ব্যাপক জৌলসপূর্ণ ও কোটি কোটি টাকা খরচ করে পালন করা হলো আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন। টানা দুইদিন ছিল এ সম্মেলন। কাউন্সিলরদের বিপুল সমর্থনে টানা অষ্টমবারের মতো দলের সভাপতি হলেন শেখ হাসিনা। আর আওয়ামী লীগের ইতিহাসে এই প্রথম দলীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেলেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সৈয়দ আশরাফ এ পদ থেকে ইস্তেফা দিয়েছেন। চমক দেখাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন এক নেতা, কিন্তু জাতি কী পেল এ সম্মেলন থেকে? এ পাওয়া তো আওয়ামী লীগের। কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করে জাতিকে কিছু দিতে পেরেছেন কি? গোটা ঢাকাকে ছেয়ে ফেলা হয়েছিলো আলোকসজ্জায়। বন্ধ ছিল প্রায় সব যানবাহন। জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে দলের বরাদ্দকৃত বাজেটের সঙ্গে ব্যয়ের সামঞ্জস্য দেখা যাচ্ছে না। দলের জাতীয় কমিটির সর্বশেষ বৈঠকে সম্মেলন উপলক্ষে সর্বমোট ২ কোটি ৬৫ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন করা হয়েছে। অথচ শুধু ঢাকায় আলোকসজ্জার খরচই প্রায় তিন কোটি টাকা। যাই হোক, ঘোষিত কমিটির প্রেসিডিয়ামে স্থান পেয়েছেন নতুন সাত মুখ। প্রধান দুই পদে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় দলের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরের নাম ঘোষণা করেন। তবে এবারও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে স্থান পাননি আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। বাদ পড়েছেন নূহ-উল আলম লেলিন। শেখ হাসিনা সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি চাইলে সব কাউন্সিলর দাঁড়িয়ে ‘নো নো’ বলতে থাকেন। আওয়ামী লীগের প্রধান নির্বাচন কমিশনার পর পর তিনবার এ পদে আর কোনো প্রস্তাব আছে কিনা জানতে চান। কাউন্সিলররা ‘কেউ নেই, কেউ নেই’ বলে সমস্বরে বলতে থাকেন। সভাপতি পদে অন্য কোনো প্রস্তাব না থাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সর্বসম্মতিক্রমে এ পদে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ওবায়দুল কাদেরের নাম প্রস্তাব করেন। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সর্বসম্মতিক্রমে ওবায়দুল কাদেরকে নির্বাচিত ঘোষণা করেন। প্রথম দিন অনুষ্ঠানাদি পালনের পর সভার সভানেত্রী এবং আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা বক্তৃতা দিয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক তার লিখিত বক্তৃতা না পড়ে সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্বে পড়ার অনুরোধ জানিয়ে তিনিও কিছু সময়ব্যাপী এক হৃদয়গ্রাহী বক্তব্য পেশ করেছেন। তার বক্তব্য শুনে মনে হলো যেন শেখ হাসিনাও কেঁদেছেন। তিনি সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বিদায় নিলেন। তাতে অনেকে ব্যথিত হয়েছেন। রাজনীতিতে তিনি সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিলেন। এমনকি বিরোধী দল বিএনপিও তার প্রশংসা করতো। আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির আকার কিছুটা বেড়েছে। সেই সঙ্গে এতে যোগ হয়েছে কিছু নতুন মুখ। এটাই ছিল চমক। আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের অধিবেশনে নতুন গঠনতন্ত্র ও কমিটি অনুমোদন হয়। ৭৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির আকার করা হয়েছে ৮১। এর মধ্যে বেড়েছে প্রেসিডিয়ামে ৪, যুগ্ম ১, সাংগঠনিকে ১ ও সদস্যের ২টি পদ। আওয়ামী লীগে নতুন প্রেসিডিয়াম সদস্য হয়েছেন সদ্যবিদায়ী সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। ২০০৭ সালের জরুরি অবস্থার পর দুঃসময়ে দলের হাল ধরতে এগিয়ে আসা আশরাফ ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। বহু বিদেশী অতিথিও নিমন্ত্রিত হয়ে সম্মেলনে যোগদান করেছেন। অতিথিরা বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলেরই নেতা। তারাও বক্তব্য রেখেছেন। তাদের বক্তব্য অবশ্য শুভেচ্ছা বক্তব্য। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী দেশেরও প্রধানমন্ত্রী। তার সুন্দর ও সুযোগ্য নেতৃত্বের কারণে দেশের অগ্রগতি হয়েছে বহু ক্ষেত্রে এবং দেশের অগ্রগতি দৃষ্টিগ্রাহ্য হওয়ায় তিনি শুধু দেশে নন বিদেশেও বিপুলভাবে প্রশংসিত হয়েছেন। অতিথি বক্তারাও তাই তার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তাকে বিশ্ব জননেত্রী বলেছেন একজন। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম বলেছেন, ‘আমি আশা করি সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক হবে। আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক থাকলে দেশে রাজনীতি থাকবে। যেভাবেই হোক দেশে যদি রাজনীতি না থাকে আওয়ামী লীগ থাকবে না। তাই আওয়ামী লীগকে নিজের স্বার্থেই গণতান্ত্রিক হতে হবে। বাংলাদেশের সবচেয়ে অগণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগে গণতন্ত্রের লেশমাত্র নেই।’ ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশন সরকারের নামে খুতবা দেয়ার ফতোয়া দিয়েছে। মসজিদে খুতবা সরকারের হবে না, হবে আল্লাহর ও ইসলামের।’ ৭১-এ বর্বর পাকিস্তানী সেনাবাহিনী শত শত, লাখ লাখ মা-বোনের ইজ্জতহানি করেছে কিন্তু সন্তানের দ্বারা মায়ের ইজ্জতহানির চেষ্টা করেনি। যুবকদের ইন্ডিয়ার ফেনসিডিল, ইয়াবা ও তথ্যপ্রযুক্তির নামে ইন্টারনেটে ডুবিয়ে মেধাশূন্য করা হচ্ছে। সভ্যসমাজে মানুষরূপী জানোয়ার ছাত্রলীগের বদরুল খাদিজাকে কোপায়, আর নেত্রীরা সেলফি তোলে। জীবনের চেয়েও ছবির মূল্য বেশি।’ বিএনপি এ কাউন্সিলে অংশগ্রহণ করেননি, তাদের ভাষ্য বাংলাদেশে গণতন্ত্রের কোনো পরিবেশ নেই। তাহলে কী করে তাদের কাউন্সিলে গিয়ে আমাদের নেতৃবৃন্দ শুভেচ্ছা জানাবেন। আমরা একটা আত্মমর্যাদাশীল রাজনৈতিক দল। আমরা গণতন্ত্রের প্রতি নিবেদিত। আজকে যদি ন্যূনতম গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকতো, নিশ্চয়ই বিএনপি নেতৃবৃন্দ আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে যেতেন। সাংবাদিক সম্মেলনে বিএনপির নেতা রিজভি বলেন- আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে আমাদের যে প্রতিনিধি যায়নি, এটা সঠিক সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেই আমি মনে করি। গণতন্ত্রে সঠিকভাবে যদি একটা সরকার থাকতো, এখানে গণতান্ত্রিক সমাজ বিকাশের জন্য যে উপাদানগুলো সক্রিয় থাকা দরকার সেটা যদি থাকতো তাহলে কথা ছিল না যে, যাওয়াটা ঠিক না। বিএনপির এই নেতা বলেন, আপনি যেকোনো স্তরের মানুষকে জিজ্ঞেস করবেন, যারা আজকে জোর করে ক্ষমতা আটকিয়ে রেখেছেন, যারা নিজেদের শাসক বলে দাবি করছেন, সকল ধরনের বৈধ প্রক্রিয়া ছাড়াই অন্যায্যভাবে ক্ষমতা দখল করে আছেন, তারা তো আর জনগণের প্রতিনিধি নন। ঘোষণাপত্রে তত্ত্বাবধায়ক সরকার না রাখা, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা, ব্লু ইকোনমি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে অতিরিক্ত ৪০ বিলিয়ন ডলার আয় বৃদ্ধি ও এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। ২০২১ সালের মধ্যে উচ্চ (৮০ শতাংশ) প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য বেসরকারি ও সরকারি খাতে শিল্পায়নের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের ঘোষণাপত্রে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার অঙ্গীকার করা হয়েছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে দলের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার অবসান, দারিদ্র্য বিমোচন এবং খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা বিধানে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ারও অঙ্গীকার আছে ঘোষণাপত্রে।
'আমার মনে হয় আবার ক্ষমতায় গেলে তিনি নতুন ভবন খুলে মানুষ হত্যা করবেন, মা-বোনের ইজ্জত নিয়ে দেশকে নতুনভাবে ধ্বংস করবেন' বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাছিনার এই উক্তি কি আপনি শালীন মনে করেন ?
FIND US on FB
জনপ্রিয় লেখাসমুহ
-
আবার সেই লগি-বইঠার হুংকার !!! দেশবাসী সাবধান !!! জালিমরা আবার রক্ত পিয়াসের মরন নেশায় নেমেছ । বাচতে হলে হয় প্রতিরোধ করুন জীবনের তরে না...
-
দেশজুড়ে শিক্ষাঙ্গনে অপ্রতিরোধ্য সন্ত্রাস কায়েম করেছে ছাত্রলীগ। নিয়োগবাণিজ্য, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, নারীর শ্লীলতাহানিসহ পাবলিক ...
-
* যৌথ বিনিয়োগের বিষয়টি আমি জানি না-নৌ-পরিবহন মন্ত্রী * এ ধরনের বিনিয়োগ সম্পর্কে বোর্ড কিছু জানে না -বিনিয়োগ বোর্ড নির্বাহী * এই ঘটনা স...
-
ধূমকেতু : ’৯১-এ ক্ষমতায় আসার পর মেয়াদ শেষে ’৯৬ সালে বিএনপি তার সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে চাইলে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগসহ অন্য...
-
বেগম খালেদা জিয়ার প্রকৃত নাম খালেদা খানম, ডাক নাম পুতুল। আগস্ট ১৫, ১৯৪৫ সালে জলপাইগুড়িতে জন্ম গ্রহণ করেন। তিন বোন এবং দুই...
-
দু’টি চাঞ্চল্যকর খবর ক্ষণিকের জন্য গণমাধ্যম তোলপাড় করে দেশ ও জাতির স্মৃতি থেকে দ্রুত মুছে যাচ্ছে বলে মনে হয়। খবর দু’টি হচ্ছে বাংলাদেশ থ...
-
বগুড়া শহরের প্রসিদ্ধ হোটেলের একটি আকবরিয়া গ্র্যান্ড হোটেল। ব্যবসার পাশাপাশি হোটেল কর্তৃপ ১০০ বছর ধরে রাতে ফ্রি খাবার দিয়ে মুসাফ...
-
আজ ১ সেপ্টেম্বর , ১৯৭৮ সালের এই দিনে জাতির মুক্তির লক্ষে স্বাধীনতা যুদ্ধের সুমহান ঘোষক , বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা , সংবাদপত্রের স্...
-
“...আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছেলে যে বিজ্ঞানী - তা তো জানা ছিলো না!” [এবার থাকছে শেখ হাসিনার পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয় কে নিয়ে ধারাবাহ...
-
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম জাতিসঙ্ঘের ৬৮তম সাধারণ অধিবেশনেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা জাতিসঙ্ঘে ট...
Ad
মোট পৃষ্ঠাদর্শন
প্রজন্মের ভবিষ্যত
Blogger দ্বারা পরিচালিত.
আমার অনুপ্রেরনা
জাতীয়তাবাদী শক্তির কান্ডারী
আমার সম্পর্কে
পুরানো যত লেখা
-
▼
2016
(170)
-
▼
অক্টোবর
(8)
- গৃহপালিত বিরোধী দল জাতীয় পার্টির ত্রাহি অবস্থা
- রক্তাক্ত পল্টন থেকে খাদিজা পর্যন্ত আওয়ামী জঙ্গিপনা
- আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে জাতির প্রাপ্তি ও কিছু কথা
- আমরা যুদ্ধে যাবো কী মজা!
- ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে খ...
- বিবিসি’র সেই বিখ্যাত সাংবাদিক
- জাতীয় নির্বাচন ও পুতুল নাচ!
- এ কেমন কাণ্ড?
- ► সেপ্টেম্বর (8)
- ► ফেব্রুয়ারী (12)
-
▼
অক্টোবর
(8)
-
►
2015
(299)
- ► সেপ্টেম্বর (21)
- ► ফেব্রুয়ারী (27)
-
►
2014
(654)
- ► সেপ্টেম্বর (37)
- ► ফেব্রুয়ারী (82)
-
►
2013
(1305)
- ► সেপ্টেম্বর (107)
- ► ফেব্রুয়ারী (95)
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন