইরেও লন্ডনে তার অপর একটি বাড়ি রয়েছে। আয়কর নথিতে লন্ডনে ৩ বাড়ি ক্রয়ে যে পরিমাণ টাকা ব্যয় দেখিয়েছেন তার কয়েকগুণ বেশি মূল্য পরিশোধ করা হয়েছে। অতিরিক্ত এই টাকার কোনো হিসাব বা উত্স আয়কর নথিতে দেখানো হয়নি। বাংলাদেশ থেকে টাকা লন্ডনে কী পন্থায় পাঠানো হয়েছে তার কোনো উল্লেখ আয়কর নথিতে নেই। দেশে বিদ্যমান বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় আইন ও মানিলন্ডারিং (মুদ্রা পাচার) আইন অনুযায়ী বাংলাদেশের বাইরে এতো বিপুল পরিমাণ টাকা সরাসরি পাঠানোর কোনো সুযোগ নেই। তার হিসাবে উল্লেখ করা ৪০ লাখ টাকা লন্ডনে পাঠিয়ে তিনি বর্তমানে বিদ্যমান মানিলন্ডারিং আইন ও বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় আইন ভঙ্গ করেছেন।
অভিযোগের বিস্তারিত বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়, লন্ডনের ভূমি অফিসের তথ্য অনুযায়ী বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক লন্ডনের 108 Sheppey Road, Dagenham (RM9 4LB) ঠিকানার বাড়িটি কিনেছেন সেখানকার স্থানীয় মুদ্রা ১ লাখ ৮৬ হাজার পাউন্ডে। বাংলাদেশী মুদ্রায় যার পরিমাণ ৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। ২০০৮ সালের ৭ অক্টোবর তিনি এই টাকা পরিশোধ করে সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করেছেন। এর আগে তিনি ২০০৩ সালের ২ জুলাই হাইকোর্ট বিভাগের স্থায়ী বিচারপতি নিয়োগ না পাওয়া বিচারপতি পদ থেকে বাদ পড়েন।
লন্ডন ভূমি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, 26 The Warrent, London (E12 5HY) ঠিকানার বাড়িটির মালিক হলেন বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী। ২০০৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি তিনি এই বাড়িটি কিনেছেন। রেজিস্ট্রি দলিলের তথ্য অনুযায়ী, বাড়িটির ক্রয়মূল্য হচ্ছে লন্ডনের স্থানীয় মুদ্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার পাউন্ড, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় ২ কোটি ৪১ লাখ ৮ হাজার টাকা।
অভিযোগে বলা হয়, যুক্তরাজ্যে 94 East Hill. London (SW18 2HF) বাড়িটির মালিক হলেন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী ও নাদিয়া চৌধুরী। গত বছরের (২০১১) সালের ২১ নভেম্বর বাড়িটি তাদের নামে রেজিস্ট্রি করা হয়। এর ক্রয়মূল্য হচ্ছে লন্ডনের স্থানীয় মুদ্রায় ১০ হাজার পাউন্ড। এ বাড়িটির ক্রয় রেজিস্টারে তাদের ঠিকানা দেখানো হয়েছে 108 Sheppey Road, Dagenham (RM9 4LB). এই সম্পত্তিটি আয়কর নথিতে দেখানো নেই।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, তার আয়কর হিসাবে দেখানো 6 Ruskin Way, London SW17 ঠিকানায় আরও একটি সম্পত্তির হিসাব রয়েছে। এ ঠিকানাটি ভুল অথবা অসম্পূর্ণ অথবা তিনি ঠিকানা গোপন করেছেন। লন্ডন ভূমি অফিসের রেকর্ডে এই ঠিকানায় কোনো সম্পত্তি তার নামে নেই।
বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী 108 Sheppey Road, Dagenham (RM9 4LB) ঠিকানার বাড়িটি ক্রয়ের ক্ষেত্রে Mortgage express নামের একটি অর্থঋণ কোম্পানিতে ঋণের জন্য আবেদন করেন। ওই আবেদনে তিনি নিজেকে লন্ডনের একটি কোম্পানিতে মার্কেটিং ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত বলে দাবি করেন। মার্কেটিং ম্যানেজার হিসাবে তিনি বছরে লন্ডনের স্থানীয় মুদ্রায় ৩৪ হাজার ৪৫০ পাউন্ড বেতন পান বলেও উল্লেখ করা হয় ঋণের আবেদনে। ঋণের আবেদনে তিনি ২০০৩ সালের ১ জুন তারিখে কোম্পানিটির মার্কেটিং ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন বলে উল্লেখ করেন। অথচ তিনি তখন সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে কর্মরত একজন বিচারপতি ছিলেন। তিনি হাইকোর্ট বিভাগে ২০০১ সালের ২ জুলাই অস্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ২০০৩ সালের ২ জুলাই পর্যন্ত অস্থায়ী বিচারপতি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। স্থায়ী নিয়োগ না হওয়ার তখন তিনি বিচারপতি পদ থেকে বাদ পড়েন।
রাষ্ট্রপতি ও সুপ্রিম জুডিশিয়ালের কাছে পেশ করা আবেদনে বলা হয়, সুপ্রিমকোর্টের আচরণবিধি অনুযায়ী বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি থাকা অবস্থায় ভিন্ন কোনো চাকরি করতে পারেন না। তিনি বিচারপতি থাকা অবস্থায় লন্ডনে ঋণের আবেদনে নিজেকে সেখানে একটি কোম্পানির মার্কেটিং ম্যানেজার হিসেবে দাবি করে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন।
অভিযোগে জানানো হয়, চলতি বছরের (২০১২ সালের) ২৫ জুন জিসান নাসিম নামে এক ব্যক্তি লন্ডনের আদালতে বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা করেছেন। মামলায় দাবি করা হয়, ওই ব্যক্তির কাছে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী নিজেকে একজন ইমিগ্রেশন অ্যাডভাইজার হিসেবে পরিচয় দেন। ইমিগ্রেশন অ্যাডভাইজার হিসেবে তিনি ওই ব্যক্তিকে লন্ডন ওয়েস্টমিনিস্টার কলেজে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন এবং বলেন, এ কলেজের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা রয়েছে। মামলায় দাবি করা হয় বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী ইমিগ্রেশন অ্যাডভাইজারের পাশাপাশি নিজেকে বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের একজন বিচারপতি হিসেবে পরিচয় দিয়ে তাকে কলেজটিতে ভর্তি হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। বিচারপতি মানিকের পরামর্শে সেই কলেজে ভর্তি হয়ে জিসান নাসিম ক্ষতিগ্রস্ত হন। এ জন্য তিনি লন্ডনের আদালতে প্রতারণা ও স্থানীয় মুদ্রায় ১৫ হাজার পাউন্ড ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেছেন। লন্ডনের The Northhampton County Court-এ করা মামলাটির নম্বর হচ্ছে 2QT70489। মামলার নোটিশ পাওয়ার পর গত ৭ জুলাই বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী আদালতে একটি সময়ের আবেদন জানান। মামলাটির নোটিশের জবাব দিতে সময় আবেদনে তিনি নিজেকে বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতি হিসেবে উল্লেখ করেন। এছাড়া ভিত্তিহীন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়েছে দাবি করে বলা হয় জবাবের জন্য পর্যাপ্ত সময়ের দরকার।
রাষ্ট্রপতি ও সুপ্রিম জুডিশিয়ালের কাছে পেশ করা আবেদনে আরও জানানো হয়, বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বিভিন্ন সময়ে লন্ডনে গিয়ে টেলিভিশন টকশোতে অংশ নিয়ে রাজনৈতিক বক্তব্য রাখেন। বর্তমান শাসক দলের পক্ষে ও বিরোধী দলের বিপক্ষে বক্তব্য দেন এসব টকশোতে। কোন কোন তারিখে টকশোগুলোয় তিনি অংশ নিয়েছেন সেই তারিখ উল্লেখ করে বলা হয়, সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের জন্য সর্বশেষ তৈরি করা আচরণ বিধি অনুযায়ী তিনি টকশোতে অংশগ্রহণ এবং রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে পারেন না।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, পুলিশের নির্যাতনে গত বছরের ২৬ আগস্ট সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী এম ইউ আহমদ নিহত হন। এ ঘটনার পর সেপ্টেম্বরে বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী লন্ডনে সেখানকার চ্যানেল আইতে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন। চ্যানেলটির লন্ডনের প্রধান নির্বাহী রিয়াজ আহমদ ফয়সলের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত এই টকশোতে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী বিভিন্ন রাজনৈতিক বিতর্কিত বিষয়ে বক্তব্য দেন। পুলিশি নির্যাতনে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী এমইউ আহমদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়েও তিনি বিষদ বক্তব্য রাখেন। তিনি সুস্পষ্ট করে বলেন, এমইউ আহমদের বিভিন্ন ধরনের রোগ ছিল। পুলিশের নির্যাতনে নয়, তিনি রোগে মারা গেছেন। তদন্তাধীন ও বিচারাধীন কোনো বিষয় নিয়ে উচ্চ আদালতের বিচারপতি এ ধরনের পাবলিকলি বক্তব্য প্রদান করে বিচারপতিদের জন্য তৈরি করা আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন।
বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরীর গাড়ি ট্রাফিক সিগন্যালে লালবাতির কারণে আটকে দেয়ায় পুলিশ ও ট্রাফিক সদস্যদের রাস্তায় কান ধরিয়ে ওঠবস করানো, রুল জারি করে আদালতে ডেকে এনে গালাগালি করা, সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের সম্মানিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রুল জারি করে তলব করে তাদের অকথ্য ভাষায় গালি দেয়ার বিষয়টিও আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বিচারপতিদের জন্য তৈরি করা আচরণবিধি অনুযায়ী কারও বিরুদ্ধে অনুরাগ বা বিরাগভাজন হওয়ার সুযোগ নেই। আচরণবিধিতে বিচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি সদাচরণ করার কথা বলা হয়েছে। বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরীর এসব আচরণে বিচারপতিদের জন্য সর্বশেষ প্রণীত আচরণবিধির ১, ২, ৩, ৯ ও ১১ লঙ্ঘিত হয়েছে বলেও দাবি করা হয় রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে পেশ করা আবেদনে। আবেদনে বলা হয়, সংবিধানের ৯৬ (৩) অনুচ্ছেদে সুস্পষ্ট করে বলে দেয়া আছে বিচারপতিদের অসদাচরণের বিষয়ে প্রধান বিচারপতি ও কর্মে প্রবীণ অন্য দুই বিচারপতিকে নিয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল তদন্ত করবে। এছাড়া কাউন্সিল বা অন্য কোনো সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে তদন্তের নির্দেশ দেবেন। কাউন্সিল তদন্ত প্রতিবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করবে। রাষ্ট্রপতি ও সুপ্রিম জুডিশিয়ালের কাছে পেশ করা চিঠিতে তিনি সংবিধানের এ অনুচ্ছেদটি উল্লেখ করে বিচারপতি মানিকের বিরুদ্ধে ২৯টি অভিযোগের বিবরণ পেশ করা হয়।
সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের উদ্দেশে লেখা অভিযোগসংক্রান্ত চিঠি সুপ্রিমকোর্ট রেজিস্ট্রারের কাছে হস্তান্তরের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহমুদুর রহমান বলেন, সমাজের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষার জন্য তিনি এ আবেদন করেছেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, প্রতিটি অভিযোগের সুনির্দিষ্ট তথ্য তার কাছে রয়েছে। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল চাইলে তিনি অভিযোগগুলোর পক্ষে তথ্যগুলো উপস্থাপন করবেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সমাজের সচেতন নাগরিক হিসেবে সংবিধান অনুযায়ী তিনি রাষ্ট্রপতি ও সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বিষয়টি অবহিত করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন বিগত চারদলীয় জোট সরকারের সময় একজন বিচারপতির বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। এর ভিত্তিতেই তত্কালীন সুপ্রিমকোর্ট বার সভাপতি সুপ্রিম জুডিশিয়ালের কাছে একটি আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদনের ভিত্তিতে তদন্ত করেছিল সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল। সুতরাং এ বিষয়ে নজির রয়েছে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে যেকোনো নাগরিক অভিযোগ করতে পারেন। এছাড়া তখন সংবাদপত্রে প্রকাশের পর সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে আবেদন করা হয়। তিনি বিচার বিভাগের মর্যাদার স্বার্থে অভিযোগগুলো সংবাদপত্রে প্রকাশ না করে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে অবহিত করেন।
সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের অভিযোগগুলো রেজিস্ট্রারের কাছে হস্তান্তরের সময় সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমদ তালুকদার, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সালেহউদ্দিন, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট তৌফিক হোসেন, অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন মিঠু, অ্যাডভোকেট গোলাম নূর তরুণ, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজলসহ অনেক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads