কাক্সিক্ষত সমাজ ও উন্নত রাষ্ট্র বিনির্মাণে মানব জাতির অনেক কিছুই করণীয় আছে। কিন্তু করণীয় বিষয়ের সামনে এখন যেন বাধা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এক দানব। কেউ কেউ বলছেন দানব নয়, এটা আসলে একটা ফাঁদ। এই ফাঁদের নাম সন্ত্রাসবাদ। বর্তমান সময়ে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে লক্ষ্য করা যাচ্ছে নানা আলোচনা। তবে এখানে বলার মত বিষয় হলো, সন্ত্রাস নিয়ে বস্তুনিষ্ঠ বিশ্লেষণ তেমন লক্ষ্য করা যায় না, প্রপাগান্ডার মাত্রাই বেশি। প্রপাগান্ডার মাধ্যমে কারো মতলব, রাজনীতি কিংবা মতবাদ প্রচার করা গেলেও আসল কাজের কিছুই হয় না। ফলে বৈশ্বিক বাতাবরণে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এত কথা ও কর্মসূচির পরও তেমন কোনো সুফল লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
যে কোনো সমস্যার সমাধানে ঐতিহাসিক বিশ্লেষণ একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে লক্ষ্য করা গেছে, জুলুম-নির্যাতন, শোষণ-বঞ্চনা যখন মানুষের আর্তনাদ শোনেনি, তখন ক্ষুব্ধ মানুষের মনে দেখা দিয়েছে দ্রোহ। বিদ্রোহী মানুষ তখন জালেম ও শোষকদের বিরুদ্ধে তুলে নিয়েছে অস্ত্র, সৃষ্টি করেছে আতঙ্ক। এই পথ যে সঠিক পথ নয়, তা বিজ্ঞজনরা বলে থাকেন, কিন্তু ওদের এ পথে নামতে যারা বাধ্য করলেন তাদের বিরুদ্ধেও যৌক্তিক বক্তব্য রাখা প্রয়োজন। বিভিন্ন দেশে বিশেষ বিশেষ সম্প্রদায় বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নিবর্তনমূলক শাসন পরিচালনার কারণে আমরা গেরিলাগোষ্ঠীর উদ্ভব লক্ষ্য করেছি। শ্রেণি বৈষম্যের কারণেও আমরা উগ্রতা ও সশস্ত্র সংগ্রাম দেখেছি। আবার আগ্রাসী রাষ্ট্রের জোর-জবরদস্তি ও সন্ত্রাসী কর্মকা-ের কারণে প্রতিবেশী জাতিগোষ্ঠীর মধ্যেও আমরা সশস্ত্র সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রবণতা লক্ষ্য করেছি। ইতিহাসের এই অধ্যায়গুলো পর্যালোচনা করলে চলে আসে আইরিশ গেরিলা, পিএলও হামাস, শ্রেণি সংগ্রাম, নকশাল, তামিল গেরিলা, মরো মুক্তি ফ্রন্ট ও কাশ্মীরী মুক্তি সংগ্রামীদের প্রসঙ্গ। এদের কার্যকলাপ নিয়ে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে নানা পার্থক্যও লক্ষ্য করা গেছে। কেউ এদের মুক্তি সংগ্রামী বলেছেন, আবার অপরপক্ষ তাদের সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করছেন। এইসব মতপার্থক্য থেকে প্রশ্ন জাগে, তাহলে পৃথিবীতে ন্যায় ও সত্য বলে কি কিছু নেই? যে যা বলবে সেটাই কি সঠিক? না, এতটা হতাশ হওয়ারও কারণ নেই। আসলে বর্তমান সময়ে যারা পৃথিবী পরিচালনা করছেন, তারা যদি ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে একটু ন্যায়নিষ্ঠ হন তাহলে পৃথিবীর অনাকাক্সিক্ষত চিত্র পাল্টে যেতে পারে। লোপ পেতে পারে সন্ত্রাসবাদও। বলা যেতে পারে, সমস্যা আসলে ওপরের মহলে। সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব যাদের ওপর অর্পিত হয়েছে এবং যারা সমস্যা সমাধানের সামর্থ্য রাখেন, তারা যদি মানুষ হয়ে না ওঠেন, তাহলে মানুষের সংকট দূর হবে কীভাবে? এজন্য বর্তমান বাস্তবতায় যারা মানবোচিত সমাজ, রাষ্ট্র ও পৃথিবী চান তাদের জেগে উঠতে হবে। সমাজে, রাষ্ট্রে ও পৃথিবীতে ভাল মানুষের সংখ্যাই বেশি, অমানুষের সংখ্যা কম। এই পৃথিবীকে মানুষের বসবাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে হলে বীরের মত উচিত কর্ম সম্পাদন প্রয়োজন। অনুরোধ, উপরোধ, আফসোস ও বিলাপ তো অনেক করা হয়েছে, তাতে বিশ্ববাতাবরণে কোনো পরিবর্তন আসেনি। অতএব ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি নির্বিশেষে মানুষের জনপদে মানুষকে মেরুদ- সোজা করে দাঁড়াতে হবে। মানুষকে মানুষের রাজনীতি করতে হবে। বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থায় অপশাসকদের ধর্ম-বর্ণ, অঞ্চল, ভাষা ও শ্রেণি স্বার্থের নামে বিভাজন সৃষ্টি করে রাজত্ব করার সুযোগ আর দেয়া যাবে না। অতীতে এক্ষেত্রে ব্যর্থতার কারণেই এ পৃথিবীর বিভিন্ন জনপদে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে লাখো কোটি মানুষ। এই প্রসঙ্গে চলে আসে ফিলিস্তিনীদের কথা।
১৯১৬ সালের প্রথম ৬ মাসে ইসরাইল অধিকৃত পশ্চিম তীরে ৩৮৪ জন শিশুসহ প্রায় ৭৪০ জন ফিলিস্তিনীকে গৃহহীন করেছে। গত ২৭ জুলাই বুধবার মানবাধিকার সংগঠন ‘বি-সেলেম’ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আল-জাজিরা পরিবেশিত খবরে আরো বলা হয়, পশ্চিম তীরের ৬০ শতাংশ এলাকা জুড়ে এরিয়া ‘সি’ এর অবস্থান এবং এখানে প্রায় ৩ লাখ ফিলিস্তিনীর বাড়ি-ঘর রয়েছে। বর্তমানে এটি ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। বি-সেলেমের মুখপাত্র মিচেলি বলেন, যেখানে মানুষের রাজনৈতিক প্রভাব নেই, এমন জনবিরল অঞ্চলকে লক্ষ্য করে ইসরাইলি সেনারা ফিলিস্তিনীদের বাড়ি-ঘরে হামলা চালায়। তিনি আরো বলেন, ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ এসব ফিলিস্তিনীর এরিয়া ‘বি’-এর দিকে সরাতে চাইছে, যাতে তারা বসতি সম্প্রসারণের জন্য এরিয়া ‘সি’ দখল করতে পারে। এটা ইসরাইলি নিপীড়ন ও আগ্রাসনের একটা ক্ষুদ্র চিত্র মাত্র। তবে এখানেও লক্ষ্য করা গেছে, যেখানে মানুষ রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত নয় সেই এলাকাই ইসরাইলি সেনাদের সহজ শিকারে পরিণত হয়। এমন বাস্তবতায় আবারও উল্লেখ করতে হয়, এই পৃথিবীতে অমানুষের বদলে মানুষের নেতৃত্ব প্রয়োজন। মানুষ মেরুদ- সোজা করে ন্যায়ের চেতনায় মানুষের রাজনীতিকে সমুন্নত রাখার সংগ্রামে এগিয়ে এলে শুধু সন্ত্রাসবাদ নয়, সব ধরনের জুলুম-নির্যাতন, অজাচার-অনাচার পরাভূত হতে বাধ্য।
যে কোনো সমস্যার সমাধানে ঐতিহাসিক বিশ্লেষণ একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে লক্ষ্য করা গেছে, জুলুম-নির্যাতন, শোষণ-বঞ্চনা যখন মানুষের আর্তনাদ শোনেনি, তখন ক্ষুব্ধ মানুষের মনে দেখা দিয়েছে দ্রোহ। বিদ্রোহী মানুষ তখন জালেম ও শোষকদের বিরুদ্ধে তুলে নিয়েছে অস্ত্র, সৃষ্টি করেছে আতঙ্ক। এই পথ যে সঠিক পথ নয়, তা বিজ্ঞজনরা বলে থাকেন, কিন্তু ওদের এ পথে নামতে যারা বাধ্য করলেন তাদের বিরুদ্ধেও যৌক্তিক বক্তব্য রাখা প্রয়োজন। বিভিন্ন দেশে বিশেষ বিশেষ সম্প্রদায় বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নিবর্তনমূলক শাসন পরিচালনার কারণে আমরা গেরিলাগোষ্ঠীর উদ্ভব লক্ষ্য করেছি। শ্রেণি বৈষম্যের কারণেও আমরা উগ্রতা ও সশস্ত্র সংগ্রাম দেখেছি। আবার আগ্রাসী রাষ্ট্রের জোর-জবরদস্তি ও সন্ত্রাসী কর্মকা-ের কারণে প্রতিবেশী জাতিগোষ্ঠীর মধ্যেও আমরা সশস্ত্র সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রবণতা লক্ষ্য করেছি। ইতিহাসের এই অধ্যায়গুলো পর্যালোচনা করলে চলে আসে আইরিশ গেরিলা, পিএলও হামাস, শ্রেণি সংগ্রাম, নকশাল, তামিল গেরিলা, মরো মুক্তি ফ্রন্ট ও কাশ্মীরী মুক্তি সংগ্রামীদের প্রসঙ্গ। এদের কার্যকলাপ নিয়ে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে নানা পার্থক্যও লক্ষ্য করা গেছে। কেউ এদের মুক্তি সংগ্রামী বলেছেন, আবার অপরপক্ষ তাদের সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করছেন। এইসব মতপার্থক্য থেকে প্রশ্ন জাগে, তাহলে পৃথিবীতে ন্যায় ও সত্য বলে কি কিছু নেই? যে যা বলবে সেটাই কি সঠিক? না, এতটা হতাশ হওয়ারও কারণ নেই। আসলে বর্তমান সময়ে যারা পৃথিবী পরিচালনা করছেন, তারা যদি ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে একটু ন্যায়নিষ্ঠ হন তাহলে পৃথিবীর অনাকাক্সিক্ষত চিত্র পাল্টে যেতে পারে। লোপ পেতে পারে সন্ত্রাসবাদও। বলা যেতে পারে, সমস্যা আসলে ওপরের মহলে। সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব যাদের ওপর অর্পিত হয়েছে এবং যারা সমস্যা সমাধানের সামর্থ্য রাখেন, তারা যদি মানুষ হয়ে না ওঠেন, তাহলে মানুষের সংকট দূর হবে কীভাবে? এজন্য বর্তমান বাস্তবতায় যারা মানবোচিত সমাজ, রাষ্ট্র ও পৃথিবী চান তাদের জেগে উঠতে হবে। সমাজে, রাষ্ট্রে ও পৃথিবীতে ভাল মানুষের সংখ্যাই বেশি, অমানুষের সংখ্যা কম। এই পৃথিবীকে মানুষের বসবাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে হলে বীরের মত উচিত কর্ম সম্পাদন প্রয়োজন। অনুরোধ, উপরোধ, আফসোস ও বিলাপ তো অনেক করা হয়েছে, তাতে বিশ্ববাতাবরণে কোনো পরিবর্তন আসেনি। অতএব ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি নির্বিশেষে মানুষের জনপদে মানুষকে মেরুদ- সোজা করে দাঁড়াতে হবে। মানুষকে মানুষের রাজনীতি করতে হবে। বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থায় অপশাসকদের ধর্ম-বর্ণ, অঞ্চল, ভাষা ও শ্রেণি স্বার্থের নামে বিভাজন সৃষ্টি করে রাজত্ব করার সুযোগ আর দেয়া যাবে না। অতীতে এক্ষেত্রে ব্যর্থতার কারণেই এ পৃথিবীর বিভিন্ন জনপদে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে লাখো কোটি মানুষ। এই প্রসঙ্গে চলে আসে ফিলিস্তিনীদের কথা।
১৯১৬ সালের প্রথম ৬ মাসে ইসরাইল অধিকৃত পশ্চিম তীরে ৩৮৪ জন শিশুসহ প্রায় ৭৪০ জন ফিলিস্তিনীকে গৃহহীন করেছে। গত ২৭ জুলাই বুধবার মানবাধিকার সংগঠন ‘বি-সেলেম’ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আল-জাজিরা পরিবেশিত খবরে আরো বলা হয়, পশ্চিম তীরের ৬০ শতাংশ এলাকা জুড়ে এরিয়া ‘সি’ এর অবস্থান এবং এখানে প্রায় ৩ লাখ ফিলিস্তিনীর বাড়ি-ঘর রয়েছে। বর্তমানে এটি ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। বি-সেলেমের মুখপাত্র মিচেলি বলেন, যেখানে মানুষের রাজনৈতিক প্রভাব নেই, এমন জনবিরল অঞ্চলকে লক্ষ্য করে ইসরাইলি সেনারা ফিলিস্তিনীদের বাড়ি-ঘরে হামলা চালায়। তিনি আরো বলেন, ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ এসব ফিলিস্তিনীর এরিয়া ‘বি’-এর দিকে সরাতে চাইছে, যাতে তারা বসতি সম্প্রসারণের জন্য এরিয়া ‘সি’ দখল করতে পারে। এটা ইসরাইলি নিপীড়ন ও আগ্রাসনের একটা ক্ষুদ্র চিত্র মাত্র। তবে এখানেও লক্ষ্য করা গেছে, যেখানে মানুষ রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত নয় সেই এলাকাই ইসরাইলি সেনাদের সহজ শিকারে পরিণত হয়। এমন বাস্তবতায় আবারও উল্লেখ করতে হয়, এই পৃথিবীতে অমানুষের বদলে মানুষের নেতৃত্ব প্রয়োজন। মানুষ মেরুদ- সোজা করে ন্যায়ের চেতনায় মানুষের রাজনীতিকে সমুন্নত রাখার সংগ্রামে এগিয়ে এলে শুধু সন্ত্রাসবাদ নয়, সব ধরনের জুলুম-নির্যাতন, অজাচার-অনাচার পরাভূত হতে বাধ্য।