‘এই
ব্যাটা তুই বিএনপি করিস, আমরা
ডিবির লোক। তোর নামে নাশকতার অভিযোগ আছে। গাড়িতে ওঠ’Ñ বলেই কুড়িলের দোকান কর্মচারী মনির
হোসেনকে সোনারগাঁও হোটেলের কাছ থেকে চ্যাংদোলা করে মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নেয় পাঁচ
যুবক। পরিয়ে দেয়া হয় হাতকড়া। গাড়িটি ঘুরিয়ে এফডিসি গেট হয়ে হাতিরঝিলের দিকে যায়।
চলন্ত গাড়িতেই মারধর করে তার কাছে থাকা তিন লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। এরপর
তাকে ফেলে দেয় হাতিরঝিলের ছাপরা মসজিদের পাশে।
মনির কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় মেঘনা মোজাইক নামে একটি দোকানে কাজ করেন। শনিবার দুপুরে দোকানের চেক নিয়ে গুলশান-১ ব্র্যাক ব্যাংকে যান। টাকা তুলে রিকশায় কারওয়ান বাজারে যাচ্ছিলেন। সাংহাই সিরামিক অফিসে টাকা পরিশোধ করার কথা। এর আগেই এফডিসি লেভেলক্রসিং পার হওয়ার পর ডিবি পরিচয়ে তাকে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়া হয়। একই দিন ভোরে তেজগাঁও থানার কাছে একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সবজি ব্যবসায়ী রিপনের কাছ থেকে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়া হয়। খবর দু’টি দিয়েছে দৈনিক যুগান্তর, ২৯ মার্চ।
প্রথম ঘটনায় আমাদের জন্য দু’টি মারাত্মক নির্দেশক রয়েছে। ‘মাইক্রোবাস-ডিবির লোক’ সংস্কৃতি। অন্যটি ‘তুই বিএনপি করিস’। গুম-খুনের ঘটনার যে বিবরণ পাওয়া যায় ছিনতাইয়ের ঘটনায় প্রায় একই ধরনের বিবরণ পাওয়া যাচ্ছে এখন। এখানে টার্গেট শুধু অর্থকড়ি হাতিয়ে নেয়া। রাজনৈতিক ভাষা প্রয়োগ করে কাজটি করা হচ্ছে। বড় অঙ্কের অর্থ হারানোর পাশাপাশি বাড়তি হিসেবে চরম মারধরের শিকার হচ্ছেন নাগরিকেরা। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকার রাস্তায় এ অপরাধ করা হচ্ছে। গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে নির্বিঘেœ অপারেশনের ধরন বলে দিচ্ছে, ছিনতাইকারীরা জঘন্য কাজ করার সময় ধরা পড়ার কোনো আশঙ্কা করছে না। এক দিকে ভীতিকর পরিচয় ‘ডিবির লোক’, অন্য দিকে চরম নাজেহাল করার অস্ত্র, ‘তুই বিএনপি করিস’। অর্থাৎ, বিএনপির লোক হলে তার কাছে ছিনতাই করে টাকা কেড়ে নেয়ার অধিকার রয়েছে ডিবির লোকের।
দু-একটি ঘটনা হলে এটিকে বিচ্ছিন্ন কিছু ভাবা যেত। একই ঘটনার হুবহু পুনরাবৃত্তি হচ্ছে অব্যাহতভাবে। গুম-খুনের ঘটনার কোনো কু পাওয়া যাচ্ছে না। ডিবি, র্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ‘জানা নেই’Ñ এই এককথা বলে তাদের ‘দায়িত্ব সারছে’। নাগরিক ঐক্যের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্নার ২১ ঘণ্টার অন্তর্ধানের সময় এমন দায়িত্বহীনভাবেই তা তারা বলেছে। নিজেরাই আবার তাকে কোর্টে হাজির করেছে। মান্নার মতো যাদের হাজির করা হচ্ছে তাদের ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে জানা যাচ্ছে, সরকারের কোনো-না-কোনো বাহিনী তাকে গ্রেফতার করেছে। অন্য দিকে, যাদের আর পাওয়া যাচ্ছে না, তাদের ব্যাপারে কেউ সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারছে না।
বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের খুঁজে বের করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে। রাজনৈতিক কর্মসূচি ভণ্ডুল করে দেয়ার ক্ষেত্রে তাদের পারদর্শিতা সরকারের পক্ষ থেকে আরো বেশি প্রশংসা পাচ্ছে। এ অবস্থায় র্যাব, পুলিশের নাম ভাঙিয়ে অপহরণ বা গুম করে ফেলা, প্রকাশ্যে রাস্তায় ডিবির পরিচয় দিয়ে অর্থকড়ি ছিনতাই করা বড় রহস্যময় হয়ে থাকছে। আমরা বলছি না যে, এ কাজ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করছে। তা হলে, কারা করছে? ওরা কেন ধরা পড়ে না?
মানুষের সন্দেহ সংশয় বাড়ছে এ নিয়ে। এতটা দক্ষ, করিতকর্মা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখের সামনে তাদের নাম করে লাখ লাখ টাকা ছিনতাই করছে কারা? খুন গুমের পাশাপাশি এ ঘটনার সাথে কারা জড়িত সেটা যদি উদঘাটন করতে তারা না পারেন, তাহলে সন্দেহ আরো বাড়বে। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ কিছু মানুষ হাওয়া হয়ে যাওয়ার পর যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব নিয়ে তাদের ফেরত দিচ্ছে, তখন হাওয়া হয়ে যাওয়া অন্যদের ব্যাপারেও তাদের কাছে তথ্য আছে বলে নাগরিকেরা ধারণা করছে স্বাভাবিকভাবেই।
ক্ষমতাসীনেরা কিছু শব্দকে যুতসইভাবে বিরোধীদের বিরুদ্ধে চালু করে দিয়েছে। প্রথমে একচোখা মিডিয়া এ শব্দগুলো ফেরি করেছে। ‘জঙ্গিবাদ’, ‘মৌলবাদ’র মুখরোচক মোড়কে সেগুলোকে ধুমসে প্রচার করেছে তারা। এই শব্দগুলো এখন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে জনসাধারণের জন্য। আর পোয়াবারো সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারীদের। যেমন করে, সোনারগাঁও হোটেলের সামনে দিয়ে মাইক্রোতে ঘুরতে ঘুরতে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হলো। বাড়তি হিসেবে মনের আনন্দে তারা অসহায় ওই ব্যক্তিকে পিটিয়েছে।
‘রাজাকার’ শব্দটি এখন আর তেমন ব্যবহার হয় না। সেটা যুতসইভাবে ব্যবহার করে একটি শ্রেণীকে কাবু করা হয়েছে। এর পরবর্তী পরিভাষা ছিল ‘যুদ্ধাপরাধ’। এ শব্দটিরও বেশ কৌশলী প্রয়োগ আমরা দেখেছি। বহু নিরপরাধ মানুষ তটস্থ থেকেছেন, শব্দটি না তার বিরুদ্ধে ব্যবহার হয়। এ শব্দগুলো অপব্যবহার করে দাড়ি টুপিওয়ালাদের ওপর আঘাত করা হয়েছে। অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপিও কাবু হয়ে গেছে আওয়ামী লীগ ও মিডিয়ার যুগল আক্রমণে। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিতর্কিত বিষয় নিয়ে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন পক্ষের কাছ থেকে বক্তব্য পাওয়া গেলেও বিএনপি ভুগছে স্পর্শকাতরতায়। কারণ সব সময় আওয়ামী লীগ ও মিডিয়ার পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ’ নেয়ার অভিযোগ আরোপ করা হয়। তাই বস্তুনিষ্ঠ মন্তব্য করতেও তারা পিছপা হয়েছে। দেশের রাজনীতিতে এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হওয়ার পরও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে তাল মিলিয়েও কিছু বলতে পারেনি।
রাজপথে জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলন দমাতে পরিকল্পিতভাবে ‘নাশকতা’ শব্দের প্রয়োগ শুরু হয়। রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসেবে রাজপথে তারা যা-ই করুক না, সরকার সব কিছুকে ‘নাশকতা’ বলে আখ্যায়িত। শব্দটির নির্দয় ও দাপুটে প্রয়োগে সরকার বরাবরের মতো মিডিয়াকে সাথে পেয়েছে। ফলে রাজপথে প্রাণ দিয়েও ‘নাশকতাকারীর’ খেতাব পেয়েছেন অনেকে। অন্য দিকে, গুলি করে মানুষ হত্যা করেও কোনো ধরনের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। ট্রিগারহ্যাপি বাহিনীর বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে গুম-খুন করার অভিযোগ উঠছে ক্রমবর্ধমান হারে বিভিন্ন স্থান থেকে।
শব্দ প্রয়োগের এই রাজনীতি এখন ঠেকেছে ‘তুই বিএনপি করিস’ পর্যন্ত। রাজনীতির ময়দানে এর যথেচ্ছ ব্যবহার ও বলপ্রয়োগ করে বৃহৎ দলটিকে কোণঠাসা করা হয়েছে। দলটির কার্যক্রম প্রকাশ্যে এখন আর তেমন নেই। দেখামাত্র গুলির ব্যবহার বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের রাস্তা থেকে আড়াল করে দিয়েছে। আর এ শব্দগুলো থেকে গেছে ছিনতাইকারীদের জন্য। এর সাথে তারা জুড়ে দিচ্ছে, তুই ‘নাশকতা’ করছিস।
কেমন হবে সিটি নির্বাচন
চাঁদপুর ও ফরিদপুরের মধুখালী পৌরসভা নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি, কেন্দ্র দখল এবং ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। সরকারি ক্ষমতা ব্যবহার করে একতরফাভাবে বিজয় ছিনতাই করা হয়েছে। সরকারপন্থী সংবাদমাধ্যমেও এমন খবর ও চিত্র দেখা গেছে। এমনকি খবরে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসীদের দাপটে সাংবাদিকেরা ভোট জালিয়াতির চিত্রও ধারণ করতে পারেননি। অনেকের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। তাদের ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারেরা মারধর করেছে। ঢাকার দু’টি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে সরকার ও নির্বাচন কমিশন যৌথ মহড়া দিয়ে আভাস দিলো কেমন হতে পারে আসন্ন নির্বাচন। ঢাকা সিটিতে এ মহড়া শুরু হয়েছে এরও আগে। ২০ দলীয় জোটের প্রার্থীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ৫৭ নম্বর ওয়র্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী হতে পারেননি বিএনপি নেতা হাজী মনির হোসেন। যুগান্তর লিখেছে, মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে আওয়ামী লীগ নেতারা তার মনোনয়নপত্র ও ব্যাংকের পে-অর্ডার ছিনিয়ে নেন।
স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি নিয়ে দ্বৈতনীতি সরকারের সুবিধাবাদ ও সঙ্কীর্ণতাকে নগ্ন করে দিয়েছে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সাময়িক বরখাস্ত করেছে বা সরিয়ে দিচ্ছে সরকার। এভাবে জনপ্রতিনিধিদের বরখাস্ত করার হিড়িক পড়েছে। তবে একই সময়ে গুরুতর অভিযোগ থাকার পরও ক্ষমতাসীন দলীয় লোকেরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন নির্বিঘেœœ। বিরোধী দলসমর্থক প্রতিনিধিদের ঠুনকো অজুহাতে সরিয়ে সেখানেও বসানো হচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের লোকদের। জনগণের মতামতের প্রতি যখন এভাবে বেপরোয়া অশ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে, সে সময় সবচেয়ে বড় দু’টি সিটি করপোরেশনে নির্বাচনের আয়োজন করা হচ্ছে। ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন বছরের পর বছর ধরে ঝুলে ছিল। নির্বাচন কমিশন তখন ছিল দীর্ঘ শীতনিদ্রায়। হঠাৎ সবাই যেন জেগে উঠলেন প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্যের পর। পরে সেটাকে আরো বেগবান করলেন পুলিশ-প্রধান।
আইন অনুযায়ী কোনো জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলায় অভিযোগপত্র দেয়া হলে তাকে বরখাস্ত করা হয়। এ ছাড়া গ্রেফতার বা অনুপস্থিতির কারণে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে কাউকে দায়িত্ব দেয়া হয়ে থাকে। বাস্তবতা হচ্ছে, বিরোধী রাজনৈতিক গোষ্ঠী বিএনপি-জামায়াতের সমর্থক জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হওয়ার তথ্য পাওয়া মাত্র মন্ত্রণালয় থেকে বরখাস্ত অথবা অপসারণের ত্বরিত ব্যবস্থা নেয়া হয়। কিন্তু স্থানীয় সরকার বিভাগের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়ে থাকে যে, তারা কেবল আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছেন। বরখাস্ত ও অপসারণের যে প্রবণতা তাতে দেখা যাচ্ছে, বিরোধীরাই কেবল এর শিকার হচ্ছেন। অথচ দেশে যে অবস্থা চলছে তাতে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা নানাভাবে বিভিন্ন ফৌজদারি অপরাধ করছেন। বেআইনি কাজ করা প্রধানত তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে। অন্য দিকে, বিরোধীরা অপরাধ করা দূরে থাক, পালিয়ে বেড়াচ্ছেন হামলা-মমালা, গ্রেফতার ও গুমের ভয়ে।
প্রথম আলো খবর দিয়েছে, গুরুতর অভিযোগ থাকার পরও ক্ষমতাসীন দলের সাথে সম্পর্ক থাকায় বহালতবিয়তে রয়েছেন একজন স্থানীয় প্রতিনিধি।
তদন্তে দুর্নীতির অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার দুই বছরেও যশোরের অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পরিতোষ কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি স্থানীয় সরকার বিভাগ। তিনি আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিনামূল্যের ধানবীজ কৃষকদের কাছে বিক্রি করেছেন। স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের আওতাধীন দু’টি প্রকল্পের কাজ আংশিক করেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ১১ জন দুস্থ নারীর চাল আত্মসাৎ করেছেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে তা ফেরত দেন। উন্নয়ন প্রকল্পে তার অধীনে করা কাজ অত্যন্ত নি¤œমানের বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
জেলা প্রশাসক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে স্থানীয় সরকারকে জানিয়েছেন। স্থানীয় সরকার আইন ২০০৯-এর ৩৪ ধারা অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তিনি লিখিতভাবে জানান। ২০১৩ সালের ১৭ জুন স্থানীয় সরকার বিভাগে চিঠি পাঠানো হলেও এখন পর্যন্ত পরিতোষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তিনি একসময় নিষিদ্ধ ঘোষিত ও চরমপন্থী পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির কার্যক্রমের সাথে জড়িত ছিলেন। বর্তমানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাথে রয়েছেন।
সব ফাঁকফোকর গলিয়ে ক্ষমতাসীন দলের বাইরে কেউ যদি মেয়র বা কাউন্সিলর নির্বাচিত হন, তার পরিণতি কেমন হবে, তা অনুমান করা কঠিন নয়। তিনি যত ফুলের মতো চরিত্রের অধিকারী হন কেন, তার বিরুদ্ধে কোনো ছুতায় একটি অভিযোগ দাঁড় করানো সরকারের কাছে কোনো ব্যাপার নয়। অন্য দিকে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে সরকারের রাজনৈতিক স্বার্থে তার বিরুদ্ধে কাল্পনিক অভিযোগ আমলে নিয়ে যত শিগগির সম্ভব তাকে বরখাস্ত করতে।
মনির কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় মেঘনা মোজাইক নামে একটি দোকানে কাজ করেন। শনিবার দুপুরে দোকানের চেক নিয়ে গুলশান-১ ব্র্যাক ব্যাংকে যান। টাকা তুলে রিকশায় কারওয়ান বাজারে যাচ্ছিলেন। সাংহাই সিরামিক অফিসে টাকা পরিশোধ করার কথা। এর আগেই এফডিসি লেভেলক্রসিং পার হওয়ার পর ডিবি পরিচয়ে তাকে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়া হয়। একই দিন ভোরে তেজগাঁও থানার কাছে একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সবজি ব্যবসায়ী রিপনের কাছ থেকে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়া হয়। খবর দু’টি দিয়েছে দৈনিক যুগান্তর, ২৯ মার্চ।
প্রথম ঘটনায় আমাদের জন্য দু’টি মারাত্মক নির্দেশক রয়েছে। ‘মাইক্রোবাস-ডিবির লোক’ সংস্কৃতি। অন্যটি ‘তুই বিএনপি করিস’। গুম-খুনের ঘটনার যে বিবরণ পাওয়া যায় ছিনতাইয়ের ঘটনায় প্রায় একই ধরনের বিবরণ পাওয়া যাচ্ছে এখন। এখানে টার্গেট শুধু অর্থকড়ি হাতিয়ে নেয়া। রাজনৈতিক ভাষা প্রয়োগ করে কাজটি করা হচ্ছে। বড় অঙ্কের অর্থ হারানোর পাশাপাশি বাড়তি হিসেবে চরম মারধরের শিকার হচ্ছেন নাগরিকেরা। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকার রাস্তায় এ অপরাধ করা হচ্ছে। গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে নির্বিঘেœ অপারেশনের ধরন বলে দিচ্ছে, ছিনতাইকারীরা জঘন্য কাজ করার সময় ধরা পড়ার কোনো আশঙ্কা করছে না। এক দিকে ভীতিকর পরিচয় ‘ডিবির লোক’, অন্য দিকে চরম নাজেহাল করার অস্ত্র, ‘তুই বিএনপি করিস’। অর্থাৎ, বিএনপির লোক হলে তার কাছে ছিনতাই করে টাকা কেড়ে নেয়ার অধিকার রয়েছে ডিবির লোকের।
দু-একটি ঘটনা হলে এটিকে বিচ্ছিন্ন কিছু ভাবা যেত। একই ঘটনার হুবহু পুনরাবৃত্তি হচ্ছে অব্যাহতভাবে। গুম-খুনের ঘটনার কোনো কু পাওয়া যাচ্ছে না। ডিবি, র্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ‘জানা নেই’Ñ এই এককথা বলে তাদের ‘দায়িত্ব সারছে’। নাগরিক ঐক্যের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্নার ২১ ঘণ্টার অন্তর্ধানের সময় এমন দায়িত্বহীনভাবেই তা তারা বলেছে। নিজেরাই আবার তাকে কোর্টে হাজির করেছে। মান্নার মতো যাদের হাজির করা হচ্ছে তাদের ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে জানা যাচ্ছে, সরকারের কোনো-না-কোনো বাহিনী তাকে গ্রেফতার করেছে। অন্য দিকে, যাদের আর পাওয়া যাচ্ছে না, তাদের ব্যাপারে কেউ সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারছে না।
বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের খুঁজে বের করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে। রাজনৈতিক কর্মসূচি ভণ্ডুল করে দেয়ার ক্ষেত্রে তাদের পারদর্শিতা সরকারের পক্ষ থেকে আরো বেশি প্রশংসা পাচ্ছে। এ অবস্থায় র্যাব, পুলিশের নাম ভাঙিয়ে অপহরণ বা গুম করে ফেলা, প্রকাশ্যে রাস্তায় ডিবির পরিচয় দিয়ে অর্থকড়ি ছিনতাই করা বড় রহস্যময় হয়ে থাকছে। আমরা বলছি না যে, এ কাজ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করছে। তা হলে, কারা করছে? ওরা কেন ধরা পড়ে না?
মানুষের সন্দেহ সংশয় বাড়ছে এ নিয়ে। এতটা দক্ষ, করিতকর্মা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখের সামনে তাদের নাম করে লাখ লাখ টাকা ছিনতাই করছে কারা? খুন গুমের পাশাপাশি এ ঘটনার সাথে কারা জড়িত সেটা যদি উদঘাটন করতে তারা না পারেন, তাহলে সন্দেহ আরো বাড়বে। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ কিছু মানুষ হাওয়া হয়ে যাওয়ার পর যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব নিয়ে তাদের ফেরত দিচ্ছে, তখন হাওয়া হয়ে যাওয়া অন্যদের ব্যাপারেও তাদের কাছে তথ্য আছে বলে নাগরিকেরা ধারণা করছে স্বাভাবিকভাবেই।
ক্ষমতাসীনেরা কিছু শব্দকে যুতসইভাবে বিরোধীদের বিরুদ্ধে চালু করে দিয়েছে। প্রথমে একচোখা মিডিয়া এ শব্দগুলো ফেরি করেছে। ‘জঙ্গিবাদ’, ‘মৌলবাদ’র মুখরোচক মোড়কে সেগুলোকে ধুমসে প্রচার করেছে তারা। এই শব্দগুলো এখন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে জনসাধারণের জন্য। আর পোয়াবারো সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারীদের। যেমন করে, সোনারগাঁও হোটেলের সামনে দিয়ে মাইক্রোতে ঘুরতে ঘুরতে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হলো। বাড়তি হিসেবে মনের আনন্দে তারা অসহায় ওই ব্যক্তিকে পিটিয়েছে।
‘রাজাকার’ শব্দটি এখন আর তেমন ব্যবহার হয় না। সেটা যুতসইভাবে ব্যবহার করে একটি শ্রেণীকে কাবু করা হয়েছে। এর পরবর্তী পরিভাষা ছিল ‘যুদ্ধাপরাধ’। এ শব্দটিরও বেশ কৌশলী প্রয়োগ আমরা দেখেছি। বহু নিরপরাধ মানুষ তটস্থ থেকেছেন, শব্দটি না তার বিরুদ্ধে ব্যবহার হয়। এ শব্দগুলো অপব্যবহার করে দাড়ি টুপিওয়ালাদের ওপর আঘাত করা হয়েছে। অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপিও কাবু হয়ে গেছে আওয়ামী লীগ ও মিডিয়ার যুগল আক্রমণে। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিতর্কিত বিষয় নিয়ে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন পক্ষের কাছ থেকে বক্তব্য পাওয়া গেলেও বিএনপি ভুগছে স্পর্শকাতরতায়। কারণ সব সময় আওয়ামী লীগ ও মিডিয়ার পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ’ নেয়ার অভিযোগ আরোপ করা হয়। তাই বস্তুনিষ্ঠ মন্তব্য করতেও তারা পিছপা হয়েছে। দেশের রাজনীতিতে এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হওয়ার পরও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে তাল মিলিয়েও কিছু বলতে পারেনি।
রাজপথে জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলন দমাতে পরিকল্পিতভাবে ‘নাশকতা’ শব্দের প্রয়োগ শুরু হয়। রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসেবে রাজপথে তারা যা-ই করুক না, সরকার সব কিছুকে ‘নাশকতা’ বলে আখ্যায়িত। শব্দটির নির্দয় ও দাপুটে প্রয়োগে সরকার বরাবরের মতো মিডিয়াকে সাথে পেয়েছে। ফলে রাজপথে প্রাণ দিয়েও ‘নাশকতাকারীর’ খেতাব পেয়েছেন অনেকে। অন্য দিকে, গুলি করে মানুষ হত্যা করেও কোনো ধরনের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। ট্রিগারহ্যাপি বাহিনীর বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে গুম-খুন করার অভিযোগ উঠছে ক্রমবর্ধমান হারে বিভিন্ন স্থান থেকে।
শব্দ প্রয়োগের এই রাজনীতি এখন ঠেকেছে ‘তুই বিএনপি করিস’ পর্যন্ত। রাজনীতির ময়দানে এর যথেচ্ছ ব্যবহার ও বলপ্রয়োগ করে বৃহৎ দলটিকে কোণঠাসা করা হয়েছে। দলটির কার্যক্রম প্রকাশ্যে এখন আর তেমন নেই। দেখামাত্র গুলির ব্যবহার বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের রাস্তা থেকে আড়াল করে দিয়েছে। আর এ শব্দগুলো থেকে গেছে ছিনতাইকারীদের জন্য। এর সাথে তারা জুড়ে দিচ্ছে, তুই ‘নাশকতা’ করছিস।
কেমন হবে সিটি নির্বাচন
চাঁদপুর ও ফরিদপুরের মধুখালী পৌরসভা নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি, কেন্দ্র দখল এবং ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। সরকারি ক্ষমতা ব্যবহার করে একতরফাভাবে বিজয় ছিনতাই করা হয়েছে। সরকারপন্থী সংবাদমাধ্যমেও এমন খবর ও চিত্র দেখা গেছে। এমনকি খবরে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসীদের দাপটে সাংবাদিকেরা ভোট জালিয়াতির চিত্রও ধারণ করতে পারেননি। অনেকের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। তাদের ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারেরা মারধর করেছে। ঢাকার দু’টি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে সরকার ও নির্বাচন কমিশন যৌথ মহড়া দিয়ে আভাস দিলো কেমন হতে পারে আসন্ন নির্বাচন। ঢাকা সিটিতে এ মহড়া শুরু হয়েছে এরও আগে। ২০ দলীয় জোটের প্রার্থীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ৫৭ নম্বর ওয়র্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী হতে পারেননি বিএনপি নেতা হাজী মনির হোসেন। যুগান্তর লিখেছে, মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে আওয়ামী লীগ নেতারা তার মনোনয়নপত্র ও ব্যাংকের পে-অর্ডার ছিনিয়ে নেন।
স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি নিয়ে দ্বৈতনীতি সরকারের সুবিধাবাদ ও সঙ্কীর্ণতাকে নগ্ন করে দিয়েছে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সাময়িক বরখাস্ত করেছে বা সরিয়ে দিচ্ছে সরকার। এভাবে জনপ্রতিনিধিদের বরখাস্ত করার হিড়িক পড়েছে। তবে একই সময়ে গুরুতর অভিযোগ থাকার পরও ক্ষমতাসীন দলীয় লোকেরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন নির্বিঘেœœ। বিরোধী দলসমর্থক প্রতিনিধিদের ঠুনকো অজুহাতে সরিয়ে সেখানেও বসানো হচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের লোকদের। জনগণের মতামতের প্রতি যখন এভাবে বেপরোয়া অশ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে, সে সময় সবচেয়ে বড় দু’টি সিটি করপোরেশনে নির্বাচনের আয়োজন করা হচ্ছে। ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন বছরের পর বছর ধরে ঝুলে ছিল। নির্বাচন কমিশন তখন ছিল দীর্ঘ শীতনিদ্রায়। হঠাৎ সবাই যেন জেগে উঠলেন প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্যের পর। পরে সেটাকে আরো বেগবান করলেন পুলিশ-প্রধান।
আইন অনুযায়ী কোনো জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলায় অভিযোগপত্র দেয়া হলে তাকে বরখাস্ত করা হয়। এ ছাড়া গ্রেফতার বা অনুপস্থিতির কারণে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে কাউকে দায়িত্ব দেয়া হয়ে থাকে। বাস্তবতা হচ্ছে, বিরোধী রাজনৈতিক গোষ্ঠী বিএনপি-জামায়াতের সমর্থক জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হওয়ার তথ্য পাওয়া মাত্র মন্ত্রণালয় থেকে বরখাস্ত অথবা অপসারণের ত্বরিত ব্যবস্থা নেয়া হয়। কিন্তু স্থানীয় সরকার বিভাগের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়ে থাকে যে, তারা কেবল আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছেন। বরখাস্ত ও অপসারণের যে প্রবণতা তাতে দেখা যাচ্ছে, বিরোধীরাই কেবল এর শিকার হচ্ছেন। অথচ দেশে যে অবস্থা চলছে তাতে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা নানাভাবে বিভিন্ন ফৌজদারি অপরাধ করছেন। বেআইনি কাজ করা প্রধানত তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে। অন্য দিকে, বিরোধীরা অপরাধ করা দূরে থাক, পালিয়ে বেড়াচ্ছেন হামলা-মমালা, গ্রেফতার ও গুমের ভয়ে।
প্রথম আলো খবর দিয়েছে, গুরুতর অভিযোগ থাকার পরও ক্ষমতাসীন দলের সাথে সম্পর্ক থাকায় বহালতবিয়তে রয়েছেন একজন স্থানীয় প্রতিনিধি।
তদন্তে দুর্নীতির অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার দুই বছরেও যশোরের অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পরিতোষ কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি স্থানীয় সরকার বিভাগ। তিনি আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিনামূল্যের ধানবীজ কৃষকদের কাছে বিক্রি করেছেন। স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের আওতাধীন দু’টি প্রকল্পের কাজ আংশিক করেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ১১ জন দুস্থ নারীর চাল আত্মসাৎ করেছেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে তা ফেরত দেন। উন্নয়ন প্রকল্পে তার অধীনে করা কাজ অত্যন্ত নি¤œমানের বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
জেলা প্রশাসক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে স্থানীয় সরকারকে জানিয়েছেন। স্থানীয় সরকার আইন ২০০৯-এর ৩৪ ধারা অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তিনি লিখিতভাবে জানান। ২০১৩ সালের ১৭ জুন স্থানীয় সরকার বিভাগে চিঠি পাঠানো হলেও এখন পর্যন্ত পরিতোষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তিনি একসময় নিষিদ্ধ ঘোষিত ও চরমপন্থী পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির কার্যক্রমের সাথে জড়িত ছিলেন। বর্তমানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাথে রয়েছেন।
সব ফাঁকফোকর গলিয়ে ক্ষমতাসীন দলের বাইরে কেউ যদি মেয়র বা কাউন্সিলর নির্বাচিত হন, তার পরিণতি কেমন হবে, তা অনুমান করা কঠিন নয়। তিনি যত ফুলের মতো চরিত্রের অধিকারী হন কেন, তার বিরুদ্ধে কোনো ছুতায় একটি অভিযোগ দাঁড় করানো সরকারের কাছে কোনো ব্যাপার নয়। অন্য দিকে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে সরকারের রাজনৈতিক স্বার্থে তার বিরুদ্ধে কাল্পনিক অভিযোগ আমলে নিয়ে যত শিগগির সম্ভব তাকে বরখাস্ত করতে।
জসিম উদ্দিন
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন