পত্রিকার পাতায় প্রতিনিয়ত হত্যা, ধর্ষণ, খুনের বিভৎসতার ছবি মুদ্রিত হচ্ছে। কিছু দিন আগে চলছিল ধর্ষণ আর শিশু নিধনের মহোৎসব। আর এখন চলছে ক্রসফায়ার, গুপ্তহত্যা, গণপিটুনির সিরিজ। মসজিদের ইমাম মুয়াজ্জিন, মন্দিরের পুরোহিত, পুলিশ অফিসারের স্ত্রী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষ খুনের শিকার হচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে দেশের কোথাও যেন এতটুকু জায়গা নেই যেখানে দাঁড়িয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয়া যায়। দেশের সর্বত্র বিরাজ করছে হাহাকার আর খুনাখুনির লোমহর্ষক বিভৎসতার চিত্র। একটি স্বাধীন সার্বভৌমত্ব দেশের মানুষ আজ অসহায় দুর্বৃত্তায়নের কাছে। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এই দেশ যেন আজ বিরান বাড়িতে পরিণত হয়েছে। অস্থির এই সময়ে প্রত্যাশা ছিল সকল ভেদাভেদ ভুলে আমরা সবাই একই ছাতার নিচে অবস্থান করবো। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য রাজনীতির বেড়াজালে ঐক্যের পথ রুদ্র হয়ে গেছে। যে কারণে আমরা লক্ষ্য করছি প্রত্যেকটা খুনের ঘটনার সর্বোচ্চ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আওয়ামী লীগ বলে দেয় খুন বা গুপ্তহত্যার জন্য বিএনপি জামায়াত দায়ী। আর একইভাবে বিএনপি বলে দেয় খুন বা গুপ্তহত্যার জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী। এই ব্লেমগেমের কারণে অনেক সময় প্রকৃত অপরাধীরা রয়ে যায় ধরা ছোঁয়ার বাইরে। দেশ এখন মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে নাগরিকদের স্বাভাবিক মৃত্যু যেন অস্বাভাবিক মৃত্যুর ফ্রেমে আটকে যাচ্ছে। একদিকে চলছে টার্গেট কিলিং অন্যদিকে চলছে সাঁড়াশি অভিযান। যে সময়ে এই লেখাটি লিখছি সেসময় পর্যন্ত পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে ১৩ হাজারের মতো আটক করা হয়ছে। এদের মধ্যে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মী বহুলাংশে বেশি রয়েছে। এই সাঁড়াশি অভিযান শুধুমাত্র জঙ্গিদের বিরুদ্ধে হলে প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার সুযোগ যেমন ছিল না, তেমনিভাবে সাধারণ নাগরিকদেরও জেলবাস খাটতে হতো না। সাঁড়াশি অভিযান নিয়ে লেখা এই নিবন্ধের বিবেচ্য বিষয় নয়। সম্প্রতি দেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা অনেকাংশে বেড়ে গেছে, এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। হিন্দু সম্প্রদায়ের নির্যাতনের বিষয় ও রানা দাস বাবুদের মন্তব্যের বিশ্লেষণ করাই মূলত এই নিবন্ধের উদ্দেশ্য।
বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নির্যাতনের ঘটনা বেড়ে চললেও তাদের নিরাপত্তায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার কোনো ভূমিকা রাখছে না বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় হিন্দু মহাজোট। রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে হিন্দু সম্প্রদায়ের খুন, জখম, শ্লীলতাহানি, অত্যাচার, সম্পত্তি দখল, মন্দির প্রতিমা ভাংচুর’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে গতকাল এ অভিযোগ করে সংগঠনটি। হিন্দু মহাজোটের আন্তর্জাতিক সম্পাদক রিপদ দে বলেন, আমাদের উৎখাতে রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমাদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে হবে। সরকার সব বিষয় জেনেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। মনে রাখতে হবে হিন্দু না থাকলে বাংলাদেশও থাকবে না, আমাদের দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে। একই সুরের আওয়াজ শোনা গেছে রানা দাস ও পীযূয বাবুদের কণ্ঠে। তারা দুজনই আওয়ামী ঘরানার লোক। তারপরেও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ভারতের হস্তক্ষেপ এর প্রতি তারা আহ্বান জানিয়েছে। এখানকার নাগরিকরা যদি অন্য দেশের সহযোগিতা চায় নৈরাজ্য দূর করার জন্য এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে! বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে পুনরায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। অধিবেশনে বক্তারা বলেছেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বাংলাদেশের এই নাজুক পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘুর বিষয়টিকে ঘিরে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে কেন বাবুরা এত উৎসাহিত হয়েছেন?
পৃথিবীর যে কোন দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মুসলমান সর্বাধিক ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে চেষ্টা করেছে। সংখ্যালঘুদের অধিকারের ব্যাপারে মুসলমানের চেয়ে বেশি সচেতন আর কোন জাতি পৃথিবীতে আছে আমার জানা নেই। ভারতের বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার সময় বাংলাদেশের মুসলমানেরা যে ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে তা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। তারপরেও বলব সংখ্যালঘুদের উপর যারাই নির্যাতনের স্টিম রোলার প্রয়োগ করুক তাদেরকে দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করা হোক। যাতে করে কেউ ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে দেশকে অস্থিতিশীল করার সুযোগ না পায়। কি বলেছিলেন রানা দাস গুপ্ত ও পীযূয বাবু তা পাঠকদের জ্ঞাতার্থে তুলে ধরা প্রয়োজন। ‘‘রানা দাসগুপ্ত বলেছেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হলো হিন্দুরা। এ সম্প্রদায়টি বাংলাদেশের ঝুঁকির মুখে। মৌলবাদী ও জামায়াতিরা বাংলাদেশ থেকে হিন্দুদের মূলোৎপাটনের চেষ্টা করছে। আমরা মনে করি হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে ভারত এক্ষেত্রে কিছু করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে আমাদের বড় আশা রয়েছে। তার উচিত এ বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের কাছে তুলে ধরে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ভারতের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি দৈনিক ও অনলাইন পত্রিকায় পিটিআই সূত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।” রানা দাসগুপ্তের একই সূরে অভিনেতা পিযূষ বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘যতক্ষণ না ভারত বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে মৌলবাদীরা থামবে না।’ তিনি বলেন, ‘ভারত এ অঞ্চলের একটি প্রধান শক্তি, একটি প্রতিবেশী দেশে যখন হিন্দুদের নির্মমভাবে জবাই করা হচ্ছে তখন সে অলস বসে থাকতে পারে না’। দাসগুপ্তের পাশাপাশি মিঃ বন্দোপাধ্যায় বাংলাদেশে ভারতীয় হাই কমিশনারের অতি দ্রুত সাড়া কামনা করেন- (সূত্র পিটিআই)।
ভারতে কতবার যে হিন্দু মুসলমানদের রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা হয়েছে, কতবার যে হিন্দু মুসলমানদের তাজা রক্তে ভারতের বুক রক্তাক্ত হয়েছে, কত মা সন্তান হারা হয়ে চোখের পানিতে পৃথিবীতে ঝাপসা দেখেছে, কত স্ত্রী স্বামী হারা, কত শিশু পিতা-মাতা হারা হয়ে এতিম হয়েছে সে ইতিহাস কি তারা ভুলে গেছেন। ভারতের হিন্দু মুসলমানের মধ্যে এই ব্যাধি অত্যন্ত ব্যাপক ছিল বা আজও আছে। ফলে আজও ভয় হয় আবার হয়ত কখন ভারতের হিন্দু মুসলমান অবতীর্ণ হবে এই নিষ্ঠুর পৈশাচিক ভূমিকায়। ১৯৬৪ তে কি ভয়ানক রক্তাক্ত দাঙ্গা কলকাতায় হয়েছিল তা কি মিঃ রানাদাস বাবুরা ভুলে গেছেন। রানা দাস বাবুরা শুধু হিন্দুদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করলেন অথচ মুসলমানসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী মানুষের কথা একটু ভাবলেন না কেন? স্বাধীনতার আগের কথা না হয় বাদই দিলাম স্বাধীনতার পরে কার দ্বারা এদেশের হিন্দুরা নির্যাতিত হয়েছে সে ইতিহাস জাতির সামনে তুলে ধরার অনুরোধ করছি। সাম্প্রতিক ৪৮ ব্যক্তিকে হত্যা করার খবর পত্রিকার পাতায় মুদ্রিত হয়েছে। এই ৪৮ জনের মধ্যে কতজন হিন্দু আর কতজন অন্য ধর্মের লোক? সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখার প্রয়োজন আছে। গত বছরে রাজধানীর গুলশানে এক ইটালিয়ান নাগরিক ও উত্তরবঙ্গে এক জাপানি নাগরিককে হত্যা করা হয়। তারা তো আর হিন্দু ছিলেন না। ঢাকার হোসনী দালান রোডে বোমা হামলা করে ৪-৫ জনকে হত্যা করা হয় তারা তো সবাই মুসলমান ছিলেন। এরা কি মানুষ নন? রানা বাবুদের মন ওদের জন্য কাঁদতে দেখিনি ? কেমন অসাম্প্রদায়িক তারা?
পূর্ব রাজাবাজারের মওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকীকে যখন হত্যা করা হয় তখন ভারতকে ডাকা হয়নি কেন? সকল হত্যাকা-কে বাদ দিয়ে শুধু হিন্দুদের ব্যাপারে এত সোচ্চার কেন? পীযূয বাবু ও রানা দাসগুপ্তকে অনুরোধ করব‘ আপনারা ওই ৪৮ জনের তালিকা জাতির সামনে প্রকাশ করুন। আর দেখুন ওর মধ্যে কতজন মুসলমান, কতজন হিন্দু, কতজন খ্রিস্টান, কতজন বৌদ্ধ এবং কতজন বিদেশী রয়েছেন। ভারতের হস্তক্ষেপ কামনা করার আগে তাদের উচিত ছিল আয়না দিয়ে সঠিক তথ্যটা এক পলকে দেখা। সংখ্যালঘুরা বাংলাদেশে নিরাপদে নেই ইহা যদি প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে শুধু মুসলমানদের সর্বনাশ হবে বিষয়টি এমন নয়, হুমকিতে পড়বে বাংলাদেশ। যার পরিণাম কখনো কারও জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না।
আমরা আশা করবো রাষ্ট্র বিষয়টিকে গুরুত্বের সহিত বিবেচনা করে প্রকৃত দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি রানা দাস ও পীযূয বাবুদের ভারতের হস্তক্ষেপ কামনা করাটা কি দেশদ্রোহীর শামিল কি না সে বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।
বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নির্যাতনের ঘটনা বেড়ে চললেও তাদের নিরাপত্তায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার কোনো ভূমিকা রাখছে না বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় হিন্দু মহাজোট। রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে হিন্দু সম্প্রদায়ের খুন, জখম, শ্লীলতাহানি, অত্যাচার, সম্পত্তি দখল, মন্দির প্রতিমা ভাংচুর’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে গতকাল এ অভিযোগ করে সংগঠনটি। হিন্দু মহাজোটের আন্তর্জাতিক সম্পাদক রিপদ দে বলেন, আমাদের উৎখাতে রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমাদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে হবে। সরকার সব বিষয় জেনেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। মনে রাখতে হবে হিন্দু না থাকলে বাংলাদেশও থাকবে না, আমাদের দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে। একই সুরের আওয়াজ শোনা গেছে রানা দাস ও পীযূয বাবুদের কণ্ঠে। তারা দুজনই আওয়ামী ঘরানার লোক। তারপরেও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ভারতের হস্তক্ষেপ এর প্রতি তারা আহ্বান জানিয়েছে। এখানকার নাগরিকরা যদি অন্য দেশের সহযোগিতা চায় নৈরাজ্য দূর করার জন্য এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে! বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে পুনরায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। অধিবেশনে বক্তারা বলেছেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বাংলাদেশের এই নাজুক পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘুর বিষয়টিকে ঘিরে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে কেন বাবুরা এত উৎসাহিত হয়েছেন?
পৃথিবীর যে কোন দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মুসলমান সর্বাধিক ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে চেষ্টা করেছে। সংখ্যালঘুদের অধিকারের ব্যাপারে মুসলমানের চেয়ে বেশি সচেতন আর কোন জাতি পৃথিবীতে আছে আমার জানা নেই। ভারতের বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার সময় বাংলাদেশের মুসলমানেরা যে ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে তা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। তারপরেও বলব সংখ্যালঘুদের উপর যারাই নির্যাতনের স্টিম রোলার প্রয়োগ করুক তাদেরকে দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করা হোক। যাতে করে কেউ ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে দেশকে অস্থিতিশীল করার সুযোগ না পায়। কি বলেছিলেন রানা দাস গুপ্ত ও পীযূয বাবু তা পাঠকদের জ্ঞাতার্থে তুলে ধরা প্রয়োজন। ‘‘রানা দাসগুপ্ত বলেছেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হলো হিন্দুরা। এ সম্প্রদায়টি বাংলাদেশের ঝুঁকির মুখে। মৌলবাদী ও জামায়াতিরা বাংলাদেশ থেকে হিন্দুদের মূলোৎপাটনের চেষ্টা করছে। আমরা মনে করি হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে ভারত এক্ষেত্রে কিছু করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে আমাদের বড় আশা রয়েছে। তার উচিত এ বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের কাছে তুলে ধরে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ভারতের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি দৈনিক ও অনলাইন পত্রিকায় পিটিআই সূত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।” রানা দাসগুপ্তের একই সূরে অভিনেতা পিযূষ বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘যতক্ষণ না ভারত বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে মৌলবাদীরা থামবে না।’ তিনি বলেন, ‘ভারত এ অঞ্চলের একটি প্রধান শক্তি, একটি প্রতিবেশী দেশে যখন হিন্দুদের নির্মমভাবে জবাই করা হচ্ছে তখন সে অলস বসে থাকতে পারে না’। দাসগুপ্তের পাশাপাশি মিঃ বন্দোপাধ্যায় বাংলাদেশে ভারতীয় হাই কমিশনারের অতি দ্রুত সাড়া কামনা করেন- (সূত্র পিটিআই)।
ভারতে কতবার যে হিন্দু মুসলমানদের রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা হয়েছে, কতবার যে হিন্দু মুসলমানদের তাজা রক্তে ভারতের বুক রক্তাক্ত হয়েছে, কত মা সন্তান হারা হয়ে চোখের পানিতে পৃথিবীতে ঝাপসা দেখেছে, কত স্ত্রী স্বামী হারা, কত শিশু পিতা-মাতা হারা হয়ে এতিম হয়েছে সে ইতিহাস কি তারা ভুলে গেছেন। ভারতের হিন্দু মুসলমানের মধ্যে এই ব্যাধি অত্যন্ত ব্যাপক ছিল বা আজও আছে। ফলে আজও ভয় হয় আবার হয়ত কখন ভারতের হিন্দু মুসলমান অবতীর্ণ হবে এই নিষ্ঠুর পৈশাচিক ভূমিকায়। ১৯৬৪ তে কি ভয়ানক রক্তাক্ত দাঙ্গা কলকাতায় হয়েছিল তা কি মিঃ রানাদাস বাবুরা ভুলে গেছেন। রানা দাস বাবুরা শুধু হিন্দুদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করলেন অথচ মুসলমানসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী মানুষের কথা একটু ভাবলেন না কেন? স্বাধীনতার আগের কথা না হয় বাদই দিলাম স্বাধীনতার পরে কার দ্বারা এদেশের হিন্দুরা নির্যাতিত হয়েছে সে ইতিহাস জাতির সামনে তুলে ধরার অনুরোধ করছি। সাম্প্রতিক ৪৮ ব্যক্তিকে হত্যা করার খবর পত্রিকার পাতায় মুদ্রিত হয়েছে। এই ৪৮ জনের মধ্যে কতজন হিন্দু আর কতজন অন্য ধর্মের লোক? সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখার প্রয়োজন আছে। গত বছরে রাজধানীর গুলশানে এক ইটালিয়ান নাগরিক ও উত্তরবঙ্গে এক জাপানি নাগরিককে হত্যা করা হয়। তারা তো আর হিন্দু ছিলেন না। ঢাকার হোসনী দালান রোডে বোমা হামলা করে ৪-৫ জনকে হত্যা করা হয় তারা তো সবাই মুসলমান ছিলেন। এরা কি মানুষ নন? রানা বাবুদের মন ওদের জন্য কাঁদতে দেখিনি ? কেমন অসাম্প্রদায়িক তারা?
পূর্ব রাজাবাজারের মওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকীকে যখন হত্যা করা হয় তখন ভারতকে ডাকা হয়নি কেন? সকল হত্যাকা-কে বাদ দিয়ে শুধু হিন্দুদের ব্যাপারে এত সোচ্চার কেন? পীযূয বাবু ও রানা দাসগুপ্তকে অনুরোধ করব‘ আপনারা ওই ৪৮ জনের তালিকা জাতির সামনে প্রকাশ করুন। আর দেখুন ওর মধ্যে কতজন মুসলমান, কতজন হিন্দু, কতজন খ্রিস্টান, কতজন বৌদ্ধ এবং কতজন বিদেশী রয়েছেন। ভারতের হস্তক্ষেপ কামনা করার আগে তাদের উচিত ছিল আয়না দিয়ে সঠিক তথ্যটা এক পলকে দেখা। সংখ্যালঘুরা বাংলাদেশে নিরাপদে নেই ইহা যদি প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে শুধু মুসলমানদের সর্বনাশ হবে বিষয়টি এমন নয়, হুমকিতে পড়বে বাংলাদেশ। যার পরিণাম কখনো কারও জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না।
আমরা আশা করবো রাষ্ট্র বিষয়টিকে গুরুত্বের সহিত বিবেচনা করে প্রকৃত দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি রানা দাস ও পীযূয বাবুদের ভারতের হস্তক্ষেপ কামনা করাটা কি দেশদ্রোহীর শামিল কি না সে বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন