সোমবার, ৯ জুলাই, ২০১২

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মনোনীত হওয়ার পরদিনই চট্টগ্রাম সিটি মেয়রের কাছে ১৩৮০ ফাইল তলব করেছে দুদক



চট্টগ্রাম সিটি মেয়র মো. মনজুর আলমের কাছে করপোরেশনের বিগত দু’বছরের ১৮৫ কোটি টাকার কাজের ১৩৮০টি ফাইল তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিরোধী দলীয় নেতা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মনোনীত হওয়ার পরদিনই চিঠিটি ইস্যু করে দুদক। এটি গত রোববার সিটি করপোরেশনে পৌঁছে। মেয়র মনজুর আলম এ ঠিঠিকে রাজনৈতিক দুরভিসন্ধিমূলক আখ্যা দিয়ে বলেন, আমি বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা করে চট্টগ্রাম ফেরার আগেই দুদকের চিঠি পৌঁছে গেছে। এ ধরনের চিঠি দেয়ার উদ্দেশ্য কি তা জনগণ সহজেই বুঝতে পারেন। তবে দুদক দাবি করেছে, মনজুর আলম বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মনোনীত হওয়ার আগে থেকেই ফাইল তলবের প্রক্রিয়াটি শুরু হয়েছিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দুদক চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবদুল আজিজ ভূঁইয়া এক চিঠিতে চসিকের গত দুই বছরের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ১৩৮০টি ফাইল তলব করেন।
এর সত্যতা স্বীকার করে দুদক উপ-পরিচালক আজিজ আমার দেশ-কে বলেন, মোট ১৩৮০টি প্রকল্পের ফাইল তলব করেছি। এসব প্রকল্পে গত দুই বছরে ১৮৫ কোটি টাকার কাজ হয়েছে। প্রকল্পগুলো কোন কোন এলাকায়, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী কে ছিলেন, কোন প্রকল্পের জন্য কত টাকা বরাদ্দ ছিল, কত টাকা ব্যয় হয়েছে এসব বিষয় জানতে চেয়েছি।
তিনি বলেন, প্রাথমিক অনুসন্ধানের জন্যই এসব ফাইল তলব করা হয়েছে। ফাইল হাতে পাওয়ার পর আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখব কোনো অনিয়ম হয়েছে কিনা। তার আগে অনিয়ম হয়েছে এমনটি বলা যাবে না। গত ৫ জুলাই চিঠিটি পাঠানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সম্ভবত গতকাল এটি করপোরেশনে পৌঁছেছে।
মেয়র মনজুর আলম বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হওয়ার পর উদ্দেশ্যমূলকভাবে এ চিঠি দেয়া হলো কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক উপ-পরিচালক আবদুল আজিজ ভূঁইয়া বলেন, প্রশ্নই ওঠে না। এটা আরও অনেক আগের প্রক্রিয়া ছিল।
এদিকে মেয়র মনজুর আলম এ প্রসঙ্গে আমার দেশ-কে বলেন, দুদক থেকে ফাইল তলব করে পাঠানো একটি চিঠি করপোরেশনে গেছে বলে শুনেছি। আমি বিএনপি চেয়ারপার্সনের সঙ্গে দেখা করতে ঢাকায় অবস্থান করায় চিঠিটি এখনও হাতে পাইনি।
তিনি বলেন, এটা অনেকটাই পরিষ্কার যে আমি বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মনোনীত হওয়ার পর এ ধরনের চিঠি পাঠানো একটা ষড়যন্ত্র এবং রাজনৈতিক অভিসন্ধি হতে পারে। যে কেউ এটা সহজে বুঝতে পারবেন যে হয়রানির উদ্দেশেই এটা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, তারপরও যেহেতু দুদক চেয়েছে আমরা ফাইল রেডি করে জমা দেব। কারণ আমার দুই বছরে করপোরেশনে কোনো দুর্নীতি হয়নি—এটা আমি জোর দিয়ে বলতে পারি। তবে কারও হয়রানির উদ্দেশ্য থাকলে কোনো না কোনো উপায়ে তা করবেই। এর মধ্যেই আমি নগরবাসীর সমর্থন নিয়ে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করে যাব।
প্রসঙ্গত গত ৪ জুলাই মেয়র এম মনজুর আলম বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মনোনীত হন। এর পরদিনই অর্থাত্ ৫ জুলাই দুদক থেকে ফাইল তলব করা হয়। ২০১০ সালের ১৭ জুন নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত মনজুর আলম আওয়ামী লীগ নেতা ও এর আগে ১৭ বছর মেয়র পদে থাকা এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরীকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads