রবিবার, ১০ জুন, ২০১২

সমাবেশ ঠেকাতে লঞ্চ বাস চলাচলে বাধা গণগ্রেফতার : তল্লাশির নামে ঢাকার প্রবেশ পথ সিল করে দিয়েছে পুলিশ



বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের গণসমাবেশে আসতে নেতাকর্মী ও জনসাধারণকে পথে পথে বাধা দিচ্ছে সরকার। আজ বিকাল ৩টায় নয়াপল্টনের বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে এই গণসমাবেশ হবে। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, গাজীপুর, নোয়াখালী, খাগড়াছড়িসহ দেশের অনেক এলাকায় ঢাকামুখী লঞ্চ, বাস এবং অন্য যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে পুলিশ। হাইওয়েগুলোতে বসানো হয়েছে পাহারা। তল্লাশির নামে ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশ পথ কার্যত সিল করে দিয়েছে পুলিশ। বরিশাল থেকে ঢাকামুখী লঞ্চ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার ছুতোয় বন্ধ করে দিয়েছে সেখানকার প্রশাসন। ঢাকার হোটেলগুলোতে নতুন ও অপরিচিত বোর্ডারদের রাখতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পুলিশ। সারাদেশে বিএনপি ও জোট নেতাদের বাসায় বাসায় তল্লাশি চালিয়েছে। ঢাকাসহ সারাদেশে সমাবেশের প্রচার ও লিফলেট বিতরণকালে পাঁচ শতাধিক জোট নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে নানা নাটকের পর মাত্র একদিন আগে গতকাল নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি দেয় সরকার। তবে ১২ মার্চের মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানে যেসব শর্ত দেয়া হয়েছিল, এবারের সমাবেশেও সেসব শর্ত আরোপ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ২৪ মে নয়াপল্টনের এই সড়কসহ পল্টন ময়দান ও মানিক মিয়া এভিনিউর যে কোনো একটিতে সমাবেশের অনুমতি চেয়েছিল দলটি। ১৮ দলীয় জোটের এই সমাবেশে গুরুত্বপুর্ণ বক্তব্য রাখবেন বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া। এই সমাবেশ থেকেই আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা রয়েছে তার। বৃহস্পতিবার রাতে ১৮ দলীয় জোট ও শনিবার রাতে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে আন্দোলনের কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়।
গত ১২ মার্চ ঢাকায় যে সমাবেশ হয়, সেখান থেকে সরকারকে নির্দলীয় সরকার পুনর্বহালের দাবি মেনে নেয়ার জন্য ১০ জুন পর্যন্ত তিন মাসের আলটিমেটাম দেন খালেদা জিয়া। এ সময়ের মধ্যে দাবি মেনে নেয়া না হলে পরদিন ১১ জুন ঢাকায় সমাবেশ করে আন্দোলনের কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানান তিনি। ১০ জুন পর্যন্ত সরকার নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নেয়ার কোনো ইঙ্গিত দেয়নি। বরং বলেছে, তারা কোনোভাবেই অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে না। সরকারের এ মনোভাবের প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এমপি বলেন, এরপর আমাদের আন্দোলন করা ছাড়া আর কোনো গত্যন্তর থাকে না।
এবারের সমাবেশটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হান্নান শাহ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সাদেক হোসেন খোকা, আমান উল্লাহ্ আমান, ফজলুল হক মিলন, হাবিব-উন নবী সোহেল, শফিউল আলম প্রধান, শেখ শওকত হোসেন নিলুসহ দল ও জোটের ৩৩ জন শীর্ষ নেতা ছাড়াই হচ্ছে। তারা দুটি মামলায় কারাগারে রয়েছেন। হরতালে গাড়ি পোড়ানো মামলায় জামিন পেলেও মুক্তি পাননি নেতারা। সচিবালয়ে বোমা হামলা মামলায় পিডব্লিউ দেয়ায় তাদের মুক্তি সম্ভব হয়নি। এ মামলার জামিন শুনানি আগামী ১৪ জুন নির্ধারণ করা হয়েছে।
যেসব কর্মসূচি আসতে পারে : সমাবেশের অনুমতি পাওয়ায় বড় ধরনের কোনো কর্মসূচিতে যাচ্ছে না ১৮ দল। দল ও জোট নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, তবে পথে পথে বাধা অব্যাহত থাকলে হরতালের কর্মসূচি দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া জেলা, থানা ও ওয়ার্ডে সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে সারাদেশে গণসংযোগ কর্মসূচি চলবে। সম্ভাব্য জেলায় জেলায় জনসভার কর্মসূচি দেয়া হবে। এসব জনসভায় খালেদা জিয়া এবং দল জোটের কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেবেন। রমজানে ইফতার মাহফিল ভিত্তিক গণসংযোগ চলবে। রমজানের পর অবরোধের কর্মসূচি আসতে পারে বলে জানা গেছে।
বিকাল থেকে রাজধানীর প্রবেশমুখে পরিবহনে তল্লাশি, টঙ্গী-গাজীপুর জুড়ে দুর্বিষহ যানজট : রাজধানীর প্রবেশমুখ উত্তরার আবদুল্লাহপুরে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশির নামে যানবাহন আটকিয়ে রাখায় গতকাল বিকাল থেকে গভীররাত পর্যন্ত কোনো গাড়ি ঢাকায় প্রবেশ করতে পারেনি। উত্তরবঙ্গ থেকে ছেড়ে আসা দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসসহ কোনো যানবাহন যাতে ঢাকায় প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঢাকার প্রবেশমুখ আবদুল্লাহপুরে বেশ কয়েকটি গাড়ি এলোপাতাড়িভাবে দাঁড় করিয়ে রাখে বলে সাধারণ যাত্রীরা জানান। রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখায় ঢাকা থেকে কোনো গাড়ি টঙ্গীতে ও টঙ্গী থেকে কোনো গাড়ি ঢাকায় প্রবেশ করতে পারেনি। ফলে উভয়পাশেই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়ে। এই যানজট টঙ্গী ছাড়িয়ে উত্তরে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এবং আবদুল্লাহপুর থেকে বিশ্বরোড পর্যন্ত এলাকাজুড়ে বিস্তৃতি লাভ করে। সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হওয়া এই যানজট গভীররাত পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। রাত সাড়ে ৯টার দিকে যানবাহন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পশ্চিম পাশের ল্যান ব্যবহার করে রাজধানীতে প্রবেশের চেষ্টাকালে মহাসড়কের উভয়পাশে যানজট জটিলরূপ ধারণ করে। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে আশপাশের বিভিন্ন শাখা সড়কে যানবাহন প্রবেশ করলে টঙ্গী ও গাজীপুরের সর্বত্র যানজট ছড়িয়ে পড়ে। দুর্বিষহ এই যানজটে আটকা পড়ে শিশু ও মহিলাসহ হাজার হাজার যাত্রী চরম দুর্ভোগের শিকার হন। এ সময় বাধ্য হয়ে শিশু ও মহিলাসহ অনেক বাসযাত্রীকে পায়ে হেটে গন্তব্যে যেতে হয়েছে।
আলাউদ্দিন নামের এক বাসযাত্রী আমার দেশকে জানান, তার বড় ভাইয়ের আজ রাতে ফ্লাইট। কিন্তু তিনি তার বড় ভাইকে শাহজালাল (র.) বিমানবন্দরে পৌঁছে দেয়ার জন্য সন্ধ্যা ৬টায় টঙ্গীর এরশাদনগর থেকে বাসে চড়েছেন কিন্তু রাত সাড়ে ১১ পর্যন্ত ৫ ঘণ্টায় ২ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে পারেননি। এমনি অনেক যাত্রীবাহী বাস পথ পরিবর্তন করে টঙ্গী-আশুলিয়া সড়ক দিয়ে ঢাকা প্রবেশের চেষ্টা করলেও তাদেরকে সীমাহীন যানজটে পড়তে হয়। রাত ১২টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উভয়পাশে তীব্র যানজটে হাজার হাজার গাড়ি আটকা পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক যাত্রী জানান, আজকের জনসমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতেই সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ইশারায় যানবাহন ও সাধারণ যাত্রীদের দেহ তল্লাশি চালিয়ে তাদের ঢাকা যেতে বাধা প্রদান করা হচ্ছে।
এদিকে ঢাকায় আজকের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে টঙ্গীতে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ধরপাকড় অব্যাহত ছিল। শনিবার রাতে র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা স্থানীয় বিএনপির ১১ জন ও জামায়াতের ৩ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে। টঙ্গী থানা পুলিশ শনিবার রাতে জামায়াত কর্মী সন্দেহে স্থানীয় তিস্তার গেট এলাকার এক মসজিদের ইমাম মাওলানা শামীম আহমেদকে গ্রেফতার করে। পরে এলাকাবাসীর চাপে গতকাল বিকালে তাকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়।
দেশজুড়ে অঘোষিত কারফিউ, পরিবহন ধর্মঘট : শেষ সময়ে সমাবেশের অনুমতি দিলেও সারাদেশে অঘোষিত কারফিউ জারি করেছে সরকার। সব বিভাগ, জেলা ও থানা শহরে ঢাকাগামী বাস এবং লঞ্চ চলাচল গতকাল থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ঢাকার আবাসিক হোটেলগুলোতে বর্ডার না রাখার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। বসানো হয়েছে পুলিশি পাহারা। ঢাকাসহ সারাদেশে গত দু’দিন ধরে ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের বাসায় তল্লাশি চালানো হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে কমপক্ষে পাঁচশ’ নেতাকর্মী। এসব তল্লাশি ও গ্রেফতারকে স্বাভাবিক এবং নিয়মিত অভিযান বলে দাবি করেছে পুলিশ। পথে পথে বাধার দেয়াল পেরিয়ে গতকালই সারাদেশে থেকে লক্ষাধিক লোক ঢাকায় এসেছে বলে আমাদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, সিলেটসহ সব মহানগর ও জেলা থেকেই বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, ছাত্রশিবিরসহ ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা দু’দিন ধরে ঢাকা এসেছেন।
বাধার দেয়াল পেরিয়ে চট্টগ্রামের ৩৫ হাজার বিএনপি নেতাকর্মী ঢাকায় : চট্টগ্রাম ব্যুরো অফিস জানায়, ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশে যোগদানে বাধা দিতে এবং ভীতি সঞ্চার করতে নগর ও জেলা পুলিশ নেতাকর্মীদের বাসা-বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে গভীর রাতে পুলিশ নেতাকর্মীদের বাসা-বাড়িতে হানা দিয়ে বাড়ির সাধারণ সদস্যদের হররানি করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপিসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। পুলিশ বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের নেতাকর্মীরা। বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির প্রায় ২৫/২৬ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মী ঢাকার মহাসমাবেশে যোগ দেবেন। এছাড়া রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার জেলা থেকেও আরও প্রায় ৮/১০ হাজার নেতাকর্মী এরই মধ্যে ঢাকা পৌঁছেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, প্রাইভেট কার, মাইক্রো এবং ১০/২০ জন করে লোকাল বাস, চেয়ারকোচ, ট্রেনে করে ঢাকা গেছেন।
নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেছেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা যাতে ঢাকায় যেতে না পারে, সে জন্য বাসায় বাসায় পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে। তারপরও নেতাকর্মীরা যে যার মতো করে ঢাকায় গেছেন। জানা গেছে, উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগরের প্রায় প্রত্যেক সিনিয়র নেতা এরই মধ্যে ঢাকায় পৌঁছে গেছেন। অনেক নেতা গতকাল বিমানযোগে ঢাকা গেছেন। অনেকে রাতে বিশেষ গাড়িতে ঢাকায় পৌঁছবেন।
নগর বিএনপির সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নেতাকর্মীরা যে যার মতো করে মহাসমাবেশে যোগ দেবেন। যাওয়ার জন্য আমরা বিশেষ কোনো আয়োজন করছি না। এ ব্যাপারে প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ডের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা নিজেরা সমন্বয় করে নেতাকর্মীদের নিয়ে যাবেন। মহাসমাবেশ শেষে আবার নিজেরা ফিরে আসবেন। সব মিলে চট্টগ্রাম মহানগরী থেকে ১০/১২ হাজারের মতো নেতাকর্মী যোগ দেবেন বলে তিনি জানান।
তল্লাশি গ্রেফতারের মাঝেও ঢাকায় পৌঁছেছে খুলনার ৭ হাজার নেতাকর্মী : খুলনা অফিস জানায়, জনসমাবেশ সফল করতে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির ৩ হাজার নেতাকর্মী এখন ঢাকায়। গত রাতেও সর্বশেষ অর্ধসহস্রাধিক কর্মী ঢাকায় গেছেন। জামায়াতের আড়াই হাজার নেতাকর্মীও পৌঁছেছেন রাজধানীতে। শেষ রাতে গেছেন আরও প্রায় ৫ শতাধিক। যাতায়াতে প্রতিবন্ধকতার কথা চিন্তা করে পৃথক পৃথকভাবে রেল ও সড়কপথে বিভিন্ন রুট থেকে তারা গন্তব্যে পৌঁছেছেন। এবার শুরু থেকে পুলিশি তত্পরতা তেমন না থাকলেও শেষ দুই রাত খুলনায় ব্যাপক তল্লাশি করেছে তারা। তবে নেতাকর্মীরা আগেভাগেই খুলনা ছাড়ায় গ্রেফতারের সংখ্যা কম। গতকাল পর্যন্ত বিএনপির ৫ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু এমপি জানান, গত ৩ দিনে খুলনা মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের আড়াই হাজার নেতাকর্মী এরই মধ্যে ঢাকায় পৌঁছেছেন। এছাড়া আরও ৫ শতাধিক নেতাকর্মী ঢাকায় পৌছাবেন সকালের মধ্যে।
এদিকে শনিবার রাতে পুলিশ নগরীর বিভিন্ন স্থানে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালায়। এ সময় মো. মোখলেস, আবু তালেব, কাজী হাফিজুর রহমান নামে ৩ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
এদিকে, ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে বিশেষ অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৭৩ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। শনিবার রাতে পুলিশ নগরীর যেসব এলাকায় অভিযান চালায়, তার মধ্যে রয়েছে কোতোয়ালি থানার চকবাজার, চন্দনপুরা, দেওয়ানবাজার, এনায়েতবাজার, টেরিবাজার, কাতালগঞ্জ, বাদুরতলা। এছাড়া বায়েজিদ বোস্তামি, খুলশী, পাহাড়তলী, চান্দগাঁও ও ডবলমুরিং থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানেও অভিযান চালানো হয়। যেসব এলাকায় অভিযান চালানো হয়, সেগুলো জামায়াত ও বিএনপি অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত।
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (সদর) আবদুল মান্নান জানান, বিশেষ অভিযানে মোট ৭৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই বিভিন্ন মামলার আসামি।
চট্টগ্রামে রাস্তায় রাস্তায় পুলিশের চেকপোস্ট : দক্ষিণ চট্টগ্রাম প্রতিনিধি জানায়, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দল আহূত ঢাকার মহাসমাবেশ ঠেকাতে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সবকটি থানা এলাকায় চেক পেস্ট বসিয়েছে পুলিশ। এসব চেকপোস্টে কাগজপত্রবিহীন যানবাহন ও লাইসেন্সবিহীন ড্রাইভারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা দাবি করলেও মূলত ১৮ দল আহূত ঢাকার মহাসমাবেশে লোক সমাগত ঠেকাতে পুলিশ এমনটি করছে বলে অভিযোগ বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের।
সাতকানিয়ার কেরানীহাট এলাকায় থানার এস আই কামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ যানবাহন দাঁড় করিয়ে গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা করছেন। ব্যাপক হারে গাড়ির কাগজপত্র দেখতে গিয়ে সেখানে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। সাতকানিয়া থানার সেকেন্ড অফিসার মুরাদউল্লাহ বাহার বলেন, ঊর্ধ্বতন মহলের নির্দেশনা অনুযায়ী রাস্তায় বেআইনিভাবে চলাচলরত যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
বরিশাল অফিস জানায়, মালিক সমিতির নির্দেশে ঢাকাগামী সড়ক ও নৌ-পথের সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সরকারের বিশেষ মহলের ইঙ্গিতে গতকাল বিকালে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকায় বিএনপি’র মহাসমাবেশে জনসমাগম প্রতিরোধে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে দাবি বিরোধী দলের। হঠাত্ করে নেয়া এমন সিদ্ধান্তে দক্ষিণাঞ্চল থেকে হাজার হাজার ঢাকাগামী যাত্রীদের চরম দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হয়। বাস ও লঞ্চঘাটে এসে অসংখ্য নারী-পুরুষ অসহায় হয়ে পড়েন। এসব মানুষের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
গতকাল বিকালে হঠাত্ করে বরিশাল থেকে ঢাকাগামী সব লঞ্চ ও বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। মালিক সমিতির নির্দেশে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে প্রচার করা হলেও মূলত প্রশাসনের নির্দেশে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। একাধিক লঞ্চের মালিক এ তথ্যের সত্যতাও স্বীকার করেন। গতকাল বরিশাল ঘাট থেকে ৪টি লঞ্চ ঢাকায় যাওয়ার কথা। কিন্তু পারাবত-২ ও ৭, সুরভী-৮ এবং কীর্তনখোলা-১ নামের লঞ্চ বিকাল থেকে ঘাট থেকে সরিয়ে মাঝনদীতে ও নদীর অপর প্রান্তে ভিড়িয়ে রাখা হয়। একইভাবে বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদ থেকেও ঢাকার উদ্দেশে কোনো বাস ছাড়ছে না। লঞ্চ ও বাস মালিকদের আকস্মিক এ সিদ্ধান্তে দূর দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার যাত্রী চরম ভোগান্তির মুখোমুখি হন। বিএনপি’র মহাসমাবেশে এ অঞ্চল থেকে ঢাকামুখী নেতাকর্মীদের রুখতেই এ পরিকল্পনা বলে মন্তব্য অনেকের।
সূত্র জানায়, গতকাল বরিশাল লঞ্চঘাট থেকে পারাবত-২ ও ৭, সুরভী-৮ এবং কীর্তনখোলা-১ নামের লঞ্চগুলো যাত্রী নিয়ে ঢাকা যাওয়ার কথা ছিল। দুপুরের পরপরই বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের অসংখ্য মানুষ ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে বরিশাল আধুনিক লঞ্চ টার্মিনালে ভিড় জমায়। প্রতিদিন বিকাল ৪টার পর ঢাকাগামী লঞ্চগুলো লঞ্চ টার্মিনালে ভেড়ানো হলেও গতকাল এসব লঞ্চ ঘাটে না ভিড়িয়ে মাঝ নদী ও কীর্তনখোলা নদীর পূর্বপ্রান্তে ভেড়াতে শুরু করে। একই সঙ্গে লঞ্চের স্টাফরা লঞ্চগুলো ঢাকা যাবে না বলে জানিয়ে দেয় যাত্রী সাধারণকে। ফলে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে সাধারণ যাত্রীরা।
এদিকে লঞ্চের মতো বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদ থেকে ঢাকাগামী সব ধরনের দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বাস মালিক সমিতি। বিকালে বাস মালিক সমিতির নেতারা ঢাকাগামী সব বাস চলাচল বন্ধ রাখার কথা বিভিন্ন কাউন্টারে জানিয়ে দেন। ফলে আগে থেকে অগ্রিম টিকিট কিনেও ঢাকা যেতে পারেননি অসংখ্য যাত্রী।
বরিশাল ঢাকা নৌ-রুটে লঞ্চ সুরভী, পারাবত ও কীর্তনখোলা লঞ্চ কর্তৃপক্ষের একটি সূত্র জানায় প্রশাসনের নির্দেশে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন তারা। এদিকে সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্তে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার এমপি। তিনি বলেন, বিএনপিসহ ১৮ দলের শান্তিপূর্ণ সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে ফ্যাসিস্ট সরকার দেশজুড়ে এমন অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ এ ফ্যাসিস্ট সরকার এখন জনআতঙ্কে ভুগছে। তাদের নির্যাতন ও এসব কর্মকাণ্ডে পুরো দেশবাসী জিম্মি হয়ে পড়েছে। সবাই এখন এ সরকারের কাছ থেকে এখন মুক্তি চায়। তিনি বলেন কোনো বাধা হামলা-মামলা ও নির্যাতন বিএনপিসহ ১৮ দলের সরকারবিরোধী আন্দোলন বন্ধ করতে পারবে না। কারণ এ আন্দোলন জনস্বার্থে আর ওদের কর্মকাণ্ড জনস্বার্থ বিরোধী। পটুয়াখালী প্রতিনিধি জানায়, পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন নেতাকে ঢাকা মহাসমাবেশে যেতে পুলিশ বাধা দিয়েছে। সমাবেশে যোগ দিতে পটুয়াখালী থেকে লেবুখালী ফেরি ঘাটে পৌঁছলে রোববার দুপুর সোয়া দু’টায় লেবুখালী ফেরিঘাটে তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি পুলিশ আটকে দেয়।
বেলা সোয়া ১টায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম এ রব মিয়ার নেতৃত্বে জেলা ওলামা দলের সভাপতি মওলানা আবদুস ছালাম, সাধারণ সম্পাদক মওলানা আবুল কালাম আজাদ, জেলা বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান, ছোট বিঘাই ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মো. মিজানুর রহমান, মির্জাগঞ্জ উপজেলা বিএনপি নেতা মো. জসিম উদ্দিন, যুবদল নেতা আবুল বাশারসহ বিএনপি নেতারা পটুয়াখালীর বাসভবন থেকে রওনা হয়ে লেবুখালী ফেরিঘাটে পৌঁছলে দুমকি থানার এসআই বায়েজিদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ গাড়িটি আটকে দেয় এবং উপরের নির্দেশে তাদের ঢাকা যেতে দেয়া যাবে না বলে জানায়। পরে পুলিশের বাধায় নেতারা পটুয়াখালী ফিরে আসে।
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি জানান, কলাপাড়ায় ঢাকাগামী বাস বন্ধ করে দিয়েছে শ্রমিক লীগের নেতারা। কলাপাড়া থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো দেশের সব রুটে বাস চলচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে সাধারণ যাত্রীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। সমাবেশে বিএনপি ও শরিক দলের নেতাকর্মীরা যাতে যোগদান করতে না পারে সে কারণে সরকারি দলের শ্রমিক নেতারা কৌশলে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বলে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ। শনিবার সকাল থেকে সরকারি দলের শ্রমিক নেতারা বাস চলাচল বন্ধ করে দিলেও রোববার পর্যন্ত বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। বাস চলাচল স্বাভাবিক করতে সরকারি কর্মকর্তা বা মালিক-শ্রমিক কেউ কোনো কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছেন না বলেও যাত্রীদের অভিযোগ।
খাগড়াছড়ি ও মাটিরাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, বিএনপির ঢাকার সমাবেশকে ঘিরে সারাদেশের মতো খাগড়াছড়িতেও ব্যাপক ধরপাকড়ের খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ শনিবার রাতে এবং রোববার জেলার মাটিরাঙ্গা, রামগড় ও গুইমারায় অভিযান চালিয়ে ১১ জনকে আটক করেছে। আটককৃতদের অধিকাংশই ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপি এবং তার অঙ্গ সংগঠনের কর্মী।
আটকদের মধ্যে রয়েছেন গুইমারার হাফছড়ি ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি আবু জাফর স্বপন, রামগড় যুবদলের দুই কর্মী এবং মাটিরাঙ্গায় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের ৮ নেতাকর্মী।
পুলিশ ধরপাকড়ের অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, এটি পুলিশের রুটিন কর্মসূচি এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল করা হচ্ছে। বিএনপির অভিযোগ, আটকদের মধ্যে একজন ছাড়া অন্যদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।
বগুড়া-ঢাকা রুটে অলিখিত পরিবহন ধর্মঘট : মহাসমাবেশে নেতাকর্মীদের যোগদান ঠেকাতে বগুড়া-ঢাকা রুটে অলিখিত পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। এ কারণে গতকাল বগুড়া থেকে দূরপাল্লার কোনো কোচের টিকিট বিক্রি করা হয়নি। কাউন্টারগুলো থেকে বলা হচ্ছে—দু’তিনদিনের জন্য ঢাকায় কোনো কোচ যাবে না। এ কারণে ঢাকাগামী যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ঢাকা কোচ কাউন্টারগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, যাত্রীরা টিকিটের জন্য দীর্ঘক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু ঢাকায় কোনো কোচ যাবে না বলে জানিয়ে দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। যাত্রীদের অভিযোগ, হঠাত্ করে কোচ চলাচল বন্ধ থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে।
এসআর ট্রাভেলসের বগুড়ার কাউন্টার ম্যানেজার রুবেল জানান, বগুড়া থেকে কোনো কোচ রাত থেকে ঢাকায় যাচ্ছে না। তবে কারণ জানা নেই তার।
বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার : বিএনপি অফিস থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঢাকাসহ সারাদেশে বিএনপি নেতাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগর যুবদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম জিলানী, স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু জাফর পাটোয়ারী বাবু, আলহাজ হারুন অর রশিদ, সদস্য স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি মাসুম বিল্লাহ খান, জাসাস নিউমার্কেট থানার সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হৃদয়, দক্ষিণখান থানার দক্ষিণখান ইউনিয়ন সভাপতি মো. বাদশাসহ ২৫ জনের অধিক।
খুলনা মহানগর ও খুলনা জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফরিদুল ইসলাম ফরিদ, ডুমুরিয়া থানা যুবদল নেতা সহিকুল ইসলাম লাচ্ছু, শ্রমিক দলনেতা তালেব, মহানগর সভাপতি আরব আলীসহ ১৮ জনের অধিক; গাজীপুর জেলার ওলামা দলের কাপাসিয়া থানার টোক ইউনিয়ন সভাপতি মাওলানা ইসমাইল হোসেনসহ ১৬ জনের অধিক।
জামায়াতের প্রস্তুতি : আজকের গণসমাবেশে ব্যাপক লোকসমাগমের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সারাদেশ থেকেই দলের নেতাকর্মীদের এ সমাবেশে যোগ দেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলো থেকেই ব্যাপক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চাইছে দলটি। সমাবেশ সফলে দলের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান ও ঢাকা মহানগরী সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বে গঠিত পৃথক দুটি আহ্বায়ক কমিটি কাজ করছে।
সমাবেশের প্রস্তুতি সম্পর্কে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, সারাদেশ থেকে জামায়াতের ৫ লক্ষাধিক লোকসমাগমের টার্গেট রয়েছে। এর মধ্যে শুধু ঢাকা ও আশপাশ থেকেই দু’লাখ লোকের উপস্থিতির চেষ্টা চলছে। মহানগর জামায়াতের পক্ষ থেকে সমাবেশে আগতদের জন্য গেঞ্জি ও ক্যাপ সরবরাহ করা হয়েছে। প্রত্যেক ওয়ার্ড এবং থানা শাখা থেকে ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিলসহকারে বেলা ১১টার দিকে সমাবেশে আসতে বলা হয়েছে।
এদিকে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থান থেকে সমাবেশে আগতদের বাধা দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার গত মহাসমাবেশেও বাধা দিয়ে নস্যাত্ করতে পারেনি। এবারও সব বাধা উপেক্ষা করেই শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হবে। মহাসমাবেশের আগে গত দু’দিনে মহাখালী, যাত্রাবাড়ীসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে জামায়াত-শিবিরের ৮৫ জনকে পুলিশ ও র্যাব আটক করেছে বলে জানিয়েছেন জামায়াতের মহানগর সহকারী সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
অনুমতি পেয়েই মঞ্চ তৈরি শুরু : শেষ মুহূর্তে সমাবেশের অনুমতি পেয়ে ১২ মার্চের মতো দলীয় কার্যালয়ের উল্টোদিকের রাস্তার ওপরে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দিকে মুখ করে লম্বায় ৪৫ ফুট ও পাশে ৪০ ফুট মঞ্চের পূর্ব ও পশ্চিম দিক খোলা থাকবে। মাইক ব্যবহারের বিষয়ে ডিএমপির পক্ষ থেকে কোনো বিধিনিষেধ না থাকলেও এবার মাইকের সংখ্যা কম হবে। তবে সমাবেশ শুরুর পর প্রয়োজন অনুযায়ী মাইক স্থাপন করা হবে।
ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে নয়াপল্টন : ১৮ দলীয় জোটের সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুরো নয়াপল্টন এলাকা গতকাল থেকেই ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টারে ছেয়ে গেছে। নাইটিংগেল মোড় থেকে আরামবাগ মোড় পর্যন্ত সড়কের দু’পাশের ভবনগুলোতে লাগানো হয়েছে এসব ব্যানার। সড়কের মাঝখানে লাইটের খুঁটিতে শুধু ছবি আর ছবি। তারেক রহমানের বড় বড় ছবিই বেশি শোভা পাচ্ছে। এছাড়াও খালেদা জিয়া এবং জিয়াউর রহমানের ছবি সংবলিত ব্যানার-ফেস্টুনও চোখে পড়ছে। এবার সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তা হলো—নেতাকর্মীদের মুক্তির ব্যানার আর পোস্টার। দলের সিনিয়র ৩২ নেতাই রয়েছেন জেলে। যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ছাড়া যুবদল সাধারণ সম্পাদক, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি, ছাত্রদল সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ওপরের সারির পাঁচজন জেলে রয়েছেন। এসব নেতার মুক্তি চেয়ে লাগানো হয়েছে বিশাল বিশাল ডিজিটাল ব্যানার। ওইসব ব্যানারে যাদের মুক্তি চাওয়া হয়েছে, তাদের ছবির সঙ্গে দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও জিয়াউর রহমানের ছবি রয়েছে। সব মিলিয়ে গতকাল দুপুরের পর থেকেই নয়াপল্টন এলাকায় একটি সাজ সাজ রব বিরাজ করছে।
১৫ লাখ লোকসমাগমের প্রত্যাশা বিএনপির : ১৮ দলীয় জোটের আজকের সমাবেশে ১৫ লাখ লোকের সমাগম হবে বলে প্রত্যাশা করছে বিএনপি। গতকাল নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সমাবেশের প্রস্তুতি নিয়ে আলাপকালে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম জানান, সরকার ও প্রশাসন দেরিতে অনুমতি দিলেও আমাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। বিকাল ৩টায় আমরা মঞ্চ নির্মাণ শুরু করব। আশা করছি, এ সমাবেশে প্রায় ১৫ লাখ মানুষের সমাবেশ ঘটবে। সেভাবে আমাদের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
সমাবেশ ও মাইক ব্যবহারের মৌখিক অনুমতি পাওয়ার পর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সমাবেশ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন এই কমিটির আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম।
বৈঠকের পর তরিকুল সাংবাদিকদের জানান, ১৮ দলীয় জোটের উদ্যোগে বিকাল ৩টায় সমাবেশ শুরু হবে।
সমাবেশ সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ হবে—এমন আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এ সমাবেশে ঢাকাসহ সব ওয়ার্ড ও আশপাশের জেলা থেকে নেতাকর্মীরা যোগ দেবেন।
এদিকে সমাবেশ ঘিরে ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড ও ডিজিটাল স্ক্রিন প্রভৃতি তৈরির কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। এসব সামগ্রী সমাবেশস্থলের বিভিন্ন স্পটে লাগানো হয়েছে।
সমাবেশে খালেদা জিয়ার বক্তৃতা দেখানোর জন্য নয়াপল্টনের বিভিন্ন সড়কে চারটি স্থানে বড় পর্দা লাগানো হচ্ছে বলে বিএনপির মহানগর সদস্য সচিব আবদুস সালাম জানান।
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান পটল, যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক, মহানগর সদস্য সচিব আবদুস সালাম, সংসদ সদস্য শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, আবুল খায়ের ভূঁইয়া প্রমুখ।
সমাবেশ ও মাইক ব্যবহারের প্রথমে মৌখিক ও পরে লিখিত অনুমতি : এর আগে সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক জানান, তারা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মঞ্চ নির্মাণ ও জনসমাবেশ করার মৌখিক অনুমতি পেয়েছেন। তবে রাত ৮টায় লিখিত অনুমতি দেয়া হয় বলে জানান বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি।
১১ শর্তে বিএনপিকে অনুমতি : ফকিরাপুল ক্রসিং থেকে নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত মাইক ব্যবহারের এলাকা চিহ্নিত করে দেয়াসহ ১১টি শর্তে সোমবার বিএনপিকে নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপ-কমিশনার (সদর দফতর) হাবিবুর রহমানের সই করা অনুমতিপত্র গতকাল রাত ৮টার দিকে বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনির কাছে পৌঁছানো হয়।
শর্তের মধ্যে আরও রয়েছে—মূল সড়কে মঞ্চ নির্মাণ করা যাবে না, সমাবেশ শুরুর দুই ঘণ্টার বেশি আগে লোক সমাগম করা যাবে না, বিকাল সাড়ে ৫টার মধ্যে সমাবেশ শেষ করতে হবে।
নির্ধারিত এলাকার বাইরে সমবেত না হওয়া এবং সমাবেশস্থলের বাইরে কোথাও যান চলাচলে বাধা সৃষ্টি না করতেও বিএনপিকে বলা হয়েছে।
শর্তে আরও বলা হয়েছে, সমাবেশ চলাকালে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও জনস্বার্থবিরোধী কার্যকলাপ করা যাবে না। মঞ্চকে রাজনৈতিক বক্তব্য ছাড়া অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
নয়া পল্টনে গত ১২ মার্চ সমাবেশের অনুমতির ক্ষেত্রেও একই ধরনের শর্ত দেয়া হয়েছিল।
ইন্টারনেটে সরাসরি প্রচার : বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি জানান, সোমবারের সমাবেশের পুরো কার্যক্রম বিএনপি ইন্টারনেটে সরাসরি দেখানোর ব্যবস্থা করেছে। .িনহঢ়ষরাব.পড়স—এই ঠিকানায় সকাল ১০টা থেকে সমাবেশের কার্যক্রম সরাসরি দেখা যাবে।
সমাবেশ সামনে রেখে ড্যাবের মেডিকেল টিম গঠন : ১১ জুনের সমাবেশে আগত নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণের জন্য প্রাথমিক চিকিত্সা সেবা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে চিকিত্সক সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)।
এ ব্যাপারে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও ড্যাবের মহাসচিব অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান, সমাবেশে আগত নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের চিকিত্সা সেবা দেয়ার লক্ষ্যে সমাবেশস্থলসহ আশপাশে ৬টি স্পটে চিকিত্সা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও ৭টি অ্যাম্বুলেন্স সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে।
তিনি আরও বলেন, কেউ যদি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তাহলে তাদের সেবায় রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালগুলোতেও ড্যাবের চিকিত্সকদের একটি করে টিম চিকিত্সা দেয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবে।
সমাবেশস্থলের বিভিন্ন জায়গায় যেসব মেডিকেল টিম দায়িত্ব পালন করবে সেগুলো হলো : ডা. আদনানের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের মেডিকেল টিম নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয়ের সামনে (০১৭১১৩৮৯১৪২), ডা. ওসমানীর নেতৃত্বে ১০ সদস্যের টিম মহানগর বিএনপি কার্যালয় সংলগ্ন স্থানে (০১৮১৯৮৬৬৬৬৮), ডা. নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের টিম কাকরাইল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনের সামনে (০১৫৫২৩৩০৬১০), ডা. আসম নওরোজের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের টিম ফকিরাপুল মোড়ে, (০১৭১৩০৩৫৫৪৫), ডা. মোহাম্মদ জিয়াউল করিম জিয়ার নেতৃত্বে ১১ সদস্যের টিম স্কাউট মার্কেটের সামনে (০১৭১১-৩৪৩৬৬৩), ডা, নিপ্পনের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের টিম বিজয়নগর নাইটঅ্যাঙ্গেল হোটেলের নিচে (০১৭১১৮৩২৪৭২)। এসব টিমের সঙ্গে একটি করে অ্যাম্বুলেন্স টিমও কাজ করবে।
মহাসমাবেশের অনুমতি জনগণের বিজয় —এমকে আনোয়ার : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার অভিযোগ করেছেন, সরকার সমাবেশে লোকজন আসতে বাধা দিচ্ছে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর দৈনিক বাংলা মোড় থেকে শাপলা চত্বর পর্যন্ত সমাবেশের প্রচারপত্র বিলির সময় সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করে বলেন, সরকারের ক্যাডার বাহিনী বিভিন্ন জায়গায় আমাদের লোকদের বাধা দিচ্ছে। কিন্তু বাধা দিয়ে কোনো লাভ হবে না। কালকের সমাবেশের জনস্রোত তারা ঠেকাতে পারবে না।
স্বাধীনতা ফোরামের উদ্যোগে এই লিফলেট বিতরণ কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ।
সমাবেশ বানচাল করতেই বিলম্বে অনুমতি —মঈন খান : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, সমাবেশ বানচাল করতে সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে প্রশাসনের ওপর প্রভাব খাটিয়ে সমাবেশের অনুমতি দিতে বিলম্ব করেছে। এ কারণে সাময়িকভাবে অসুবিধা হলেও লাখ লাখ মানুষ সমাবেশে উপস্থিত হয়ে সরকারের এ আচরণের জবাব দেবে।
গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সোমবারের সমাবেশের পক্ষে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে রাজধানীর মালিবাগ-মৌচাক-মগবাজার এলাকায় লিফলেট বিতরণের সময় সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনসহ বিএনপি নেতারা।
সরকার সমাবেশে আসতে লোকজনদের বাধা দিচ্ছে —নজরুল : সরকার সমাবেশে যোগ দিতে আসা লোকদের নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
গতকাল বিকালে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের দেয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, গত বারের (১২ মার্চ) মতো এবারও সমাবেশ আয়োজনে নানাভাবে বাধা দেয়া হচ্ছে। ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চগুলোকে দেয়া হচ্ছে আজ রোববার ও আগামীকাল সোমবার যাত্রীবোঝাই করে ঢাকায় না ফেরার নির্দেশ।
তিনি বলেন, পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি, গাজীপুরের কালিয়াকৈর ও নোয়াখালীতে কর্মীবাহী গাড়ি আটকে দেয়া হয়েছে। শনি ও রোববার প্রবল বাধা দেয়া হয়েছে লিফলেট বিতরণে। এছাড়া সমাবেশস্থলে লোকসমাগমেও বাধা দেয়া হচ্ছে। বিভিন্ন স্থান থেকে বেশ ক’জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব বরকতউল্লা বুলু প্রমুখও ছিলেন দলীয় কার্যালয়ে।
সমাবেশ বানচালে সন্ত্রাসীদের উসকে দিচ্ছে সরকার —নোমান : বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, ১১ জুনের ১৮ দলীয় জোটের সমাবেশকে কেন্দ্র করে অতীতের মতো বিএনপির কর্মীদের হয়রানি করছে পুলিশ ও সরকারদলীয় ক্যাডাররা। সমাবেশ বানচাল করতে সরকার সন্ত্রাসীদের উসকে দিচ্ছে।
গতকাল সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী জিয়া সমাজকল্যাণ পরিষদ আয়োজিত জিয়ার ৩১তম শাহাদাতবার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জাতীয়তাবাদী জিয়া সমাজকল্যাণ পরিষদের সেক্রেটারি গিয়াস উদ্দিন খোকনের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক সচিব ব্যারিস্টার হায়দার আলী, হেলেন জেরিন খান, রাশেদা বেগম হীরা এমপি প্রমুখ।
সমাবেশে বাধা দিলে সরকারকে কঠিন খেসারত দিতে হবে —খেলাফত মজলিস : ১৮ দলীয় জোটের সমাবেশ বানচালে সরকারের নানামুখী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ করে খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের গতকাল এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেছেন, সমাবেশে বাধা দিলে সরকারকে কঠিন খেসারত দিতে হবে। আগামীকাল সমাবেশ সফলের মাধ্যমে জনগণ আওয়ামী দুঃশাসনের জবাব দেবে।
তারা যে কোনো মূল্যে সমাবেশ সফলের জন্য খেলাফত মজলিসসহ ১৮ দলীয় জোটের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
বাাংলাদেশ ন্যাপের সংবাদ সম্মেলন : বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বলেছেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আজ ঢাকা সমাবেশের নগরীতে পরিণত হবে। আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটাধিকার হরণের ষড়যন্ত্র করছে। যে জাতি জীবন ও রক্ত দিতে জানে, সে জাতির অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারে না, পারবেও না। জনগণ আবারও রক্ত দিয়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের হাত থেকে তাদের অধিকার ছিনিয়ে আনবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গতকাল দুপুরে দলীয় কার্যালয়ে ১৮ দলীয় জোটের সমাবেশ সফলের লক্ষ্যে প্রস্তুতি জানাতে বাংলাদেশ ন্যাপ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads