মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

‘রাজাকার এ কে খন্দকার’


মুক্তিযুদ্ধের উপ-অধিনায়ক এয়ার ভাইস মার্শাল একে খন্দকার ‘১৯৭১ : ভেতরে বাইরে’ শিরোনামে একটি বই লিখেছেন। বইটি প্রকাশ করেছে প্রথম আলো গ্রুপের প্রকাশনা সংস্থা, প্রথমা। সপ্তাহখানেক আগে আওয়ামী ঘরানার বুদ্ধিজীবীরা বইটি উদ্বোধন করেন। বইটির ওপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। তাজউদ্দিনকন্যা শরমিন আহমদের বইও এ বুদ্ধিজীবীরাই মোড়ক উন্মোচন করে আলোচনা করেছিলেন। সে বই নিয়ে আওয়ামী মহলে খুব একটা হইচই পড়েনি। কেউ কেউ অবশ্য বলেছেন, তার স্বামী জঙ্গিবাদী মুসলমান। সেই সূত্রে তিনি এরকম একটি বই লিখে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। তারপর পত্রিকায় দেখলাম, সরকারের তরফ থেকে কোনো হইচই না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সে-ও খুব বেশিদিন আগের কথা নয়। তারপর গেল একে খন্দকারের বই। এ বইয়ের কিছু অংশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
তাতে আছে, স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য শেখ মুজিব তথা আওয়ামী লীগের কোনো পূর্ব প্রস্তুতিই ছিল না। আর আওয়ামী লীগ যেটাকে শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা বলে চালিয়ে আসছে, সেটি হলো তার ৭ মার্চের ভাষণ। তাতে অনেক কথার পর শেখ মুজিবুর রহমান একটি মাত্র বাক্য উচ্চারণ করেছিলেন। তা হলো, ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ ৭ মার্চের এ ভাষণ শেখ মুজিবুর রহমান এই বলে শেষ করেন যে, ‘জয় বাংলা, জয় পাকিস্তান; খোদা হাফেজ।’ এটি কোনো বিবেচনাতেই স্বাধীনতার ঘোষণা হতে পারে না। আওয়ামী লীগের আপত্তি, শেখ মুজিব তার ভাষণে ‘জয় পাকিস্তান’ বলেননি। ৭ মার্চের (১৯৭১) জনসভায় লাখো মানুষ উপস্থিত ছিলেন। আমি নিজেও ছিলাম সেই সমাবেশে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও উপস্থিত ছিলেন সেখানে।
আমরা কেউ নাবালক ছিলাম না। তখন আমার বয়স ১৮। জগন্নাথ কলেজে পড়ি। মৃত লোককে সাক্ষী মানতে চাই না। তবু বলব, আর্ট কলেজের পাশে যেখানে দাঁড়িয়ে আমরা শেখ মুজিবের ভাষণ শুনছিলাম। তখন আমার পাশে ছিলেন মোহাম্মদ তোয়াহা এবং দৈনিক পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রতিবেদক মাশির হোসেন। চেনা আরও কেউ কেউ ছিলেন, যাদের নাম এখন ভুলে গেছি। আমরা কেউ জয় পাকিস্তান শুনে আশ্চর্যান্বিত হইনি। কারণ তখনও আমাদের ভেতরে একটি আশা ছিল যে, পাকিস্তান সরকার শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা শেখ মুজিবকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সরকার গঠনের আহ্বান জানাবে।
শেখ মুজিবের ঐ দিনের ভাষণের পর জেনারেল ইয়াহিয়ার সঙ্গে তার আলোচনার পথ রুদ্ধ হয়ে যায়নি। শেখ মুজিবের ঐ ঘোষণা যদি স্বাধীনতার ঘোষণাই হতো, তাহলে সঙ্গত কারণেই ধরে নেয়া যায় যে, জেনারেল ইয়াহিয়ার সামরিক সরকার তার সঙ্গে পার্লামেন্টের অধিবেশন আহ্বান ও ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয় নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে না। এমনকি পরে ইয়াহিয়া খান সিদ্দিক সালেকের ভাষ্য অনুযায়ী, তার জেনারেলদের শেখ মুজিবের সামনে ডেকে বলেছিলেন, ‘জেন্টালমেন, মিট ইওর নেক্সড প্রাইম মিনিস্টার।’ ফলে শেষ পর্যন্ত শেখ মুজিবুর রহমান আশাবাদী ছিলেন যে, তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। আলোচনা চলেছিল ২৩ মার্চ ১৯৭১ পর্যন্ত। জেনারেল ইয়াহিয়া ঢাকায় ছিলেন। মুজিবের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জুলফিকার আলী ভুট্টোও ঢাকায় ছিলেন। আলোচনাও চলছিল। দিন শেষে আওয়ামী লীগের তরফ থেকে আমাদের জানানো হচ্ছিল যে, আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এরপর ইয়াহিয়া খান পার্লমেন্ট অধিবেশন স্থগিত করে পশ্চিম পাকিস্তানে ফেরত যান। ভুট্টো আরও একদিন ছিলেন। তিনিও গোপনে পাকিস্তানে পাড়ি দেন। ব্যারিস্টার আমিনুল ইসলাম এদের মধ্যে দূতিয়ালি করছিলেন। তাকে দুইবার শেখ মুজিবুর রহমান হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে পাঠান। তিনি ইয়াহিয়া ও ভুট্টোর প্রস্থানের খবর নিয়ে আসেন। তখন শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ওরা আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করলো।
তারপরেও ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় তাজউদ্দিন আহমদ যখন শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতা ঘোষণায় স্বাক্ষর করতে বা টেপ রেকর্ডারে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করতে অনুরোধ করেন, তখনও তিনি বলেছিলেন, এটি করলে পাকিস্তানীরা আমার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীর অভিযোগ আনতে পারবে। অর্থাৎ ঐক্যবদ্ধ পাকিস্তানের স্বপ্ন তখনও তার মন থেকে তিরোহিত হয়নি। তাজউদ্দিন আহমদ যখন তার কাছে জানতে চান, তার (শেখ মুজিব) অনুপস্থিতিতে দলের নেতৃত্বের কী হবে! শেখ মুজিব তার কোনো জবাব দেননি; বরং বলেছিলেন, ২৭ মার্চ হরতাল ডেকেছি। ‘গিয়ে নাকে তেল দিয়ে ঘুমাও।’ তাজউদ্দিন আহমদ বিরক্ত হয়ে চলে আসার পর আসম আবদুর রবসহ কয়েকজন তরুণ নেতা শেখ মুজিবের বাসায় গিয়ে বলেছিলেন, তারা শেখ মুজিবকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার জন্য ছয়টি রুট তৈরি রেখেছেন। কোন পথে তিনি যেতে চান? শেখ মুজিবুর রহমান তাদের বলেছিলেন, তোরা পালা। আমার ব্যবস্থা আমি করে রেখেছি। শারমিন আহমদের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি পাকিস্তান বাহিনীর কাছে ধরা দেয়ার জন্য হোল্ডঅল গুছিয়ে রেখেছিলেন। ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ভাষ্য অনযায়ী, দুই পাকিস্তানী সেনা ঐ হোল্ডঅল মাথায় করে গাড়িতে নামায় এবং শেখ মুজিব, বেগম মুজিব ও রাসেলকে আদর করে মিলিটারির গাড়িতে গিয়ে ওঠেন।
এসব ইতিহাসের সত্য। নানাভাবে নানা জায়গায় লিপিবদ্ধ আছে। কেউ তা পরোয়া করতে চায়নি। পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে, তাতে বলতে হয়, ইতিহাস বলে কিছু নেই। আওয়ামী লীগ যা বলবে, সেটাই ইতিহাস। আর সকলকে তা মেনে নিতে হবে।
একে খন্দকারের বই প্রকাশের পর ধারণা করি না যে, আওয়ামী লীগের কোনো নেতা এখন পর্যন্ত বইটি পড়েছেন বা দেখেছেন। আমি নিজেও পড়িনি। কারণ প্রথম আলো অফিসের নিচতলায় প্রথমার যে স্টল আছে সেখানেও বইটি পাওয়া যাচ্ছে না। আজিজ সুপার মার্কেটে প্রথমার স্টলেও বইটি এখন নেই। তারা জানিয়েছেন আসবে। কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমান জয় পাকিস্তান বলেছিলেন কিনাÑ এটাই হয়ে দাঁড়িয়েছে মুখ্য ইস্যু। মুক্তিযুদ্ধের উপ-অধিনায়ক এয়ারভাইস মার্শাল একে খন্দকার লিখেছেন যে, শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চের ভাষণ শেষ করেছিলেন, ‘জয় বাংলা, জয় পাকিস্তান’ বলে। আওয়ামী লীগের যত রাগ ঐ জয় পাকিস্তান নিয়ে। একে খন্দকার ‘জয় পাকিস্তানে’র কথা এই প্রথম বলেননি। তার আগে অনেকেই এই সত্য লিপিবদ্ধ করে গেছেন।
ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ও প্রথম গণপরিষদে সরকারি দলের চিফ হুইপ শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন ২০০২ সালে প্রকাশিত তার আত্মজীবনীমূলক ‘বলেছি, বলছি, বলবো’ গ্রন্থে বলেছেন, ‘১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যে বক্তব্য দিলেন, তা যেমন ছিল ঐতিহাসিক, তেমনই তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি বললেন বটে, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। কিন্তু ঘোষণা দিলেন না আনুষ্ঠানিকভাবে। শেষ করলেন, জয় বাংলা, জয় পাকিস্তান’ বলে। (পৃ-৩৭)
১৯৬৮-৬৯ সময়ে আওয়ামী লীগের ঘোর দুর্দিনে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আওয়ামী লীগের হাল ধরেছিলেন আমেনা বেগম। ১৯৭৬ সালের ২৫ অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘শেখ মুজিব স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন, এটা ঠিক নয়। ৭ মার্চে (১৯৭১) এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম বললেও একই বক্তৃতায় জয় বাংলা, জয় পাকিস্তান বলেছেন।’ (সাপ্তাহিক বিচিত্রা ৫/১১/১৯৭৬)
১৯৯৭ সালের ২ মার্চ মুক্তিযোদ্ধা চেতনামঞ্চ কর্তৃক আয়োজিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিক্ষক কেন্দ্রসংলগ্ন সড়কদ্বীপে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের তৎকালীন সভাপতি কাজী আরেফ আহমেদ মন্তব্য করেছিলেন, ‘ভাষণের শেষে জয় বাংলা বলে পরে জয় পাকিস্তান বলা হয়েছিল।’ এখন সেটা উল্লেখ না করাকে তিনি ইতিহাস বিকৃতি বলে উল্লেখ করেন। (দৈনিক দিনকাল, ৩ মার্চ ১৯৯৭)
অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহম্মদ হাবিবুর রহমানের ‘বাংলাদেশের তারিখ (১৯৯৮)’ গ্রন্থের ৩৮ পৃষ্ঠায় আছে যে, শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চের ভাষণের শেষে ‘জয় বাংলা, জিয়ে পাকিস্তান বলেছিলেন।’
আওয়ামী লীগের অপড়ুয়া নেতৃবৃন্দ এর কোনো কিছু কখনই খেয়াল করেননি। আসলে আওয়ামী লীগের রাজনীতি এখন হাইব্রিড অশিক্ষিতদের কবলে, যারা ইতিহাসের কিছুই স্বীকার করতে চায় না। ঐতিহাসিক সত্যকে অস্বীকার করতে চায়। দেশে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বিপদজনক অবস্থা সেটি।
গত ৪ সেপ্টেম্বর একে খন্দকারের বই নিয়ে সংসদে দারুণ নষ্ট আলোচনা হলো। কে যে কী বললেন, বুঝেই ওঠা গেল না। কেউ বললেন, একে খন্দকার স্মৃতিবিভ্রমে আক্রান্ত। কেউ বললেন, তার বই বাজেয়াপ্ত হওয়া উচিত। কেউ তাকে কুলাঙ্গার বললেন। কেউ বললেন, তিনি খন্দকার মোশতাকের দোসর। কেউ বললেন, তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। কেউ বললেন, বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। বাংলাদেশ মানেই বঙ্গবন্ধু। হাহ্্!
সবচেয়ে আশ্চর্য লাগল তোফায়েল আহমদের বক্তব্য শুনে! তিনি বললেন, ‘এই একে খন্দকারই বঙ্গবন্ধু হত্যার পর রেডিও স্টেশনে গিয়ে খুনি মোশতাককে সমর্থন দিয়েছিলেন। উনার লেখায় রয়েছে, আমাদের যুদ্ধের নাকি প্রস্তুতিই ছিল না। বাস্তবতা হচ্ছে, ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে নিরস্ত্র জাতিকে সশস্ত্র জাতিতে পরিণত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। যুদ্ধের সব নির্দেশনা দিয়ে গিয়েছিলেন। যুদ্ধের সময় কোথা থেকে অস্ত্র আসবে, নেতারা কোথায় থাকবেন সেটিও আগে থেকে বলে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু।’ কেউ কেউ বলেছেন, তিনি পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর এজেন্ট। তাদের প্ররোচনায়ই বইটি লিখেছেন।
আগের দফায় এয়ারভাইস মার্শল (অব.) আওয়ামী লীগের পরিকল্পনামন্ত্রী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ১৫ আগস্টের পর মোশতাক সরকারকে সমর্থন করেছিলেন; সে সমর্থন জেনারেল শফিউল্লাহও করেছিলেন; করেছিলেন নৌবাহিনী প্রধানও। মোশতাকের মন্ত্রিসভায় শেখ মুজিবের বাকশালের মন্ত্রীরা দলে দলে যোগ দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা আসার আগেই সেসব মন্ত্রী ১৯৭৮-এর পার্লামেন্টবিরোধী দলের নেতা হয়েছেন। শেখ হাসিনার উপদেষ্টা এইচটি ইমাম মোশতাক মন্ত্রিসভার শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন। আর এরশাদের মন্ত্রিসভায় ছিলেন- এমন ব্যক্তি আওয়ামী লীগের অনেকদিনের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তাদের কোনো দোষ নেই। দোষ হয়েছে একে খন্দকারের। তোফায়েল সাহেব, শেখ ফজলুল হক মনি, সিরাজুল আলম খান ও আবদুল রাজ্জাকের সঙ্গে মুজিব বাহিনীর নেতা ছিলেন। মইদুল হাসান তার “মূলধারা ’৭১” গ্রন্থে লিখেছেন, মুজিব বাহিনী যুদ্ধ তো করেইনি, বরং মুক্তি বাহিনীকে বিভ্রান্ত করা, তাদের অস্ত্র কেড়ে নেয়া, তাদের মুজিব বাহিনীর অনুগত হতে বাধ্য করা- এইসব কাজে লিপ্ত ছিল এবং তারা ছিল ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ নিয়ন্ত্রণাধীন। তাদের বক্তব্য ছিল, তাজউদ্দিন আহমদ বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন না। শেখ মুজিবের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে মুজিব বাহিনী। মুজিব বাহিনীর প্রশিক্ষণদাতা ছিলেন জেনারেল ওবান এবং ভাগ্যের নির্মম পরিহাস এই যে, যখন রক্ষীবাহিনী গঠিত হলো, তখন শেখ মুজিবুর রহমান ওবানকে প্রশিক্ষক হিসেবে ডেকে নিলেন। হাহ্!
এখন আওয়ামী লীগে একটি কালচার চালু হয়েছে- যত বড় মুক্তিযোদ্ধাই হোক, তিনি যদি আওয়ামী লীগ সমর্থক না হন, তাহলে তিনি রাজাকার। ইতিমধ্যেই এরকম রাজাকার হয়ে গেছেন জিয়াউর রহমান বীরউত্তর। তার আগে হয়েছিলেন মেজর জলিল। তারপর হয়েছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম। জেনারেল শফিউল্লাহ ভালো আছেন। মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে শেখ মুজিবুর রহমান যখন তার কাছে সাহায্যের আবেদন করেছিলেন, তখন তিনি বলেছিলেন, পেছনের দেয়াল টপকে কোনোমতে পালিয়ে যান। হাহ্! সেনাপ্রধানের উক্তি বটে। কিন্তু আওয়ামী লীগ বোধ করি তাকে খুব ভালোবাসে। এই ঘৃণা এবং ভালোবাসা আওয়ামী লীগকে একসময় এমন এক বিভ্রান্তের জটাজালে ফেলে দিবে যে, তারা টুঁ শব্দটিও করতে পারবে না।
ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads