মহান ভাষা আন্দোলনের মাসে জনগণকে একুশের মূল চেতনা থেকে সরিয়ে সংঘাতের পথে ঠেলে দেয়ার ষড়যন্ত্র ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে কি না সম্প্রতি সে প্রশ্ন জোরেশোরেই উঠেছে। এর কারণ সৃষ্টি করেছে বিশেষ একটি প্রকাশনা সংস্থা। ওই সংস্থা এবারের বই মেলায় ‘ইসলাম বিতর্ক’ নামের এমন এক বই প্রকাশ ও বিক্রি করেছে যার পাতায় পাতায় বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে অত্যন্ত আপত্তিকর বক্তব্য রয়েছে। পবিত্র ইসলামের বিরুদ্ধেও যথেচ্ছভাবে লেখা হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে সঙ্গত কারণেই ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। অন্য সব ধর্মের শান্তি ও সম্প্রীতিকামী মানুষও প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন। কৌশল হিসেবে সরকার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের বই মেলায় প্রকাশনা সংস্থার দোকান বন্ধ করে দেয়। পুলিশ সংস্থার মালিক ও বইটির সম্পাদকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়েছে। অন্যদিকে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে, থানায় তাদের নাকি ‘জামাই আদরে’ রাখা হয়েছে। এমন অভিযোগের সত্যাসত্য নিয়ে কথা বাড়ানোর পরিবর্তে এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, বইটির মাধ্যমে সংঘাতের উসকানি দেয়ার পাশাপাশি প্রকৃতপক্ষে আবারও ইসলাম বিরোধী চরম ধৃষ্ঠতা দেখানো হয়েছে। আমরা এই হীন ধৃষ্টতার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং মনে করি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য প্রশংসিত হয়ে আসা বাংলাদেশে এ ধরনের কর্মকা- যারা করেছে তাদের অবশ্যই কঠোর শাস্তি দিতে হবে, যাতে আর কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর পক্ষে ইসলাম বিরোধী কোনো বই প্রকাশ ও বিক্রি করার সাহস না হয়। সবাই নিশ্চিতভাবে এটা মনে করবেন, উদ্দেশ্যমূলক এই নোংরামী মুক্ত চিন্তা অবশ্যই নয়।
প্রসঙ্গক্রমে মহান ভাষা আন্দোলনের মূল চেতনা ও উদ্দেশ্যের কথাও স্মরণ করা দরকার। এ বিষয়ে জাতিগতভাবে আমাদের কিন্তু গর্ব ও আত্মতৃপ্তি বোধ করার তেমন সুযোগ নেই বললেই চলে। কারণ, দীর্ঘ ছয় দশকের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও আমরা এখনো বাগাড়ম্বরের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছি, বাংলাকে যথাযথ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে পারিনিÑ আসলে করিনি। ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ ও বাস্তবায়ন করতেও শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছি আমরা। এমন মন্তব্যের কারণ, বাংলাকে তৎকালীন পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার একমাত্র লক্ষ্য নিয়ে ভাষা আন্দোলন হয়নি। রফিক, জব্বার ও বরকতসহ ভাষা সংগ্রামীরাও কেবলই বাংলার জন্য আত্মত্যাগ করেননি। ভাষা হিসেবে বাংলাকে প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি তাদের উদ্দেশ্য ছিল এ অঞ্চলের জনগণের ধর্ম, সংস্কৃতি ও অর্থনীতিসহ সামগ্রিক অবস্থার বিকাশ ঘটানো। সেজন্যই ভাষা সংগ্রামীদের আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের পথ বেয়ে বাংলা শুধু রাষ্ট্রভাষার অবস্থান ও মর্যাদা অর্জন করেনি, স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখানেই ভাষা আন্দোলন এবং একুশে ফেব্রুয়ারির বিশেষ তাৎপর্য এবং অতুলনীয় সফলতা। একথা সত্য, আমাদের সাহিত্য অনেক উন্নতি করেছে, বাংলা ভাষাও কম সমৃদ্ধ হয়নি। এখনো নিরন্তর গবেষণা চলছে বাংলা ভাষা ও এর ব্যাকরণ নিয়ে। এসবের ভিত্তিতে বলা যায়, বাংলা চর্চার সৌকর্য বেড়েছে।
একই সঙ্গে এ কথাও আবার স্বীকার না করে পারা যায় না যে, ভাষা আন্দোলনের পেছনে ধর্ম ও সংস্কৃতির জন্য যে উদ্দেশ্য ছিল তার বাস্তবায়ন এখনো হয়নি। বাংলা ভাষার ক্রম অগ্রগতি ও সুষম বিকাশ বরং বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে বিচ্যুতি পযন্ত ঘটছে। শুধু তা-ই নয়, আধুনিকতা ও আন্তর্জাতিকতার নামে একদিকে ইংরেজির ব্যাপক চর্চা চলছে, অন্যদিকে ভারতের রাষ্ট্রভাষা হিন্দির ব্যবহারও সীমা ছাড়িয়ে গেছে। স্যাটেলাইট টিভির কল্যাণে শিশুরা পর্যন্ত আজকাল হিন্দিতে কথা বলছে। হিন্দি ভাষার শুধু নয়, ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী সংস্কৃতিরও অনুপ্রবেশ ঘটছে আমাদের পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে। ঘুরিয়ে বলা যায়, পাকিস্তান যুগের উর্দুর স্থান দখল করে নিয়েছে হিন্দি ভাষা। অথচ এই ভাষার প্রশ্নে ভিন্নমত ও বিরোধিতা ছিল বলেই বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের পূর্বসুরীরা আন্দোলন করেছিলেন, জীবন দিয়েছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধও আমরা নিশ্চয়ই উর্দুর স্থলে হিন্দিকে নিয়ে আসার জন্য করিনি।
বিষয়টি নিয়ে ভাবনার এবং পদক্ষেপ নেয়ার সময় এসেছে অনেকদিন আগেই। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, আধুনিকতা ও আন্তর্জাতিকতার নামে বাংলাদেশের ওপর হিন্দি ও ভারতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসনই কেবল তীব্রতর হয়নি, এদেশের কিছু বিশেষ গোষ্ঠী ৯০ শতাংশের বেশি নাগরিকের ধর্ম ইসলামের বিরুদ্ধেও জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই সর্বশেষ উদাহরণ হিসেবে বাজারে এসেছে ‘ইসলাম বিতর্ক’ নামের বইটি। অন্য সকল পন্থায়ও ইসলাম ও মুসলিম বিরোধী তৎপরতা চালানো হচ্ছে। এসব কর্মকান্ডের কোনোটিকেই প্রগতিশীলতা বা আধুনিকতার তকমা দিয়ে ছাড় দেয়ার কোনো সুযোগ থাকতে পারে না। কারণ, যারা তৎপরতা চালাচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার- তারা উসকানি দিয়ে দেশকে সাম্প্রদায়িক হানাহানির মুখে ঠেলে দিতে চায়। এদের কারণেই শান্তি ও সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশে হত্যাকা-সহ অনাকাংক্ষিত বিভিন্ন ঘটনা ঘটে থাকে। আমরা তাই মনে করি, ইসলাম, মুসলিম ও বাংলাদেশ বিরোধী সর্বব্যাপী এ আগ্রাসন প্রতিরোধের ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নেয়া দরকার। উস্কানিদাতাদের বিরুদ্ধে দরকার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া।
প্রসঙ্গক্রমে মহান ভাষা আন্দোলনের মূল চেতনা ও উদ্দেশ্যের কথাও স্মরণ করা দরকার। এ বিষয়ে জাতিগতভাবে আমাদের কিন্তু গর্ব ও আত্মতৃপ্তি বোধ করার তেমন সুযোগ নেই বললেই চলে। কারণ, দীর্ঘ ছয় দশকের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও আমরা এখনো বাগাড়ম্বরের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছি, বাংলাকে যথাযথ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে পারিনিÑ আসলে করিনি। ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ ও বাস্তবায়ন করতেও শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছি আমরা। এমন মন্তব্যের কারণ, বাংলাকে তৎকালীন পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার একমাত্র লক্ষ্য নিয়ে ভাষা আন্দোলন হয়নি। রফিক, জব্বার ও বরকতসহ ভাষা সংগ্রামীরাও কেবলই বাংলার জন্য আত্মত্যাগ করেননি। ভাষা হিসেবে বাংলাকে প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি তাদের উদ্দেশ্য ছিল এ অঞ্চলের জনগণের ধর্ম, সংস্কৃতি ও অর্থনীতিসহ সামগ্রিক অবস্থার বিকাশ ঘটানো। সেজন্যই ভাষা সংগ্রামীদের আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের পথ বেয়ে বাংলা শুধু রাষ্ট্রভাষার অবস্থান ও মর্যাদা অর্জন করেনি, স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখানেই ভাষা আন্দোলন এবং একুশে ফেব্রুয়ারির বিশেষ তাৎপর্য এবং অতুলনীয় সফলতা। একথা সত্য, আমাদের সাহিত্য অনেক উন্নতি করেছে, বাংলা ভাষাও কম সমৃদ্ধ হয়নি। এখনো নিরন্তর গবেষণা চলছে বাংলা ভাষা ও এর ব্যাকরণ নিয়ে। এসবের ভিত্তিতে বলা যায়, বাংলা চর্চার সৌকর্য বেড়েছে।
একই সঙ্গে এ কথাও আবার স্বীকার না করে পারা যায় না যে, ভাষা আন্দোলনের পেছনে ধর্ম ও সংস্কৃতির জন্য যে উদ্দেশ্য ছিল তার বাস্তবায়ন এখনো হয়নি। বাংলা ভাষার ক্রম অগ্রগতি ও সুষম বিকাশ বরং বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে বিচ্যুতি পযন্ত ঘটছে। শুধু তা-ই নয়, আধুনিকতা ও আন্তর্জাতিকতার নামে একদিকে ইংরেজির ব্যাপক চর্চা চলছে, অন্যদিকে ভারতের রাষ্ট্রভাষা হিন্দির ব্যবহারও সীমা ছাড়িয়ে গেছে। স্যাটেলাইট টিভির কল্যাণে শিশুরা পর্যন্ত আজকাল হিন্দিতে কথা বলছে। হিন্দি ভাষার শুধু নয়, ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী সংস্কৃতিরও অনুপ্রবেশ ঘটছে আমাদের পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে। ঘুরিয়ে বলা যায়, পাকিস্তান যুগের উর্দুর স্থান দখল করে নিয়েছে হিন্দি ভাষা। অথচ এই ভাষার প্রশ্নে ভিন্নমত ও বিরোধিতা ছিল বলেই বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের পূর্বসুরীরা আন্দোলন করেছিলেন, জীবন দিয়েছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধও আমরা নিশ্চয়ই উর্দুর স্থলে হিন্দিকে নিয়ে আসার জন্য করিনি।
বিষয়টি নিয়ে ভাবনার এবং পদক্ষেপ নেয়ার সময় এসেছে অনেকদিন আগেই। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, আধুনিকতা ও আন্তর্জাতিকতার নামে বাংলাদেশের ওপর হিন্দি ও ভারতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসনই কেবল তীব্রতর হয়নি, এদেশের কিছু বিশেষ গোষ্ঠী ৯০ শতাংশের বেশি নাগরিকের ধর্ম ইসলামের বিরুদ্ধেও জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই সর্বশেষ উদাহরণ হিসেবে বাজারে এসেছে ‘ইসলাম বিতর্ক’ নামের বইটি। অন্য সকল পন্থায়ও ইসলাম ও মুসলিম বিরোধী তৎপরতা চালানো হচ্ছে। এসব কর্মকান্ডের কোনোটিকেই প্রগতিশীলতা বা আধুনিকতার তকমা দিয়ে ছাড় দেয়ার কোনো সুযোগ থাকতে পারে না। কারণ, যারা তৎপরতা চালাচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার- তারা উসকানি দিয়ে দেশকে সাম্প্রদায়িক হানাহানির মুখে ঠেলে দিতে চায়। এদের কারণেই শান্তি ও সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশে হত্যাকা-সহ অনাকাংক্ষিত বিভিন্ন ঘটনা ঘটে থাকে। আমরা তাই মনে করি, ইসলাম, মুসলিম ও বাংলাদেশ বিরোধী সর্বব্যাপী এ আগ্রাসন প্রতিরোধের ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নেয়া দরকার। উস্কানিদাতাদের বিরুদ্ধে দরকার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন