খুনোখুনির দৃশ্য মানুষ দেখতে চায় না। কোনো সভ্য মানুষ মানুষকে খুন করতে পারে না। কোনো সভ্য সমাজেও চলতে পারে না খুনের ধারা। আমরা তো নিজেদের অসভ্য ভাবি না, আমাদের সমাজ সভ্য সমাজ, তা হলে আমাদের সমাজে খুনের ধারা অব্যাহত রয়েছে কেমন করে? মানুষ তো শান্তিময়, নিরাপদ ও উন্নত জীবনযাপনের আশায় সমাজবদ্ধ হয়েছে, রাষ্ট্র গঠন করেছে। আর মানুষের এই আশাকে বাস্তবে রূপ দেয়ার অঙ্গীকার করেই সরকার গঠন করে থাকেন রাজনীতিবিদরা। ফলে নাগরিকদের শান্তিময়, নিরাপদ ও উন্নত জীবনযাপন উপহার দেয়ার দায় সরকারের সাথে সাথে বর্তায় সরকারি দলের ওপরও। দেশের পত্র-পত্রিকায় এখন প্রায় প্রতিদিনই গুম, অপহরণ, দাঙ্গাহাঙ্গামা ও খুনের যে চিত্র পাওয়া যাচ্ছে, তাতে সরকার ও সরকারি দলের ইমেজ ক্ষুণ্ন হচ্ছে। আরো ভয়াবহ বার্তা হলো, খোদ সরকারি দলের নেতাকর্মীরা নিজেরাই এখন পরস্পরকে হত্যার নৃশংস কর্মে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য সংরক্ষণ ইউনিট, প্রথম আলোর ৬৪ জেলা প্রতিনিধির সংগৃহীত তথ্য, প্রথম আলোর প্রতিবেদন এবং সার্চ ইঞ্জিন গুগলের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মুদ্রিত রিপোর্টে বলা হয়, গত ছয় বছরে (২০০৯-১৪) সরকারি দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের অন্তত ১৭২ জন নেতাকর্মী খুন হয়েছেন। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও চরমপন্থীদের হাতে খুন হয়েছেন আরও ৭৪ জন। ২০০৯ থেকে এ বছরের নবেম্বর পর্যন্ত ক্ষমতায় থেকেও দলটি এই ২৪৬ নেতাকর্মীকে রক্ষা করতে পারেনি। এসব হত্যার পাশাপাশি দলীয় কোন্দলে সৃষ্ট সংঘর্ষে গত ছয় বছরে আহত হয়েছেন ১৩ হাজার ৬৯১ জন। এদের প্রায় সবাই সরকারি দলের নেতাকর্মী। এই সময়ে নিজেদের মধ্যে সহিংস ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ১১১টি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে দলের এত বেশিসংখ্যক নেতাকর্মী খুন হওয়ার বিষয়টি দলের নীতিনির্ধারকদের ভাবিয়ে তুললেও খুনের এই ধারা থামছে না। কয়েকদিন পরপরই দেশের কোথাও না কোথাও দলীয় কোন্দলে নিহত হচ্ছেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। আর এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে ছাত্রলীগ। গত ছয় বছরে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ছাত্রলীগের ৪০ নেতাকর্মী নিহত হলেও এসব ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রায় সবকটিই তদন্ত পর্যায়ে আটকে আছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের গত মেয়াদের (২০০৯-’১৩) প্রথম বছরের তুলনায় বর্তমান মেয়াদের প্রথম বছরে দলীয় কোন্দল ও বিরোধ আরও বেড়েছে। গত মেয়াদে প্রথম এক বছরে দলীয় কোন্দলে খুন হয়েছিলেন সংগঠনটির ২০ নেতাকর্মী। আর বর্তমান মেয়াদে প্রথম ১১ মাসে খুন হয়েছেন কমপক্ষে ৩২ নেতাকর্মী। এ সময়ে নিজেদের মধ্যে সহিংস ঘটনা ঘটেছে ১৪৫টি। আর লক্ষণীয় বিষয় হলো, নিজেদের মধ্যে কোন্দলে খুনের মত ঘটনা ঘটছে, অন্যদিকে তার বিচারও হচ্ছে না।
সরকারি দলের মধ্যে সহিংসতা ও খুনের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমনে নিরাপত্তার শংকা আরও বেড়ে গেছে। কিন্তু সরকারি দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সহিংসতা ও হত্যার মত নেতিবাচক কর্মকান্ডের প্রবণতা কেন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা এখন জাতির সামনে এক বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশে এখন বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং অন্তর্দলীয় গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে সংকট চলছে। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির অভাবে যেমন দলে-দলে সহিষ্ণুতার বদলে বরং বিদ্বেষ বাড়ছে, তেমনি গণতান্ত্রিক নিয়ম-নীতি চর্চার অভাবে অভ্যন্তরীণ কোন্দল তীব্র হচ্ছে। যার পরিণতিতে সরকারি দলে খুনোখুনির মাত্রা বাড়ছে। আরও লক্ষণীয় বিষয় হলো, ক্ষমতায় থাকলেও সরকারি দলের নিহত নেতাকর্মীদের পরিবার (দু’একটি ব্যতিক্রম ছাড়া) বিচার পাওয়া দূরে থাক, উল্টো অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। এ ধরনের মামলার শেষ কোথায় তা কেউ জানে না। অধিকাংশ হত্যাকা-ের কথিত তদন্ত শেষ করে অভিযোগপত্র জমা দিতেই কেটে যাচ্ছে তিন থেকে পাঁচ বছর। ফলে বিচার প্রার্থীদের মধ্যে হতাশা, ক্ষোভ ও বিদ্বেষের মাত্রা বাড়ছে। ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়ায় নিহতের পরিবার বা স্বজনরাই যে মানসিক অশান্তির মধ্যে আছে তা নয়, এর প্রভাব পড়ছে জনমনেও। ফলে সরকার ও প্রশাসনের ওপর মানুষের আস্থা হ্রাস পাচ্ছে। খুনোখুনির কোন বিচার না হওয়া এই আস্থাহীনতার একটা বড় কারণ। তাই খুনোখুনির বিষয়টিকে গা-সওয়া করে নেয়ার কোনো উপায় নেই। বরং সরকারের আচরণে এবং দলীয় পরিমন্ডলে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি হত্যাকান্ডের ন্যায্য বিচারের বিষয়টিকে যথাযথ গুরুত্ব দেয়া সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে। এ ব্যাপারে সঙ্গত পদক্ষেপ নেয়া হয় কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য সংরক্ষণ ইউনিট, প্রথম আলোর ৬৪ জেলা প্রতিনিধির সংগৃহীত তথ্য, প্রথম আলোর প্রতিবেদন এবং সার্চ ইঞ্জিন গুগলের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মুদ্রিত রিপোর্টে বলা হয়, গত ছয় বছরে (২০০৯-১৪) সরকারি দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের অন্তত ১৭২ জন নেতাকর্মী খুন হয়েছেন। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও চরমপন্থীদের হাতে খুন হয়েছেন আরও ৭৪ জন। ২০০৯ থেকে এ বছরের নবেম্বর পর্যন্ত ক্ষমতায় থেকেও দলটি এই ২৪৬ নেতাকর্মীকে রক্ষা করতে পারেনি। এসব হত্যার পাশাপাশি দলীয় কোন্দলে সৃষ্ট সংঘর্ষে গত ছয় বছরে আহত হয়েছেন ১৩ হাজার ৬৯১ জন। এদের প্রায় সবাই সরকারি দলের নেতাকর্মী। এই সময়ে নিজেদের মধ্যে সহিংস ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ১১১টি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে দলের এত বেশিসংখ্যক নেতাকর্মী খুন হওয়ার বিষয়টি দলের নীতিনির্ধারকদের ভাবিয়ে তুললেও খুনের এই ধারা থামছে না। কয়েকদিন পরপরই দেশের কোথাও না কোথাও দলীয় কোন্দলে নিহত হচ্ছেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। আর এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে ছাত্রলীগ। গত ছয় বছরে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ছাত্রলীগের ৪০ নেতাকর্মী নিহত হলেও এসব ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রায় সবকটিই তদন্ত পর্যায়ে আটকে আছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের গত মেয়াদের (২০০৯-’১৩) প্রথম বছরের তুলনায় বর্তমান মেয়াদের প্রথম বছরে দলীয় কোন্দল ও বিরোধ আরও বেড়েছে। গত মেয়াদে প্রথম এক বছরে দলীয় কোন্দলে খুন হয়েছিলেন সংগঠনটির ২০ নেতাকর্মী। আর বর্তমান মেয়াদে প্রথম ১১ মাসে খুন হয়েছেন কমপক্ষে ৩২ নেতাকর্মী। এ সময়ে নিজেদের মধ্যে সহিংস ঘটনা ঘটেছে ১৪৫টি। আর লক্ষণীয় বিষয় হলো, নিজেদের মধ্যে কোন্দলে খুনের মত ঘটনা ঘটছে, অন্যদিকে তার বিচারও হচ্ছে না।
সরকারি দলের মধ্যে সহিংসতা ও খুনের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমনে নিরাপত্তার শংকা আরও বেড়ে গেছে। কিন্তু সরকারি দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সহিংসতা ও হত্যার মত নেতিবাচক কর্মকান্ডের প্রবণতা কেন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা এখন জাতির সামনে এক বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশে এখন বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং অন্তর্দলীয় গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে সংকট চলছে। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির অভাবে যেমন দলে-দলে সহিষ্ণুতার বদলে বরং বিদ্বেষ বাড়ছে, তেমনি গণতান্ত্রিক নিয়ম-নীতি চর্চার অভাবে অভ্যন্তরীণ কোন্দল তীব্র হচ্ছে। যার পরিণতিতে সরকারি দলে খুনোখুনির মাত্রা বাড়ছে। আরও লক্ষণীয় বিষয় হলো, ক্ষমতায় থাকলেও সরকারি দলের নিহত নেতাকর্মীদের পরিবার (দু’একটি ব্যতিক্রম ছাড়া) বিচার পাওয়া দূরে থাক, উল্টো অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। এ ধরনের মামলার শেষ কোথায় তা কেউ জানে না। অধিকাংশ হত্যাকা-ের কথিত তদন্ত শেষ করে অভিযোগপত্র জমা দিতেই কেটে যাচ্ছে তিন থেকে পাঁচ বছর। ফলে বিচার প্রার্থীদের মধ্যে হতাশা, ক্ষোভ ও বিদ্বেষের মাত্রা বাড়ছে। ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়ায় নিহতের পরিবার বা স্বজনরাই যে মানসিক অশান্তির মধ্যে আছে তা নয়, এর প্রভাব পড়ছে জনমনেও। ফলে সরকার ও প্রশাসনের ওপর মানুষের আস্থা হ্রাস পাচ্ছে। খুনোখুনির কোন বিচার না হওয়া এই আস্থাহীনতার একটা বড় কারণ। তাই খুনোখুনির বিষয়টিকে গা-সওয়া করে নেয়ার কোনো উপায় নেই। বরং সরকারের আচরণে এবং দলীয় পরিমন্ডলে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি হত্যাকান্ডের ন্যায্য বিচারের বিষয়টিকে যথাযথ গুরুত্ব দেয়া সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে। এ ব্যাপারে সঙ্গত পদক্ষেপ নেয়া হয় কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন