“রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নেই।” আমাদের দেশের রাজনীতির গতি প্রকৃতি যেভাবে চলছে তাতে মনে হয় উল্লেখিত বাক্যটি এক্ষেত্রে যুক্তিযুক্ত। আমাদের দেশে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য ক্ষমতাধররা নানা কূটকৌশল গ্রহণ করে থাকে। তারা নিজেরা জনসম্মুখে নানা কায়দায় সাধু সাজার চেষ্টা করে, কিন্তু জনগণ তাদের ভনিতা সহজে বুঝতে পারে। আমাদের দেশে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়াটি অন্যতম। যেমন রাজনৈতিক মারপ্যাঁচে, নির্বাচনী নিয়ম রক্ষার দোহাই দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার ২০ দলীয় জোটকে ঘায়েল করেছে। তবে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনী বৈধতা নিয়ে শুধু দেশে-বিদেশে নয় খোদ নিজ দলের মধ্যেও আলোচনা সমালোচনা রয়েছে। ভারত ছাড়া উল্লেখযোগ্য তেমন কোন রাষ্ট্র ঐ নির্বাচনকে বৈধতা দেয়নি। বিরোধী দল প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক মাঠ তেমন সরব রাখতে না পারায় সময়ের পরিক্রমায় মহাজোট সরকার দেশের বাইরে শক্তিশালী লবিস্ট নিয়োগের মাধ্যমে কিছুটা কোমর সোজা করে দাঁড়িয়েছে। সেই শক্তি বলে সরকার ও সরকারি দল বিভিন্ন দেশ সফর করে সরকারের সফলতার কথা তুলে ধরছে। এরপরেও প্রকৃত সত্য দিবালোকের মত স্পষ্ট যে, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সরকার যদি জনগনের রায়ে নির্বাচিত না হয়েও ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখে, সে সরকারের নৈতিক মনোবল বলতে কিছু থাকে না।
বিরোধী দল তাই সরকারের দুর্বলতার সুযোগে মাঝে সাঝে এই পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচনের দাবী তুলেছে। তবে সভা-সমিতিতে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রধান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার দলের নেতৃবৃন্দ ২০১৯ সালের আগে কোন নির্বাচন নয় বলে কঠোর ভাষায় বক্তৃতা দিয়েই চলেছেন। তবে এরি মধ্যে মহাজোটের অন্যতম শরিক হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর লক্ষ্যে সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজার জিয়ারাত পরবর্তি সমাবেশের মাধ্যমে জানান দিয়েছেন। কারণ আওয়ামী লীগের ইশারা ইঙ্গিত ছাড়া হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ রাজনৈতিক ময়দানে নির্বাচনের প্রায় দু’বছর আগে নির্বাচনী কাজ শুরু করার কোন অর্থ থাকতে পারেনা।
নির্বাচন প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার যুগান্তরকে বলেন, যে কোনো বড় রাজনৈতিক দলেরই চূড়ান্ত লক্ষ্য থাকে ক্ষমতায় যাওয়া। জাতীয় পার্টি ৯ বছর ক্ষমতায় ছিল। এরপর অনেক দিন থেকে দলটি ক্ষমতার বাইরে। তবে যারাই এ সময়ের মধ্যে ক্ষমতায় এসেছে তারা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জাতীয় পার্টির সমর্থন নিয়েই ক্ষমতায় গেছে। এমন অবস্থায় জাতীয় পার্টি এককভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য দলকে শক্তিশালী করবে। এজন্য তারা আগেভাগেই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই শনিবার সিলেটে সমাবেশের মধ্য দিয়ে নতুন পথে যাত্রা করবে জাতীয় পার্টি” (সূত্রঃ দৈনিক যুগান্তর ১/১০/২০১৬)। এথেকে সহজে অনুমেয় যে আওয়ামী লীগ উপরে উপরে ২০১৯ সালের পূর্বে নির্বাচন হবেনা বল্লেও এখন থেকেই ভেতরে ভেতরে তারাও ৫ জানুয়ারির কিছুটা বদনাম গুছিয়ে বর্হিবিশে^র কাছে সাধু সেজে পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়াকে নিজেদের করায়ত্তে রাখার প্রয়াসে সমস্ত আয়োজন করে চলেছে।
আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা আগামী নির্বাচনেও যে কোন মূল্যে ক্ষমতায় যাওয়ার বাসনা ব্যক্ত করছেন। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এইচ টি ইমাম বলেন- “আগামী জাতীয় নির্বাচনে তো বটেই, পরের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে হবে”। শনিবার দুপুরে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি একথা বলেন। (সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন -১/১০/২০১৬)। তবে বিএনপির পক্ষ থেকেও হুশিয়ারী উচ্চারণ করে দলের ভাইস-চেয়্যারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, “দেশে ৫ জানুয়ারির মত নির্বাচন আর হতে দেয়া হবে না।” (সূত্রঃ দৈনিক নয়াদিগন্ত, ১/১০/১৬)। বিএনপির অপর শীর্ষ নেতার মতামত থেকে বুঝা যায় তারাও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে প্রস্তুত। স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে দৈনিক যুগান্তরকে বলেন, “২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনটাই হচ্ছে একতরফা নির্বাচন। ওই নির্বাচনে ১৫৪টি আসনে কোনো ভোটই হয়নি। দেশে ও বিদেশে এ সরকার কোথাও গ্রহণযোগ্য হয়নি। সবাই জানে, এ সরকার জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না। তাই আমরা বলে আসছি, সবার অংশগ্রহণে দ্রুত একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হলে দেশে গণতন্ত্রও ফিরে আসবে। সরকার বলছে, ২০১৯ সালের আগে কোনো নির্বাচন নয়। আর সেখানে এরশাদ নির্বাচনের প্রচারে নামছেন। তারপরও বলব, এরশাদের এ নির্বাচনী প্রচার যদি অতি শিগগিরই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইঙ্গিত হয়ে থাকে, তাহলে তাকে ওয়েলকাম জানাই।” বিএনপি এ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত কিনা জানতে চাইলে ড. মোশাররফ বলেন, “বিএনপি হচ্ছে মধ্যপন্থী গণতান্ত্রিক দল, ইলেকশনের দল। বিএনপি সব সময়ই নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছে।” (সূত্রঃ দৈনিক যুগান্তর ১/১০/১৬)।
বিএনপি বেশ কিছুদিন জাতীয় নির্বাচনের ব্যাপারে নিরব থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ের বক্তৃতা বিবৃতিতে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে পুনরায় আওয়াজ তুলেছে। এছাড়াও সামনে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হতে চলছে। সব মিলিয়ে ভিতরে ভিতরে নির্বাচনী দৌড়-ঝাপ সব মহল দেশের ভিতরে বাহিরে শুরু হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী তার কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক সফরের শেষে ২ অক্টোবর’১৬ সংবাদ সম্মেলনে ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দেবেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে প্রত্যাশা করেছিল, কিন্তু শেখ হাসিনার তরফ থেকে বরাবরের মত তাদের প্রত্যাশাকে প্রত্যাখ্যান করে দিয়ে তিনি বলেন, ২০১৯ সালে যথা সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংবাদ সম্মেলন পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় যদিওবা বিএনপির নেতারা বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাখ্যান করলেও আশাবাদী তিনি শান্তভাবে চিন্তা করলে আমাদের কথায় সাড়া দিবেন।” (সূত্রঃ আমাদের সময়.কম, ২/১০/১৬)
আওয়ামী লীগ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সংবিধান সমুন্নত ও নিয়ম রক্ষার নির্বাচনের কথা বলে এক পাতানো নির্বাচন আয়োজন করে। সে নির্বাচন ২০দলীয় জোট প্রত্যাখ্যান করায় আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে প্রধান বিরোধী দল বানিয়ে যে কান্ড কিত্তি করেছে তা দেশের রাজনীতিতে কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে, যে নির্বাচনে ১৫৪টি সংসদীয় আসনে কোন ভোটই অনুষ্ঠিত হয়নি। আর বাকী আসনগুলোতে ভোটারদের অংশগ্রহণ হার ও নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের অন্তঃকলহের (আওয়ামী লীগ) খতিয়ান কারো অজানা নয়। যে নির্বাচনটি দেশের গণতান্ত্রিক ভাবমূর্তিকে চরমভাবে ক্ষুণœ করেছে।
রাজনীতির মাঠে রাজনৈতিক দল হিসেবে সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে যোগ দেবে এটাই স্বাভাবিক। এজন্য প্রয়োজন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। এখন ক্ষমতাসীন মহাজোট কিভাবে পুনরায় ক্ষমতা বাগিয়ে নিবে আর সরকারের দমন নিপিড়নে মাঠছাড়া ২০ দলীয় জোট রাজনীতির ময়দানে ফিরে ক্ষমতায় যাবে এটাই এখন দু’পক্ষের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এই দু’পক্ষের মাঝে নির্দলীয় না দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে এটা নিয়ে সুরাহা এবং নতুন করে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই সবচেয়ে জটিল কাজ। ২০ দলীয় জোটের পক্ষ হতে লেবেল প্লেয়িং ফ্লিড তৈরির জন্য যতই ক্ষমতাসীন দলকে তোড়-জোড় করুক না কেন, আওয়ামী লীগ নিজদের স্বার্থে যা করার তাই করে চলেছে।
জনসমর্থনের দিক দিয়ে বিএনপি জামায়াত জোট এগিয়ে থাকলেও আওয়ামী লীগ বিরোধী মতকে ইতোমধ্যে রাজপথে কোনঠাসা করতে সক্ষম হয়েছে। রাজনীতির মাঠ থেকে বিরোধী জোটকে অবদমিত করতে তারা হেন কোন পদক্ষেপ গ্রহন বাকী রাখেনি যা এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সকল প্রতিষ্টানকে দলীয়করণ করে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্টা করে চলছে। বিরোধী মতের অসংখ্য নেতা-কর্মী সরকার কর্তৃক গুম-খুন শিকারের অভিযোগ উঠেছে । বাড়ী-ঘর ছাড়া লক্ষ লক্ষ নেতা-কর্মী। রাজনৈতিক বিবেচনায় হাজার হাজার মামলায় অসংখ্য নেতা-কর্মী কারাগারে দিনাতিপাত করছে। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে অপব্যাবহার করে নানা অভিযোগ এনে বিরোধী দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে মাঠ লেভেলের সাম্ভাব্য নির্বাচনী প্রার্থীদের মামলা মোকাদ্দমা দিয়ে নির্বাচনে অনুপযুক্ত করার কাজ প্রায় শেষ করেছে। গণমাধ্যমের প্রচার স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপের ফলে আমজনতার কাছে সরকারের ফ্যাসিজমের অনেক ঘটনা অজানাই রয়ে যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সরকার ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে বিএনপি-জামায়াত জোট থেকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। আওয়ামী লীগ এর মাশূল স্বরূপ জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে সাজানো ট্রাইব্যুনালে বেশকজন শীর্ষ নেতৃত্বকে রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রেও মাধ্যমে হত্যা করেছে। সেই প্রক্রিয়ার অংশ স্বরূপ সরকার জামায়াত নিষিদ্ধের ফন্দি ফিকির করছে। এরপরও ২০ দলীয় জোট দেশ ও জাতির স্বার্থে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে নিজেদের ঐক্যকে অটুট রেখেছে। জোট ভাঙ্গনের মূল রহস্য হল ভোটের রাজনীতিতে জয়লাভ করা এবং দেশাভ্যন্তরে চিরতরে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ চালু করা। যা দেশের মানুষের চিন্তা চেতনার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু হতে পারেনা।
আওয়ামী লীগের অধিনে ২০ দলীয় জোটের নির্বাচন করা মানে বিপক্ষকে খালি মাঠে গোল দেয়ার সুযোগ করে দেয়ার শামিল। তাই ২০ দলীয় জোট আলাপ-আলোচনা সাপেক্ষে নির্বাচনী নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের আয়োজন এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার ক্ষেত্রে কোন কম্প্রমাইজ করা ঠিক হবে কিনা তা খুব চিন্তার বিষয়।
১০ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য গঠিত নির্বাচন কমিশন “পুতুল নাচে” অবতীর্ণ হয়েছিল। পুতুলের ব্যাপারে -“যেমনি নাচাও তেমনি নাচে, পুতুলের কি দোষ?” গানটি প্রযোজ্য, ঠিক তেমনি ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গঠিত নির্বাচন কমিশনের ব্যাপারেও গানটি প্রযোজ্য বল্লে খুব বেমানান হবেনা। কারণ দেশের নির্বাচনী (জাতীয় ও স্থানীয়) ইতিহাসে এতবেশী সহিংসতা ও দলীয়করণ অতিতে কখনো হয়নি। এই কমিশনের বিরদ্ধে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আইনের অপব্যাবহার করে পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকা পালনের অহরহ অভিযোগ উঠেছিল। এখন নির্বাচন কমিশন ও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ফের ব্যাপক আলোচনা চলছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে মাত্র চার মাস পরে, আগামী বছর ৮ ফেব্রুয়ারি। বর্তমান নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নিয়েছিল ২০১২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি। তাই নতুন নির্বাচন তথা সংসদের একাদশ নির্বাচন হবে নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছিল একটি সার্চ কমিটির মাধ্যমে। রাষ্ট্রপতি এ কমিটি গঠন করেছিলেন। যদিওবা চলতি কমিশনের উপর ২০ দলীয় জোটের অস্থা ও বিশ্বাস না থাকায় তারা ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছিল।
তাই বিএনপি নেতারা সরকারী দলকে আগামী নির্বাচনের জন্য নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের ব্যাপারে মতও ব্যক্ত করছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, “কেবল সার্চ কমিটি নয়, অতীতে জাতীয় সংসদে যেসব রাজনৈতিক দল প্রতিনিধিত্ব করেছে, তাদের মতামত নিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করতে হবে” (সূত্রঃ দৈনিক নয়াদিগন্ত, ২৬ সেপ্টেম্বর’১৬)। আর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, “এবারো আগের প্রক্রিয়ায় ইসি নিয়োগ করা হবে। ২০১২ সালে যেভাবে বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে, এবারো সেভাবে হবে।”
সরকারী দল বা বিরোধী দলের বক্তব্য যাই হোকনা কেন আমজনতা এমন নির্বাচন কমিশন চায়, যে কমিশনন হবে সাংবিধান মাফিক। সব দিক থেকে স্বাধীন। এ স্বাধীনতা প্রয়োগ করে ইসিকে নির্বাচনের ব্যাপারে তার ওপর জাতির আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগন তাদের মতামত প্রয়োগ করে পছন্দের নেতৃত্ব বাছাই করে নেয়, আর দলীয় মদদপুষ্ট নির্বাচন কমিশনের কারণে যদি জনগনের সেই প্রত্যাশা পুরণ করতে না পারে তখন অনির্বাচিত ব্যক্তিরা জগদ্দল পাথরের মত জাতির ঘাড়ে চেপে বসে। তখনই দেশে সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠে। আর আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলের নেতারা এমন ব্যাধিতেই আক্রান্ত, যাদের কারণে দেশ তলা বিহীন ঝুড়িতে পরিণত হয়েছে। এসব নেতারা ক্ষমতালোভী। দেশের জনগন তাদের ক্ষমতায় আনতে না চাইলেও তারা নানা কলাকৌশলে ক্ষমতায় আসতে চায়! ঠিক যেন এমন, কেউ কাউকে সম্মান করতে না চাইলেও জোর করে নিজের সম্মান নিজের আদায় করার মত! লাজ লজ্বা যাদের আছে তারা কখনো এধরনের অন্যায় অবিবেচকের মত আচরণ করতে পারেনা। অনেক হয়েছে, ক্ষমাধরদেরকে এবার থামানো দরকার। দেশবাসী নির্বাচনের মত নির্বাচন চায়, আর বেহুদা পুতুল নাচ দেখতে চায়না, অসৎ ও অযোগ্য ব্যক্তির কবল থেকে মুক্তি চায়।
মুহাম্মদ আবদুল জব্বার
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন