নববর্ষের দিনে নারীদের লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে গত ১৯ এপ্রিল দুপুরে পুলিশের জন্য চুড়ি, শাড়ি ও ললিপপ নিয়ে শাহবাগ থানা ঘেরাও করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। নারীদের লাঞ্ছনার প্রতিবাদে রোববার ৫ম দিনের মতো বিভিন্ন সংগঠন দিনভর প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। প্রতিবাদী মানববন্ধনের শিক্ষার্থীরা- ‘ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা চাই’, ‘এই নরপশুদের শাস্তি চাই’, ‘দায়িত্বে অবহেলাকারী পুলিশের বিচার চাই’, ‘পশুত্ব ও পুরুষত্ব এক নয়’, এসব লেখাসংবলিত প্ল্যাকার্ড বহন করেন। এছাড়া নারী লাঞ্ছনার নিন্দা জানিয়ে ও দোষীদের শাস্তি চেয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৭ জন শিক্ষক। এতদিনেও অপরাধীদের কেউ গ্রেফতার না হওয়া সমগ্র জাতির জন্য রচম লজ্জাকর বলে তারা বিবৃতিতে মন্তব্য করেন। এদিকে টিএসসি এলাকায় যৌন হয়রানির ঘটনায় পুলিশ ‘কেলাস’ বক্তব্য দিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, বিবস্ত্র হয়েছে কি হয়নি সেটি মুখ্য বিষয় নয়, যৌন হয়রানি হওয়াটাই মুখ্য বিষয়। আমরা আশা করবো, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দোষীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনবে। প্রসঙ্গত তিনি যৌন হয়রানির ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও দায় এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেন। আমরা তো পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সম্মানের আসনে দেখতে চাই। কিন্তু তারা যদি সম্মানের আসনে নিজেদের অধিষ্ঠিত রাখতে অক্ষম হয়ে পড়েন, তাহলে এর চাইতে দুঃখজনক বিষয় জাতির জন্য আর কী হতে পারে?
বাংলা-বর্ষবরণ একটি সামাজিক অনুষ্ঠান। সামাজিক অনুষ্ঠানে শুধু যে সমাজের চিত্র ফুটে ওঠে তা নয়, সমাজে বসবাসকারী মানুষের রুচি এবং মূল্যবোধের মানও ধরা পড়ে। এবার বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে নারীদের যৌন নির্যাতনের যে চিত্র লক্ষ্য করা গেছে, তাতে আমাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবক্ষয়ের মাত্রা উপলব্ধি করা যায়। একের পর এক নারীদের যৌন নির্যাতনের ঘটনা কোনো বনে-জঙ্গলে ঘটেনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও পুলিশের চোখের সামনেই ওইসব ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। এখন আবার ওই ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি লিটন নন্দী।
উল্লেখ্য যে, তিনি ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং নির্যাতিতা নারীকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হয়েছেন। লিটন বলেন, এ ঘটনার ছবি রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট একজনের কাছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেদের ভাবমূর্তি রক্ষা করার জন্য ওই ছবিটি প্রকাশ না করার জন্য তাকে চাপ দিচ্ছেন। ছবি প্রকাশ হলে ঘটনার অনেক কিছুই প্রকাশ হবে। লিটন নন্দী আরো জানান, যৌন হয়রানির ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত ও গ্রেফতারের চেয়ে নিজেদের ভাবমূর্তি রক্ষায় বেশি ব্যস্ত আছে পুলিশ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ কারণে ঘটনার পর এতদিন অতিবাহিত হলেও বখাটেদের কাউকে আটক করা যায়নি।
বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে যে ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে তাতে এ বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, অনুষ্ঠান আয়োজন ও উপভোগে আমরা উৎসাহিত হলেও প্রকৃত অর্থে আমরা এখনও সংস্কৃতিমনা হয়ে উঠতে পারিনি। আর নারীদের যৌন নির্যাতনের ঘটনা কি শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনেই ঘটেছে? জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরো বহু জায়গায় ওই ন্যক্কারজনক ঘটনার সংবাদ পাওয়া গেছে। লক্ষণীয় বিষয় হলো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনসহ আরো কোনো কোনো জায়গা থেকে বর্ষবরণ উপলক্ষে বিভিন্ন পশুপাখির মুখোশ ও মূর্তি নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। এ উপলক্ষে মঙ্গল, কল্যাণ, শান্তি ও শুভবার্তা উচ্চারণ করা হয়। কিন্তু বাস্তবে ওইসব উচ্চারণের তাৎপর্য আমরা কতটা উপলব্ধি করি, কতটা চর্চা করি? আসলে নৈতিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ না হয়ে পশুপাখির সাজ-সজ্জায় টোটেম বিশ্বাসকে আশ্রয় করে জৌলুসপূর্ণ শোভাযাত্রা প্রদর্শন করা গেলেও তাতে মানুষকে প্রকৃত সংস্কৃতিমনা করা যায় না। এর বাস্তব উদাহরণ আমরা নারী নির্যাতনের ঘটনায় লক্ষ্য করলাম। প্রসঙ্গত এখানে রবীন্দ্রনাথের একটি বক্তব্য উল্লেখ করা যায়। তিনি বলেছিলেন, পশুপাখি সহজেই পশুপাখি; কিন্তু মানুষ সহজে মানুষ নয়।
মানবজমিন পত্রিকার ১৮ এপ্রিল সংখ্যায় নারী নির্যাতন ঘটনা প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে প্রকাশিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের দায়িত্ব পালনের চিত্রে খুশি হওয়া যায় না। এমনকি ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি লিটন নন্দী ও তার সাথীরা ৫ জন নির্যাতনকারীকে ধরে এসআই আশরাফের কাছে সোপর্দ করা হলেও তাদের আইনের আওতায় নেয়া হয়নি; বরং তাদের এসআই আশরাফ ছেড়ে দিয়েছেন। আর অন্যদিকে ঘটনার কথা জানার পরেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর এএম আমজাদ ছিলেন দাবা খেলায় ব্যস্ত। নারী নির্যাতনের ঘটনায় সভা-সমাবেশ থেকে দোষীদের শাস্তির সাথে সাথে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বহীনতা তদন্তেরও দাবি উঠেছে। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি। কারণ জনগণের জান-মাল ও ইজ্জত রক্ষার দায়িত্ব সরকারের ওপরই বর্তায়। সরকার সেই দায়িত্ব কতটা পালন করে- সেটাই এখন দেখার বিষয়।
একটি সরকার গণতান্ত্রিক সরকার কিনা তার ব্যারোমিটার হলো সুশাসন। দেশে সুশাসন নেই বলেই দুর্বৃত্তরা আজ যত্রতত্র দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আর সরকার তো তার অন্যসব দায়-দায়িত্বকে গৌণ বিবেচনা করে বিরোধী জোটকে দমন-পীড়নের কাজকেই মুখ্য করে তুলেছে। এমন অবস্থায় জনমনে এখন গুঞ্জরিত বক্তব্যটি হলো, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হলেই সরকার গণতান্ত্রিক হয়ে যায় না। আর গণতান্ত্রিক পদ্ধতির খোলসে ৫ জানুয়ারি যে নির্বাচন হয়েছে তা দেশ-বিদেশে এখনও বিপুলভাবে পশ্নবিদ্ধ। সরকার তার ভুল ও দুর্বলতা উপলব্ধি করে সংযম ও সংশোধনের পথে হাঁটলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারতো। কিন্তু এর বদলে সরকার দমন-পীড়নের কৌশল অবলম্বন করায় পুুলিশের সাথে সাথে তাদের অঙ্গ সংগঠনগুলোর দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে।
ছাত্রলীগ ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এমন শিরোনামে পত্র-পত্রিকায় রিপোর্ট মুদ্রিত হচ্ছে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে খুনোখুনিতে জড়িয়ে পড়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সপ্তাহের ব্যবধানে দিনাজপুর ও কুমিল্লায় নিহত হয়েছে ৩ জন, আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে রংপুর মেডিকেল কলেজ। গত বৃহস্পতিবার রাতে দিনাজপুর হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে নিহত হয়েছে ২ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শতাধিক রাউন্ড গুলী ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। গত সপ্তাহে কুমিল্লায় জেলা ছাত্রলীগের কর্মী সভায় দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে কোতোয়ালি থানা ছাত্রলীগ সভাপতি এম সাইফুল ইসলাম নিহত হয়। কুমিল্লা টাউনহল মিলনায়তনে ছাত্রলীগের এই কর্মী সভায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমের উপস্থিতিতে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুটি গ্রুপ। গত সপ্তাহে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একজন শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে ছাত্রলীগ কর্মীরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষক সমিতি ও ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে এক সপ্তাহ ধরে অচল রয়েছে বুয়েট ক্যাম্পাস। এদিকে পহেলা বৈশাখে ছাত্রলীগের বেপরোয়া কর্মকা- থেকে রেহাই পাননি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। জাহাঙ্গীরনগর ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার দায়ে ৬ ছাত্রলীগ কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে সংগঠন থেকে। এদিকে ছিনতাইয়ের অভিযোগে রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রলীগ নেতাকে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অপকর্মের তালিকা আরো বৃদ্ধি করা যেতে পারে। কিন্তু তালিকা দীর্ঘ করার মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই। তবে প্রশ্ন জাগে, দেশের ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অনাকাক্সিক্ষত এসব কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে কেন? তাহলে কি তারা ঐতিহ্যের পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে? আমরা জানি, একটি প্রগতিশীল সংগঠনকে ঐতিহ্য ধারণ করেই বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সৃজনশীল ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হয়। ছাত্রলীগ কি এক্ষেত্রে ব্যর্থ হচ্ছে? আমরা মনে করি, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিব্রতকর কর্মকান্ডে দু-চারজনকে বহিষ্কার করে ছাত্রলীগের ইমেজ পুনরুদ্ধার করা যাবে না। নেতাকর্মীদের নেতিবাচক কর্মকান্ড থেকে মুক্ত করে ইতিবাচক কর্মকা-ে প্রাণবন্ত করতে হলে, বর্তমান সময়ে ছাত্রলীগের কর্মকান্ডের গভীর পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। আর সেই দায়িত্ব পালনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি তাদের যারা পরিচালনা করেন সেই অভিভাবকদেরও এগিয়ে আসতে হবে। প্রসঙ্গত আমরা বাংলাদেশের ছাত্র সংগঠনগুলোর উজ্জ্বল অতীতের কথা স্মরণ করতে পারি। তখনকার ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা বাসে বা রিকশায় চড়ে কাজ করতো। এখনকার মতো দামি গাড়ি হাঁকাতো না। তারা ট্রাফিক আইন মেনে চলতো, ট্রাফিক পুলিশের ওপর চড়াও হতো না। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও সন্ত্রাসের সাথে তাদের সম্পর্ক ছিল না। তারা প্রতিপক্ষকে নির্মমভাবে হত্যা করতো না, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নিজ দলের নেতাকর্মীকে হত্যা করতো না। তখনকার ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা নিজেদের কাজের ও দায়িত্ব পালনের সীমা উপলব্ধি করতো। সীমা লঙ্ঘন করে তারা নিজেদের ইমেজ ক্ষুণœ করতো না। তখনকার ছাত্র সংগঠন কিংবা ছাত্র আন্দোলন প্রধানত শিক্ষা ও ছাত্রদের বিষয় নিয়ে কাজ করতো। তারা সমকালীন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আদর্শিক তর্কবিতর্কও করতো। আবার জাতীয় প্রয়োজনে সময়ের দাবি পূরণে তারা এগিয়ে এসেছে সাহসের সাথে। তখন জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়ার লক্ষ্যে ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা জ্ঞানচর্চায় বেশ উৎসাহী ছিল। তারা পাঠচক্র এবং সেমিনার-সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করতো। বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস পুনঃপাঠ করলে দায়িত্বশীলরা ছাত্রলীগকে ঐতিহ্যের ধারায় প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হতে পারেন।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এখন যেভাবে পদ দখল, হল দখল, টেন্ডার দখলে ব্যস্ত রয়েছে তা বন্ধ করতে হবে। কিন্তু এর বদলে সংগঠনটির অভিভাবকরা যদি ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতির বৃত্তে অবস্থান করে ওদের প্রশ্রয় দিয়ে যান, তাহলে তা হবে আত্মঘাতী কৌশল। পথভ্রষ্ট নেতাকর্মীরা কারো জন্যই কল্যাণকর বলে বিবেচিত হতে পারে না, নিজেদের জন্যও নয়। তার প্রমাণ পাওয়া গেল এবারের সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও। ঢাকা দক্ষিণের ২১ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী মোঃ আব্দুল হামিদ খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রচারণা চালাতে গেলে তাকে ধাওয়া দিয়েছে ছাত্রলীগের কর্মীরা। আর এর মূলে রয়েছেন একই এলাকার অপর প্রার্থী ওয়াার্ড ছাত্রীলগের সহ-সম্পাদক মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ। উল্লেখ্য যে, কাউন্সিলর প্রার্থী মোঃ আব্দুল হামিদ খান ২১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে ১৮ এপ্রিল তাকে এবং মহিলাসহ ৪০ জন কর্মীকে লাঞ্ছিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ত্যাগ করতে হয়। তাই প্রশ্ন জাগে, ফ্রাঙ্কেনস্টাইন লালনের কোনো প্রয়োজন আছে কী? বিষয়টি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং তাদের অভিভাবকরা ভেবে দেখলে ভালো করবেন। তবে তেমন সুমতি তাদের হয় কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়। আমরা তাদের সুমতির জন্য স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করবো। কারণ সুমতি ও শুভ ভাবনার অভাবেই দেশের মানুষ আজ নানা দুর্ভোগের শিকার। এমন অবস্থা থেকে মানুষ মুক্তি চায়। জানি না মুক্তির সেই শুভসকাল কখন কীভাবে আমাদের জীবনে ফিরে আসবে।
বাংলা-বর্ষবরণ একটি সামাজিক অনুষ্ঠান। সামাজিক অনুষ্ঠানে শুধু যে সমাজের চিত্র ফুটে ওঠে তা নয়, সমাজে বসবাসকারী মানুষের রুচি এবং মূল্যবোধের মানও ধরা পড়ে। এবার বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে নারীদের যৌন নির্যাতনের যে চিত্র লক্ষ্য করা গেছে, তাতে আমাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবক্ষয়ের মাত্রা উপলব্ধি করা যায়। একের পর এক নারীদের যৌন নির্যাতনের ঘটনা কোনো বনে-জঙ্গলে ঘটেনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও পুলিশের চোখের সামনেই ওইসব ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। এখন আবার ওই ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি লিটন নন্দী।
উল্লেখ্য যে, তিনি ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং নির্যাতিতা নারীকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হয়েছেন। লিটন বলেন, এ ঘটনার ছবি রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট একজনের কাছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেদের ভাবমূর্তি রক্ষা করার জন্য ওই ছবিটি প্রকাশ না করার জন্য তাকে চাপ দিচ্ছেন। ছবি প্রকাশ হলে ঘটনার অনেক কিছুই প্রকাশ হবে। লিটন নন্দী আরো জানান, যৌন হয়রানির ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত ও গ্রেফতারের চেয়ে নিজেদের ভাবমূর্তি রক্ষায় বেশি ব্যস্ত আছে পুলিশ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ কারণে ঘটনার পর এতদিন অতিবাহিত হলেও বখাটেদের কাউকে আটক করা যায়নি।
বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে যে ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে তাতে এ বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, অনুষ্ঠান আয়োজন ও উপভোগে আমরা উৎসাহিত হলেও প্রকৃত অর্থে আমরা এখনও সংস্কৃতিমনা হয়ে উঠতে পারিনি। আর নারীদের যৌন নির্যাতনের ঘটনা কি শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনেই ঘটেছে? জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরো বহু জায়গায় ওই ন্যক্কারজনক ঘটনার সংবাদ পাওয়া গেছে। লক্ষণীয় বিষয় হলো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনসহ আরো কোনো কোনো জায়গা থেকে বর্ষবরণ উপলক্ষে বিভিন্ন পশুপাখির মুখোশ ও মূর্তি নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। এ উপলক্ষে মঙ্গল, কল্যাণ, শান্তি ও শুভবার্তা উচ্চারণ করা হয়। কিন্তু বাস্তবে ওইসব উচ্চারণের তাৎপর্য আমরা কতটা উপলব্ধি করি, কতটা চর্চা করি? আসলে নৈতিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ না হয়ে পশুপাখির সাজ-সজ্জায় টোটেম বিশ্বাসকে আশ্রয় করে জৌলুসপূর্ণ শোভাযাত্রা প্রদর্শন করা গেলেও তাতে মানুষকে প্রকৃত সংস্কৃতিমনা করা যায় না। এর বাস্তব উদাহরণ আমরা নারী নির্যাতনের ঘটনায় লক্ষ্য করলাম। প্রসঙ্গত এখানে রবীন্দ্রনাথের একটি বক্তব্য উল্লেখ করা যায়। তিনি বলেছিলেন, পশুপাখি সহজেই পশুপাখি; কিন্তু মানুষ সহজে মানুষ নয়।
মানবজমিন পত্রিকার ১৮ এপ্রিল সংখ্যায় নারী নির্যাতন ঘটনা প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে প্রকাশিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের দায়িত্ব পালনের চিত্রে খুশি হওয়া যায় না। এমনকি ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি লিটন নন্দী ও তার সাথীরা ৫ জন নির্যাতনকারীকে ধরে এসআই আশরাফের কাছে সোপর্দ করা হলেও তাদের আইনের আওতায় নেয়া হয়নি; বরং তাদের এসআই আশরাফ ছেড়ে দিয়েছেন। আর অন্যদিকে ঘটনার কথা জানার পরেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর এএম আমজাদ ছিলেন দাবা খেলায় ব্যস্ত। নারী নির্যাতনের ঘটনায় সভা-সমাবেশ থেকে দোষীদের শাস্তির সাথে সাথে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বহীনতা তদন্তেরও দাবি উঠেছে। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি। কারণ জনগণের জান-মাল ও ইজ্জত রক্ষার দায়িত্ব সরকারের ওপরই বর্তায়। সরকার সেই দায়িত্ব কতটা পালন করে- সেটাই এখন দেখার বিষয়।
একটি সরকার গণতান্ত্রিক সরকার কিনা তার ব্যারোমিটার হলো সুশাসন। দেশে সুশাসন নেই বলেই দুর্বৃত্তরা আজ যত্রতত্র দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আর সরকার তো তার অন্যসব দায়-দায়িত্বকে গৌণ বিবেচনা করে বিরোধী জোটকে দমন-পীড়নের কাজকেই মুখ্য করে তুলেছে। এমন অবস্থায় জনমনে এখন গুঞ্জরিত বক্তব্যটি হলো, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হলেই সরকার গণতান্ত্রিক হয়ে যায় না। আর গণতান্ত্রিক পদ্ধতির খোলসে ৫ জানুয়ারি যে নির্বাচন হয়েছে তা দেশ-বিদেশে এখনও বিপুলভাবে পশ্নবিদ্ধ। সরকার তার ভুল ও দুর্বলতা উপলব্ধি করে সংযম ও সংশোধনের পথে হাঁটলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারতো। কিন্তু এর বদলে সরকার দমন-পীড়নের কৌশল অবলম্বন করায় পুুলিশের সাথে সাথে তাদের অঙ্গ সংগঠনগুলোর দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে।
ছাত্রলীগ ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এমন শিরোনামে পত্র-পত্রিকায় রিপোর্ট মুদ্রিত হচ্ছে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে খুনোখুনিতে জড়িয়ে পড়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সপ্তাহের ব্যবধানে দিনাজপুর ও কুমিল্লায় নিহত হয়েছে ৩ জন, আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে রংপুর মেডিকেল কলেজ। গত বৃহস্পতিবার রাতে দিনাজপুর হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে নিহত হয়েছে ২ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শতাধিক রাউন্ড গুলী ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। গত সপ্তাহে কুমিল্লায় জেলা ছাত্রলীগের কর্মী সভায় দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে কোতোয়ালি থানা ছাত্রলীগ সভাপতি এম সাইফুল ইসলাম নিহত হয়। কুমিল্লা টাউনহল মিলনায়তনে ছাত্রলীগের এই কর্মী সভায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমের উপস্থিতিতে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুটি গ্রুপ। গত সপ্তাহে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একজন শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে ছাত্রলীগ কর্মীরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষক সমিতি ও ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে এক সপ্তাহ ধরে অচল রয়েছে বুয়েট ক্যাম্পাস। এদিকে পহেলা বৈশাখে ছাত্রলীগের বেপরোয়া কর্মকা- থেকে রেহাই পাননি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। জাহাঙ্গীরনগর ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার দায়ে ৬ ছাত্রলীগ কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে সংগঠন থেকে। এদিকে ছিনতাইয়ের অভিযোগে রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রলীগ নেতাকে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অপকর্মের তালিকা আরো বৃদ্ধি করা যেতে পারে। কিন্তু তালিকা দীর্ঘ করার মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই। তবে প্রশ্ন জাগে, দেশের ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অনাকাক্সিক্ষত এসব কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে কেন? তাহলে কি তারা ঐতিহ্যের পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে? আমরা জানি, একটি প্রগতিশীল সংগঠনকে ঐতিহ্য ধারণ করেই বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সৃজনশীল ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হয়। ছাত্রলীগ কি এক্ষেত্রে ব্যর্থ হচ্ছে? আমরা মনে করি, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিব্রতকর কর্মকান্ডে দু-চারজনকে বহিষ্কার করে ছাত্রলীগের ইমেজ পুনরুদ্ধার করা যাবে না। নেতাকর্মীদের নেতিবাচক কর্মকান্ড থেকে মুক্ত করে ইতিবাচক কর্মকা-ে প্রাণবন্ত করতে হলে, বর্তমান সময়ে ছাত্রলীগের কর্মকান্ডের গভীর পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। আর সেই দায়িত্ব পালনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি তাদের যারা পরিচালনা করেন সেই অভিভাবকদেরও এগিয়ে আসতে হবে। প্রসঙ্গত আমরা বাংলাদেশের ছাত্র সংগঠনগুলোর উজ্জ্বল অতীতের কথা স্মরণ করতে পারি। তখনকার ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা বাসে বা রিকশায় চড়ে কাজ করতো। এখনকার মতো দামি গাড়ি হাঁকাতো না। তারা ট্রাফিক আইন মেনে চলতো, ট্রাফিক পুলিশের ওপর চড়াও হতো না। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও সন্ত্রাসের সাথে তাদের সম্পর্ক ছিল না। তারা প্রতিপক্ষকে নির্মমভাবে হত্যা করতো না, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নিজ দলের নেতাকর্মীকে হত্যা করতো না। তখনকার ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা নিজেদের কাজের ও দায়িত্ব পালনের সীমা উপলব্ধি করতো। সীমা লঙ্ঘন করে তারা নিজেদের ইমেজ ক্ষুণœ করতো না। তখনকার ছাত্র সংগঠন কিংবা ছাত্র আন্দোলন প্রধানত শিক্ষা ও ছাত্রদের বিষয় নিয়ে কাজ করতো। তারা সমকালীন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আদর্শিক তর্কবিতর্কও করতো। আবার জাতীয় প্রয়োজনে সময়ের দাবি পূরণে তারা এগিয়ে এসেছে সাহসের সাথে। তখন জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়ার লক্ষ্যে ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা জ্ঞানচর্চায় বেশ উৎসাহী ছিল। তারা পাঠচক্র এবং সেমিনার-সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করতো। বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস পুনঃপাঠ করলে দায়িত্বশীলরা ছাত্রলীগকে ঐতিহ্যের ধারায় প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হতে পারেন।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এখন যেভাবে পদ দখল, হল দখল, টেন্ডার দখলে ব্যস্ত রয়েছে তা বন্ধ করতে হবে। কিন্তু এর বদলে সংগঠনটির অভিভাবকরা যদি ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতির বৃত্তে অবস্থান করে ওদের প্রশ্রয় দিয়ে যান, তাহলে তা হবে আত্মঘাতী কৌশল। পথভ্রষ্ট নেতাকর্মীরা কারো জন্যই কল্যাণকর বলে বিবেচিত হতে পারে না, নিজেদের জন্যও নয়। তার প্রমাণ পাওয়া গেল এবারের সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও। ঢাকা দক্ষিণের ২১ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী মোঃ আব্দুল হামিদ খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রচারণা চালাতে গেলে তাকে ধাওয়া দিয়েছে ছাত্রলীগের কর্মীরা। আর এর মূলে রয়েছেন একই এলাকার অপর প্রার্থী ওয়াার্ড ছাত্রীলগের সহ-সম্পাদক মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ। উল্লেখ্য যে, কাউন্সিলর প্রার্থী মোঃ আব্দুল হামিদ খান ২১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে ১৮ এপ্রিল তাকে এবং মহিলাসহ ৪০ জন কর্মীকে লাঞ্ছিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ত্যাগ করতে হয়। তাই প্রশ্ন জাগে, ফ্রাঙ্কেনস্টাইন লালনের কোনো প্রয়োজন আছে কী? বিষয়টি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং তাদের অভিভাবকরা ভেবে দেখলে ভালো করবেন। তবে তেমন সুমতি তাদের হয় কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়। আমরা তাদের সুমতির জন্য স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করবো। কারণ সুমতি ও শুভ ভাবনার অভাবেই দেশের মানুষ আজ নানা দুর্ভোগের শিকার। এমন অবস্থা থেকে মানুষ মুক্তি চায়। জানি না মুক্তির সেই শুভসকাল কখন কীভাবে আমাদের জীবনে ফিরে আসবে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন