রবিবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৫

আবারও বিদেশী হত্যা!


আবারও বিদেশী হত্যার ঘটনা ঘটলো। ইতালীর নাগরিক সিজার তাবেলা হত্যার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার গুলী করে হত্যা করা হয়েছে এক জাপানি নাগরিককে। তাঁর নাম কুনিও হোশিও (৬৬)। গত শনিবার সকালে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার কাচু আলুটারি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মুখোশধারী দুই যুবক কুনিওকে গুলী করে ঘটনাস্থলে অপেক্ষামাণ একটি মোটরসাইকেলে চড়ে পালিয়ে যায়। হাসপাতালে নেয়ার পথে কুনিওর মৃত্যু হয়। কারা কী উদ্দেশ্যে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ কিছু জানাতে পারেনি। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তারা পাঁচজনকে আটক করেছে। মাত্র পাঁচদিনের ব্যবধানে দুই বিদেশী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে দেশে-বিদেশে। এসব ঘটনা খুবই মর্মান্তিক এবং বাংলাদেশের জন্য বিব্রতকর। এদিকে কুনিও হোশিও হত্যার ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে ঢাকাস্থ জাপান দূতাবাস। এ হত্যার কারণ জানার অপেক্ষায় আছে দূতাবাসটি। জাপান দূতাবাসের মুখপাত্র তাকেশি মাতসুনাঙ্গা শনিবার সন্ধ্যায় একথা জানান। জাপান দূতাবাস হত্যার বিষয়টি বাংলাদেশে অবস্থানকারী জাপানিদের জানিয়ে দিয়ে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে।
তাবেলা হত্যারহস্যের এখনো কোনো কূলকিনারা হয়নি, এর মধ্যেই কুনিও হত্যাকাণ্ড পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুললো। যে কোনো হত্যাকাণ্ডই দেশের ইমেজের জন্য ক্ষতিকর, তবে বিদেশী হত্যাকাণ্ডের ঘটনা আরও মারাত্মক। দু’টি ঘটনার তদন্ত পুলিশ ও র‌্যাবের সদর দফতর থেকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল কুনিও হত্যার তদন্তে যোগ দিয়েছে। রোববার পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দা দল রংপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার  কথা রয়েছে। এদিকে জাপানি প্রতিনিধি দলও সেখানে যাচ্ছে। আমরা মনে করি, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীকে চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হলে দেশের ইমেজ যেমন রক্ষা পাবে, তেমনি জনমনেও ফিরে আসবে স্বস্তি। তবে ইতোমধ্যে ব্লেম গেমের মন্দ আচরণ লক্ষ্য করা গেছে। বিদেশী হত্যার জন্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই বিরোধী দলের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করা হয়েছে। বিরোধী দলের কর্মীদেরও গ্রেফতার করা হচ্ছে। এসব শুভ লক্ষণ নয়। এভাবে ব্লেম গেমের  রাজনীতি অব্যাহত থাকলে প্রকৃত অপরাধীদের ধরা কঠিন হয়ে উঠতে পারে। তাই আমরা আশা করবো, তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতেই যেন অপরাধীদের খুঁজে বের করা হয়। অপরাধ দমনে ন্যায়নিষ্ঠভাবে অগ্রসর হলে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। তখন একের পর এক হত্যাকা- ঘটাবার মতো সাহস আর দুর্বৃত্তদের হবে না।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads