শুক্রবার, ২৫ জুলাই, ২০১৪

‘জিন্দাবাদ’-এর দিকে ‘আওয়ামী’ শব্দের ধাওয়া


জনগণের মধ্যে ভীতি-আতংক এবং অপছন্দসহ যতো প্রতিক্রিয়াই ছড়িয়ে পড়–ক না কেন, আওয়ামী লীগ সরকারের কিছুই যায়-আসে না। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কাউকে গণনায় পর্যন্ত আনতে রাজি নন সে বিষয়ে তো বহুবারই প্রমাণ পাওয়া গেছে। আওয়ামী লীগের অন্য নেতাকর্মীদের মতো জননীকে অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রীর সুপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ও সম্প্রতি রাজনৈতিক অঙ্গনে তুফান তুলেছেন। শুরুতে বলে রাখা দরকার, প্রমাণসহ অনেক অভিযোগ এবং অচিন্তনীয় অনেক তথ্য থাকা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রীর এই সুপুত্রকে বিশেষ ‘খাতির’ দেখিয়ে এতদিন ‘ছাড়’ দেয়া হয়েছে। আমরাও দিয়েছি। কারণ, অঘোষিতভাবে আওয়ামী লীগের প্রধান একজন নীতিনির্ধারক এবং পূর্ণ মন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা হলেও বহুদিন প্রকাশ্যে তাকে রাজনৈতিক তৎপরতা চালাতে দেখা যায়নি। মানুষ সেই সঙ্গে মনে রেখেছে, সজীব ওয়াজেদ জয় শুধু শেখ হাসিনার সুপুত্র নন, স্বাধীনতা সংগ্রামের মহান নেতা মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের নাতীও। সব মিলিয়ে জয়কে তাই কখনো বিতর্কের বিষয়বস্তু বানানো হয়নি। মাঝে-মধ্যে অবশ্য পরিস্থিতিতে পরিবর্তন ঘটেছে। ঘটিয়েছেনও সজীব ওয়াজেদ জয় নিজেই।
আমরা তাই বলে শুরুতে বেশি পেছনের উদাহরণ টেনে আনতে চাই না। পরিবর্তে মাত্র ক’দিন আগে তার একটি অত্যন্ত কৌতূহলোদ্দীপক মন্তব্যের উল্লেখ করা যাক। পাঠকরা নিশ্চয়ই এ সংক্রান্ত খবরাখবর লক্ষ্য করেছেন। দেশ ও জনগণকে অনেকটা ধন্য করে দেয়ার স্টাইলে পবিত্র রমযানের ঠিক প্রাক্কালে হঠাৎ দেশে এসে হাজির হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী তনয় সজীব ওয়াজেদ জয়। ইহুদী স্ত্রী ক্রিস্টিনাকে তিনি শুধু দেশেই নিয়ে আসেননি, একথাও প্রচার করানো হয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা এক মাসের মতো দেশে থাকবেন এবং এ সময়ে তিনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মকা-ে অংশ নেবেন। নেতৃত্ব দেবেন। সেটা তিনি দিতে পারেনই, সে অধিকার এবং ক্ষমতা তার মা ও দলই দিয়ে তাকে রেখেছে। কিন্তু আপত্তি উঠেছে জয়ের একটি মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে। বিএনপিকে তুলোধুনো করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের এক অনুষ্ঠানে তিনি ‘জিন্দাবাদ’ স্লোগানকে টেনে এনে বলেছেন, উর্দু ভাষার এ স্লোগানটি নাকি পাকিস্তানের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এখনো পাকিস্তানীরাই শুধু ‘জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেয়। সে কারণে জয় বিএনপিকে পাকিস্তানী দল বানিয়ে ছেড়েছেন। একদল অন্ধ নেতা-কর্মীর মুহুর্মুহু করতালির মধ্যে ঘোষণা করেছেন, ‘জয় বাংলা’র দেশ বাংলাদেশে যারা উর্দু ভাষায় রচিত এবং পাকিস্তানের জন্য পরিকল্পিত স্লোগান ‘জিন্দাবাদ’ দেবে তাদেরকে পাকিস্তানেই পাঠিয়ে দেয়া উচিত। জয় সেই সাথে নেতা-কর্মীদের মতামতও জানতে চেয়েছেন। বলা বাহুল্য, সেখানে যারা ছিলেন তাদের কারো ঘাড়েই একটির বেশি দুটি মাথা ছিল না!
আপত্তি ও প্রতিবাদ উঠেছে বিশেষ কিছু কারণে। শোনা যায়, সজীব ওয়াজেদ জয় আমেরিকার মতো দেশে লেখাপড়া করেছেন, এখনো সেখানেই বসবাস করেন। বিভিন্ন কাজে মেলামেশাও তিনি নাকি সিনেটর ও কংগ্রেসম্যান ধরনের বড় বড় লোকজনের সঙ্গেই করে থাকেন। জয়ের বিয়ে-শাদী নিয়েও অনেক উন্নত পর্যায়ে বিতর্ক রয়েছে। তার মা এবং আমাদের ‘নির্বাচিত’ প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত এই বিতর্কে জড়িয়ে একবার ঘোষণার আকারে জানিয়ে রেখেছেন, জয় অমুসলমান তথা ইহুদীকে বিয়ে করলেও কোনো দোষ হয়নি। কারণ, ইহুদীরাও ‘আহলে কিতাবী’। অর্থাৎ ইহুদীদের ওপর আল্লাহ তা’লা কিতাব নাজিল করেছেন। কোনো গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের ওপর আল্লাহর কিতাব নাজিল হলেই তারা যদি আল্লাহর প্রিয় ও অনুগ্রহপ্রাপ্ত এবং  মুসলমানদের সমান মর্যাদার হতো তাহলে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নিশ্চয়ই মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে পাঠাতেন না এবং ইসলামকে জীবনবিধান হিসেবে নির্ধারণ করতেন না। আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জতকে মহাপবিত্র আল-কুরআনও নাজিল করতে হতো না। এসবই আল্লাহকে করতে হয়েছে কারণ, প্রধানমন্ত্রী যাদের ‘আহলে কিতাবী’ বলে সার্টিফিকেট দিয়ে মুসলমানদের সমান কাতারে নিয়ে আসার ভয়ংকর চেষ্টা চালিয়েছেন সেই ইহুদীরা আল্লাহর হুকুমের প্রতি অসম্মান দেখিয়েছে, তাঁর নবী (আ.)-এর কথা এবং আল্লাহর পাঠানো ‘কিতাব’কে মান্য করেনি। এসব কারণেই ক্রিস্টিনা নামের একজন মার্কিন ইহুদী নারীকে ইসলামসম্মতভাবে নিজের পুত্রবধূ বানানোর চেষ্টায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ব্যর্থ হতে হয়েছিল। এখনো সাধারণ মানুষের মধ্যে বিষয়টি গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। পাবেও না, যদিও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সুর মেলানোর সহজ কথায় ধান্দাবাজি করার মতো কিছু মানুষকে তখনও পাওয়াা গিয়েছিল।
এত কথার ভিড়ে যাওয়ার পরিবর্তে এখানে ‘জিন্দাবাদ’কেন্দ্রিক আালোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকাটাই ভালো। সজীব ওয়াজেদ জয় ঠিকই বলেছেন, ‘জিন্দাবাদ’ স্লোগানটি আসলেও ভারতীয় উপমহাদেশের বঞ্চিত ও নির্যাতিত-নিষ্পেষিত মুসলমানদের পৃথক রাষ্ট্র পাকিস্তানের জন্যই রচিত ও পরিকল্পিত হয়েছিল। ‘কায়েদে আযম’ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর নেতৃত্বে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ সংগ্রামে কত লক্ষ মুসলমান কত শত কোটিবার এই স্লোগানটি দিয়েছেন, হিন্দুদের সশস্ত্র্র আক্রমণের মুখে কোলকাতা ও বিহারসহ ভারতের বিভিন্ন শহরে ও রাজ্যে কত হাজার মুসলমান স্লোগানটি দিতে দিতে মৃত্যু তথা শাহাদত বরণ করেছেন এসব বিষয়ে মিস্টার জয় কিছুটা হলেও জানতে পারতেন, যদি তার নানা শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে থাকতেন। কারণ, তখনকার কলেজ ছাত্র শেখ মুজিব নিজেও জিন্নাহ সাহেবের নেতৃত্বে পাকিস্তান আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শী ও শেখ মুজিবের ঘনিষ্ঠজনদের বিবরণীতে জানা যায়, বিশেষ করে কোলকাতার পার্ক সার্কাস এলাকায় ‘জিন্দাবাদ’ স্লোগানটি সব সময় শেখ মুজিবকেই বেশিবার দিতে দেখা যেতো। কারণ, পার্ক সার্কাসে বাস করতেন অবিভক্ত বাংলার দুই প্রধানমন্ত্রী শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। বলা হয় এবং তথ্যনির্ভর ইতিহাসেও এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে, সেকালের অজপাড়াগাঁ গোপালগঞ্জের অতি সাধারণ ঘরের ছেলে ‘মজিবর’ একজন কর্মীর অবস্থান থেকে নেতা হওয়ার পথে পা বাড়িয়েছিলেন ওই ‘জিন্দাবাদ’ স্লোগানটি দিতে দিতেই। সংশয় থাকলে যে কেউ শেখ মুজিবের লেখা গ্রন্থ ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পড়ে দেখতে পারেন। সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্য এই পড়ে দেখা এবং নিজের নানাভাইয়ের রাজনৈতিক জীবনের সূচনার পাশাপাশি ‘জিন্দাবাদ’ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়াটা একটি কর্তব্যও বটে। কেউই নিশ্চয়ই চাইবেন না, এত বড় একজন নেতার মেয়ের ঘরের নাতী ইতিহাস সম্পর্কে কিছুই না জেনে নিতান্ত মুর্খের মতো কথা বলুক। এটা অনেকাংশে হয়তো মেনে নেয়া যেতো যদি মিস্টার জয়ের মা কেবলই একজন স্বল্পশিক্ষিত গৃহবধূ হতেন। অন্যদিকে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মাননীয় এবং ‘নির্বাচিত’ প্রধানমন্ত্রী! সুতরাং তার ছেলে হিসেবে সজীব ওয়াজেদ জয়ের অবশ্যই উচিত ইতিহাস সম্পর্কে লেখাপড়া করা এবং কোনো প্রসঙ্গে মন্তব্য করার বা ঘোষণা দেয়ার আগে বিস্তারিত জেনে নেয়া। আমাদের তো মনে হয়, মিস্টার জয়কে শিখিয়ে-পড়িয়ে ধন্য হওয়ার মতো ডজন-ডজন ইতিহাসবিদ ও প-িত রয়েছেন আওয়ামী লীগে। তাদের যেমন ডর-ভয় কাটিয়ে সরাসরি মিস্টার জয়কে ভুল ধরিয়ে দেয়া উচিত মিস্টার জয়েরও তেমনি উচিত অন্তত মরহুম নানাভাইয়ের সম্মান রক্ষার জন্য হলেও না জেনে কিছু না বলা বিশেষ করে ‘জিন্দাবাদ’ ধরনের ঐতিহাসিক একটি স্লোগান সম্পর্কে, যার সঙ্গে নানা শেখ মুজিবুর রহমানের সূচনা শুধু নয়, সমগ্র অস্তিত্বও জড়িয়ে রয়েছে। সহজ কথায় বলা যায়, ‘জিন্দাবাদ’ স্লোগানকে অস্বীকার করা কিংবা সফল ও বিজয়ী এই ঐতিহাসিক স্লোগানটিকে নিয়ে ব্যঙ্গ-তামাশা করার অর্থ আসলে শেরে বাংলা ফজলুল হক ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী থেকে মজলুম জননেতা মওলানা অবদুল হামিদ খান ভাসানী ও শেখ মুজিবুর রহমান পর্যন্ত এদেশের সেই সব মহান নেতাকেও অসম্মানিত করাÑ যারা পাকিস্তান আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং যাদের মধ্যে শেখ মুজিবের মতো কারো কারো রাজনৈতিক জীবন তৈরিই হয়েছিল পাকিস্তান আন্দোলন এবংং ‘জিন্দাবাদ’ স্লোগানকে কেন্দ্র করে।
আমরা অবশ্য জানি না, একমাত্র নিজের নানার ‘অসমাপ্ত’ এবং খ-িত জীবনী ছাড়া অন্য জাতীয় নেতাদের কারো সম্পর্কে মিস্টার জয়ের আদৌ জানা আছে কি না। সিরাজগঞ্জের সন্তান এবং কৃষকের স্বার্থে হিন্দু জমিদার-মহারাজা ও ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে প্রথমে টাঙ্গাইল মহকুমা এবং পরে ময়মনসিংহ জেলাসহ পূর্ব বাংলা থেকে বহিষ্কৃত নেতা মওলানা ভাসানী যে আসাম প্রাদেশিক মুসলিম লীগের প্রেসিডেন্ট ছিলেন এবং তার আন্দোলনের ফলেই যে বৃহত্তর সিলেট জেলা পাকিস্তানের তথা বাংলাদেশের অংশে পড়েছিল এসব তথ্য আওয়ামী চাটুকাররা নিশ্চয়ই মিস্টার জয়কে শোনায়নি। একই কথা শেরে বাংলা এবং বঙ্গীয় মুসলিম লীগের সেক্রেটারি আবুল হাশিম ধরনের অন্য অনেক নেতা সম্পর্কেও সত্য। মিস্টার জয় যদি আবুল হাশিমের নাম না শুনে থাকেন তাহলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ, মায়ের কোলে দুধ খাওয়া অবস্থা থেকেই তিনি শুধু একটি কথাই শুনে এসেছেন। সে কথাটা হলো, দেশকে স্বাধীন করাসহ বাংলাদেশের জন্য যা কিছু ভালো তার সবই করে গেছেন জয়ের নানা শেখ মুজিব একাই!!
বেচারা জয়ের অবশ্য এতে কোনো দোষ নেই। কিন্তু এখন তো তিনি আর ফিডারে দুধ খান না। এখন তাই নিজের উদ্যোগেই সবকিছু জেনে নেয়া উচিত তার। আমরাও এ ব্যাপারে ‘ফুল কোঅপারেশন’ দিতে দু’ হাত বাড়িয়ে দু’ পায়ে দাঁড়িয়ে আছি। শুভ সূচনার জন্য এখানে একটি তথ্যও জানিয়ে রাখতে চাই। তথ্যটি হলো, মিস্টার জয়ের মা যে দলটির নেত্রী এবং যে দলের নেতৃত্বে গঠিত সরকারের ‘নির্বাচিত’ প্রধানমন্ত্রী, সেই দল আওয়ামী লীগের কোনো একটি শব্দই কিন্তু বাংলা নয়। লীগ শব্দটি যে ইংরেজি তা সবাই জানেন। কিন্তু ‘জিন্দাবাদ’ স্লোগানটিকে নিয়ে ব্যঙ্গ-তামাশা করার সময় মিস্টার জয় নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেননি যে, তার মায়ের এবং নানার দল আওয়ামী লীগ নামের ‘আওয়ামী’ শব্দটিও বাংলা নয়। ‘জিন্দাবাদ-এর মতো এটাও এসেছে একই উর্দু ভাষা থেকে! সুতরাং ইতিহাসের কোনো বিষয় কিংবা কোনো রাজনৈতিক দলকে নিয়ে ব্যঙ্গ-তামাশা বা উপহাস করার আগে যথেষ্ট সংযত থাকা দরকার বিশেষ করে সজীব ওয়াজেদ জয়ের মতো উচ্চ পর্যায়ের লোকজনের। বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ এজন্য যে, প্রধানমন্ত্রীর এই সুপুত্রকে নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে অনেক প্রচারণা রয়েছে। পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, লগি বৈঠার হত্যা-সন্ত্রাস এবং ১/১১ ঘটানো থেকে ডিজিটাল নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনা এবং নিজের জননী শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী বানানো পর্যন্ত ঘটনাপ্রবাহে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভূমিকা ছিল প্রত্যক্ষ। শেখ হাসিনা যে আবারও প্রধানমন্ত্রী হবেন সে ব্যাপারেও মিস্টার জয় আগেই গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাসেই তথ্য ও তত্ত্ব জেনেছিলেন, জনগণকেও জানিয়েছিলেন। কথাটা ফাঁস করে দিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তুফানও তুলেছিলেন তিনি। সত্যি সত্যি আবারও ‘নির্বাচিত’ হয়ে ক্ষমতায় এসেছে আওয়ামী লীগ, প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন মিস্টার জয়ের মা শেখ হাসিনা। কথা শুধু এটুকুই নয়। প্রকাশ্যে তেমন দেখা না গেলেও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক বিভিন্ন বিষয়ে মিস্টার জয়ই প্রধান নির্ধারকের ভূমিকা পালন করে চলেছেন। সুতরাং এমন মনে করা মোটেও উচিত নয় যে, তিনি অপরিপক্ব কোনো যুবক এবং কেবলই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একমাত্র সুপুত্র। বাস্তবে বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইহুদী সেনা কর্মকর্তা সিওভাক্কোর সঙ্গে বাংলাদেশের ইসলামী দল, মাদরাসা শিক্ষা ও সেনাবাহিনীর ব্যাপারে সুচিন্তিত কিছু ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা পেশ করার এবং আওয়ামী লীগের করণীয় সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা দেয়ার মধ্য দিয়ে বহুদিন ধরেই জয় দেশের রাজনীতিতে জড়িত রয়েছেন। তাছাড়া তিনি আবার পূর্ণ মন্ত্রীর মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধাসহ প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টাও। তার গাড়িতে জাতীয় পতাকা ওড়ে। সব মিলিয়েই বলা যায়, এতদিন যেভাবেই তাকে হাজির করা হয়ে থাকুক না কেন, এখন আর তিনি কেবলই প্রধানমন্ত্রীর অতি আদরের পুত্র বা মরহুম নেতা শেখ মুজিবের নাতী নন, অত্যন্ত সম্ভাবনাময় একজন রাজনীতিকও বটে। একই কারণে তার কোনো কথাকে যেমন হাল্কাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই তেমনি তারও উচিত সব বিষয়ে সতর্ক থাকা। সাবধানে কথা বলা এমন কিছু না বলা যা ‘জিন্দাবাদ’-এর মতো ‘আওয়ামী’ শব্দটির দিকে ধেয়ে আসবে। প্রতিপক্ষ উল্টো তাকে নিয়েই হাসি-তামাশা করবে এবং তার ‘বিদ্যার দৌড়’ সম্পর্কে প্রশ্ন করার সুযোগ পাবে। 
আহমদ আশিকুল হামিদ 

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads