বৃহস্পতিবার, ১৯ মে, ২০১৬

আযানের বিস্ময়কর প্রভাব


ঢাকা শহরকে বলা হয় মসজিদের শহর। প্রতিদিন শত শত মসজিদ থেকে ভেসে আসে আযানের ধ্বনি। কিন্তু আযানের এই ধ্বনি রবার্টকে যেভাবে প্রভাবিত করেছে তা ভাবতে গেলে অবাক হতে হয়। দিন কয়েকের জন্য তুরস্কে বেড়াতে গিয়েছিলেন রবার্ট। সেখানকার সমুদ্র সৈকতে ঘুরে বেড়ানোর সময় আশপাশের মসজিদের মিনার থেকে ভেসে আসা আযানের শব্দ শুনতে পেতেন তিনি। আযান শুনতে শুনতেই ইসলাম সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে ওঠেন রবার্ট। তাই তো স্কটল্যান্ডের নিজ বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পর স্থানীয় এক বইয়ের দোকান থেকে কিনে আনেন একটি কুরআন শরীফ। কুরআন পড়তে পড়তে অদ্ভুত আবেগে আপ্লুত হতে থাকেন রবার্ট। নিজের অনেক অজানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পান। এ সময় তিনি নানা দোলাচলে দুলতেন। কখনো কখনো কুরআন পড়া বাদ দেয়ারও চিন্তা করেছেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। কারণ এটি হতো নিজের কাছ থেকে পালিয়ে বেড়ানো। তাই তিনি কুরআন পড়া অব্যাহত রাখেন। ইংরেজিতে অনূদিত গোটা কুরআন তিনি তিন তিনবার পড়ে ফেললেন। এর পরেই ইসলাম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি। 
অন্য ধর্মের লোকজনের ইসলামে দীক্ষিত হওয়া নতুন কোনো ঘটনা নয়। কিন্তু কারো অনুপ্রেরণা ছাড়া কিংবা কোনো মুসলিম ধর্মাবলম্বীর সংস্পর্শে আসা ছাড়াই সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে ইসলাম গ্রহণের ঘটনা কিন্তু একেবারেই ব্যতিক্রম। হয়তো এ কারণেই স্কটল্যান্ডের মধ্যবয়সী এই খৃস্টান যুবকের মুসলিম হওয়ার খবরটি গুরুত্বের সাথে প্রকাশ করেছে পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যমগুলো। ইসলাম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর এই যুবক নিজ শহর ইনভেরনেসে একটি ছোট মসজিদ খুঁজে বের করেন। এরপর সাহস করে একদিন ওই মসজিদে প্রবেশ করেন এবং নিজের পরিচয় দেন। ওই মসজিদের ইমামের কাছেই কলেমা পড়ে ইসলামে দীক্ষিত হন তিনি। সেখানকার মুসল্লীরা দরাজদিলে স্বাগত জানান রবার্টকে। তবে রবার্ট মনে করেন, এখনও তার ইসলাম সম্পর্কে অনেক কিছু জানার বাকি আছে। তিনি সেসব জানার চেষ্টা করছেন। 
ভাবতে অবাক লাগে, আযানের মধুর ধ্বনি রবার্টের জীবনে বিস্ময়কর পরিবর্তন নিয়ে এলো। কিন্তু প্রশ্ন জাগে আমরা যারা মুসলমান তারাও তো দিনে ৫ বার আযানের ধ্বনি শুনে থাকি, কিন্তু আযানের ধ্বনি আমাদের মধ্যে কতটা প্রভাব বিস্তার করে? আযানের মর্মবাণীই বা আমরা কতটা উপলব্ধি করি। আযানে মহান আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করা হয়। ঘোষণা করা হয় আল্লাহর একত্ববাদের কথা, রেসালাতের কথা। আযানে আরো আহ্বান জানানো হয় সালাত ও কল্যাণের পথে ফিরে আসার জন্য। আযানের এই মর্মবাণী যদি মুসলমানরা যথাযথভাবে উপলব্ধি করতো তাহলে আজ তাদের জীবন ও সমাজ মানবজাতির জন্য উজ্জ্বল উদাহরণ হতে পারতো। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, বর্তমান সময়ে খুব কম মুসলমানই আযান ও সালাতের তাৎপর্য উপলব্ধি করে থাকেন। পবিত্র কুরআনের মর্মবাণী উপলব্ধির ক্ষেত্রেও তারা পিছিয়ে। তাই আত্মসমালোচনা এখন মুসলমানদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads