প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ নিতে সিরিয়ার রাক্কা শহরে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিভিন্ন্ অবস্থানে বিমান হামলা চালিয়েছে ফ্রান্স। রোববার রাতে ফরাসী জঙ্গি বিমান বড় ধরনের হামলা চালায়। ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও জর্দানের ফরাসী বিমান ঘাঁটি থেকে উড়ে গিয়ে দশটি জেট ফাইটার এ হামলায় অংশ নেয়। লক্ষ্যবস্তুতে ফেলা হয় ২০টি বোমা। যেসব লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা হয়েছে, তার মধ্যে আই এস-এর একটি কমান্ডপোস্ট, অস্ত্রগুদাম ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। এ অভিযানে আই এস-এর কতটা ক্ষতি হয়েছে বা কেউ হতাহত হয়েছে কিনা সে বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। আইএস বিরোধী অভিযানের নেতৃত্বে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যোগাযোগ রেখেই ফরাসী বিমান বাহিনী এ হামলা চালায় বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য যে, প্যারিসে গত শুক্রবার (১৩ নবেম্বর) সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাকে ‘যুদ্ধের শামিল’ বিবেচনা করে ফরাসী প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদ ‘নির্দয়’ জবাব দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন।
আমরা জানি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ন্যায়সঙ্গত। কিন্তু এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালাতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে যেন হতাহত করা না হয় এবং কোনো দেশ যেন বিপর্যস্ত না হয়। রোববার রাতে ফ্রান্সের দশটি জেট ফাইটার সিরিয়ার রাক্কা শহরে ২০টি বোমা নিক্ষেপ করে। কিন্তু এই হামলায় কি কি ধ্বংস হয়েছে এবং কারা নিহত হয়েছে সে ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বিগত দিনগুলোতে লক্ষ্য করা গেছে বিবদমান পক্ষগুলোর সংঘর্ষে সাধারণ জনগণ সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে, স্বজনরা নিহত হয়েছে। এই কারণে লাখ লাখ সিরীয় নাগরিক দেশ ছেড়ে অভিবাসীর মিছিলে যোগ দিতে বাধ্য হয়েছে। এখন আই এস দমনের নামে ফ্রান্স যেভাবে প্রতিশোধের মনোভাব নিয়ে সিরিয়ায় বোমা হামলা চালাচ্ছে তাতে প্রাণ বাঁচাতে আরো কত সিরীয় নাগরিক দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার সাথে জড়িত সন্দেহভাজনদের ধরতে ফ্রান্স ও বেলজিয়ামের পুুলিশ ইতোমধ্যে দেড় শতাধিক অভিযান চালিয়েছে। তারা কমপক্ষে নয়জনকে গ্রেফতার করেছে। এদিকে প্যারিসে হামলার জন্য আমেরিকা ও তার মিত্রদের অভিযুক্ত করেছে উইকিলিকস। হামলার ঘটনার পর এক টুইট বার্তায় উইকিলিকস বলেছে, বছরের পর বছর ধরে সিরিয়া ও লিবিয়ায় চরমপন্থীদের অস্ত্রশস্ত্র এবং প্রশিক্ষণ দেয়ার ফল প্যারিসের এই হামলা। আরেক টুইট বার্তায় ওই ওয়েবসাইটটি বলেছে, প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলায় বহু মানুষ নিহত হয়েছে। ইরাক ও সিরিয়ায়ও ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। এসব মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য যেসব উগ্রপন্থীদের প্রতিপালন করেছে তাদের সরাসরি যোগসূত্র রয়েছে। এদিকে এক সাক্ষাৎকারে সাবেক মার্কিন সহকারী অর্থমন্ত্রী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক পল ক্রেইগ রবার্টস বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর স্বার্থ হাসিলের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো পরিকল্পিতভাবে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। পল ক্রেইগ আরো বলেন, সিরিয়া যুদ্ধে প্রবেশের কৌশল হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোজোট একাজ করেছে। চলমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে ফরাসি গোয়েন্দাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে আইএস-এর এমন হামলা চালানো সম্ভব নয়। এছাড়া এই হামলা আইএস এর স্বার্থ নয় বরং পশ্চিমাদের স্বার্থরক্ষা করবে। আমি মনে করি যে, এ ধরনের হামলা চালানো অত্যন্ত দুরূহ কাজ, যা করা আইএস-এর ক্ষমতার বাইরে। ক্রেইগ আরো বলেন, আমি মনে করি এ হামলার পেছনে মিথ্যা লুকিয়ে আছে। ইউরোপের দেশগুলোতে অভিবাসীরা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ও বোমা চোরাচালান করতে পারে না, তারা কি করে হামলা চালাবে? তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের মতো দেশের ক্ষমতাসীন সরকার এ হামলাকে অযুহাত হিসেবে ব্যবহার করে নিজেদের দেশের সীমানা বন্ধের ব্যবস্থা করতে যাচ্ছে। মার্কিন এ বিশ্লেষক আরো বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের জন্য মার্কিন নীতিকে সমর্থন করেছে ইউরোপের দেশগুলো। এর ফল হিসেবে লাখ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে। এ কারণে বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়েছে সরকারগুলো। এ পরিস্থিতি সামাল দিতে এখন মিথ্যা ঘটনা সাজানো হচ্ছে। এদিকে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেছেন। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ইসরাইল রাষ্ট্র সৃষ্টির কারণে আইএস এবং অন্যান্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সৃষ্টি হয়েছে। ইসরাইল রাষ্ট্র সৃষ্টির আগে মুসলিম সমাজে সন্ত্রাসবাদের কোন স্থান ছিল না। মাহাথির আরো বলেন, জনগণের ওপর বোমা ফেললে আপনাকেও মনে রাখতে হবে যে সন্ত্রাস হবেই। এদিকে ভারতের সমাজবাদী পার্টির নেতা এবং উত্তর প্রদেশের নগর উন্নয়ন ও সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মদ আজম খান প্যারিসের সন্ত্রাসী হামলাকে ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া বলে অভিহিত করেছেন। তিনি আরো বলেন, সুপার পাওয়ার দেশগুলোর চিন্তা করা উচিত যে, ইরাক ও সিরিয়ায় তাদের পদক্ষেপেরই প্রতিক্রিয়া প্যারিসের সন্ত্রাসী হামলা। সন্ত্রাসী হামলাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে নিন্দা জানিয়ে আজম খান বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের মজুদ তেল থেকে অন্যায়ভাবে সংগৃহীত অর্থে ইউরোপের শহরগুলো আলোকিত হতে পারে না। সাম্প্রতিক বিশ্ব সংকটের মূল কারণ পশ্চিম এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের অর্থনৈতিক স্বার্থ বলে উল্লেখ করে তিনি প্রশ্ন তোলেন- আপনারা কি চান ইরাক, সিরিয়া বা লিবিয়ার তেল ভাণ্ডার অবৈধভাবে দখলের মাধ্যমে অর্জিত অর্থে মদ ও নাচ-গানের সংস্কৃতির জন্য পরিচিত প্যারিসের মতো শহরগুলো আলোকিত হোক? তিনি বলেন, ইরাক ও সিরিয়ায় আইএস-এর সন্দেহজনক স্থানে বোমা বর্ষণের ফলে বেসামরিক নিরাপদ লোকজনের মৃত্যু ছাড়াও হাজার হাজার মানুষ উদ্বাস্তু হচ্ছে। এ কাজের পেছনে তাদের কী যুক্তি আছে? গোলযোগপূর্ণ অঞ্চলে সংকট সৃষ্টির জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়াকে দায়ী করে আজম খান আরো বলেন, পশ্চিমা শক্তিগুলো ইতোমধ্যে ইরাক, আফগানিস্তান, সিরিয়া, লিবিয়া ইত্যাদি দেশ ধ্বংস করেছে। তারা নির্মম শক্তির মাধ্যমে এসব দেশের তেল ভাণ্ডার দখল করতে এবং নিজেদের শহরগুলোকে সাজাতে চায় যা একেবারে অন্যায়। সিরিয়ায় হোক আর প্যারিসে হোক, নিরপরাধ মানুষ হত্যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।
প্যারিসে সন্ত্রাসী আক্রমণের দায় স্বীকার করেছে আইএস এবং আইএস সৃষ্টির কারিগর কারা তা সাবেক মার্কিন মন্ত্রী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক পল ক্রেইগসহ বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে। কিন্তু লক্ষণীয় বিষয় হলো, সন্ত্রাসী হামলা সিরিয়ায় হোক কিংবা প্যারিসে- তার দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মুসলমানদেরই। ইউরোপজুড়ে মুসলমানরা এখন আতঙ্কের মধ্যে জীবন যাপন করছে। প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার পরপরই কানাডার একটি মসজিদে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এই আগুন তো শান্তি ও মানবিক সমাজের উপাদান হতে পারে না। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ ও প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার প্রকৃত কারিগরদের ব্যাপারে কেউ কেউ কিছু কিছু কথা বলছেন। কিন্তু সন্ত্রাসের গডফাদারদের ব্যাপারে পৃথিবীর মানব সমাজ একসাথে স্পষ্টভাবে কথা না বললে প্রহসনের রাজনীতি চলতেই থাকবে। সাজানো সন্ত্রাসবাদের দুর্ভোগ থেকেও মুক্তি পাবে না মানুষ। এখন সময়ের দাবি পূরণে মানবজাতি এগিয়ে আসে কিনা সেটাই দেখার বিষয়।
আমরা জানি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ন্যায়সঙ্গত। কিন্তু এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালাতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে যেন হতাহত করা না হয় এবং কোনো দেশ যেন বিপর্যস্ত না হয়। রোববার রাতে ফ্রান্সের দশটি জেট ফাইটার সিরিয়ার রাক্কা শহরে ২০টি বোমা নিক্ষেপ করে। কিন্তু এই হামলায় কি কি ধ্বংস হয়েছে এবং কারা নিহত হয়েছে সে ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বিগত দিনগুলোতে লক্ষ্য করা গেছে বিবদমান পক্ষগুলোর সংঘর্ষে সাধারণ জনগণ সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে, স্বজনরা নিহত হয়েছে। এই কারণে লাখ লাখ সিরীয় নাগরিক দেশ ছেড়ে অভিবাসীর মিছিলে যোগ দিতে বাধ্য হয়েছে। এখন আই এস দমনের নামে ফ্রান্স যেভাবে প্রতিশোধের মনোভাব নিয়ে সিরিয়ায় বোমা হামলা চালাচ্ছে তাতে প্রাণ বাঁচাতে আরো কত সিরীয় নাগরিক দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার সাথে জড়িত সন্দেহভাজনদের ধরতে ফ্রান্স ও বেলজিয়ামের পুুলিশ ইতোমধ্যে দেড় শতাধিক অভিযান চালিয়েছে। তারা কমপক্ষে নয়জনকে গ্রেফতার করেছে। এদিকে প্যারিসে হামলার জন্য আমেরিকা ও তার মিত্রদের অভিযুক্ত করেছে উইকিলিকস। হামলার ঘটনার পর এক টুইট বার্তায় উইকিলিকস বলেছে, বছরের পর বছর ধরে সিরিয়া ও লিবিয়ায় চরমপন্থীদের অস্ত্রশস্ত্র এবং প্রশিক্ষণ দেয়ার ফল প্যারিসের এই হামলা। আরেক টুইট বার্তায় ওই ওয়েবসাইটটি বলেছে, প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলায় বহু মানুষ নিহত হয়েছে। ইরাক ও সিরিয়ায়ও ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। এসব মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য যেসব উগ্রপন্থীদের প্রতিপালন করেছে তাদের সরাসরি যোগসূত্র রয়েছে। এদিকে এক সাক্ষাৎকারে সাবেক মার্কিন সহকারী অর্থমন্ত্রী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক পল ক্রেইগ রবার্টস বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর স্বার্থ হাসিলের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো পরিকল্পিতভাবে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। পল ক্রেইগ আরো বলেন, সিরিয়া যুদ্ধে প্রবেশের কৌশল হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোজোট একাজ করেছে। চলমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে ফরাসি গোয়েন্দাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে আইএস-এর এমন হামলা চালানো সম্ভব নয়। এছাড়া এই হামলা আইএস এর স্বার্থ নয় বরং পশ্চিমাদের স্বার্থরক্ষা করবে। আমি মনে করি যে, এ ধরনের হামলা চালানো অত্যন্ত দুরূহ কাজ, যা করা আইএস-এর ক্ষমতার বাইরে। ক্রেইগ আরো বলেন, আমি মনে করি এ হামলার পেছনে মিথ্যা লুকিয়ে আছে। ইউরোপের দেশগুলোতে অভিবাসীরা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ও বোমা চোরাচালান করতে পারে না, তারা কি করে হামলা চালাবে? তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের মতো দেশের ক্ষমতাসীন সরকার এ হামলাকে অযুহাত হিসেবে ব্যবহার করে নিজেদের দেশের সীমানা বন্ধের ব্যবস্থা করতে যাচ্ছে। মার্কিন এ বিশ্লেষক আরো বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের জন্য মার্কিন নীতিকে সমর্থন করেছে ইউরোপের দেশগুলো। এর ফল হিসেবে লাখ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে। এ কারণে বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়েছে সরকারগুলো। এ পরিস্থিতি সামাল দিতে এখন মিথ্যা ঘটনা সাজানো হচ্ছে। এদিকে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেছেন। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ইসরাইল রাষ্ট্র সৃষ্টির কারণে আইএস এবং অন্যান্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সৃষ্টি হয়েছে। ইসরাইল রাষ্ট্র সৃষ্টির আগে মুসলিম সমাজে সন্ত্রাসবাদের কোন স্থান ছিল না। মাহাথির আরো বলেন, জনগণের ওপর বোমা ফেললে আপনাকেও মনে রাখতে হবে যে সন্ত্রাস হবেই। এদিকে ভারতের সমাজবাদী পার্টির নেতা এবং উত্তর প্রদেশের নগর উন্নয়ন ও সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মদ আজম খান প্যারিসের সন্ত্রাসী হামলাকে ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া বলে অভিহিত করেছেন। তিনি আরো বলেন, সুপার পাওয়ার দেশগুলোর চিন্তা করা উচিত যে, ইরাক ও সিরিয়ায় তাদের পদক্ষেপেরই প্রতিক্রিয়া প্যারিসের সন্ত্রাসী হামলা। সন্ত্রাসী হামলাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে নিন্দা জানিয়ে আজম খান বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের মজুদ তেল থেকে অন্যায়ভাবে সংগৃহীত অর্থে ইউরোপের শহরগুলো আলোকিত হতে পারে না। সাম্প্রতিক বিশ্ব সংকটের মূল কারণ পশ্চিম এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের অর্থনৈতিক স্বার্থ বলে উল্লেখ করে তিনি প্রশ্ন তোলেন- আপনারা কি চান ইরাক, সিরিয়া বা লিবিয়ার তেল ভাণ্ডার অবৈধভাবে দখলের মাধ্যমে অর্জিত অর্থে মদ ও নাচ-গানের সংস্কৃতির জন্য পরিচিত প্যারিসের মতো শহরগুলো আলোকিত হোক? তিনি বলেন, ইরাক ও সিরিয়ায় আইএস-এর সন্দেহজনক স্থানে বোমা বর্ষণের ফলে বেসামরিক নিরাপদ লোকজনের মৃত্যু ছাড়াও হাজার হাজার মানুষ উদ্বাস্তু হচ্ছে। এ কাজের পেছনে তাদের কী যুক্তি আছে? গোলযোগপূর্ণ অঞ্চলে সংকট সৃষ্টির জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়াকে দায়ী করে আজম খান আরো বলেন, পশ্চিমা শক্তিগুলো ইতোমধ্যে ইরাক, আফগানিস্তান, সিরিয়া, লিবিয়া ইত্যাদি দেশ ধ্বংস করেছে। তারা নির্মম শক্তির মাধ্যমে এসব দেশের তেল ভাণ্ডার দখল করতে এবং নিজেদের শহরগুলোকে সাজাতে চায় যা একেবারে অন্যায়। সিরিয়ায় হোক আর প্যারিসে হোক, নিরপরাধ মানুষ হত্যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।
প্যারিসে সন্ত্রাসী আক্রমণের দায় স্বীকার করেছে আইএস এবং আইএস সৃষ্টির কারিগর কারা তা সাবেক মার্কিন মন্ত্রী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক পল ক্রেইগসহ বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে। কিন্তু লক্ষণীয় বিষয় হলো, সন্ত্রাসী হামলা সিরিয়ায় হোক কিংবা প্যারিসে- তার দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মুসলমানদেরই। ইউরোপজুড়ে মুসলমানরা এখন আতঙ্কের মধ্যে জীবন যাপন করছে। প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার পরপরই কানাডার একটি মসজিদে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এই আগুন তো শান্তি ও মানবিক সমাজের উপাদান হতে পারে না। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ ও প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার প্রকৃত কারিগরদের ব্যাপারে কেউ কেউ কিছু কিছু কথা বলছেন। কিন্তু সন্ত্রাসের গডফাদারদের ব্যাপারে পৃথিবীর মানব সমাজ একসাথে স্পষ্টভাবে কথা না বললে প্রহসনের রাজনীতি চলতেই থাকবে। সাজানো সন্ত্রাসবাদের দুর্ভোগ থেকেও মুক্তি পাবে না মানুষ। এখন সময়ের দাবি পূরণে মানবজাতি এগিয়ে আসে কিনা সেটাই দেখার বিষয়।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন