ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে ঘরে ফেরা। আনন্দের দাওয়াত নিয়ে প্রতি বছর ফিরে আসে ঈদ। ফিরিয়ে নিতে আসে আমাদের আনন্দের ভেতর দিয়ে এর উৎসের দিকে। মহান স্রষ্টা নিত্য, তিনি পরম; তিনি বিনে আনন্দ নেই। সব প্রশংসা তাঁরই।
আমরা আনন্দ চাই। নির্মল আনন্দের সম্মিলন চাই। এ চাওয়া থেকেই ঈদ। সম্প্রীতি ও আনন্দের উপল ঈদ। দু’টি ঈদ আসে বছরে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। দিনণ তার বাঁধা, পয়লা শাওয়াল ও দশম জিলহজ। আনন্দের জন্য দিন তো বেঁধে দেয়া হলো কিন্তু আনন্দকে বাঁধবে কে? কেউ না। আনন্দ কি রুটিন মানে? না। বিনা কারণে আমরা কেউ আনন্দিত হই না। হই তখন, যখন আনন্দের কিছু সত্যিই ঘটে। পরীায়-খেলায়-নির্বাচনে জিতলে আনন্দিত হই, হঠাৎ পুরস্কার বা তেমন কিছু পেয়ে গেলে আনন্দিত হই, বড় কাজ সুন্দর করে শেষ করতে পারলে আনন্দিত হই। এসব আনন্দের ঘটনা আগে থেকে বাঁধা থাকে না, সময়ও নির্দিষ্ট থাকে না। আনন্দ অনির্দিষ্ট। কিন্তু ঈদের দিন নির্দিষ্ট। তাহলে কিভাবে মিলন ঘটবে এ দুয়ের? কী করে আনন্দময় হবে ঈদ, যদি আনন্দের কিছু না ঘটে? না ঘটলে কি ঘটাতে হবে? কিন্তু আনন্দের সাথে তো জবরদস্তি চলে না। সে স্বতঃস্ফূর্তভাবেই ঘটে, তাকে ঘটানো যায় না। অনেকে বলেন, যা ঘটানো হয় তা ভোগের, আনন্দের নয়। নতুন জামায় শরীর সাজানো যায়, মন নয়। সুন্দর টুপি পরে মাথার শোভা বাড়ানো যায়, চিন্তার যন্ত্রণা তাড়ানো যায় না।
আনন্দের কিছু না ঘটলে কী করে আনন্দময় হবে ঈদ? যৌক্তিক প্রশ্ন, কিন্তু অগভীর। প্রশ্নটি মনে যখন সৃষ্টি হয়েছে, তখন ইসলামের জীবনদর্শন মনে ছিল বলে মনে হয় না। আসুন তাহলে, আমরা একটু গভীরে গিয়ে দেখি, আনন্দ কোথায় আছে। মানুষ সাধারণত কিসে আনন্দ পায়, আমরা ওপরে তা বলেছি। আরো কারণ আছে আনন্দের। আমরা এর তালিকা টানব না; সব কারণ বলব সংেেপ, দুই শব্দে : সাফল্য ও প্রাপ্তি। আনন্দের সব কারণই এ দুই শব্দের ভেতরে আছে। এটুকু মনে রেখে এবার সেই জরুরি প্রশ্ন, যার মধ্যে সুপ্ত আছে আমাদের উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তর। তা হলো, ইসলামি জীবনদর্শনের আলোকে মানবজীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য ও প্রাপ্তি কী? এর একমাত্র ও সন্দেহশূন্য উত্তর : সবচেয়ে বড় সাফল্য হলো পার্থিব জীবনের পরীায় উত্তীর্ণ হওয়া আর সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি। এর উত্তরণ ও অর্জনের ভিত্তি হিসেবে রয়েছে পাঁচটি মূল ইবাদত ঈমান, সালাত বা নামাজ, জাকাত, রোজা বা সাওম ও হজ। প্রথম তিনটি দীর্ঘব্যাপ্ত, শেষ দু’টি মওসুমি। অর্থাৎ বছরে একবার পালনীয়, নির্দিষ্ট কিছু দিন। ইসলাম আনন্দের দুই ঈদকে নির্দিষ্ট করে দিয়েছে এ দুই নির্দিষ্ট সময়ের ইবাদতের সাথে। রোজা শেষে ঈদুল ফিতর, হজের পরে ঈদুল আজহা। রোজা শেখায় নিভৃত আত্মসংযম; হজ দেখায় আল্লাহর পথে ত্যাগ ও বিশ্বভ্রাতৃত্বের নমুনা। রোজায় টানা এক মাস কঠিন আত্মসংযমের পরীা, হজে প্রভুর ডাকে সাড়া দিয়ে হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে কাবাঘরে গিয়ে ‘হে আল্লাহ, আমি হাজির’ বলে আত্মনিবেদন এবং কোরবানি সম্পাদনের পরীা। দুই ঈদ হলো এ দুই ইবাদতের পরীায় উত্তীর্ণ হওয়ার পবিত্র আনন্দোৎসব। সন্দেহ নেই, যারা বলে ‘নিশ্চয়ই আমার সালাত, আমার কোরবানি, আমার জীবন এবং আমার মরণ, সবই মহাজগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যই, তাদের কাছে তাদের প্রভুর হুকুম পালনে সফল হওয়ার চেয়ে বড় আনন্দের ঘটনা আর কিছুই হতে পারে না। তাই বাহ্যিকভাবে সবার জন্য হলেও ঈদের আসল আনন্দ সবাইকে স্পর্শ না-ও করতে পারে। ঈদুল ফিতরের আনন্দ তাদের জন্য, যারা শরীর ও মন দিয়ে রোজা রেখে রোজার পবিত্রতা, ত্যাগ, ধৈর্য ও সংযমের শিায় জীবনযাপনের অঙ্গীকার করেছে। আর ঈদুল আজহার আনন্দ-আয়োজন মূলত আল্লাহর ঘরের মুসাফির এবং আল্লাহর উদ্দেশে কোরবানিতে অংশগ্রহণকারীদের সম্মানে। রোজাদার ও হজ-কোরবানি পালনকারীদের জন্য আল্লাহ তায়ালা বিশেষ পুরস্কারের ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন, ঈদ হলো সেই পুরস্কার মঞ্জুরির দিন। এ জন্যই ঈদের দিনকে বলা হয়েছে ‘ইয়াওম আল-জায়িজাহ’, পুরস্কার দিবস। পরীায় যারা অংশ নিয়েছে, পুরস্কার তাদের জন্যই। সমর্পণের নিষ্ঠা ও সংযমের কষ্ট যারা স্বীকার করেছে, তাদের জন্যই ঈদের সত্যিকারের আনন্দ।
আমরা আনন্দ চাই। নির্মল আনন্দের সম্মিলন চাই। এ চাওয়া থেকেই ঈদ। সম্প্রীতি ও আনন্দের উপল ঈদ। দু’টি ঈদ আসে বছরে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। দিনণ তার বাঁধা, পয়লা শাওয়াল ও দশম জিলহজ। আনন্দের জন্য দিন তো বেঁধে দেয়া হলো কিন্তু আনন্দকে বাঁধবে কে? কেউ না। আনন্দ কি রুটিন মানে? না। বিনা কারণে আমরা কেউ আনন্দিত হই না। হই তখন, যখন আনন্দের কিছু সত্যিই ঘটে। পরীায়-খেলায়-নির্বাচনে জিতলে আনন্দিত হই, হঠাৎ পুরস্কার বা তেমন কিছু পেয়ে গেলে আনন্দিত হই, বড় কাজ সুন্দর করে শেষ করতে পারলে আনন্দিত হই। এসব আনন্দের ঘটনা আগে থেকে বাঁধা থাকে না, সময়ও নির্দিষ্ট থাকে না। আনন্দ অনির্দিষ্ট। কিন্তু ঈদের দিন নির্দিষ্ট। তাহলে কিভাবে মিলন ঘটবে এ দুয়ের? কী করে আনন্দময় হবে ঈদ, যদি আনন্দের কিছু না ঘটে? না ঘটলে কি ঘটাতে হবে? কিন্তু আনন্দের সাথে তো জবরদস্তি চলে না। সে স্বতঃস্ফূর্তভাবেই ঘটে, তাকে ঘটানো যায় না। অনেকে বলেন, যা ঘটানো হয় তা ভোগের, আনন্দের নয়। নতুন জামায় শরীর সাজানো যায়, মন নয়। সুন্দর টুপি পরে মাথার শোভা বাড়ানো যায়, চিন্তার যন্ত্রণা তাড়ানো যায় না।
আনন্দের কিছু না ঘটলে কী করে আনন্দময় হবে ঈদ? যৌক্তিক প্রশ্ন, কিন্তু অগভীর। প্রশ্নটি মনে যখন সৃষ্টি হয়েছে, তখন ইসলামের জীবনদর্শন মনে ছিল বলে মনে হয় না। আসুন তাহলে, আমরা একটু গভীরে গিয়ে দেখি, আনন্দ কোথায় আছে। মানুষ সাধারণত কিসে আনন্দ পায়, আমরা ওপরে তা বলেছি। আরো কারণ আছে আনন্দের। আমরা এর তালিকা টানব না; সব কারণ বলব সংেেপ, দুই শব্দে : সাফল্য ও প্রাপ্তি। আনন্দের সব কারণই এ দুই শব্দের ভেতরে আছে। এটুকু মনে রেখে এবার সেই জরুরি প্রশ্ন, যার মধ্যে সুপ্ত আছে আমাদের উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তর। তা হলো, ইসলামি জীবনদর্শনের আলোকে মানবজীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য ও প্রাপ্তি কী? এর একমাত্র ও সন্দেহশূন্য উত্তর : সবচেয়ে বড় সাফল্য হলো পার্থিব জীবনের পরীায় উত্তীর্ণ হওয়া আর সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি। এর উত্তরণ ও অর্জনের ভিত্তি হিসেবে রয়েছে পাঁচটি মূল ইবাদত ঈমান, সালাত বা নামাজ, জাকাত, রোজা বা সাওম ও হজ। প্রথম তিনটি দীর্ঘব্যাপ্ত, শেষ দু’টি মওসুমি। অর্থাৎ বছরে একবার পালনীয়, নির্দিষ্ট কিছু দিন। ইসলাম আনন্দের দুই ঈদকে নির্দিষ্ট করে দিয়েছে এ দুই নির্দিষ্ট সময়ের ইবাদতের সাথে। রোজা শেষে ঈদুল ফিতর, হজের পরে ঈদুল আজহা। রোজা শেখায় নিভৃত আত্মসংযম; হজ দেখায় আল্লাহর পথে ত্যাগ ও বিশ্বভ্রাতৃত্বের নমুনা। রোজায় টানা এক মাস কঠিন আত্মসংযমের পরীা, হজে প্রভুর ডাকে সাড়া দিয়ে হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে কাবাঘরে গিয়ে ‘হে আল্লাহ, আমি হাজির’ বলে আত্মনিবেদন এবং কোরবানি সম্পাদনের পরীা। দুই ঈদ হলো এ দুই ইবাদতের পরীায় উত্তীর্ণ হওয়ার পবিত্র আনন্দোৎসব। সন্দেহ নেই, যারা বলে ‘নিশ্চয়ই আমার সালাত, আমার কোরবানি, আমার জীবন এবং আমার মরণ, সবই মহাজগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যই, তাদের কাছে তাদের প্রভুর হুকুম পালনে সফল হওয়ার চেয়ে বড় আনন্দের ঘটনা আর কিছুই হতে পারে না। তাই বাহ্যিকভাবে সবার জন্য হলেও ঈদের আসল আনন্দ সবাইকে স্পর্শ না-ও করতে পারে। ঈদুল ফিতরের আনন্দ তাদের জন্য, যারা শরীর ও মন দিয়ে রোজা রেখে রোজার পবিত্রতা, ত্যাগ, ধৈর্য ও সংযমের শিায় জীবনযাপনের অঙ্গীকার করেছে। আর ঈদুল আজহার আনন্দ-আয়োজন মূলত আল্লাহর ঘরের মুসাফির এবং আল্লাহর উদ্দেশে কোরবানিতে অংশগ্রহণকারীদের সম্মানে। রোজাদার ও হজ-কোরবানি পালনকারীদের জন্য আল্লাহ তায়ালা বিশেষ পুরস্কারের ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন, ঈদ হলো সেই পুরস্কার মঞ্জুরির দিন। এ জন্যই ঈদের দিনকে বলা হয়েছে ‘ইয়াওম আল-জায়িজাহ’, পুরস্কার দিবস। পরীায় যারা অংশ নিয়েছে, পুরস্কার তাদের জন্যই। সমর্পণের নিষ্ঠা ও সংযমের কষ্ট যারা স্বীকার করেছে, তাদের জন্যই ঈদের সত্যিকারের আনন্দ।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন