বুধবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৫

আবারও গণতন্ত্রের পরাজয়


স্বাধীনতার ৪৪ বছর পরও আমাদের সরকার জনগণকে ভোটের অধিকার দিতে পারলো না। রাজনীতির এমন বাতাবরণে সহজেই উপলব্ধি করা যায়, স্বাধীনতার লক্ষ্যগুলো কেন পূরণ হচ্ছে না। আসলে সাম্য, ন্যায়, মৌলিক অধিকার ও গণতান্ত্রিক বিকাশের জন্য নৈতিক মেরুদন্ড দরকার। তেমন মেরুদন্ডের অভাবেই আমাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সংকট বাড়ছে। ২৮ এপ্রিল ঢাকা ও চট্টগ্রামে তিনটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। এই নির্বাচনে তো সরকার পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা ছিল না। তারপরও সরকার, নির্বাচন কমিশন, আওয়ামী লীগ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অবদানে এমন একটি নির্বাচন হলো, যা আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থাকেই ভীষণভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করলো। ফলে দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় বা কোনো নির্বাচনই যে এখন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়, এমন বক্তব্যের প্রতি মানুষের সমর্থনের হার আরো বেড়ে গেল। ২৮ এপ্রিল সিটি করপোরেশনের নির্বাচন কেমন কলঙ্কজনক হয়েছে তা পত্র-পত্রিকার শিরোনাম থেকেও উপলব্ধি করা যায়। মানব জমিন পত্রিকায় শিরোনাম করা হয়েছে, ‘ডিজিটাল জমানায় এনালগ কারচুপি’। আর প্রথম আলো পত্রিকায় শিরোনাম করা হয়েছে, ‘জিতল আ’ লীগ হারল গণতন্ত্র’। প্রথম আলোর রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, তিন সিটি করপোরেশনের নির্বাচন ঘিরে মানুষের মধ্যে যে শঙ্কা ছিল শেষ পর্যন্ত তাই সত্যি হলো। প্রশ্নবিদ্ধ এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ৩ মেয়রপ্রার্থী বিজয়ী হলেও গণতন্ত্রের পরাজয় হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। জাতীয় রাজনীতিতে ঝড় তোলা এই স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটের খেলায় গণতন্ত্র হেরেছে। সরকার সমর্থকরা বিরোধীদের বেশিরভাগ ভোট কেন্দ্রের কাছেই যেতে দেননি। অনেকটা ফাঁকা মাঠে পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় উন্মুক্ত কারচুপি করেছেন তারা। আর বিরোধীদল বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা ভোট শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেন। পরিতাপের বিষয় হলো, গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের মধ্যদিয়ে যে দেশটি স্বাধীনতা অর্জন করলো, স্বাধীন সে দেশটিতে ৪৪ বছর পরেও আমরা একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মত সক্ষমতা অর্জন করতে পারলাম না। এমন ব্যর্থতার পটভূমিতে আমাদের সরকার, সরকারি দল, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিজেদের দায়িত্বকে কতটা উপলব্ধি করতে পারছেন তা জানি না।
‘জালভোটের সহযোগী পুলিশ’ শিরোনামটি আমাদের দুঃখের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। ২৯ এপ্রিল প্রথম আলোয় মুদ্রিত রিপোর্টটিতে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জালভোট দেয়ার ক্ষেত্রে সহযোগীর ভূমিকায় ছিল পুলিশ। পুলিশ নিজে জালভোটের সহযোগিতা করেছে, কোথাও সরাসরি জালভোট দিয়েছে, আবার জালভোট প্রতিরোধে বাধাও দিয়েছে। গত মঙ্গলবার ভোট গ্রহণের সময় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার ২০টির বেশি কেন্দ্র ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। আরো অবাক ব্যাপার হলো, নির্বাচনে অনিয়ম, জালভোট ও কারচুপির ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা মোটেও লজ্জিত নন। বরং তাদের এসব অপকর্মের চিত্র তুলে ধরাও যেন মস্তবড় অপরাধ। ফলে পুলিশ ও সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের বাধা এবং হামলার মুখে পড়তে হয়েছে গণমাধ্যম কর্মীদের। যেখানেই সুযোগ পেয়েছে সেখানেই সাংবাদিকদের ওপর হামলা, ক্যামেরা ভাংচুর ও ভয়ভীতি দেখিয়ে কেন্দ্র ছাড়া করা হয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামে অন্তত ৬ জন সাংবাদিকের ওপর হামলা হয়েছে। ভয় দেখিয়ে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখা হয়েছে আরো ১৫ জনকে। প্রথম আলোতে মুদ্রিত রিপোর্টে আরো বলা হয়, ঢাকার বাসাবো উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের সময় গুলীবিদ্ধ হয়েছেন একটি অনলাইন পত্রিকার সাংবাদিক ইয়াসিন হাসান রাব্বি। প্রথম আলোর অন্তত ৮ জন সাংবাদিক হামলা ও বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। সরকার সমর্থক নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি পুলিশও সাংবাদিকদের বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দিয়েছে। দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন। নির্বাচনের এমন চিত্র অবলোকন করে অনেকেই বলছেন, সেনা মোতায়েন না করার মাজেজাটা এখন বোঝা যাচ্ছে।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এবার যে অনিয়ম, কারচুপি ও সন্ত্রাসী ঘটনা লক্ষ্য করা গেছে তার ভিত্তি একদিনে নির্মিত হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনের আদর্শ চর্চার বদলে ক্ষমতা ও অর্থলিপ্সার যে দৌরাত্ম্য চলেছে তারই বিষফল লক্ষ্য করা যাচ্ছে এখন নির্বাচনসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডে। শিক্ষার মাধ্যমে আমাদের ছাত্র ও যুবসমাজ রাজনৈতিক অঙ্গনে গুণগত পরিবর্তন আনতে পারতেন। কিন্তু আমাদের শিক্ষাঙ্গনের চিত্রটা কেমন?
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের এক শিক্ষিকাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে ছাত্রলীগ নেতা আরজ মিয়া। এদিকে আরজ মিয়াকে আটক করলেও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ প্রসঙ্গে কোতোয়ালী থানার অপারেশন কর্মকর্তা মো. রফিক জানান, উক্ত ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টরিয়াল বডি ছাত্রলীগ নেতা আরজ মিয়াকে আটক করে কোতোয়ালী থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। পরে পুলিশের কাছ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একটি দল আরজ মিয়াকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, উক্ত ঘটনায় আরজ মিয়ার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গত রোববার বিকেলে মামলা করেছেন লাঞ্ছিত শিক্ষিকা। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়- আরজ মিয়া তাকে ধাক্কা দেয়, জামা ধরে টান দেয় ও চড় মারে। শিক্ষিকা লাঞ্ছিত করার খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে ছাত্রলীগ নেতার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ভিসির ভবন ঘেরাও করে শিক্ষার্থীরা। ভিসির ভবন ঘেরাও এর সময় শিক্ষার্থীদের ব্যানার কেড়ে নেয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিবাদরত শিক্ষার্থীরা। উল্লেখ্য যে, প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের ব্যানারে লেখা ছিল, ‘যৌন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’।
শিক্ষিকা লাঞ্ছিত করার ঘটনায় আরজ মিয়াকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে, তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। তবে এইসব পদক্ষেপের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা তেমন সুখকর নয়। ক্ষমতার দাপটে অপরাধীরা রেহাই পেয়ে যায় এবং বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে। ভাবতে অবাক লাগে, বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে একজন ছাত্রনেতা কী করে শিক্ষিকার জামা ধরে টান দেয় এবং চপেটাঘাত করে? এমন ছাত্রকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করার পর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা কোন সাহসে অপরাধী ছাত্রকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়? পুলিশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের কাছে এতটা অসহায় কেন? দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের কথা কি পুলিশ ভুলে গেছে? পেশাগত অঙ্গীকারের চাইতেও রাজনৈতিক আনুগত্য কি এখন পুলিশের কাছে বড় হয়ে উঠেছে? এই যদি হয় অবস্থা তাহলে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে কেমন করে? অথচ সুশাসনের অভাবেই জনদুর্ভোগের মাত্রা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমান সরকার তো সুশাসনের কথা বলে, দিন বদলের স্বপ্ন দেখিয়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে। অনাকাক্সিক্ষত বাস্তবতায় জনমনে প্রশ্ন, ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে কি অঙ্গীকারের কথা ভুলে যেতে হয়?
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দৌরাত্ম্যে অন্ধকারের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে তো ছাত্রনেতাদের আলো ছড়াবার কথা। এই অবস্থায় প্রশ্ন জাগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কর্মকর্তা ভাইস-চ্যান্সেলর বিশ্ববিদ্যালয়ে কাক্সিক্ষত পরিবেশ রক্ষায় কেমন ভূমিকা পালন করছেন? ২৭ এপ্রিল প্রথম আলোয় মুদ্রিত খবর থেকে উপলব্ধি করা যায়, শিক্ষার আলো ছড়াবার পরিবর্তে ভিসি মহোদয় রাজনীতির পোশাক পরে ভোট-ভিক্ষায় ব্যস্ত। খবরটিতে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী সাঈদ খোকনের পক্ষে ভোট চেয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মীজানুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘সাঈদ খোকনকে ইলিশ মার্কায় ভোট দিয়ে বিএনপি-জামায়াতের পেট্রোল বোমা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রায় দিন’। গত রোববার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রফিক ভবনের সামনে আয়োজিত আলোচনা সভায় ভিসি ও যুব লীগের সভাপতিমন্ডলীর সাবেক সদস্য মীজানুর রহমান দাবি করেন, শেখ হাসিনা তাকে ফোন করে সবার কাছে সাঈদের পক্ষে ভোট চাইতে বলেছেন। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তিনি ভোট চান। অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক হাজী সেলিম এমপি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি এম্বুলেন্স কেনার জন্য ২০ লাখ টাকা দেয়ার ঘোষণা দেন। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ ছাত্রলীগের, আয়োজনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাত্রলীগ- আমরা আমরাই তো’। প্রথম আলোর প্রতিবেদনে যে চিত্রটি স্পষ্ট হলো, তাতে সহজেই উপলব্ধি করা যায় ভিসি মীজানুর রহমান শিক্ষা সংক্রান্ত তার সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব পালনের বদলে এখন দলীয় রাজনীতিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন বেশি। একজন ভিসি যখন স্পষ্টভাবে দলীয় রাজনীতি করেন এবং প্রধানমন্ত্রী তাকে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইতে বলেন, তখন সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ কেমন হবে তা সহজেই উপলব্ধি করা যায়। এমন ভিসির প্রশ্রয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তো বেপরোয়া হয়ে উঠবেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বর্তমান সরকারের আমলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা যদি এভাবে কাজ করে যান তাহলে আমাদের শিক্ষার ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? বিষয়টি ভেবে দেখার মত শুভবুদ্ধির উদয় সরকার ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হবে কী?
আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গন ও শিক্ষাঙ্গনের চিত্র আশাপ্রদ নয়। এর দায় আমাদের সরকার ও শীর্ষ রাজনীতিবিদরা এড়াতে পারেন না। কিন্তু দায় ও দায়িত্বটা তারা আদৌ অনুভব করেন কিনা সেটা জাতির সামনে এক বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। রাজনীতিবিদদের আচরণ দেখে মনে হয়, নির্বাচন ও ক্ষমতার চেয়ারটাই যেন তাদের জন্য সবকিছু। এ দুইয়ের মাঝে তারা অনেক কথা বলেন। কিন্তু তারা যা বলেন তা করেন না। আর যা করেন তা বলতে চান না। এমন অবস্থায় দেশে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের দৌরাত্ম্য বেড়ে গেছে। ফলে জনগণের দুঃখের মাত্রা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। জনগণ এখন এ বিষয়টি ভালভাবেই উপলব্ধি করছে যে, নির্বাচন ও গদি দখল তাদের জন্য তেমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ইশতেহার ও অঙ্গীকার বাস্তবায়ন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, ত্যাগ-তিতিক্ষা, আদর্শচর্চা, নৈতিক মেরুদন্ড ও যোগ্যতার অভাবে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে যে- নানা ছলনা ও কারচুপির মাধ্যমে যে কোনো প্রকারে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পারঙ্গমতা অর্জন করলেও ইশতেহার কিংবা অঙ্গীকার বাস্তবায়নে তারা অক্ষম। এমন অক্ষম রাজনৈতিক দল কিংবা সরকার দিয়ে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণ সম্ভব নয়। ফলে হতাশা ও ক্ষোভের মধ্যেই এখন জনগণের বসবাস। জনগণের ক্ষোভ ও ঘৃণা সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য কোনো সুখকর বিষয় নয়। এবারের সিটি নির্বাচন জনগণের ক্ষোভ ও ঘৃণার মাত্রা যে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে তা সংশ্লিষ্ট মহল উপলব্ধি করেন কি? তবে উপলব্ধি করা প্রয়োজন। কারণ উপলব্ধি মানুষকে সংশোধনের পথে ফিরিয়ে আনতে পারে।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads