শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৫

নবেম্বরে রাজনৈতিক গ্রেফতার ও কারাবাস


আসন্ন পৌরসভা নির্বাচন, একাধিক বিদেশী নাগরিক হত্যা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা, পুলিশ হত্যা ও দু’জন রাজনৈতিক নেতার ফাঁসি কার্যকর করাকে পুঁজি করে সরকার প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলগুলোকে সাইজ করার লক্ষ্যে দেশব্যাপী গণগ্রেফতার শুরু করে। যেহেতু বিরোধীদলসমূহের কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি মাঠে নেই, তাই সরকার তাদের গ্রেফতার করার কোন সুযোগ পাচ্ছে না। ফলে উল্লেখিত ইস্যুকে কেন্দ্র করে গণগ্রেফতার শুরু করেছে। এ মাসে কেবলমাত্র গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যে জানা যায় বিশদলীয় জোট তথা বিএনপি, জামায়াত-শিবির, এলডিপি ও সাংবাদিকসহ এবং অন্যান্য দলের উপর সারা দেশে গ্রেফতার অভিযানে যৌথ বাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ নিয়মিত মামলার আসামী বাদে দু’হাজার চারশ বিয়াল্লিশ জন রাজনৈতিক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। গত মার্চ থেকে নবেম্বর পর্যন্ত নয় মাসে পঁচানব্বইটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের তথ্য পাওয়া গেছে। তার মধ্যে আওয়ামী লীগ অথবা তাদের অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠনের সংশ্লিষ্টতায় তিরাশিটি প্রাণ হারায়। বাকী অন্যান্য দলগুলোর হাতে বার খুন হয়েছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। অর্থাৎ মোট রাজনৈতিক খুনের সাতাশি শতাংশ ক্ষমতাসীনদের হাতে, তারপরও প্রতিপক্ষ বিরোধী দলগুলোকে সন্ত্রাসী ও জঙ্গীবাদী বলে জিকির তোলা হচ্ছে। ফলে সরকারি দলের সন্ত্রাসীরা নির্বিঘ্নে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সদ্য বিদায়ী নবেম্বর মাসে গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য থেকে পাওয়া যায়, এ মাসে বিরোধী দলসমূহের যেসব নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের অধিকাংশই বিএনপি ও জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীসহ বিশদলীয় জোটের সদস্য।
বিএনপি : ১ নবেম্বর যশোর নগর বিএনপির সভাপতি ও মেয়র মারুফুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম তোতন, সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, যুগ্ম-সম্পাদক আব্দুস সালাম, জেলা কমিটির সদস্য অনিন্দ্য ইসলাম অমিত এবং পৌর ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা আজিজুল আলম সুইট আদালতে আত্মসমার্পণ করে জামিনের আবেদন করলে জামিন নামঞ্জুর করে তাদের জেল হাজতে পাঠায়। ২ নবেম্বর নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় বিএনপির জেলা সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের তালুকদার, বিশকাকুনী ইউনিয়ন বিএনপি সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম বাবুল, সদর উপজেলা বিএনপি নেতা আব্দুল লতিফ, জসিম উদ্দিন ও মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপির ঊনপঞ্চাশ নেতা-কর্মী জেল হাজতে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনের সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার জোবায়দুর রহমান হত্যা মামলায় তারা জামিন চেয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠায় আদালত। ৪ নবেম্বর গাজীপুরে জাতীয়তাবাদী সেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আফাজ উদ্দিনসহ বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের চুয়াল্লিশ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নেতা-কর্মীদের মধ্যে জয়দেবপুর থানায় একজন, কাপাসিয়ায় তিনজন, টঙ্গীতে ছত্রিশজন ও কালীগঞ্জ থানায় চারজন। রাজশাহীর নওহাটা পৌর সভার সাবেক মেয়র এবং পৌর বিএনপির সভাপতি মকবুল হোসেন, তার ছেলে মুকুল হোসেন, ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু সফিয়ান, ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল হামিদ, বিএনপি নেতা সুজন ও মোজাফ্ফরসহ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ৬ নবেম্বর চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে কচুয়ায় উপজেলা ও পৌর বিএনপির নব গঠিত কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছে দুই কমিটির ১০৬ জন সদস্য। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পেশ করেণ বিএনপির কচুয়া উপজেলা সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম ফারুকী। ৮ নবেম্বর পিরাজপুরের কাউখালীতে বিএনপির চিরাপাড়া পারসাতুরিয়া ইউনিয়ন যুগ্ম-আহ্বায়ক গাজী শাহরিয়ার কামালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাজশাহীর চারঘাটে বিএনপি নেতা ও উপজেলা যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দু সালামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
৯ নবেম্বর সাতক্ষীরার কলারোয়ায় চার বিএনপি কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলো- আলাউদ্দিন মোড়ল, ইব্রাহিম হোসেন, আয়ের আলী ও আক্তারুজ্জামান। তাদের নামে নাশকতার মামলা রয়েছে বলে পুলিশ দাবী করেছে। সিরাজগঞ্জে ছাত্রদল সরকারি সিরাজগঞ্জ কলেজের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামকে পুলিশ হত্যা ও বিস্ফোরক মামলায় আটক করেছে। ১১ নবেম্বর নোয়াখালীর চৌমুহনী সরকারি এস.এ কলেজে ছাত্রদলের নির্বাচিত জিএস মঞ্জুরুল আজিম সুমনসহ বিএনপির চৌদ্দ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ওয়ার্ড বিএনপির নেতার ছেলে সৈকতকে অন্য আসামীদের সাথে গ্রেফতার করেছে যৌথ বাহিনী। ১২ নবেম্বর সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বিএনপির দু’নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হলো বড়হর গ্রামের সাইদুর রহমান ও শাহাজানপুর গ্রামের জিল্লুর রহমান। লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে বিএনপি নেতা জানে আলমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানে আলম বিএনপির কাকিনা ওয়ার্ড কমিটির সদস্য ও কাকিনা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। ১৫ নবেম্বর নোয়াখালীর চাটখিলে বিএনপির উপজেলা সাধারণ সম্পাদক পেয়ার আহমেদ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠায়। নোয়াখালীতে যুবদলের জেলা সাধারণ সম্পাদক কাম্যাক্ষা চন্দ্র দাসসহ বিএনপির আট নেতা-কর্মী আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠায়। বগুড়া জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা সভাপতি ও বগুড়া পৌর সভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহ মেহেদী হাসান হিমু হাই কোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বের হওয়ার পথে পুরণায় জেলগেটে গ্রেফতার হয়েছে পুলিশের হাতে। ১৬ নবেম্বর পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্নেহাংশু সরকার কুট্টিকে আদালত চত্ত্বর থেকে নেতা-কর্মীদের নিয়ে বাসায় ফেরার পথে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঢাকার আশুলিয়ায় বিএনপির ৯নং ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করীম, সাংগঠনিক সম্পাদক বাবুল হোসেন, শহীদুল ইসলাম, নুরুজ্জামান, মোশাররফ হোসেন ও ইমরান কবীরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলীকে থানা চত্ত্বর থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁওয়ে বিএনপি কর্মী আব্দুস সাত্তারকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ১৭ নবেম্বর কুমিল্লার চান্দিনায় বিএনপির পৌর মেয়রসহ দু’নেতা মামলায় হাজিরা দিতে গেলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠায়। পিরোজপুর নেছারাবাদে পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে যুবদলের সরূপকাঠি উপজেলা যুগ্ম-আহ্বায়ক মিজানুর রহমান চাঁন, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম ও বিএনপি কর্মী খলিলুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে। একই জেলা বিএনপির আমরাজুরী ইউনিয়নের ওয়ার্ড সভাপতি মোফাজ্জেল হোসেন ও চিরাপাড়া পারসাতুরিয়া ইউনিয়নের ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নোয়াখালীতে বিএনপির নেতা ফজলে এলাহী পলাশসহ তিন নেতা আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠায়। যশোরের শর্শা উপজেলা বিএনপির সভাপতি খসরুজ্জামান মধুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ১৮ নবেম্বর ফেনী সদরের লেমুয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ফেরদৌস আহমেদ কোরেশীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কোরেশী আওয়ামী লীগ নেতা আবু তাহের শাহীনের মায়ের জানাজা শেষে বাড়ি ফেরার পথে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। ঝালকাঠির নলসিটিতে বিএনপি নাচনমহল ইউনিয়ন আহ্বায়ক ও ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান মোল্লা বাবুলকে বরিশালের বাসা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চাঁদপুরের কচুয়ায় বিএনপির দু’কর্মী সাবেক প্রতিমন্ত্রী এহসানুল হক মিলনের ব্যক্তিগত সহকারী মাহবুবুর রহমান ও উপজেলা বিএনপির সদস্য মনির হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২০ নবেম্বর কুমিল্লার লাঙ্গলকোটে উপজেলা বিএনপির নেতা আমান উল্লাহ্ আমানকে মৌকারা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২১ নবেম্বর বগুড়ায় পৌর বিএনপির নেতা ও পৌরসভার ১৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফা সদর থানায় আসামী ছাড়াতে সুপারিশ করতে গেলে সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁওয়ে পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মাহামুদুল হাসান ঈমনকে কাচারী রোড এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২৩ নবেম্বর খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জু পুলিশের উপর হামলা মামলায় সিএমএম আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে পাঠায়।
২৪ নবেম্বর রংপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোজাফ্ফর হোসেনকে লালমনিরহাট সদর থানার মহেন্দ্রনগর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৩। এদিকে মোজাফ্ফরের পরিবার দাবী করেছে র‌্যাবের পরিচয় দিয়ে সাদা পোষাকের লোকেরা গত ১৯ নবেম্বর রংপুর নিউ শালবন এলাকা থেকে দিবাগত রাতে তাকে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এ্যাডঃ আজাদ হোসেন খান, তরিকুল ইসলাম মোল্লা তারা, মিজানুর রহমান ও আব্দুল আলিমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নোয়াখালী শহর বিএনপির দপ্তর সম্পাদক আবু হানিফ, বিএনপি নেতা কালা কামাল, ভুলু, মিজান, ছাত্রদলের জেলা সভাপতি নূরুল আমিন খান ও শহর ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক রাইসুল হায়দার বাবুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২৫ নবেম্বর মানিকগঞ্জ বিএনপি নেতা এ্যাডঃ মহিউদ্দিন স্বপন, জালাল উদ্দিন, রায়হান মোল্লা ও আব্দুল লতিফ ফকিরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২৬ নবেম্বর যশোর চৌগাছা পৌর কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা মাষ্টার কামাল আহমেদের বাড়ির সামনে থেকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেরুল হক সাবু, চৌগাছায় বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী কামাল আহমেদ, চৌগাছার কাঠমিস্ত্রী কবির হোসেন, আব্দুর রশীদ, রাজমিস্ত্রী মোশাররফ হোসেন, চটপটি বিক্রেতা লিয়াকত হোসেন, কাঠমিস্ত্রী ইয়াগিণ আলী, ভ্যান চালক টিপু সুলতান, ট্রাক ড্রাইভার বাবু বিশ্বাস ও এসএসসি পরীক্ষার্থী ঝন্টু রহমানসহ বার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় ছাত্রদলের উপজেলা সভাপতি মেহেদী হাসান মাসুম ও যুবদলের উপজেলা সভাপতি ইলিয়াস মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ৩০ নবেম্বর ময়মনসিংহের নান্দাইলে পৌর মেয়র ও বিএনপি নেতা এ.এফ.এম আজিজুল হককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জামায়াত : ২ নবেম্বর যশোরের আট উপজেলা থেকে ঊনিশ নেতা-কর্মী গ্রেফতার। গ্রেফতারকৃতরা হলো সদরে আটজন, অভয়নগরে তিনজন, চৌগাছা, শার্শা ও মনিরামপুরে দু’জন করে এবং ঝিকরগাছা ও বাঘারপাড়ায় একজন করে। এরমধ্যে কেশবপুর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী অধ্যাপক মোক্তার আলীকে তার বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বগুড়ার শিবগঞ্জে উপজেলা জামায়াতের আমীর কুড়াহার ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার প্রভাষক মাওলানা শামসুর রহমান, কিচক ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারী মোফাজ্জেল হোসেন, গাংগণগর দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মেহেদুল ইসলাম ও মোকামতলা ইউনিয়ন জামায়াত নেতা মিজানুর রহমানকে বগুড়ায় মামলার হাজিরা শেষে কোর্ট চত্ত্বর থেকে বের হওয়ার সময় গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের সিনিয়র নায়েবে আমীর অধ্যাপক ফরহাদ হোসাইন, জামায়াত নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসাইন, খোকসা পৌর জামায়াতের সভাপতি ও কাউন্সিলর আব্দুর রাজ্জাক, জামায়াত কর্মী আক্কাস আলী ও শিবির কর্মী সুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলা জামায়াতের আমীর ও সাবেক খোস্তাকাটা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাওলানা রফিকুল ইসলাম কবিরকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে। নওগাঁর মান্দায় জামায়াত নেতা ও নূরাল্যাবাদ ইউনিয়ন জামায়াত সেক্রেটারী হাফেজ আবুল কালাম আজাদকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ৪ নবেম্বর নারায়নগঞ্জ জেলা কারাগারের সামনে থেকে জামায়াত নেতা এ্যাডঃ মাঈনুদ্দিন মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ৫ নবেম্বর ঝিনাইদাহ জেলার শৈলকুপা ও কালীগঞ্জ উপজেলা থেকে জামায়াত-শিবিরের সাত কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলো জামায়াত কর্মী আবুল হোসেন, শিবির কর্মী জহুরুল ইসলাম, মুরাদ হোসেন, সাইফুর রহমান শিমুল, মুন্তাসির মামুন, আল-আমীন ও ফরিদ হোসেন।
৭ নবেম্বর রংপুরের পীরগঞ্জে জামায়াত-শিবিরের বিশ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলো- জামায়াত নেতা শহীদুর রহমান, জহুরুল হক, সামিউল ও শাহীনসহ বিশজন। ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলায় জামায়াত নেতা হাফেজ মাওলানা আবুল কাশেমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বগুড়া দুপচাঁচিয়া উপজেলা জামায়াতের হাফেজ নূর হোসেন, ফরিদ তালুকদার ও শাহীনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি উপজেলার ধানশাইল ইউনিয়ন জামায়াত সেক্রেটারি মাওলানা শাহ আলম ও জামায়াত কর্মী জাহিদ হাসানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় চৌদ্দজন জামায়াত নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত নেতারা হলো- হযরত আলী, মানিক, আব্দুস সবুর, ইন্তাজ আলী, রওশন আলী, রুস্তম আলী, বিপ্লব, আফসার, আদম আলী, রেনা, আবুল কাশেম, আব্দুস সামাদ, খায়রুল ইসলাম ও ফরমান আলী। ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়ায় একজন জামায়াত নেতাকে গ্রেফতার করেছে যৌথ বাহিনী। ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে জামায়াত-শিবির, অন্যান্য ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী ও অস্ত্রবাজ সন্ত্রাসীসহ তিহাত্তর জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে সদরে পঁচিশ জন, ভাঙ্গায় সতের জন, বোয়ালমারীতে নয় জন, সালথায় সাতজন, মধুখালীতে ছয়জন, নগরকান্দায় তিনজন, চরভদ্রাসন ও সদরপুরে দু’জন করে। এ ছাড়া অভিযানের সময় সদর থানার গোয়ালচামটের শ্রীঅঙ্গনে পিয়াল খান নামে একজন সন্ত্রাসীকে শুটারগান ও গুলীসহ আটক করেছে। নোয়াখালীর চাটখিলে জামায়াতের উপজেলা আমীর মাওলানা সাইফুল্লাহ্কে তার বাসা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাজশাহীর বাঘায় জামায়াতের সাবেক উপজেলা নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল লতিফ ও জামায়াত কর্মী জাহাঙ্গীর হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলা জামায়াতের রাজনৈতিক সেক্রেটারি ও উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি আব্দুল মজিদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ফেনী জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে জামায়াতের আটজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- সদর থানায় জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা মাহমুদুল হক, মোকসেদুল আলম, সাদিকুর রহমান ও জাভেদ, দাগনভূঞায় পৌর আমীর মাওলানা গাজী সালাহ উদ্দিন, সোনাগাজীতে বগাদানা ইউনিয়ন জামায়াত সভাপতি মাওলানা আব্দুল হাই, একই ইউনিয়নের ওয়ার্ড সভাপতি মোঃ আব্দুল হাই এবং ছাগলনাইয়া পৌর জামায়াত সেক্রেটারি কবির আহমেদ সিদ্দিকী। বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় জামায়াতের দু’জন কর্মী গ্রেফতার। গ্রেফতারকৃতরা হলো হাফেজ আব্দুর নূর ও ফরিদ উদ্দিন তালুকদার।
৮ নবেম্বর সাতক্ষীরার আট থানায় অভিযান চালিয়ে জামায়াত-শিবিরের ত্রিশ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে যৌথ বাহিনী। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে জামায়াত-শিবিরের ছয় নেতা-কর্মী গ্রেফতার। গ্রেফতারকৃতরা হলো- আইউব আলী, সায়েদ আলী, ফুলবার, দুদুল মিয়া, বাবুল মিয়া ও রায়হান আলী। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ জামায়াত কর্মী হোসেন আলীকে ছাইতানতলা বাজার থেকে আটক করেছে। ঢাকার সাভারে জামায়াত-শিবিরের সাত নেতা-কর্মী গ্রেফতার। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা হলো- জুয়েল মিয়া, মাসুদ রানা, আরিফুর রহমান, নজরুল ইসলাম, মঞ্জুরুল ইসলাম লাভু, আব্দুল্লাহ্্ আল-মাহমুদ ও আওলাদ হোসেন। সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়ায় দু’জামায়াত নেতা গ্রেফতার। তারা হলো- পূর্ণিমাগাঁতি ইউনিয়ন জামায়াত সেক্রেটারি এনামুল হক সেলিম ও সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জাকারিয়া হোসেন। ময়মনসিংহ জেলায় বিশ দলীয় জোটের এক’শ চৌষাট্টি নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে যৌথ বাহিনী। লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুরে জামায়াতের চারজন নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি হাফেজ ফজলুল করীম, ২নং ওয়ার্ড জামায়াত সভাপতি নূর হোসেন, ৪নং ওয়ার্ড জামায়াত সভাপতি জহিরুল ইসলাম ও ৭নং ওয়ার্ড জামায়াত সভাপতি জয়নাল আবেদীনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বরিশাল মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর বজলুর রহমান বাচ্চু, বিসিসির ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও জামায়াতের আইন সম্পাদক এ্যাডঃ সালাহ উদ্দিন মাসুম এবং শিবির কর্মী আরিফ মাসুম গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি উপজেলা জামায়াতের দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- ধানশাইল ইউনিয়ন সেক্রেটারি মাওলানা শাহ আলম ও শিবির কর্মী জাহিদ হাসান। ৯ নবেম্বর রংপুরের মিঠাপুকুরে জামায়াত-শিবিরের দশ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- জামায়াত কর্মী আনোয়ার হোসেন, রেজাউল ইসলাম, মিনহাজ উদ্দিন, আব্দুর রশীদ, শহীদুল ইসলাম, আবু বক্কর, মোখলেসুর রহমান, শিবির কর্মী আব্দুল হালিম, জুনায়েত ও কামরুজ্জামান।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জামায়াতের সাইফুল ইসলাম নামে একজন কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থেকে উপজেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি তৈয়ব আলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জামালপুর জেলা সদর ও শরিষাবাড়ী থেকে জামায়াত-শিবিরের সাত নেতা-কর্মী আটক। আটককৃত নেতা-কর্মীরা হলো- শরিষাবাড়ী উপজেলা জামায়াত সেক্রেটারি মাসুদুর রহমান দুলাল, জামায়াত কর্মী রুকনুজ্জামান, রাসেল মাহমুদ, লালন ফকির, ফজলুল হক, জেলা শিবিরের সাবেক সভাপতি সুলতান মাহমুদ ও শিবির নেতা মুক্তারুল ইসলাম। ঝিনাইদাহ জেলার ছয় উপজেলা থেকে জামায়াত-শিবিরের সতের নেতা-কর্মীসহ চল্লিশজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে সদরে সতেরজন, কোটচাঁদপুরে তিনজন, শৈলকুপায় নয়জন, কালীগঞ্জে চারজন, মহেশপুরে ছয়জন ও হরিণাকুন্ডুতে একজন। ১০ নবেম্বর নীলফামারী জেলায় অভিযান চালিয়ে জামায়াতের দু’জনসহ বিশজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নওগাঁর আত্রাইয়ে উপজেলা জামায়াতের শওকত হোসেন রিক্তাকে রেজিষ্ট্রি অফিস মোড় থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে জামায়াতের চারজনসহ যৌথ বাহিনী আটক করেছে এগার জনকে। সিলেটের বিয়ানীবাজারে জামায়াত-শিবিরের দশজন নেতা-কর্মীকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী।
১১ নবেম্বর চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় দর্শনা পৌর সভায় যৌথ বাহিনী জামায়াতের দু’নেতাকে গ্রেফতার করেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার তালুয়া ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর কবির হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা সভাপতি, কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের সহ-সভাপতি ও জামায়াত নেতা ওয়ারেস আলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মুহাম্মদ ওয়াছিয়ার রহমান 

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads