গতকাল খ্রিস্টীয় সাল ২০১৪ বিদায় নিয়েছে, আজ শুরু হয়েছে নতুন বছর ২০১৫। বিগত বছরটি বাংলাদেশের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে, কিন্তু কোনো সাফল্য কিংবা শুভ কোনো ঘটনা বা কারণের জন্য নয়। বরং এমন কিছু কারণের জন্য, যেগুলো জাতিকে শুধু বিভক্তই করেনি, অনিশ্চয়তা ও সংঘাতের দিকেও ঠেলে নিয়ে গেছে। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে পুরো বছর ধরেই রাজনৈতিক দমন-পীড়ন, গ্রেফতার, মামলা এবং গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যা ছিল প্রতিদিনকার উল্লেখযোগ্য বিষয়। এসবের ফলে হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। কয়েক লাখ নেতা-কর্মীকে মিথ্যা মামলায় আসামী করেছে পুলিশ। অসংখ্যজনকে গ্রেফতার করে কারাগারে নেয়া হয়েছে। একযোগে চলেছে রিমান্ডে নিয়ে নিষ্ঠুর নির্যাতনও। এসব কাজে সরকার পুলিশ ও র্যাবকে ব্যবহার করেছে ভাড়াটে বাহিনীর মতো। বছরের শুরুতে ৫ জানুয়ারি এক সাজানো নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার সংসদীয় গণতন্ত্রের কফিনে পেরেক ঠুকে দিয়েছে, জনগণের অধিকারকে ছিনতাই করেছে। কিন্তু সংবিধানের দোহাই দেয়া হলেও ব্যাপকভাবে জনসমর্থিত প্রধান দুই দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ উল্লেখযোগ্য কোনো দলই ওই নির্বচনে অংশ নেয়নি। ভোট দিতে যাননি এমনকি পাঁচ শতাংশ ভোটারও। সে কারণে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ‘নির্বাচিত’ হওয়ার ধুম পড়ে গিয়েছিল। সব মিলিয়ে ১৫৩ জন নির্বাচন না করেই ‘নির্বাচিত’ হয়ে গেছেন। এর ফলে ভোটাররা ভোট দেয়ার সুযোগ ও অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ওদিকে ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থাপনায় ও প্রচারণায় ঘাটতি না থাকলেও নির্বাচনটি দেশে-বিদেশে কোথাও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি বরং নিন্দিত ও প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। ফলে প্রথম থেকেই বৈধতার সংকটে পড়েছে সরকার। এই সংকট ক্রমাগত আরো মারাত্মক হয়েছে। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াতসহ ২০ দলীয় জোট নির্বাচনকালীন নির্দলীয় ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার মতো বিভিন্ন বিষয়ে একের পর এক ছাড় দিয়েছে। জোট হরতাল ধরনের বড় কোনো কর্মসূচিতে বা আন্দোলনে না গিয়েও সরকারকে সমঝোতার জন্য সুযোগ দিয়েছে। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা ২০ দলীয় জোটের দাবি মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, সমঝোতায় আসার এবং সুষ্ঠু ও গণতন্ত্রসম্মত পরিবেশ সৃষ্টি করার পরিবর্তে সরকার তার ফ্যাসিস্ট কর্মকান্ডকেই বছরের শেষদিনগুলো পর্যন্ত জোরদার করেছে।
এভাবে সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনার ভিত্তিতেও বলা যায়, রাজনৈতিক তথা গণতন্ত্রের দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশের জন্য ২০১৪ ছিল অত্যন্ত অশুভ একটি বছর। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পদ্মাসেতুকেন্দ্রিক দুর্নীতির প্রভাব তো ছিলই, পাশাপাশি অন্য অনেক কারণেও সরকার ব্যাপকভাবে নিন্দিত হয়েছে। অর্থনীতির কোনো একটি খাতেই দেশ শুভ কিছু অর্জন করতে পারেনি। দাতারা সাহায্য বন্ধ করেছে নয়তো অনেক কমিয়ে দিয়েছে। দেশে নতুন কোনো বিদেশী বিনিয়োগ হয়নি। দেশের রফতানি আয়ের প্রধান খাত গার্মেন্টও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। বাংলাদেশীরা বিদেশে চাকরি পায়নি বললেই চলে। একযোগে সমাজে বেড়েছে অপরাধ। ছিনতাই-ডাকাতি তো বটেই, হত্যাও ডাল-ভাতের মতো সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারের প্রশ্রয়ে পরিস্থিতির এতটাই অবনতি ঘটেছিল যে, র্যাবের মতো একটি অভিজাত বাহিনীর অফিসাররাও সরাসরি রাজনৈতিক হত্যাকান্ডে অংশ নিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনা এখন সারাবিশ্বেই আলোচিত হচ্ছে। সব মিলিয়ে বলা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের নীতি ও কার্যক্রমের পরিণতিতে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়েছে বহুদূর। জাতি বিভক্ত হয়েছে ও পরস্পরের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে, সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে, রাজনৈতিক হত্যাকান্ড পরিণত হয়েছে স্বাভাবিক বিষয়ে। সরকার গণমাধ্যমের টুঁটি টিপে ধরার নীতিকে অব্যাহত রেখেছে। ফলে দৈনিক আমার দেশ যেমন প্রকাশিত হতে পারেনি তেমনি নিষিদ্ধ রয়েছে দিগন্ত ও ইসলামিক টিভি। ওদিকে সরকারের উদ্যোগে স্বাধীনতা খুইয়ে ফেলেছে জনগণের শেষ ভরসার স্থল বিচার বিভাগও।
বিগত বছরের অভিজ্ঞতা অতি তিক্ত হওয়ায় কোনোদিকেই তেমন কোনো সম্ভাবনার সৃষ্টি হতে পারেনি। একই কারণে নতুন বছর ২০১৫ সালকে নিয়ে জনগণ এখনই আশাবাদী হয়ে উঠতে পারছে না। তারা বরং আশংকা করছে, বিশেষ করে রাজনৈতিক সংকট ক্রমাগত আরো মারাত্মকই হতে থাকবে। এর ফলে দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত হবে। অর্থনীতিসহ রাষ্ট্রীয় জীবনের অন্যসব ক্ষেত্রেও পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে। আমরা মনে করি, এমন আশংকার অবসান ঘটানোর দায়িত্ব সরকারের। হামলা ও হত্যা, গ্রেফতার ও মিথ্যা মামলা এবং নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে রাজনৈতিক দমন-পীড়ন চালানোর ও বাড়ানোর পরিবর্তে ক্ষমতাসীনদের উচিত ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে সংবিধানে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিধান যুক্ত করা এবং অমন একটি সরকারের অধীনে নতুন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পদক্ষেপ নেয়া। তার আগে বর্তমান মন্ত্রিসভাকে পদত্যাগ করতে হবে, ভেঙে দিতে হবে বিদ্যমান সংসদকেও। আমরা আশা করতে চাই, বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে সংঘাত এড়িয়ে সমঝোতার পথেই পা বাড়াবেন ক্ষমতাসীনরা।
এভাবে সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনার ভিত্তিতেও বলা যায়, রাজনৈতিক তথা গণতন্ত্রের দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশের জন্য ২০১৪ ছিল অত্যন্ত অশুভ একটি বছর। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পদ্মাসেতুকেন্দ্রিক দুর্নীতির প্রভাব তো ছিলই, পাশাপাশি অন্য অনেক কারণেও সরকার ব্যাপকভাবে নিন্দিত হয়েছে। অর্থনীতির কোনো একটি খাতেই দেশ শুভ কিছু অর্জন করতে পারেনি। দাতারা সাহায্য বন্ধ করেছে নয়তো অনেক কমিয়ে দিয়েছে। দেশে নতুন কোনো বিদেশী বিনিয়োগ হয়নি। দেশের রফতানি আয়ের প্রধান খাত গার্মেন্টও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। বাংলাদেশীরা বিদেশে চাকরি পায়নি বললেই চলে। একযোগে সমাজে বেড়েছে অপরাধ। ছিনতাই-ডাকাতি তো বটেই, হত্যাও ডাল-ভাতের মতো সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারের প্রশ্রয়ে পরিস্থিতির এতটাই অবনতি ঘটেছিল যে, র্যাবের মতো একটি অভিজাত বাহিনীর অফিসাররাও সরাসরি রাজনৈতিক হত্যাকান্ডে অংশ নিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনা এখন সারাবিশ্বেই আলোচিত হচ্ছে। সব মিলিয়ে বলা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের নীতি ও কার্যক্রমের পরিণতিতে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়েছে বহুদূর। জাতি বিভক্ত হয়েছে ও পরস্পরের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে, সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে, রাজনৈতিক হত্যাকান্ড পরিণত হয়েছে স্বাভাবিক বিষয়ে। সরকার গণমাধ্যমের টুঁটি টিপে ধরার নীতিকে অব্যাহত রেখেছে। ফলে দৈনিক আমার দেশ যেমন প্রকাশিত হতে পারেনি তেমনি নিষিদ্ধ রয়েছে দিগন্ত ও ইসলামিক টিভি। ওদিকে সরকারের উদ্যোগে স্বাধীনতা খুইয়ে ফেলেছে জনগণের শেষ ভরসার স্থল বিচার বিভাগও।
বিগত বছরের অভিজ্ঞতা অতি তিক্ত হওয়ায় কোনোদিকেই তেমন কোনো সম্ভাবনার সৃষ্টি হতে পারেনি। একই কারণে নতুন বছর ২০১৫ সালকে নিয়ে জনগণ এখনই আশাবাদী হয়ে উঠতে পারছে না। তারা বরং আশংকা করছে, বিশেষ করে রাজনৈতিক সংকট ক্রমাগত আরো মারাত্মকই হতে থাকবে। এর ফলে দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত হবে। অর্থনীতিসহ রাষ্ট্রীয় জীবনের অন্যসব ক্ষেত্রেও পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে। আমরা মনে করি, এমন আশংকার অবসান ঘটানোর দায়িত্ব সরকারের। হামলা ও হত্যা, গ্রেফতার ও মিথ্যা মামলা এবং নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে রাজনৈতিক দমন-পীড়ন চালানোর ও বাড়ানোর পরিবর্তে ক্ষমতাসীনদের উচিত ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে সংবিধানে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিধান যুক্ত করা এবং অমন একটি সরকারের অধীনে নতুন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পদক্ষেপ নেয়া। তার আগে বর্তমান মন্ত্রিসভাকে পদত্যাগ করতে হবে, ভেঙে দিতে হবে বিদ্যমান সংসদকেও। আমরা আশা করতে চাই, বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে সংঘাত এড়িয়ে সমঝোতার পথেই পা বাড়াবেন ক্ষমতাসীনরা।