এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটে গেল ফ্রান্সে। রাজধানী প্যারিসের অন্তত ৬টি স্থানে সন্ত্রাসী হামলায় কমপক্ষে ১৪০ জন নিহত হয়েছেন। এসব হামলায় আহত হয়েছেন আরো দুই শতাধিক মানুষ। এদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। স্থানীয় সময় গত শুক্রবার রাতে এসব সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যানুযায়ী, রেস্তোরাঁ, পানশালা, কনসার্ট হল ও একটি ফুটবল স্টেডিয়ামের বাইরে আক্রমণ চালানো হয়। এ হামলার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদ দেশে জরুরি অবস্থা ও ৩ দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন। একইসঙ্গে দেশটির সমস্ত সীমান্ত বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। নাগরিকদের ঘরে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম এ ধরনের ঘটনা ঘটলো, প্যারিসে কারফিউ জারি করা হয়েছে। প্যারিসের স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি মেট্রো-স্টেশনগুলো বন্ধ করা হয়েছে। সরকারি অফিস-আদালতও বন্ধ। জরুরি ভিত্তিতে চলছে কিছু রেল ও বিমান। এছাড়া ফরাসী পুলিশ আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্যারিস এলাকায় সব ধরনের জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে। শনিবার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি ১৫০০ সেনাও মোতায়েন করা হয়েছে।
হামলার ভয়াবহতা এবং দেশটির নিরাপত্তা উদ্যোগ থেকে উপলব্ধি করা যায়, এক গুরুতর অবস্থায় পতিত হয়েছে দেশটি। আমরা এই জঘন্য সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানাই। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ হামলার নিন্দা জানিয়ে হোতাদের বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানিয়েছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ফ্রান্সের পাশে থাকার কথা বলেছে ন্যাটো। যুক্তরাষ্ট্র ফ্রান্সকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত জানিয়ে এক বিবৃতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এক টুইটে বলেছেন, সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা নিয়ে তারা ফ্রান্সের মানুষের পাশে থাকবেন, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল বলেছেন, প্যারিসের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তিনি বিস্মিত ও হতবাক। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, এ হামলা ছিল সংঘবদ্ধ। তবে এ হামলা সংঘবদ্ধ এবং পরিকল্পিত কিনা- তা এখনও বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে প্যারিসের পুলিশ।
প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ফরাসী প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদ বলেছেন, এই হামলা ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। তিনি বলেছেন, এ হামলার পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতি বাইরে থেকে করা হলেও ফ্রান্সের ভেতর থেকেও সন্ত্রাসীরা সহায়তা করেছে। এদিকে প্যারিসের সন্ত্রাসী হামলার দায় স্বীকার করেছে ইরাক ও সিরিয়াভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি গোয়েন্দা নজরদারি সংস্থা (সাইট) তার নিজস্ব ওয়েবসাইটে এই তথ্য জানিয়েছে। সাইট বলছে, আরবী ও ফরাসী ভাষ্যায় আইএস প্যারিসে হামলার দায় স্বীকার করে ভিডিও প্রকাশ করেছে। এদিকে প্যারিসে গুলী ও বোমা বর্ষণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসীদের সবাই নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্যারিসের পুলিশ প্রধান মাইকেল কাদোঁ। মার্কিন বেসরকারি গোয়েন্দা সংস্থা (সাইট) প্রদত্ত তথ্য সঠিক হলে প্যারিসে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার দায় বর্তায় আইএসের ওপর। আমরা মনে করি, আইএস কিংবা যে সংগঠনই এ হামলা করেছে, তারা মানবজাতির বিরুদ্ধে ক্ষমার অযোগ্য এক জঘণ্য অপরাধ করেছে। অপরাধীদের যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তি প্রদানই এখন ফ্রান্স ও মানবজাতির কর্তব্য। এখানে প্রসঙ্গত একটি বিষয় স্পষ্ট করে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, আইএসের সাথে ‘ইসলাম’ শব্দটি যুক্ত হলেও তাদের কার্যক্রমের সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ ইসলাম সন্ত্রাসী কর্মকা-কে হারাম তথা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। তাই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যারা যুক্ত আছে, তাদের মুসলিম হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া যায় না। অথচ দুঃখজনক বিষয় হলো, অনেক সময়ই আইএস নামক বিতর্কিত সংগঠনটির সন্ত্রাসী কর্মকা-কে উপলক্ষ করে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণার কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা যায়। বিষয়টি যে উদ্দেশ্যমূলক, তা ইতোমধ্যেই স্পষ্ট হয়েছে। আইএস যে ইসলামের বন্ধু হতে পারে না, তা তাদের কর্মকা- থেকেই উপলব্ধি করা যায়। আর আইএস সৃষ্টির কারিগর কারা- তা পাশ্চাত্যের গবেষণা থেকেও জানা যায়। কানাডাভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ‘গ্লোবাল রিসার্চ’ এক প্রতিবেদনে বলেছে, আইএস মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার সৃষ্টি। আর এতে সহযোগিতা করছে বৃটেন, ইসরাইলসহ আরো কিছু দেশের গোয়েন্দা সংস্থা। আসলে ‘আইএস’ রহস্য উদ্ঘাটন করা গেলে বর্তমান বিশ্বে সন্ত্রাসী কর্মকা-ের গডফাদারদের চিহ্নিত করা যেত। এদিকে বর্তমান বিশ্বব্যবস্থা সম্পর্কে আলোকপাত করতে গিয়ে আর্নেস্ট ম্যান্ডেল বলেছেন, পুঁজিবাদী বিশ্বব্যবস্থা ‘স্থায়ী যুদ্ধ অর্থনীতির’ পর্বে প্রবেশ করেছে। অতএব সমরাস্ত্র উৎপাদন ও যুদ্ধ অব্যাহত রাখা বর্তমান বিশ্বিব্যবস্থার অনিবার্য বিষয় হয়ে উঠেছে। হত্যা, ধ্বংস, সন্ত্রাস, যুদ্ধ এবং অভিবাসী বর্তমান সময়ের বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইএস এর থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। তাই নৈতিক মেরুদণ্ড সোজা রেখে সন্ত্রাসের উৎস ও এর কারিগরদের মুখোশ উন্মোচন করা এখন মানবজাতির প্রধান দায়িত্ব হয়ে উঠেছে। তবে এই দায়িত্ব কতটা পালিত হয়- সেটাই এখন দেখার বিষয়।
হামলার ভয়াবহতা এবং দেশটির নিরাপত্তা উদ্যোগ থেকে উপলব্ধি করা যায়, এক গুরুতর অবস্থায় পতিত হয়েছে দেশটি। আমরা এই জঘন্য সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানাই। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ হামলার নিন্দা জানিয়ে হোতাদের বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানিয়েছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ফ্রান্সের পাশে থাকার কথা বলেছে ন্যাটো। যুক্তরাষ্ট্র ফ্রান্সকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত জানিয়ে এক বিবৃতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এক টুইটে বলেছেন, সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা নিয়ে তারা ফ্রান্সের মানুষের পাশে থাকবেন, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল বলেছেন, প্যারিসের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তিনি বিস্মিত ও হতবাক। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, এ হামলা ছিল সংঘবদ্ধ। তবে এ হামলা সংঘবদ্ধ এবং পরিকল্পিত কিনা- তা এখনও বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে প্যারিসের পুলিশ।
প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ফরাসী প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদ বলেছেন, এই হামলা ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। তিনি বলেছেন, এ হামলার পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতি বাইরে থেকে করা হলেও ফ্রান্সের ভেতর থেকেও সন্ত্রাসীরা সহায়তা করেছে। এদিকে প্যারিসের সন্ত্রাসী হামলার দায় স্বীকার করেছে ইরাক ও সিরিয়াভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি গোয়েন্দা নজরদারি সংস্থা (সাইট) তার নিজস্ব ওয়েবসাইটে এই তথ্য জানিয়েছে। সাইট বলছে, আরবী ও ফরাসী ভাষ্যায় আইএস প্যারিসে হামলার দায় স্বীকার করে ভিডিও প্রকাশ করেছে। এদিকে প্যারিসে গুলী ও বোমা বর্ষণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসীদের সবাই নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্যারিসের পুলিশ প্রধান মাইকেল কাদোঁ। মার্কিন বেসরকারি গোয়েন্দা সংস্থা (সাইট) প্রদত্ত তথ্য সঠিক হলে প্যারিসে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার দায় বর্তায় আইএসের ওপর। আমরা মনে করি, আইএস কিংবা যে সংগঠনই এ হামলা করেছে, তারা মানবজাতির বিরুদ্ধে ক্ষমার অযোগ্য এক জঘণ্য অপরাধ করেছে। অপরাধীদের যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তি প্রদানই এখন ফ্রান্স ও মানবজাতির কর্তব্য। এখানে প্রসঙ্গত একটি বিষয় স্পষ্ট করে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, আইএসের সাথে ‘ইসলাম’ শব্দটি যুক্ত হলেও তাদের কার্যক্রমের সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ ইসলাম সন্ত্রাসী কর্মকা-কে হারাম তথা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। তাই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যারা যুক্ত আছে, তাদের মুসলিম হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া যায় না। অথচ দুঃখজনক বিষয় হলো, অনেক সময়ই আইএস নামক বিতর্কিত সংগঠনটির সন্ত্রাসী কর্মকা-কে উপলক্ষ করে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণার কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা যায়। বিষয়টি যে উদ্দেশ্যমূলক, তা ইতোমধ্যেই স্পষ্ট হয়েছে। আইএস যে ইসলামের বন্ধু হতে পারে না, তা তাদের কর্মকা- থেকেই উপলব্ধি করা যায়। আর আইএস সৃষ্টির কারিগর কারা- তা পাশ্চাত্যের গবেষণা থেকেও জানা যায়। কানাডাভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ‘গ্লোবাল রিসার্চ’ এক প্রতিবেদনে বলেছে, আইএস মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার সৃষ্টি। আর এতে সহযোগিতা করছে বৃটেন, ইসরাইলসহ আরো কিছু দেশের গোয়েন্দা সংস্থা। আসলে ‘আইএস’ রহস্য উদ্ঘাটন করা গেলে বর্তমান বিশ্বে সন্ত্রাসী কর্মকা-ের গডফাদারদের চিহ্নিত করা যেত। এদিকে বর্তমান বিশ্বব্যবস্থা সম্পর্কে আলোকপাত করতে গিয়ে আর্নেস্ট ম্যান্ডেল বলেছেন, পুঁজিবাদী বিশ্বব্যবস্থা ‘স্থায়ী যুদ্ধ অর্থনীতির’ পর্বে প্রবেশ করেছে। অতএব সমরাস্ত্র উৎপাদন ও যুদ্ধ অব্যাহত রাখা বর্তমান বিশ্বিব্যবস্থার অনিবার্য বিষয় হয়ে উঠেছে। হত্যা, ধ্বংস, সন্ত্রাস, যুদ্ধ এবং অভিবাসী বর্তমান সময়ের বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইএস এর থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। তাই নৈতিক মেরুদণ্ড সোজা রেখে সন্ত্রাসের উৎস ও এর কারিগরদের মুখোশ উন্মোচন করা এখন মানবজাতির প্রধান দায়িত্ব হয়ে উঠেছে। তবে এই দায়িত্ব কতটা পালিত হয়- সেটাই এখন দেখার বিষয়।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন