ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের দিন এগিয়ে এলেও সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে এখনো তৎপর দূরে থাকুক, আগ্রহীও মনে হচ্ছে না। কমিশনের বিরুদ্ধে উল্টো বরং পক্ষপাতিত্বের এবং দায় এড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। এজন্যই নির্বাচনী আইন লঙ্ঘন করলেও ক্ষমতাসীনরা পার পেয়ে যাচ্ছেন। উদাহরণ হিসেবে সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরে একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী এবং দু’জন প্রতিমন্ত্রীর কর্মকান্ডের উল্লেখ করে জানানো হয়েছে, গত ৩১ মার্চ এই তিনজন চট্টগ্রামের একটি হোটেলে আয়োজিত এক বিশেষ সভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিজয়ী করার ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা তো করেছেনই, পুলিশ ও প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দিয়েছেন। প্রার্থী নিজে উপস্থিত না থাকলেও সভায় চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক ও সিডিএর চেয়ারম্যানসহ প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা অংশ নিয়েছেন। তারও আগে ২৯ মার্চ একই মন্ত্রী হালিশহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে সন্দ্বীপবাসীদের এক মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে সরাসরি ভোট চেয়েছেন। অথচ নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি অনুযায়ী মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রীরা শুধু নন, স্পিকার-ডেপুটি স্পিকার এবং চিফ হুইপ ও হুইপসহ তাদের সমমর্যাদার সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগকারী অন্য কেউও নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন না। কেউ আইন লঙ্ঘন করলে তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার কিংবা উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে। অন্যদিকে জাতীয় গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত হলেও ওই তিন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর এবং তাদের সঙ্গে সভায় অংশগ্রহণকারী কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধেই নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ ক্ষমতাসীনরা যাতে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন না করেন সে জন্য নির্বাচন কমিশন সাধারণত আগেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে চিঠি দিয়ে থাকে। কিন্তু এবারের তিন সিটি নির্বাচনের আগে ডিও লেটার নামের তেমন কোনো চিঠিই কমিশন দেয়নি। শুধু তা-ই নয়, চট্টগ্রামের রিটার্নিং অফিসার তিন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর আইন লঙ্ঘন সংক্রান্ত তথ্যের উল্লেখ করে এবং এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে কমিশনকে যে চিঠি পাঠিয়েছেন সে চিঠির ব্যাপারেও গত মঙ্গলবার পর্যন্ত কমিশন কিছুই করেনি। কোনো মতামতও জানায়নি। সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য উদ্ধৃত করে খবরে বলা হয়েছে, একজন নির্বাচন কমিশনার শুধু বলেছেন, প্রার্থীরা আচরণবিধি মেনে চলবেন। কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে রিটার্নিং অফিসার আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। এখানে কমিশনের নতুন করে নির্দেশনা দেয়ার কিছু নেই। উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের ওই রিটার্নিং অফিসার উপ-সচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা, যার পক্ষে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব নয়। এমন অবস্থার সুযোগ নিয়েই তিন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ অন্যরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নির্বাচনী সভা করেছেন।
বলার অপেক্ষা রাখে না, চট্টগ্রামের বিষয়গুলোকে পাশ কাটানোর বা হাল্কাভাবে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ প্রসঙ্গে বিশেষ করে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার দিকটিকে প্রাধান্যে আনা দরকার। লক্ষণীয় যে, নিয়ম থাকলেও কমিশন এবার মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং অন্য ক্ষমতাসীনদের আচরণবিধি লঙ্ঘনের ব্যাপারে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে কোনো ডিও লেটার পাঠায়নি। কথা শুধু এটুকুই নয়, অনেকাংশে আইন শেখানোর ঢঙে একজন নির্বাচন কমিশনার বরং সাংবাদিকদের বলেছেন, কোনো প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে রিটার্নিং অফিসার তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। কথাটা তিনি এমনভাবে বলেছেন যেন আচরণবিধি শুধু প্রার্থীদের বেলায় প্রযোজ্য এবং মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকবেন! এখানেও শেষ নয়। চট্টগ্রামের ঘটনা দুটিকেও কমিশন সুকৌশলে এমন একজন রিটার্নিং অফিসারের ঘাড়ে চাপাতে চেয়েছে, পদমর্যাদাগত অবস্থানের কারণেই যার পক্ষে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব নয়। আমরা মনে করি, সত্যি সদিচ্ছা থাকলে কমিশনই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতো। এটাই কমিশনের সাংবিধানিক কর্তব্য। অন্যদিকে সম্পূর্ণ পাশ কাটিয়ে যাওয়ার ফলে এমন আশংকাই শক্তিশালী হয়ে উঠেছে যে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা দূরে থাকুক, কমিশন বরং ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের জিতিয়ে আনার জন্যই সর্বাত্মক ভূমিকা পালন করতে শুরু করেছে। বড় কথা, এর ফলে আসন্ন তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনে পরিণত হবে। এ উদ্দেশ্যে ক্ষমতাসীনরা আগে থেকে নির্বাচনের নামে নাটক মঞ্চায়নের যে প্রস্তুতি নিয়েছেন নির্বাচন কমিশন তারই ‘সুন্দর পরিসমাপ্তি’ ঘটাতে ভূমিকা পালন করবে মাত্র। আমরা মনে করি, এভাবে চলতে থাকলে জনমনে এমন ধারণাই বদ্ধমূল হবে যে, এই কমিশনের অধীনে আসলেও কোনো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে না। এসব বিষয়ে বেশি নিন্দিত হওয়ার আগেই কমিশন উদ্যোগী হয়ে উঠবে বলে আমরা আশা করতে চাই।
বলার অপেক্ষা রাখে না, চট্টগ্রামের বিষয়গুলোকে পাশ কাটানোর বা হাল্কাভাবে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ প্রসঙ্গে বিশেষ করে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার দিকটিকে প্রাধান্যে আনা দরকার। লক্ষণীয় যে, নিয়ম থাকলেও কমিশন এবার মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং অন্য ক্ষমতাসীনদের আচরণবিধি লঙ্ঘনের ব্যাপারে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে কোনো ডিও লেটার পাঠায়নি। কথা শুধু এটুকুই নয়, অনেকাংশে আইন শেখানোর ঢঙে একজন নির্বাচন কমিশনার বরং সাংবাদিকদের বলেছেন, কোনো প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে রিটার্নিং অফিসার তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। কথাটা তিনি এমনভাবে বলেছেন যেন আচরণবিধি শুধু প্রার্থীদের বেলায় প্রযোজ্য এবং মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকবেন! এখানেও শেষ নয়। চট্টগ্রামের ঘটনা দুটিকেও কমিশন সুকৌশলে এমন একজন রিটার্নিং অফিসারের ঘাড়ে চাপাতে চেয়েছে, পদমর্যাদাগত অবস্থানের কারণেই যার পক্ষে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব নয়। আমরা মনে করি, সত্যি সদিচ্ছা থাকলে কমিশনই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতো। এটাই কমিশনের সাংবিধানিক কর্তব্য। অন্যদিকে সম্পূর্ণ পাশ কাটিয়ে যাওয়ার ফলে এমন আশংকাই শক্তিশালী হয়ে উঠেছে যে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা দূরে থাকুক, কমিশন বরং ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের জিতিয়ে আনার জন্যই সর্বাত্মক ভূমিকা পালন করতে শুরু করেছে। বড় কথা, এর ফলে আসন্ন তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনে পরিণত হবে। এ উদ্দেশ্যে ক্ষমতাসীনরা আগে থেকে নির্বাচনের নামে নাটক মঞ্চায়নের যে প্রস্তুতি নিয়েছেন নির্বাচন কমিশন তারই ‘সুন্দর পরিসমাপ্তি’ ঘটাতে ভূমিকা পালন করবে মাত্র। আমরা মনে করি, এভাবে চলতে থাকলে জনমনে এমন ধারণাই বদ্ধমূল হবে যে, এই কমিশনের অধীনে আসলেও কোনো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে না। এসব বিষয়ে বেশি নিন্দিত হওয়ার আগেই কমিশন উদ্যোগী হয়ে উঠবে বলে আমরা আশা করতে চাই।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন