গত ৯ ডিসেম্বর ছিল পুরনো ঢাকার দরিদ্র দর্জি যুবক বিশ্বজিৎ দাসের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। দু’বছর আগে ছাত্রলীগের ঘাতকরা তাকে চাপাতির আঘাতে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছিল। বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে সবই ঘটেছিল প্রকাশ্য দিবালোকে, ২০ দলীয় জোটের সমাবেশ উপলক্ষে সেখানে সমবেত হাজার হাজার মানুষের সামনে। তা সত্ত্বেও হত্যা প্রতিহত করার জন্য কেউ চেষ্টা করেনি। শুধু তা-ই নয়, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী যে রিকশাওয়ালা মুমূর্ষু বিশ্বজিৎকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল এবং পরবর্তীকালে আদালতে সাক্ষী দিয়েছিল সেই রিকশাওয়ালা ইমনসহ মামলার সব সাক্ষীকে এখনো পালিয়ে থাকতে হচ্ছে। অন্যদিকে প্রাণভয়ে দিন কাটাচ্ছে বিশ্বজিতের স্বজনেরাও। কারণ, খুনের মামলায় আটজনের ফাঁসি, ১৩ জনের যাবজ্জীবন সাজা হলেও এবং তাদের মধ্যে আটজনকে গ্রেফতার করা হলেও মোট ২১ আসামীর ১১ জনই পলাতক রয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বেসরকারি টিভি ও সংবাদপত্রের খবরে অবশ্য ভিন্নকথা জানা যাচ্ছে। মঙ্গলবারের দৈনিক সংগ্রামে প্রকাশিত অনুসন্ধানী রিপোর্টেও বলা হয়েছে, পলাতক বলে কথিত খুনিদের মাঝে-মধ্যেই ছাত্রলীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেখা যায়। অতি সম্প্রতিও দেখা গেছে। যার অর্থ, তারা আদৌ পালিয়ে যায়নি বরং বুক ফুলিয়ে দাপটের সঙ্গেই চলাফেরা করছে। ফেসবুকেও তাদের সক্রিয় দেখা যাচ্ছে। তারা এমনকি মামলা তুলে নেয়ার জন্যও হুমকি দিচ্ছে। তাদের হুমকিতে নিহত বিশ্বজিতের স্বজনদের পাশাপাশি সাক্ষীরাও ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। পালিয়ে বেড়াচ্ছেন আসলে তারাই, খুনিরা নয়। এর কারণ সম্পর্কে নিশ্চয়ই বিস্তারিত বলার অপেক্ষা রাখে না। খুনি-ঘাতকেরা জগন্নাথ বিশ্বদ্যিালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। একই কারণে পুলিশের পক্ষেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। উল্লেখ্য, হত্যাকা-ের পরপর প্রথমে প্রচার করা হয়েছিল, বিশ্বজিৎ দাসকে নাকি জামায়াত-শিবির হত্যা করেছে! নিহত যুবক হিন্দু হওয়ায় অমন প্রচারণায় কাজ হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। তাছাড়া চাপাতি দিয়ে কোপানোর সময়ও বিশ্বজিৎকে জামায়াত-শিবিরের কর্মী বলেই চিৎকার করে জানান দেয়া হয়েছিল। কিন্তু শত চেষ্টা করেও কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। এর পরই বিপাকে পড়েছিল সরকার। প্রবল জনমতের চাপে মামলা করলেও এবং দ্রুত বিচারের মাধ্যমে কয়েকজনের ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজা দিলেও আসল কাজের তথা সকল আসামীকে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে আওয়ামী চরিত্রেরই প্রকাশ ঘটানো হয়েছে। সে কারণেই গ্রেফতার এড়িয়ে খুনিরা উল্টো বুক ফুলিয়ে চলাচল করার এবং ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে অংশ নেয়ার পাশাপাশি নিহতের স্বজন ও সাক্ষীদেরকে হুমকিও দিয়ে বেড়াচ্ছে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, এমন অবস্থা শুধু আপত্তিকর নয়, যথেষ্ট ভীতিকরও। কারণ, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থক হলেই তাদের ছাড় দেয়া হচ্ছে। অনেককে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ভারতে পার করে দেয়া হচ্ছে ও হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ শুধু বিশ্বজিৎ দাসের বেলায় ঘটেনি। জানা-অজানা আরো অনেক খুনের ক্ষেত্রেও ঘটেছে। এখনো ঘটছে। আপত্তির প্রধান কারণ হলো, খুনসহ অপরাধ দমনের জন্য দরকার যেখানে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া, সরকার সেখানে রাজনৈতিক পরিচিতির ভিত্তিতে বাছাই করে করে নিজেদের দলীয় লোকজনকে রেহাই দিচ্ছে। সেজন্যই সারাদেশে অপরাধও বেড়ে চলেছে। বস্তুত আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটেছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক কারণে হত্যা পরিণত হয়েছে ডাল-ভাতের মতো বিষয়ে। এই অভিযোগও অনস্বীকার্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, পুলিশ ও র্যাবসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত বাহিনীগুলোকে রাজনৈতিক দমন-পীড়নের কাজে ব্যস্ত রেখেছে সরকার। ওদিকে সরকারি দলের নেতা-কর্মী হলে তো বটেই, ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকলেও ‘সাত খুন’ করেও দিব্যি ছাড় ও মাফ পেয়ে যাচ্ছে খুনি ও ঘাতকরা। ছাড় ও মাফ পেয়ে যাওয়াদের পাশাপাশি সাহস বাড়ছে অন্যদেরও। অন্তরালে সরকারের প্রশ্রয় রয়েছে বলে অপরাধ দমনের ব্যাপারে পুলিশও নাকে সরষের তেল দিয়ে ঘুমিয়ে কাটাচ্ছে। ফলে বাড়ছে হত্যাসহ নানা অপরাধ। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ হয়ে দাঁড়িয়েছে তার একটি বড় উদাহরণ হিসেবে বিশ্বজিৎ হত্যাকান্ডের কথা উল্লেখ করা যায়। অথচ এ ধরনের হত্যাকান্ডে জড়িতদের শাস্তি দেয়ার ক্ষেত্রে সরকারের দায়িত্বই সবচেয়ে বেশি-যে বিষয়টিতে বর্তমান ক্ষমতাসীনরা ইচ্ছাকৃতভাবে অত্যন্ত ক্ষতিকর ব্যর্থতা দেখিয়ে চলেছেন। আমরা মনে করি, হত্যার মতো ভয়ংকর ধরনের অপরাধ কমিয়ে আনতে হলে ক্ষমতাসীনদের যেমন সংকীর্ণ দলবাজি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকেও তেমনি বাধাহীনভাবে তাদের জন্য নির্ধারিত দায়িত্ব পালন করতে দিতে হবে। অন্যদিকে দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, বিশ্বজিৎ হত্যাকান্ডের ক্ষেত্রে কিন্তু তেমন কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। সরকারের এমন নীতির সুযোগ নিয়েই খুনি-ঘাতকেরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং হুমকি দিচ্ছে। আমরা আশা করতে চাই, জনগণের প্রতি ন্যূনতম মায়া ও ভালোবাসা থাকলে সরকার অনতিবিলম্বে বিশ্বজিৎ দাসের পলাতক হিসেবে বর্ণিত খুনি-ঘাতকদের গ্রেফতার করে আদালতের দেয়া রায় কার্যকর করার পদক্ষেপ নেবে। না হলে অপরাধই শুধু বাড়তে থাকবে না, ক্ষমতাসীনদেরও এক সময় বিপদে পড়তে হবে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, এমন অবস্থা শুধু আপত্তিকর নয়, যথেষ্ট ভীতিকরও। কারণ, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থক হলেই তাদের ছাড় দেয়া হচ্ছে। অনেককে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ভারতে পার করে দেয়া হচ্ছে ও হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ শুধু বিশ্বজিৎ দাসের বেলায় ঘটেনি। জানা-অজানা আরো অনেক খুনের ক্ষেত্রেও ঘটেছে। এখনো ঘটছে। আপত্তির প্রধান কারণ হলো, খুনসহ অপরাধ দমনের জন্য দরকার যেখানে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া, সরকার সেখানে রাজনৈতিক পরিচিতির ভিত্তিতে বাছাই করে করে নিজেদের দলীয় লোকজনকে রেহাই দিচ্ছে। সেজন্যই সারাদেশে অপরাধও বেড়ে চলেছে। বস্তুত আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটেছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক কারণে হত্যা পরিণত হয়েছে ডাল-ভাতের মতো বিষয়ে। এই অভিযোগও অনস্বীকার্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, পুলিশ ও র্যাবসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত বাহিনীগুলোকে রাজনৈতিক দমন-পীড়নের কাজে ব্যস্ত রেখেছে সরকার। ওদিকে সরকারি দলের নেতা-কর্মী হলে তো বটেই, ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকলেও ‘সাত খুন’ করেও দিব্যি ছাড় ও মাফ পেয়ে যাচ্ছে খুনি ও ঘাতকরা। ছাড় ও মাফ পেয়ে যাওয়াদের পাশাপাশি সাহস বাড়ছে অন্যদেরও। অন্তরালে সরকারের প্রশ্রয় রয়েছে বলে অপরাধ দমনের ব্যাপারে পুলিশও নাকে সরষের তেল দিয়ে ঘুমিয়ে কাটাচ্ছে। ফলে বাড়ছে হত্যাসহ নানা অপরাধ। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ হয়ে দাঁড়িয়েছে তার একটি বড় উদাহরণ হিসেবে বিশ্বজিৎ হত্যাকান্ডের কথা উল্লেখ করা যায়। অথচ এ ধরনের হত্যাকান্ডে জড়িতদের শাস্তি দেয়ার ক্ষেত্রে সরকারের দায়িত্বই সবচেয়ে বেশি-যে বিষয়টিতে বর্তমান ক্ষমতাসীনরা ইচ্ছাকৃতভাবে অত্যন্ত ক্ষতিকর ব্যর্থতা দেখিয়ে চলেছেন। আমরা মনে করি, হত্যার মতো ভয়ংকর ধরনের অপরাধ কমিয়ে আনতে হলে ক্ষমতাসীনদের যেমন সংকীর্ণ দলবাজি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকেও তেমনি বাধাহীনভাবে তাদের জন্য নির্ধারিত দায়িত্ব পালন করতে দিতে হবে। অন্যদিকে দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, বিশ্বজিৎ হত্যাকান্ডের ক্ষেত্রে কিন্তু তেমন কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। সরকারের এমন নীতির সুযোগ নিয়েই খুনি-ঘাতকেরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং হুমকি দিচ্ছে। আমরা আশা করতে চাই, জনগণের প্রতি ন্যূনতম মায়া ও ভালোবাসা থাকলে সরকার অনতিবিলম্বে বিশ্বজিৎ দাসের পলাতক হিসেবে বর্ণিত খুনি-ঘাতকদের গ্রেফতার করে আদালতের দেয়া রায় কার্যকর করার পদক্ষেপ নেবে। না হলে অপরাধই শুধু বাড়তে থাকবে না, ক্ষমতাসীনদেরও এক সময় বিপদে পড়তে হবে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন