ঘটনার প্রবহমানতা আমাদের তথ্য দেয়, উপলব্ধি দেয়। ঘটনার ব্যাপারে মানুষের কৌতুহল থাকে, থাকে অনুসন্ধানও। ভাল ঘটনা আমাদের সুন্দর উপলব্ধি দেয়। এমন উপলব্ধি আমাদের জীবনে যেন অক্সিজেন জোগায়। আর মন্দ ঘটনা কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মত। যা আমাদের জীবনকে দুঃখময় করে। বর্তমান সময়ে অক্সিজেনের বিপরীতে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের প্রতাপ চলছে। তাই তো কবি আক্ষেপ করে বলেছেন, ‘কার্বনে ভরে গেছে আমাদের আকাশ’। শুধু কি, আকাশ, আমাদের সমাজেও যেন চলছে কার্বনের দৌরাত্ম্য। খবর কাগজের পাতা উল্টালে, ঘটনা বিশ্লেষণ করলে তেমন চিত্রই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ১৩ বছরের শিশু রাজনের কি অপরাধ ছিল? অথচ তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ ও হতবাক দেশের মানুষ। এরই মধ্যে নির্যাতনের ভিডিও চিত্রটি সরিয়ে নিয়েছে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ। অনেকেরই অভিযোগ সামিউল আলম রাজন দরিদ্র হওয়ায় পুলিশ ঘটনাটিকে গুরুত্ব দেয়নি। রাজন হত্যার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই ক্ষুব্ধ প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম তার ফেসবুক পেজে পোস্টার হাতে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। পোস্টারে লেখা আছে, ‘শিশু নির্যাতনকে না বলুন’। সামিউলকে মেরে লাশ গুম করার সময় স্থানীয় লোকজন একজনকে ধরে ফেলে। অন্যরা পালিয়ে যায়। প্রধান আসামী কামরুল ইসলাম সৌদি আরবে পালিয়ে গেলেও গত ১৩ জুলাই সোমবার সে জেদ্দায় ধরা পড়েছে। লাশের ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে সামিউলের শরীরে ৬৪টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। টানা নির্যাতনের ফলে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, শিশু সামিউলকে চোর অপবাদ দিয়ে ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডে একটি খুঁটিতে বেঁধে ৫-৬ জন ব্যক্তি নির্যাতন চালায়। বাঁচার জন্য তার কোনো আকুতিই তাদের মন গলাতে পারেনি। এক পর্যায়ে সামিউল তাদের কাছে একটু পানি খেতে চাইলে তারা পানি না দিয়ে শরীরের ঘাম খেতে বলে। মিডিয়া মর্মান্তিক এ ঘটনায় সরব ভূমিকা পালন করায় আসামীরা গ্রেফতার হচ্ছে। হয়তো বিচারও হবে। কিন্তু সামিউলকে কি আর ফিরে পাওয়া যাবে?
আমাদের সমাজে কেন এমন নিষ্ঠুর ঘটনা ঘটছে? সমাজবিজ্ঞানীরা তাদের বিশ্লেষনে বলছেন, সামাজিক আচার-আচরণের বিরূপ পরিবর্তন, প্রথা নষ্ট হওয়া, নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং পারস্পরিক সম্পর্কে চিড় ধরার কারণে এ ধরনের বিবেকবর্জিত নিষ্ঠুর ঘটনা ঘটছে। অনেকে বলছেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও আইনের শাসন না থাকায় মানুষ বর্বর হয়ে উঠছে। ঘটনা প্রসঙ্গে বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক নাজমা চৌধুরী বলেন, রাষ্ট্রের সর্বস্তরে এক ধরনের অরাজকতা চলছে, পারিবারিক শিক্ষা, প্রথাগুলো সেভাবে মানা হচ্ছে না। রাজনীতিতে অস্থিরতা চলছে। মানুষের মধ্যে বিবেকহীনতা কাজ করছে। এ থেকে বের হয়ে আসা খুব একটা সহজ নয়। তবে সবক্ষেত্রে সুষ্ঠু চর্চা করা গেলে পরিস্থিতি থেকে বের হওয়া সম্ভব। তিনি বলেন, এ ঘটনাকে কোনোভাবেই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখা যাবে না।
দুঃখজনক কোনো ঘটনা ঘটে গেলে তখন আমরা বলি, বিচারহীনতার সংস্কৃতি এবং আইনের শাসন না থাকার কারণেই এইসব হচ্ছে। প্রসঙ্গত তখন সুশাসনের গুরুত্ব সম্পর্কেও বক্তব্য রাখা হয়। এইসব বিষয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে আমাদের সরকার এবং রাজনীতিবিদদের যথেষ্ট ধারণা আছে বলেই আমরা মনে করি। কিন্তু বাস্তবে কাক্সিক্ষত প্রতিফলন ঘটে না কেন? রাষ্ট্র পরিচালনায় এবং প্রশাসনিক তৎপরতায় তো নির্দিষ্ট বিধি বিধান ও নৈতিক মানদ- সমুন্নত রাখতে হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, এমন উদাহরণ কমই লক্ষ্য করা যায়। বরং অনুরাগ ও বিরাগের সংস্কৃতিই যেন আমাদের রাষ্ট্রে এবং সমাজে প্রবল হয়ে উঠেছে। ফলে আইন-কানুন, নীতিনৈতিকতা, ন্যায় ও মানবিকতার বদলে এখন দলবাজি, স্বজনপ্রীতি, পদপদবী ও ক্ষমতালিপ্সাই মুখ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। ক্ষমতায় টিকে থাকা এবং ক্ষমতায় যাওয়ার অভিপ্রায়ই যেন এখন গণতন্ত্রের মূল বিষয় হয়ে উঠেছে। গণতন্ত্রের অপচর্চার কারণে এখন ভোটের রাজনীতিই যেন গণতন্ত্রের প্রধান বিষয় হয়ে উঠেছে। এ কারণে এখন অনেকেই বলছেন, গণতন্ত্রের নামে নির্বাচিত হলেই সরকার গণতান্ত্রিক হয়ে যায় না। বর্তমানে দেশে সরকার ও বিরোধী দলের যে অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তা গণতন্ত্র কিংবা জনগণের জন্য মোটেও সুখকর বিষয় নয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার নিজেদের গণতান্ত্রিক বলে দাবি করলেও জনগণের ওপর তেমন নির্ভরশীল নয়। সরকার যেন সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী ও পুলিশ র্যাবের উপর নির্ভরশীল হয়ে দেশ শাসন করতে চাইছে। সরকারের জুলুম-নিপীড়ন এখন এতটাই প্রচন্ড হয়ে উঠেছে যে, বিরোধী দল তাদের ন্যায়সঙ্গত গণতান্ত্রিক তৎপরতাও চালাতে পারছে না। এমন অবস্থায় বিরোধী দলকে কখনও কখনও ভুল তৎপরতা চালাতেও দেখা যাচ্ছে। ফলে জনগণ এক দমবন্ধ অবস্থায় জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। কাক্সিক্ষত অক্সিজেনের অভাবে আমাদের পরিবেশ, রাজনীতি সবই মানবস্বাস্থ্য ও মানবিক জীবনযাপনের ক্ষেত্রে নেতিবাচক হয়ে উঠছে। এমন অবস্থার পরিবর্তন জনগণের কাম্য। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সেই পরিবর্তন কীভাবে আসবে, কারা আনবে?
সরকারের অনেক তৎপরতাই এখন জনমনে প্রশ্নের সৃষ্টি করছে। ফৌজদারি অপরাধ করলেও সরকারি অনুমোদন ছাড়া কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার করা যাবে না। তবে মামলা ও তদন্ত হতে পারে। এমন বিধান রেখে গত ১৩ জুলাই সোমবার সরকারি কর্মচারী-আইন ২০১৫-এর খসড়া অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। এখন আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নেয়ার পর এটি জাতীয় সংসদে উঠবে। এ প্রসঙ্গে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে সরকারি কর্মচারীরা বিশেষ সুরক্ষা পাবেন। এছাড়া আইনের চোখে সবাই সমান, এই ধারণাও ব্যত্যয় ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। আবার কারো কারো মধ্যে অপরাধ করার প্রবণতাও বাড়তে পারে। ৩ বছরের বেশি সময় ধরে আলোচনা-সমালোচনা ও পর্যালোচনার পর প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করেই আইনের খসড়াটি অনুমোদন করা হলো। এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, কাউকে গ্রেফতার করা হবে কি হবে না, তা অপরাধের ওপর নির্ভর করবে। এটি যদি ব্যক্তির ওপর নির্ভর করে তাহলে তাকে মধ্যযুগীয় বা সামন্তবাদী আইন বলতে হবে। তিনি আরো বলেন, আগে রাজা-বাদশাহরা অপরাধ করলে এর জবাবদিহিতা ছিল না। এর বিপরীতে আসে গণতন্ত্র, যার মূল কথা আইনের চোখে সবাই সমান। কিন্তু যে আইন হচ্ছে, তা সবার থেকে আলাদা, যারা সামাজিক ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। শাহদীন মালিকের বক্তব্যে ভেবে দেখার মত বিষয় রয়েছে। আমাদের সরকারি ঘরানা ও বিরোধী ঘরানা নির্বিশেষে সবাই তো বলে থাকেন দেশের মালিক
জনগণ। কিন্তু বর্তমানে দেশে যে শাসন-প্রশাসন চলছে, তাতে কি একথা মনে করার অবকাশ আছে যে, দেশের মালিক জনগণ? জনগণ প্রতিদিনই অপমানিত হচ্ছে, ক্ষুদ্র হচ্ছে। যে আইন করা হচ্ছে তাতেও জনগণ নিজেদের হেয় মনে করছে। এভাবে দেশে ঐক্য-সংহতি ও শান্তি-শৃঙ্খলার পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে না। দেশের কাক্সিক্ষত অগ্রগতির জন্য এখন প্রয়োজন গণতান্ত্রিক চেতনায় প্রকৃত সুশাসন। সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে হলে অনুরাগ-বিরাগের চেতনা পরিহার করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মনোযোগী হতে হবে সরকারকে। এর কোনো বিকল্প আছে কী?
আমাদের সমাজে কেন এমন নিষ্ঠুর ঘটনা ঘটছে? সমাজবিজ্ঞানীরা তাদের বিশ্লেষনে বলছেন, সামাজিক আচার-আচরণের বিরূপ পরিবর্তন, প্রথা নষ্ট হওয়া, নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং পারস্পরিক সম্পর্কে চিড় ধরার কারণে এ ধরনের বিবেকবর্জিত নিষ্ঠুর ঘটনা ঘটছে। অনেকে বলছেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও আইনের শাসন না থাকায় মানুষ বর্বর হয়ে উঠছে। ঘটনা প্রসঙ্গে বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক নাজমা চৌধুরী বলেন, রাষ্ট্রের সর্বস্তরে এক ধরনের অরাজকতা চলছে, পারিবারিক শিক্ষা, প্রথাগুলো সেভাবে মানা হচ্ছে না। রাজনীতিতে অস্থিরতা চলছে। মানুষের মধ্যে বিবেকহীনতা কাজ করছে। এ থেকে বের হয়ে আসা খুব একটা সহজ নয়। তবে সবক্ষেত্রে সুষ্ঠু চর্চা করা গেলে পরিস্থিতি থেকে বের হওয়া সম্ভব। তিনি বলেন, এ ঘটনাকে কোনোভাবেই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখা যাবে না।
দুঃখজনক কোনো ঘটনা ঘটে গেলে তখন আমরা বলি, বিচারহীনতার সংস্কৃতি এবং আইনের শাসন না থাকার কারণেই এইসব হচ্ছে। প্রসঙ্গত তখন সুশাসনের গুরুত্ব সম্পর্কেও বক্তব্য রাখা হয়। এইসব বিষয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে আমাদের সরকার এবং রাজনীতিবিদদের যথেষ্ট ধারণা আছে বলেই আমরা মনে করি। কিন্তু বাস্তবে কাক্সিক্ষত প্রতিফলন ঘটে না কেন? রাষ্ট্র পরিচালনায় এবং প্রশাসনিক তৎপরতায় তো নির্দিষ্ট বিধি বিধান ও নৈতিক মানদ- সমুন্নত রাখতে হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, এমন উদাহরণ কমই লক্ষ্য করা যায়। বরং অনুরাগ ও বিরাগের সংস্কৃতিই যেন আমাদের রাষ্ট্রে এবং সমাজে প্রবল হয়ে উঠেছে। ফলে আইন-কানুন, নীতিনৈতিকতা, ন্যায় ও মানবিকতার বদলে এখন দলবাজি, স্বজনপ্রীতি, পদপদবী ও ক্ষমতালিপ্সাই মুখ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। ক্ষমতায় টিকে থাকা এবং ক্ষমতায় যাওয়ার অভিপ্রায়ই যেন এখন গণতন্ত্রের মূল বিষয় হয়ে উঠেছে। গণতন্ত্রের অপচর্চার কারণে এখন ভোটের রাজনীতিই যেন গণতন্ত্রের প্রধান বিষয় হয়ে উঠেছে। এ কারণে এখন অনেকেই বলছেন, গণতন্ত্রের নামে নির্বাচিত হলেই সরকার গণতান্ত্রিক হয়ে যায় না। বর্তমানে দেশে সরকার ও বিরোধী দলের যে অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তা গণতন্ত্র কিংবা জনগণের জন্য মোটেও সুখকর বিষয় নয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার নিজেদের গণতান্ত্রিক বলে দাবি করলেও জনগণের ওপর তেমন নির্ভরশীল নয়। সরকার যেন সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী ও পুলিশ র্যাবের উপর নির্ভরশীল হয়ে দেশ শাসন করতে চাইছে। সরকারের জুলুম-নিপীড়ন এখন এতটাই প্রচন্ড হয়ে উঠেছে যে, বিরোধী দল তাদের ন্যায়সঙ্গত গণতান্ত্রিক তৎপরতাও চালাতে পারছে না। এমন অবস্থায় বিরোধী দলকে কখনও কখনও ভুল তৎপরতা চালাতেও দেখা যাচ্ছে। ফলে জনগণ এক দমবন্ধ অবস্থায় জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। কাক্সিক্ষত অক্সিজেনের অভাবে আমাদের পরিবেশ, রাজনীতি সবই মানবস্বাস্থ্য ও মানবিক জীবনযাপনের ক্ষেত্রে নেতিবাচক হয়ে উঠছে। এমন অবস্থার পরিবর্তন জনগণের কাম্য। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সেই পরিবর্তন কীভাবে আসবে, কারা আনবে?
সরকারের অনেক তৎপরতাই এখন জনমনে প্রশ্নের সৃষ্টি করছে। ফৌজদারি অপরাধ করলেও সরকারি অনুমোদন ছাড়া কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার করা যাবে না। তবে মামলা ও তদন্ত হতে পারে। এমন বিধান রেখে গত ১৩ জুলাই সোমবার সরকারি কর্মচারী-আইন ২০১৫-এর খসড়া অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। এখন আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নেয়ার পর এটি জাতীয় সংসদে উঠবে। এ প্রসঙ্গে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে সরকারি কর্মচারীরা বিশেষ সুরক্ষা পাবেন। এছাড়া আইনের চোখে সবাই সমান, এই ধারণাও ব্যত্যয় ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। আবার কারো কারো মধ্যে অপরাধ করার প্রবণতাও বাড়তে পারে। ৩ বছরের বেশি সময় ধরে আলোচনা-সমালোচনা ও পর্যালোচনার পর প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করেই আইনের খসড়াটি অনুমোদন করা হলো। এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, কাউকে গ্রেফতার করা হবে কি হবে না, তা অপরাধের ওপর নির্ভর করবে। এটি যদি ব্যক্তির ওপর নির্ভর করে তাহলে তাকে মধ্যযুগীয় বা সামন্তবাদী আইন বলতে হবে। তিনি আরো বলেন, আগে রাজা-বাদশাহরা অপরাধ করলে এর জবাবদিহিতা ছিল না। এর বিপরীতে আসে গণতন্ত্র, যার মূল কথা আইনের চোখে সবাই সমান। কিন্তু যে আইন হচ্ছে, তা সবার থেকে আলাদা, যারা সামাজিক ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। শাহদীন মালিকের বক্তব্যে ভেবে দেখার মত বিষয় রয়েছে। আমাদের সরকারি ঘরানা ও বিরোধী ঘরানা নির্বিশেষে সবাই তো বলে থাকেন দেশের মালিক
জনগণ। কিন্তু বর্তমানে দেশে যে শাসন-প্রশাসন চলছে, তাতে কি একথা মনে করার অবকাশ আছে যে, দেশের মালিক জনগণ? জনগণ প্রতিদিনই অপমানিত হচ্ছে, ক্ষুদ্র হচ্ছে। যে আইন করা হচ্ছে তাতেও জনগণ নিজেদের হেয় মনে করছে। এভাবে দেশে ঐক্য-সংহতি ও শান্তি-শৃঙ্খলার পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে না। দেশের কাক্সিক্ষত অগ্রগতির জন্য এখন প্রয়োজন গণতান্ত্রিক চেতনায় প্রকৃত সুশাসন। সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে হলে অনুরাগ-বিরাগের চেতনা পরিহার করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মনোযোগী হতে হবে সরকারকে। এর কোনো বিকল্প আছে কী?
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন