মঙ্গলবার, ৫ জানুয়ারী, ২০১৬

কে যে কাকে শিক্ষা দিল!


সোভিয়েত ইউনিয়নের মদদে ১৯৭৮ সালে ভিয়েতনাম দখল করে নেয় কম্বোডিয়া। কম্বোডিয়ায় তখন ক্ষমতাসীন ছিল চীনপন্থী পল পট সরকার। পল পটের শাসন নিয়ে নানা কল্পকাহিনী প্রচলিত ছিল। একথা সত্য যে, পল পট শহরগুলো ভেঙে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সকলকে কৃষি কাজ করার জন্য গ্রামে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। তা নিয়ে সমাজে এক চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। সৃষ্টি হয়েছিল এক বিশাল ট্র্যাজেডি। পল পট এটা করেছিলেন এই কারণে যে, তিনি মনে করতেন শহরের গুটিকয় সুবিধাভোগী নাগরিকের জন্য অকারণেই বিপুল পরিমাণ বিলাস সামগ্রী আমদানি করতে হয়। গ্রামের সাধারণ মানুষের জন্য শুধু কেরোসিন তেল আমদানি করলেই যথেষ্ট। আর তাই সকলকে খাদ্য উৎপাদনে লেগে যেতে হবে, যাতে বিদেশিদের কাছে হাত পাততে না হয়। তাই শহর ভেঙে দিলে সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থ ব্যাপকভাবে সঙ্কুচিত হয়ে পড়বে। শহরগুলো জনশূন্য করার পর সকল দূতাবাস বন্ধ করে দিয়ে বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে দিয়েছিলেন পল পট। রাজধানী নমপেনেই তখন বাস করত ২০ লাখ লোক। তাদের তাড়াবার প্রক্রিয়ায় মারা গিয়েছিলেন ২০ হাজার লোক। পল পট ছিলেন কৃষক পরিবারের সন্তান। বৃত্তি নিয়ে ১৯৪৯ সালে ২৪ বছর বয়সে ফ্রান্সে পড়তে গিয়েছিলেন ইলেকট্রনিক্স। কিন্তু ঝুঁকে পড়েন মার্কসবাদে। বৃত্তি বন্ধ হয়ে গেলে ১৯৫৩ সালে ফিরে আসেন কম্বোডিয়ায়। গড়ে তোলেন আন্ডার গ্রাউন্ড খেমার রুজ বাহিনী। আশ্রয় নেন জঙ্গলে। কম্বোডিয়ার শাসক নরোদম সিহানুকের বিরুদ্ধে চালাতে থাকেন গেরিলা যুদ্ধ। সে পথেই ১৯৭৫ সালে তরুণ গেরিলাদের নিয়ে ক্ষমতা দখল করেন পল পট। ১৯৭৮ সালে ভিয়েতনাম কম্বোডিয়া দখল করে নিলে পল পট সরকারের পতন ঘটে। তারপরও পল পট ১৮ বছর ধরে ফের গেরিলা যুদ্ধ চালিয়ে যান। ১৯৯৮ সালে আটক হবার পরপরই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পল পট মারা যান।
এই আক্রমণের জন্য ভিয়েতনামকে একটি উপযুক্ত শিক্ষা দিতে চীন ১৯৭৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ভিয়েতনাম আক্রমণ করে। অথচ এই ভিয়েতনামের মার্কিন বিরোধী ২০ বছরের লড়াইয়ে চীন সরাসরি অংশ নিয়েছিল এবং তাদের প্রায় ১০ হাজার সৈন্য এই যুদ্ধে নিহত হয়েছিল। ভিয়েতনামের সঙ্গে চীনের এই সীমান্ত যুদ্ধ স্থায়ী হয়েছিল মাত্র ২৯ দিন। সে যুদ্ধে ভিয়েতনামের বেশ কিছু এলাকা চীন দখল করে নেয়। এখন সেটাই চীন-ভিয়েতনামের স্বীকৃত সীমানা। এই যুদ্ধে চীন দাবি করেছিল, তারা ভিয়েতনামকে উপযুক্ত শিক্ষা দিয়েছে। আবার ভিয়েতনামও দাবি করছিল যে, তারা চীনকে উপযুক্ত শিক্ষা দিয়েছে। তখন সংবাদ সংস্থা রয়টার এ খবর দিয়ে এক লাইন মন্তব্য করেছিল যে, ‘তবে কে যে কাকে শিক্ষা দিল, তা এখনও নিশ্চিত নয়।’
ভারতও সম্ভবত তার নিকটতম ও ক্ষুদ্র প্রতিবেশী নেপাল, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কাকে শিক্ষা দিতে চেয়েছিল। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার এতোটাই ভারত-নিবেদিত যে তাকে আর শিক্ষা দেবার কিছু নেই। প্রথমেই মালদ্বীপের কথা আলোচনা করা যায়। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন মোহাম্মদ ইয়ামিন। তার পূর্বসূরী ছিলেন মোহাম্মদ নিশাত। নিশাত ভারতীয় দালাল হিসেবে মালদ্বীপের জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিলেন না। তার ওপর তার দুর্নীতিও ছিল সে দেশের মানুষের মুখে মুখে। তবে আদালত তাকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য। আদালতের বিচার পছন্দ হয়নি বলে তিনি একজন বিচারপতিকে কারারুদ্ধ করে রেখেছিলেন। তবে বিলাসবহুল পর্যটন কেন্দ্র দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট নিশাতের বিরুদ্ধে আরও বড় অভিযোগ, তিনি শুধুমাত্র ক্ষমতায় থাকার জন্য ভারতের কাছে মালদ্বীপের স্বার্থ বিক্রি করে দিয়েছিলেন। ভারত প্রথম থেকেই আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে আসছিল। ভারতের দাবি হচ্ছে, কারাগার থেকে নিশাতকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। মালদ্বীপের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন প্রথমে ভারতকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন যে, আদালতের রায় উল্টে দেওয়ার ক্ষমতা তার নেই। কিন্তু ভারত সে দাবি করেই যাচ্ছে।
সঙ্কট এখানেই। একদিকে ইয়ামিন মালদ্বীপের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিষয়ে অনড়। অপর দিকে তিনি তার দেশে ভারতের অযাচিত হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে। ভারতেরও সঙ্কট এখানেই। দেশটির সরকার নিজের স্বার্থে অন্য প্রতিবেশির স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের কোনো মূল্য দিতে নাজার। আর সে দেশের আদালতের সিদ্ধান্তও পাল্টে দিতে চায়। ফলে ভারত সরকারের সঙ্গে মালদ্বীপের ইয়ামিন সরকারের তিক্ততা প্রকট হয়ে উঠেছে। সেটি গোপন রাখেননি ভারতের বর্তমান নরেন্দ্র মোদি সরকারও। তাই ক্ষমতায় আসীন হয়ে দক্ষিণ এশিয়ার সকল দেশ সফরে গেলেও মোদি মালদ্বীপ সফর করেননি। পরে তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে পাঠিয়েছিলেন মালদ্বীপে। সুষমা গিয়েও নিশাতের মুক্তি দাবি করেন। এ প্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ইয়ামিন তাকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন যে, ভারত যেন কোনোভাবেই মালদ্বীপের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করে। মালদ্বীপ সে রকম পরিস্থিতি কিছুতেই মেনে নেবে না।
ভারত একই ধরনের কাণ্ড করেছে নেপালেও। নেপালের জনসংখ্যা প্রায় তিন কোটি। তার মধ্যে নেপালের দক্ষিণাঞ্চলের তেরাই এলাকায় বসবাস করে ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রায় ৪০ লাখ লোক। এরা প্রধানত বিহার ও উত্তর প্রদেশ থেকে নেপালে গিয়ে আশ্রয় নেয়। নেপাল সরকার এদের নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকার করলে দিল্লী সরকার অবরোধ আরোপ করে তৎকালীন কংগ্রেস সরকারকে তাদের নাগরিকত্ব দিতে বাধ্য করে। তেরাই অঞ্চল সমতলভূমি এবং অত্যন্ত উর্বর। ভারতের যে সকল নাগরিক ঐ এলাকায় গিয়ে বসতি স্থাপন করে, তারা ছিল হতদরিদ্র। তেরাইয়ের জমি জবরদখল করে তারা সম্পন্ন হয়ে উঠেছে। এই এলাকায় বসবাসকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের মাধেসি বলা হয়। তেরাই এলাকা নেপালের আয়তনের ২০ শতাংশ। কিন্তু নেপালের অর্ধেক মানুষ এখানেই বসবাস করে।
নেপালিদের দীর্ঘ আন্দোলন ও সশস্ত্র সংগ্রামের পর নেপালে প্রায় চার শ’ বছরের রাজতন্ত্রের অবসান ঘটে। তারপর সাত বছরের অধিককাল ধরে নানা আলাপ-আলোচনার পর নেপাল শেষ পর্যন্ত একটি সংবিধান সর্বসম্মতভাবে গ্রহণ করে। তাতে নেপালকে সাতটি প্রদেশে ভাগ করা হয়। সেও সর্বসম্মতিক্রমে। নেপাল ছিল পৃথিবীর একমাত্র হিন্দু রাষ্ট্র। কিন্তু সবাই একমত হয়ে নেপালকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করে। নেপাল যাতে সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা যুক্ত না করে, সেজন্য সংবিধান গ্রহণের ক’দিন আগে থেকেই ভারত নেপালের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। কিন্তু নেপালের সাংবিধানিক পরিষদ তাতে কর্ণপাত করেনি। তাদের বক্তব্য, রাষ্ট্র আমাদের, আমাদের রাষ্ট্রের সংবিধান কী হবে তা নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নেব আমরা। এখানে ভারত হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তখন ভারত মাধেসিদের দিয়ে নেপালে সঙ্কট সৃষ্টি করে। দিল্লির সরকার মাধেসিদের দিয়ে দাবি তোলায় যে, নেপালে প্রদেশের সংখ্যা আটটি করতে হবে। আর শুধু মাধেসিদের জন্য ছেড়ে দিতে হবে দুটি প্রদেশ। অথচ সংবিধান গ্রহণের সময় সাংবিধানিক পরিষদে মাধেসিদের যে ১১৬ জন প্রতিনিধি ছিলেন, তাদের মধ্যে ১১১ জনই ৭টি রাজ্যসহ সংবিধানের পক্ষে ভোট দেন।
কিন্তু এখন ভারতীয় মদতে এমন এক আন্দোলন শুরু করেছেন, যা গোটা নেপালবাসীর জন্য বিরাট বিপর্যয় ডেকে এনেছে। এক সময় সিকিমের মতো মাধেসি দালালদের মাধ্যমে নেপালের তেরাই অঞ্চল দখল করে নেওয়ার লক্ষ্যে মাধেসিদের দাবি মেনে নিতে বাধ্য করার জন্য ভারত নেপালে জ্বালানি তেলসহ সব ধরনের পণ্য আনা নেয়া বন্ধ করে দিয়েছে সংবিধান গ্রহণের দু’দিন পর অর্থাৎ ২২ সেপ্টেম্বর থেকে। নেপালের জ্বালানি তেলের শতভাগ আসে ভারত থেকে। অন্যান্য পণ্যের ৬০ ভাগ। তারপর জীবন রক্ষাকারী ওষুধের জন্যও নেপাল ব্যাপকভাবে ভারতের ওপর নির্ভরশীল। প্রয়োজনীয় অন্যান্য পণ্যেরও বেশির ভাগ আসে ভারত থেকেই। নেপালের ওপর ভারতের এই অঘোষিত অবরোধের ফলে জ্বালানি ক্ষেত্রে প্রায় অচল হয়ে পড়ে নেপাল। যানবাহন চলাচল অত্যন্ত সীমিত হয়ে পড়ে। পাঁচ বছরের কম বয়সী ৩০ লাখ শিশুর জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ে। নেপাল এই অবরোধের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে পর্যন্ত যায় এবং সাধারণ পরিষদের ভাষণে তাদের সঙ্কটের কথা তুলে ধরে। জাতিসংঘ মহাসচিব বিবৃতি দিয়ে বলেন, স্থলাবদ্ধ নেপালের অধিকার হচ্ছে ট্রানজিট সুবিধা। ভারতকে অবশ্যই এই অবরোধ প্রত্যাহার করে নিতে হবে। কারণ এ সংক্রান্ত জাতিসংঘ সনদে ভারতও স্বাক্ষর করেছে। এতে খুবই ক্ষুব্ধ হয় ভারত। কিন্তু নেপাল তাতে পরোয়া করেনি।
নেপালবাসী যেমন ভারতের এই অন্যায় চাপ মেনে নিতে চায়নি, তেমনি নেপাল তার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই ভারত-নির্ভরতা কমিয়ে আনতে চাইছে। নেপালের এই বিপদের দিনে বরাবরের মতোই তাদের সাহায়্যে এগিয়ে এসেছে তার উত্তরের প্রতিবেশী চীন। চীন নেপালের আশু সঙ্কট মোকাবিলার জন্য তাদের ২৭ লাখ লিটার জ্বালানি তেল অনুদান হিসেবে দিয়েছে। দিয়েছে ওষুধ ও অন্যান্য পণ্য। আর নেপালকে জানিয়ে দিয়েছে, তাদের রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা রক্ষায় সব রকম সাহায্য দেবে চীন। নেপালের নেতারা দৃঢ়তার সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছে, তারা রাজ্য সীমানার সামান্য হেরফের করতে পারেন বটে, তবে কিছুতেই ৭ রাজ্য ভেঙে ৮ রাজ্য করা হবে না। আর মাধেসি আন্দোলনও ক্রমেই জনসমর্থন হারিয়ে ফেলেছে। অনেক মাধেসি নেতা জড়িয়ে পড়েছেন চোরাচালানে। তেরাই অঞ্চলের এক কোটি নেপালিও পড়েছে সঙ্কটে। ফলে এখন আর রাস্তা অবরোধের জন্য লোক পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে মাধেসিদের এক দল অপর দলকে দোষ দিচ্ছে।
শত কষ্টের মধ্যেও নেপালিদের অনড় অবস্থানের কারণে এবং চীন সর্বাত্মক সহযোগিতার হাত বাড়নোর ফলে ক্রমেই সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করে নেপাল। ফলে ভারতকে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। ভারতের অবরোধের ফলে শেষ পর্যন্ত ভারতেরই ক্ষতি হবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বেশি। এর আগে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি অবরোধ সঙ্কট সমাধানের ব্যাপারে আলোচনার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ফোন করেছিলেন। মোদি ফোন না ধরে তার নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলার জন্য ওলিকে পরামর্শ দিয়েছিলেন। ওলি নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে ফোন করেননি। পরে নববর্ষে মোদি ওলির সঙ্গে কথা বলতে চাইলে ওলি মোদিকে ফোন করেন এবং তাকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু চীনের সঙ্গে ৮ দফা চুক্তি স্বক্ষরের জন্য ওলির এ সপ্তাহেই বেইজিং যাবার কথা রয়েছে। সে ৮ দফার মধ্যে জ্বালানি তেল সরবরাহের চুক্তিও আছে। ফলে দিল্লি সরকার মাধেসিদের নির্দেশ দিয়েছে, সরকার প্রদত্ত সুবিধা সংবলিত প্রস্তাব মেনে নিতে। এখন সে পথেই হাঁটছে মাধেসিরা। ভারত অবরোধও অনেকখানি শিথিল করে এনেছে। অবরোধের পর থেকে প্রতিদিন ভারত থেকে তেল আসতো ৫০-৬০ ট্রাক। ক’দিন ধরে তা ১০০ ট্রাকে উন্নীত হয়েছে। আবার বন্ধুত্বের স্মারক হিসেবে ভারত ২৭ বছর পর উভয় দেশের মধ্যে সম্প্রতি চালু করেছে সরাসরি মৈত্রী বাস। এর ফলে নেপালের মানুষেরই জয় হয়েছে।
আবার ভারতের এই মাধেসি কৌশল দেখে সতর্ক হয়ে গেছে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কাও। ভারতের তামিলনাড়ু থেকে শ্রীলঙ্কার ভূমি পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটারের পক প্রণালি। এ পথেই আগে ভারত শ্রীলঙ্কার তামিলদের সেদেশে নিয়ে প্রশিক্ষণ, অস্ত্র আর রসদ দিয়ে শ্রীলঙ্কায় পাঠাতো তামিল অঞ্চল স্বাধীন করার জন্য যুদ্ধ করতে। ভারত ২০০৯ সালে প্রস্তাব করেছিল, ঐ প্রণালির ওপরে তারা সেতু করে দেবে। শ্রীলঙ্কা সরকারও রাজি ছিল এবং আলোচনা চলছিল। কিন্তু সম্প্রতি সিংহলীরা ঐ সেতুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে। তাদের বক্তব্য, সেতু হলে নেপালের মতো বিপুলসংখ্যক ভারতীয় শ্রীলঙ্কায় বসতি স্থাপন করবে এবং এক সময় সিংহলীরা নিজ দেশে সংখ্যালঘুতে পরিণত হবে। ফলে গত সপ্তাহে চুক্তি বাতিল করে শ্রীলঙ্কা ভারতকে জানিয়ে দিয়েছে, তারা আর ঐ সেতুতে আগ্রহী নয়। তাদের সেতুর প্রয়োজন  নেই।
ভারত তার সকল প্রতিবেশিকে শিক্ষা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আমাদেরও বলতে হয়, কে যে কাকে শিক্ষা দিল তা এখনও স্পষ্ট নয়।
ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী 

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads