শনিবার, ৪ আগস্ট, ২০১২

প্রবীণ আইনজীবীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করলেন সরকারদলীয় এমপি : সরিষাবাড়ি আ.লীগ নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ



জামালপুরের সরিষাবাড়িতে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছেন তারই দলের এক প্রবীণ আইনজীবী নেতাকে। শতাধিক লোকের সামনেই গতকাল দুপুরে এমপি ডা. মুরাদ হাসান অ্যাডভোকেট বদরুদ্দোজা বাহাদুরের ওপর চড়াও হয়ে উপর্যুপরি কিল-ঘুষি মেরে তার মুখমণ্ডল রক্তাক্ত করলে বাহাদুর মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ঘুষির আঘাতে তার বাম চোয়ালের চারটি দাঁত নড়ে যায় এবং চোখের চশমা ভেঙে গালের মাংসে ঢুকে রক্তাক্ত হন। এ ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা জামালপুর জেলা আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট বদরুদ্দোজা বাহাদুর শনিবার দুপুরে তার এলাকার একটি রাস্তা (হরখালী বাজার থেকে দোলভিটি বারিকের বাড়ি পর্যন্ত) সংস্কারের আবেদন নিয়ে উপজেলা ডাকবাংলোতে সরকারদলীয় এমপি ডা. মুরাদ হাসানের সঙ্গে দেখা করতে যান। এই আবেদন বিষয়ে এমপির সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে শতাধিক লোকের সামনে এমপি ডা. মুরাদ হাসান অ্যাডভোকেট বদরুদ্দোজা বাহাদুরের ওপর চড়াও হয়ে উপর্যুপরি কিল-ঘুষি মেরে তার মুখমণ্ডল রক্তাক্ত করেন। কিল-ঘুষি খেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় অ্যাডভোকেট বদরুদ্দোজা বাহাদুর মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ঘুষির আঘাতে তার বাম চোয়ালের চারটি দাঁত নড়ে যায় এবং চোখের চশমা ভেঙে গালের মাংসে ঢুকে রক্তাক্ত হন। এছাড়া বুক, পিঠে ও কোমরে আঘাত পান বলে সাংবাদিকদের জানান অ্যাডভোকেট বাহাদুর। তার পাঞ্জাবিটিও ছিঁড়ে যায়।
মারপিটের পর প্রবীণ এই নেতাকে প্রায় দু’ঘণ্টা ডাকবাংলোয় আটকে রেখে আপসের চেষ্টা করা হয়। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মালেক, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোফাজ্জল হোসেন, সংসদ সদস্যের চাচা আমিনুলসহ উপস্থিত নেতারা বিষয়টি আপসের চেষ্টা করেন এবং উপস্থিত সবার সামনে ডা. মুরাদ হাসান এমপি আহত এই নেতার কাছে ক্ষমা চান। এক পর্যায়ে ছেঁড়া পাঞ্জাবি পাল্টে নতুন পাঞ্জাবি পরিয়ে তাকে ডাকবাংলো থেকে বিদায় দেয়া হয়। ছাড়া পেয়ে তিনি স্থানীয় হাসপাতালে চিকিত্সা নেন।
এ ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ছানোয়ার হোসেন দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত লজ্জাজনক। এ ঘটনা নেতাকর্মীদের ভীষণ কষ্ট দিয়েছে। একজন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতাকে এমপি যেভাবে মারধর করেছেন, তা নেতাকর্মীরা মেনে নিতে পারছেন না। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। তবে ডা. মুরাদ হাসান মারধরের কথা অস্বীকার করে স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রবীণ ওই নেতার সঙ্গে সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছে।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads